মাওলানা নিজামী ও সাঈদীকে বিচারের নামে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলুন : নূরুল ইসলাম বুলবুল

গত ১৯ এপ্রিল শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী মিরপুর অঞ্চলের দায়িত্বশীল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, সরকার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচারের নামে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। একই ধারাবাহিকতায় আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও বিশ্ববরেণ্য মোফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকেও হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কিন্তু সচেতন জনতা বরেণ্য জাতীয় নেতাদের হত্যাকাণ্ড কখনোই মেনে নেবে না। তিনি মাওলানা নিজামী ও আল্লামা সাঈদীকে বিচারের নামে হত্যার যড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকল স্তরের জনতার প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ বিপন্ন হবে।

গত ১৯ এপ্রিল শনিবার রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত এক দায়িত্বশীল সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মোবারক হোসাইন, মিরপুর পশ্চিম থানা আমীর মাহফুজুর রহমান, পল্লবী থানা আমীর আব্দুস সালাম, রূপনগর আমীর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, শাহ আলী আমীর মিজানুল হক, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সেক্রেটারি তামীম আহমদ, জামায়াত নেতা জসিম উদ্দীন ও আলাউদ্দীন মোল্লা প্রমুখ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী একজন বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন ও খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার। তিনি বিশ্বের শীর্ষ ৫শ’ ইসলামিক স্কলারের মধ্যে ৪৩তম। সর্বোপরি তিনি খ্যাতিমান পার্লামেন্টারিয়ান ও সফল মন্ত্রী। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি দু’টি মন্ত্রণালয়ে সততা, যোগ্যতা, দতা ও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। জরুরি সরকারের সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে অনেক মন্ত্রীকে জেলে যেতে হলেও অনেক চেষ্টার পরেও আমীরে জামায়াতসহ জামায়াতের দু’মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করে নির্মমভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। সরকার ইতোমধ্যেই আমীরে জামায়াতকে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেছে এবং অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও তাকে অনুরূপ দণ্ড দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমীরে জামায়াত যুদ্ধাপরাধী হলে তিনি ২ বার জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতেন না এবং সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে তার নিজ উপজেলায় জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা বিপুলভোটে বিজয়ীও হতেন না। তিনি সরকারের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একজন বিশ্ববরেণ্য মোফাসসিরে কুরআন। দেশ, জাতি ও ইসলামের জন্য তার অসমান্য অবদান ইতিহাসে স্বর্ণারে লেখা থাকবে। তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পরপর দু’বার পিরোজপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মূলত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার মাওলানা সাঈদীর জনপ্রিয়তায় ঈর্শ্বান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে। তাকে বিশাবালী ও ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা মামলায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করা হলেও ভিকটিম বিশাবালীর ভাই সুখরঞ্জন বালী ট্রাইব্যুনালে সাফাই সাী দিতে এসে অপহৃত হয়েছেন এবং ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার পর তার স্ত্রী বিরুদ্ধে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সেখানে মাওলানা সাঈদীর নাম নেই। যুদ্ধাপরাধী হলে তিনি পরপর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতেন না এবং সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে তার পুত্র মাসুদ সাঈদীও জনগণের ব্যাপক ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারতেন না। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। জাতীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে হত্যার অপচেষ্টা করা হলে জনগণ সরকারকে সমুচিত জবাব দেবে।

তিনি আরও বলেন, সরকার তিস্তাচুক্তির কথা বলে ভারতের হাতে সবকিছু তুলে দিলেও তাদের কাছ থেকে এক কপর্দকও আদায় করতে পারেনি। প্রতিবেশী রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন-কানুন উপো করে অভিন্ন নদীর উজানে একতরফা বাঁধ নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহার করে নিলেও সরকার তার প্রতিবাদ না করে রহস্যজনকভাবে নীরব থাকে। মূলত সরকারের ভ্রান্ত ও দাসসূলভ পররাষ্ট্রনীতির কারণেই তারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে আন্তর্জাতিক নদীর পানির নায্য হিস্যা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এই ব্যর্থ সরকারকে মতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার কায়েম করতে হবে। তিনি ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারের পতনের ল্েয দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে জনতার প্রতি আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।