॥ একেএম রফিকুন্নবী ॥
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এ ছোট দেশকে কতই না সম্পদ দিয়েছেন। বড় সম্পদ জনসম্পদ। দ্বিতীয় হলো মাটি, পানি, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, গাছপালাসমৃদ্ধ জন্মভূমি। আমরা এত সম্পদ পেয়েও দেশকে উন্নতি-অগ্রগতির শিখরে নিতে পারছি না শুধুমাত্র চলার পথে নিয়মনীতির অবহেলার কারণে। কোনো ক্ষেত্রেই ছোট-বড়, ধনী-গরিব, রিকশাওয়ালা, পান বিক্রেতা থেকে প্লেন বিক্রেতা কেউই নিয়মের আওতায় আসছি না, সরকারের বিভাগগুলোর সহযোগিতার অভাবে।
দেশের বড় কর্মকর্তা থেকে গ্রামের চৌকিদার কেউই নিয়মের ধার ধারছি না। দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর নিয়ন্ত্রক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি হয়ে গেল। কোনো কূলকিনারা আমরা করতে পারছি না। আমাদের প্রযুক্তি উন্নয়নের কথা বলে, টাকা খরচের খাত কম নয়! কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও রিজার্ভ চুরির ঘটনা জনসম্মুখে আসতে পারছে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে যারা এ কাজের সাথে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘ বছর অতিক্রান্ত হলেও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা শেষ করতে পারছি না। প্রকৃত ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনও জনসম্মুখে আসতে দেয়া হয়নি। সামরিক বাহিনীর শ্রেষ্ঠ ৫৭ অফিসারকে দিনে-দুপুরে নিরস্ত্র অবস্থায় ঠাণ্ডামাথায় খুন করা হয়েছে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়করা এখনো চিহ্নিত হয়নি। সবই যেন ন্যায়নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো এবং সবই বিচার থেকে পার পাওয়ার পদক্ষেপ। বিচারের কাজ এবং সত্য ঘটনা বের করতেই হবে দেশের স্বার্থে।
আমরা আল্লাহ তায়ালায় বিশ্বাসী লোকজনরা কীভাবে ভুলে যাই আমাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিনিয়ত প্রতি পদক্ষেপ মহান আল্লাহ প্রত্যক্ষ করছেন আবার লিখে রাখার সাথে সাথে ভিডিওর মতো সব কাজের ছবি তুলে রাখছেন। দুনিয়ায় কমবেশি ফাঁকি দিতে পারলেও আখিরাতে চুল পরিমাণ কাজের অডিও-ভিডিও গোপন করা যাবে না। শাস্তি পেতেই হবে, কোনো ছাড় দেয়া হবে না। ভালোর জন্য ভালো, আর মন্দের জন্য মন্দ ফল ভোগ করতেই হবে। ইনশাআল্লাহ কারোর সুপারিশ করার সুযোগ থাকবে না।
চোখের সামনে দেশের ব্যাংকগুলো খালি হয়ে গেল। কারো মাথাব্যথা নেই। ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে ভালোর সাথে দুর্বল ব্যাংক একীভূতের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু যাদের কারণে ব্যাংক দুর্বল হলো তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অপরাধ করেই চলেছে। বাধা দেয়ার কোনো সংস্থা কাজ করছে না। খুবই দুঃখজনক। ন্যায়নীতির খেলাপ, এর প্রতিকার চাই।
আমাদের বিচারহীনতা দেশের সাধারণ মানুষের আশ্রয়স্থলে আঘাত হেনেছে। বিচারকদের মনে রাখতে হবে- মহান আল্লাহর কাছে তাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর দুজন মন্ত্রী ৫ বছর ৩টি মন্ত্রণালয় স্বচ্ছতার সাথে ন্যায়পরায়ণ হয়ে দুর্নীতিমুক্তভাবে চালিয়েছেন। তাদের কোনো দুর্নীতি এখন পর্যন্ত কেউ বের করতে পারেনি। অথচ তাদের ৫০ বছরের পুরনো মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হলো। প্রত্যেককেই কিন্তু জবাবদিহি করতে হবে দুনিয়ায় এবং আখিরাতে তো বটেই। তাই বলতে চাই, যার যা খুশি তাই করে দেশকে ক্ষতির মধ্যে ফেলে নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যকেও ক্ষতির দিকেই নিয়ে যাচ্ছেন। সাবধান হওয়া বুদ্ধিমানের পরিচয়।
