বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ হারানো গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়। তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। লুটেরাদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে চায়। অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে চায়। ৭ জানুয়ারি দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। ডামি নির্বাচনে দেশের মানুষ যায়নি। ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার জনসমর্থনহীন হয়ে পড়েছে। জনগণকে সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জুলুম-নির্যাতন ও শোষণের অবসান ঘটিয়ে একটি ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।
গত ২০ এপ্রিল শনিবার নরসিংদী জেলা জামায়াতের উদ্যোগে স্থানীয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা আমীর মাওলানা মোছলেহুদ্দীনের সভাপতিত্বে শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বক্তব্য রাখেন জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আমজাদ হোসাইনসহ উপজেলা নেতৃবৃন্দ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সেকুলার, আল্ট্রা সেকুলার রূপ দিয়ে দেশের মানুষকে ধর্মহীন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মুসলমানদের ধর্মীয় কাজকর্ম সংকুচিত করা হচ্ছে। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত বিরাজনীতিকরণের কারণে দেশের মানুষ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। বিদ্যুৎসহ সেবা খাতে ঘন ঘন মূল্যবৃদ্ধির যন্ত্রণা অহরহ মানুষকে সহ্য করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশ, জাতি ও সমাজ রক্ষায় জনগণের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে। শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে সবাইকে এক কাতারে এসে কঠিন গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। গাজাবাসীকে রক্ষায় মুসলিম বিশ্ব কার্যকর উদ্যোগ না নেয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে গাজায় অন্যায় যুদ্ধ বন্ধ ও দখলদারিত্ব অবসানে কাক্সিক্ষত ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, দুনিয়ার জীবন জিন্দেগীকে কেন্দ্র করে মুমিন তার জীবন পরিচালনা করে না। তার জীবনের লক্ষ্য হলো আখিরাতের সফলতা। জান্নাত লাভের উচ্চাকাক্সক্ষা তাদের দুনিয়ার ভোগ-বিলাস, আরাম-আয়েশকে তুচ্ছজ্ঞান করে। দীন কায়েরমের জন্য আমরা শপথ নিয়েছি। শপথের কর্মীরা সে শপথ ভুলে যেতে পারে না। শপথ ঈমানের পথে জীবনকে উজ্জীবিত করে। জীবনের বাঁকে বাঁকে জমে থাকা জঞ্জাল ঠেলে সামনে এগিয়ে যেতে সাহস জোগায়। চলার পথকে করে বলিষ্ঠ। বিপদ-আপদ তাকে থামিয়ে দিতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য আমাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে। শহীদের রক্তে ভেজা জমিনে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত শহীদের সাথীরা থামবে না। সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমীর আজকের আয়োজনে সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। আগামী দিনে নরসিংদীকে ইসলামের জন্য ইসলামী আন্দোলনের জন্য মজবুত ঘাঁটি রূপে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।