বাংলাদেশকে আমরা ৫০ বছর দেখছি মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ সবাই যার যার মতো ধর্মকর্ম করে জীবনযাপন করছে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু মাঝেমধ্যেই কুচক্রী মহল নিজেরা মূর্তি ভেঙে শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা করে আসছে। এই কয়েকদিন পূর্বে ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে মূর্তিতে আগুন দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পাঁয়তারা করছিল। শুধু তাই নয়, দুজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে দিনে-দুপুরে পিটিয়ে হত্যাও করেছে। ঘৃণিত অপরাধ যা আইনের আওতায় আনতে হবে। মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে তাদের অপকর্ম ধরা পড়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করি এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার আবেদন করছি। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ অত্যন্ত দেশপ্রেমিক এবং সবাইকে নিয়ে বসবাসে অভ্যস্ত। আমরা সবাই মিলে দেশটাকে উন্নতির শিখরে নিতে চাই। আমার স্কুলজীবনের বন্ধু কিছুদিন পূর্বে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে অবসর নিয়েছেন। তিনি সনাতন ধর্মের লোক, সারা জীবন তার পরিবারের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিবিড়। নিজে ভালো হলে অন্যকেও ভালো পথে আনা সম্ভব। গ্রামের স্কুল, ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এবং ৪৪ বছরের কর্মজীবনে ঢাকায় এবং এলাকায় দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে সবার সাথেই ভালো সম্পর্ক রেখেই জীবনযাপন করছি, আলহামদুলিল্লাহ।
আমার জানা মতে, জামায়াতে ইসলামীর বড় নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী রহ. সাহেব, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রহ. সাহেব তাদের এলাকার অনেক হিন্দু ভোট পেয়ে জাতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশ ও জাতির খেদমত করে গেছেন। তাদের এলাকায় খোঁজ নিলে এখনো এর প্রমাণ মিলবে।
দেশের রাস্তাঘাট যেন অনিয়মের ফাঁদ। প্রতি বছর হাজার হাজার লোক দুর্ঘটনায় মারা যায়। গাড়ির ড্রাইভারদের অসচেতনতায় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা যদি ড্রাইভারদের সচেতনতা বাড়াতে পারি, জনগণকে সজাগ করতে পারি, তবে রাস্তায় এত দুর্ঘটনা ঘটবে না। বিশেষ করে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া এবং নবায়নের সময় যদি গাড়ি চালানোর নিয়ম-কানুনগুলো একটা সরেজমিন পরীক্ষা নেয়া যায়, তবে ভালো হয়। আমি নিজে ১৯৯১ সালে পরীক্ষা দিয়ে গাড়ির লাইসেন্স করেছি। এখন আবার কয়েকদিন পূর্বে স্মার্ট কার্ড পেলাম নবায়ন করে। কিন্তু কোনো জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই। আল্লাহর রহমতে দীর্ঘ ২৫ বছরে কোনো দুর্ঘটনায় পড়তে হয়নি। গোটা দেশে আমার গাড়ি চালানোর সুযোগ হয়েছে। আমরা চাই প্রত্যেকেই নিয়ম মেনে চললে গাড়ি দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। পানি, রেল ও বিমান পথেও সচেতনতা ও নিয়মনীতি মেনে চললে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
এবার আসি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিক্ষা বিভাগ নিয়ে। শিক্ষা বিভাগেও অনিয়মের শেষ নেই। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করা যেন নিত্যদিনের অপকর্ম আমাদের সমাজে চলছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা বিভাগে যদি অনিয়ম হয়, তবে জাতিকে ভালো পথে নেয়া সম্ভব হবে না। কয়েকদিন পূর্বে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে বড় অফিসার ও তার স্ত্রীর বড় দুর্নীতি ধরা পড়েছে। স্ত্রীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। স্বামীকেও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক ও দুর্ভাগ্যজনক এবং পরিতাজ্য। এ ঘটনাসহ শিক্ষা বিভাগের সব দুর্নীতির বিচার তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায়ও সৎ, যোগ্য, খোদাভীতি লোক হিসেবে পরিচিত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাহেবকে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির রুমে অপমান করা হয়েছিল। নিয়মনীতির বালাই না থাকার কারণে এ জাতীয় ঘটনা ঘটার সুযোগ পায়। গত রমাদানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের ইফতারের অনুমতি প্রসঙ্গে যা ঘটলো, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ইফতার ইবাদতের অংশ। এর জন্য অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী মিলে ইফতার করা মুসলমানদের একটি বড় ইবাদত। আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলাম। ভিসি সাহেবের রুমে আমরা জামাতে নামায পড়েছি, কই কারো অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। সচেতন নাগরিকদের নৈতিক মান ও আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। হীনম্মন্যতায় ভোগা যাবে না। যার যার অধিকার, তা পালনের মধ্যেই দেশ ও জাতির কল্যাণ।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন নেই বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া। দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশদরদ, দেশের প্রতি মায়া-মহব্বত নিয়েই চলতে হবে। সরকারের উচিত, ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি থাকলে তা দূরীভূত করা। দেশের অনেক জায়গায় চিকিৎসার যন্ত্রপাতি অযত্ন-অব্যবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। নিয়মনীতির যথাযথ ব্যবহার করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হবে। আমরা পরাধীন থাকতে চাই না।
সরকারি কাজের দায়বদ্ধতা খুবই জরুরি। ১৮ কোটি মানুষের চলার পথের সব কাজ আমাদেরই আঞ্জাম দিতে হবে। আমি যেহেতু নির্মাণকাজের সাথে জড়িত, তাই সরকারি কাজের ব্যয় দীর্ঘসূত্রতার কারণে বেড়েই চলেছে। দেশের টাকা হালালভাবে যদি কর্মকর্তারা আয়-ব্যয় করে, তবে সবার জন্যই লাভ। কয়েকদিন পূর্বে পত্রিকায় দেখলাম, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে ৬টি ফেরি কেনা হয়েছে। যে ফেরিগুলোয় জোয়ার-ভাটার সময় বড় বড় কাভার্ডভ্যান উঠানো যায় না। কেমন অবস্থা? অভিজ্ঞতার অভাবে এ জাতীয় ঘটনা ঘটে থাকে। না, কোনো মতেই এ ঘটনা ক্ষমা করা যাবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় এ লোকদের আনতে হবে এবং তাদের নিকট থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।
দেশের সবচেয়ে খারাপ দৃষ্টান্ত হলো মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ভোটাধিকার হরণ করা। আমার পছন্দের প্রার্থীকে আমি ভোট দিতে পারব না- এটা খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। গত ১৫ বছর যাবৎ দিনের ভোট রাতে হচ্ছে। ভোট ছাড়াই গণনার সময় নির্দিষ্ট প্রার্থীকে জেতানোর জন্য ভুয়া ভোটের আয়োজন। দিনে-দুপুরে জাল ভোট দেয়া। একজনই ৪০-৪৫টা ভোট দেয়Ñ এ যেন বাংলাদেশে নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার। খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, আমাদের জেগে উঠতে হবে। আমাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে। আমরা এ দেশে অনেক আন্দোলন দেখেছি। অধিকারের আন্দোলন বৃথা যায় না। তাই জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। চোর-বাটপারদের রুখতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের নিয়তের ওপর রহমত নাজিল করেন। গত ৫০ বছরে সৎ, যোগ্য লোকের কাজের বরকত হাতে হাতে দিয়েছেন। প্রমাণ হলো এ সময়ে দেশের স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক-বীমা, স্বাস্থ্যসেবামূলক কাজ ক্লিনিক, হাসপাতাল, মিডিয়াজগৎসহ সমাজে বহু প্রতিষ্ঠান শহর থেকে গ্রামে গড়ে উঠেছে- সৎ লোকদের দ্বারা আল্লাহর মেহেরবানিতে। তাই বলতে চাই, কারো ওপর নির্ভর করে নয়, আল্লাহর রহমতে আমাদের সৎ ও যোগ্য লোকদের সমন্বয়ে এ দেশকে গড়তে এবং মানুষের ভোটাধিকারসহ যাবতীয় অধিকার আদায়ে আমাদেরই ভূমিকা রাখতে হবে। জনগণ এ ৫০ বছরে আমাদের সততা, যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করার সুযোগ পেয়েছে। তাদের আশ্বস্ত করতে পারলে এ দেশ আমাদের হাতেই মুক্তি পাবে, ইনশাআল্লাহ। দরকার মজবুত ঈমান, সাহস আর জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের অধিকার আদায়ে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া।
প্রতি নামাযে আমরা সূরা ফাতেহা পড়ি। শেষ দুই আয়াতে ইহুদি ও নাসারাদের থেকে মুক্তি পেতে চাইতে বলা হয়েছে। আজকে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের যুদ্ধে গোটা দুনিয়ার ভৌগোলিক অবস্থার পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সাম্প্রতিক ইরানের হামলায় ইসরাইল ও তাদের দোসরদের পিলে চমকানোর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গোটা দুনিয়ার ইসলামবিরোধীদের বুকে কম্পন শুরু হয়েছে আর ইসলামপ্রিয় জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোতে পারলে কোনো শক্তিই আমাদের পরাজিত করতে পারবে না। কবি আল্লামা ইকবালের ভাষায়, ‘সারা জাহান হায় হামারা’। এ উক্তি বাস্তবায়ন হবে, ইনশাআল্লাহ।
দেশের পাট ও চামড়াশিল্পের উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে নজর দিতে হবে। আমাদের পাটের উৎপাদন দিয়ে যুক্তরাজ্যে ডান্ডি গড়ে উঠেছে। ভারতীয় পাটকলগুলোর সমৃদ্ধি হয়েছে। আমরা পেছনে পড়ে আছি। অবশ্যই প্রতিকার হতে হবে। চামড়া ও পাটশিল্পের উন্নয়ন করে আমাদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আনার ব্যবস্থা করতে হবে। উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে চুরি-চামারি না করে সৎপথে দেশ চালানোর ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হতে হবে।
শেষে বলতে চাই, আর অনিয়ম নয়, আর ফাঁকিবাজি নয়, আর জনগণের অধিকার হরণ নয়, জনগণের সব অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েই আমাদের চলতে হবে। অতীতে কোনো স্বৈরাচার টিকতে পারেনি বা তারা তাদের অবৈধ সম্পদ সাথে নিয়ে মরতে পারেনি। আজকেও দলমত-জাতিধর্ম নির্বিশেষে জেগে উঠলে কোনো স্বৈরাচার টিকতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। জনগণের অধিকার আদায় হবেই। দেশটাকে আমরা জান্নাতের বাগিচার আদলে গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করলে মহান আল্লাহর সাহায্য আসতে দেরি হবে না। কুরআনের ভাষায়, নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুং কারিব। অর্থ : ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে সাহায্য ও আসন্ন বিজয়।’ (সুরা সফ : আয়াত-১৩)।
আমরা বিজয়ী হবই যদি প্রকৃত ঈমানদার হই। আমরা সৎ, যোগ্য ও মুমিন লোকের সাহসী ভূমিকার অপেক্ষায় রইলাম।
লেখক : সাবেক সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এ পাতার অন্যান্য খবর
এ বিভাগ বা পাতায় আর কোন সংবাদ, কবিতা বা অন্যকোন ধরণের লেখা পাওয়া যায়নি।