সংবাদ শিরোনামঃ

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মাঠে নামছে জনগণ ** গুরুতর অসুস্থ ড. মাসুদের আবারো ১৪ দিনের রিমান্ড ** সরকার যুক্তি নয় শক্তি দেখাচ্ছে ** গণআন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সরকারের পতন ঘটানো হবে ** গাজায় দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি ** অবৈধ সরকার রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার করে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে : ছাত্রশিবির ** সংবিধানের কোথায়ও বলা নেই কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠী রাজনীতি করতে পারবে না ** মামলা করে চরম হয়রানি করা হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ** ধোঁকা খেলেন ইমরান খান? ** ক্যাট স্টিভেন্স থেকে ইউসুফ ইসলাম ** ব্যক্তি ও মুসলিম উম্মাহর উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে ** এরদোগান কেন মুসলিম বিশ্বের জন্য মডেল ** শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে জিডিপি থেকে ৫-৬ শতাংশ ব্যয় করা দরকার ** সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে ** ধেয়ে আসছে বান ** পদ্মার ভাঙনে কুষ্টিয়ার ৭ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন ** ড. মাসুদকে নির্যাতনের প্রতিবাদ॥ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি ** গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন, মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ ভাদ্র ১৪২১, ২ জিলক্বদ ১৪৩৫, ২৯ আগস্ট ২০১৪

সংবিধানের কোথায়ও বলা নেই কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠী রাজনীতি করতে পারবে না

॥ কামরুল হাসান॥
সংবিধানের কোথায়ও বলা নেই কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠী রাজনীতি করতে পারবে না। জামায়াত কোনো বায়বীয় ব্যাপার নয়, একটা বড় ফোর্স। তাদের একটা বড় সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলো থেকে দেখা গেছে বামদলগুলোর চেয়ে জামায়াতের সমর্থন অনেক বেশি। গত ২৩ আগস্ট একাত্তর টেলিভিশনের ৭১ সংযোগ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী  এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতেও তো বিজেপি, শিবসেনা, আরএসএস রাজনীতি করতে পারছে। কাউকে তাদের রাজনৈতিক তথা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বিরত রাখার কোনো সুযোগ সংবিধানে নেই। তাছাড়া জামায়াতের মতো একটি বড় শক্তিকে তাদের নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে দূরে ঠেলে দেয়ার পরিণতি ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, জামায়াত স্বনামে রাজনীতি করতে না পারলে দলটি দুটি পথ বেছে নিতে পারে। হয় তারা নতুনভাবে অগ্রসর হবে, অন্যথায় তারা ভিন্ন পন্থা নিতে পারে। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪২ বছর গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে থাকা জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে দেশের জন্য খারাপ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, শুধু ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নয় এর পরবর্তী সময়ে উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হয়ে যে ভূমিকা নিয়েছে তাতে আমি লজ্জিত হয়েছি। ৪২টি দলের মধ্যে ৮/৯টি দলের অংশগ্রহণে যে নির্বাচন হয়েছে তা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। তিনি বলেন, যেখানে সাংবিধানিক পথ বন্ধ হয়ে যায় সেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা হবে এটাই স্বাভাবিক। দাবি না মানলে সহিংসতা হবেই। সহিংসতা শুধু একটি দলই করে না, সহিংসতা আওয়ামী লীগও করে। সহিংসতা কারোরই কাম্য নয়। কিন্তু সাংবিধানিক সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য যে আন্দোলন হয়েছে তার নিন্দা করবো না।

মতিয়া-মেনন গ্রুপ প্রকাশ্যে শেখ মুজিবের চামড়া তুলে জুতা-ডুগডুগি বানানোর কথা বলেছিল

বর্তমান মতিয়া চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সময়ে মতিয়া-মেনন নামে একটি গ্রুপ ছিল। তারা প্রকাশ্যে শেখ মুজিবের চামড়া তুলে জুতা ও ডুগডুগি বানানোর কথা বলেছিলেন। ভাবুন, তাদের কী পরিমাণ ব্যক্তিত্ব ছিল ? এই সমস্ত লোকজন বঙ্গবন্ধুর জীবন হারাম করে দিয়েছে। আজকে তাদেরকে যতই মিনি মিনি দেখা যাক না কেন, আসলে তারা এত মিনি মিনি লোক নন। তারা ঘুমন্ত জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ভিসুভিয়াস। এখন এই ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি চুপচাপ রয়েছে।

সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম মাওলা রনি গত ২৫ আগস্ট সোমবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি’র ‘এই সময়’ টকশোতে এসব কথা বলেন।

গোলাম মাওলা রনি বলেন, ’৭৩ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষমতা হিমালয়ের মতো ছিল। সেই তুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা ১’শ ভাগের ১ ভাগ নয়।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চামড়া তুলে ডুগডুগি বাজাবেন। বর্তমান সময়ে দেশে এমন কোনো রাজনৈতিক নেতা নেই এ কথা বলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা তার ড্রাইভারের পশম ছেড়ার মতো ক্ষমতা বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কোনো নেতার নেই।

জাসদের সমালোচনা করে গোলাম মাওলা রনি বলেন, জাসদ ’৭৩-’৭৪ সালে কেমন ছিল বর্তমান প্রজন্ম তা কল্পনা করতে পারবে না। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যার কাছে আছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস তেমন কারো নেই। কিন্তু জাসদের আছে।

রনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সাহেবের বাড়িতে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাহেব আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, এখন বিএনপির যারা নেত্রীবৃন্দ রয়েছেন, তারা থানার সামনে গিয়ে ১০ বার হাত পা কাপতে কাপতে বলবেন, ধর আমাকে নয়তো মাটিতে পড়ে যাব। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে আগুন ধরিয়ে  দিয়েছে। তারাই à¦¬à¦²à§‡à¦›à§‡à¦¨Ñ à¦¸à§‡à¦¨à¦¾à¦¬à¦¾à¦¹à¦¿à¦¨à§€à¦° মধ্যে কোনো অফিসার থাকবে à¦¨à¦¾Ñ à¦¸à¦¬à¦¾à¦‡ সৈনিক। এর উদাহরণ ৭ নভেম্বরের বিপ্লব। বিপ্লবের সময় সেনাবাহিনীর ট্যাংকের উপর দাঁড়িয়ে ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ইনু। এই তথ্যমন্ত্রী সেই তথ্যমন্ত্রী নন। তার সাংগঠনিক সাহস ও বিপ্লবী ভাব কবি নজরুলের বিপ্লবী কবিতাকে ছাড়িয়ে গেছে। এই তথ্যমন্ত্রীকে কেউ যদি ছোট মনে করেন তাহলে তার মতো বোকা জমিনে নেই।

গোলাম মাওলা রনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষকে শেষ করে দিয়েছেন। অথচ বঙ্গবন্ধু কোনো শব্দ করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জাসদের লোকজন ঢাকা শহরে ১৬, ১৭ আগস্ট কোনো মিছিল করতে দেয়নি।

তিনি বলেন, ইতিহাস সব সময় সব কিছু নির্ধারণ করে দেয়। যেসব মানুষ বঙ্গবন্ধুর বংশোদ্ধার করেছে। যেসব মানুষ বঙ্গবন্ধুর নাম দেখলে ময়লা আবর্জনা নিক্ষেপ করত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আসার পরে ঢাকা শহরে পালানোর মতো জায়গা পাননি। তাকে প্রধানমন্ত্রী বাসা ভাড়া দেয়ার মতো কোনো বাড়িওয়ালা ছিল না। এখন প্রধানমন্ত্রীর পাশে এতো মানুষে তা তিনি কীভাবে গ্রহণ করবেন, আল্লাহপাক তাকে সেই বোধ দিয়েছে। অপেক্ষার সময় শেষ হলে বুঝা যেত কয়টা ধানে কয়টা চাল ও তুষ বের হয়।

সম্প্রচার নীতিমালা প্রসঙ্গে গোলাম মাওলা রনি আরো বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা সাংবাদিকদের প্রাপ্ত ছিল। মিডিয়া এখন আওয়ামী লীগের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের মতো হয়েছে। কারণ অধিকাংশ টেলিভিশনের লাইসেন্স, সম্পাদক এই আমলে হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের লোকজন হয়েছে।

সম্প্রচার ভীতিমালা

সম্প্রচার নীতিমালা নামে যা করা হচ্ছে তা নীতিমালা নয় এটা ভীতিমালা এমন মন্তব্য করেছেন বিএফইউজে সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ। তিনি আরো বলেন, সবার মধ্যে ভয় ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। জাতীয় ভাবে স্বীকৃত কণ্ঠরোধের জন্য এটা করা হচ্ছে। কোনো ভাবে এই নীতিমালা গ্রহণযোগ্য নয়।

২৬ আগস্ট এসএটিভি’র ‘লেট এডিশন’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শওকত মাহমুদ।

শওকত মাহমুদ বলেন, সম্প্রচার নীতিমালায় ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেয়া হয়েছে। আইনের পরে নীতিমালা হওয়া প্রয়োজন। সেখানে আইনের আগেই নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এই নীতিমালা জাতি মেনে নেবে না বলেই সর্বত্র প্রতিবাদ চলছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সংসদে এক ব্যক্তির হাতে সমস্ত ক্ষমতা। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন করার জন্য যে সুপারিশ কমিটি করা হয়েছিল, সেই কমিটির অধিকাংশ সদস্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে সমস্ত বিষয় পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং বিচারপতি অভিশংসনের যে ক্ষমতা সেখানে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন নেই। একব্যক্তির হাতে নির্ধারণ।

বিচারের রায় হয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা নারাজি পিটিশন দেননি

আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা কালেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে এবং সেই বিচারের রায় কার্যকরও হয়েছে। বিচারের রায় হয়ে যাওয়ার পর ওই হত্যাকাণ্ডে আরো কারো জড়িত থাকার বিষয়ে বা কোনো আসামি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারাজি পিটিশন দেননি। তিনি কখনো বলেননি যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় যাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এর বাইরেও আরো আসামি আছে। এখন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি ছাড়া আর কিছুই না। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ৭১ সংযোগে গত সোমবার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যেকোন নাগরিকই এই ঘটনার নিন্দা করা উচিত। এই ঘটনার বিচার হতে হবে। কোন রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করে রাজনীতি হতে পারে না। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রথম তদন্তে জজ মিয়ার নাম আসলো। কিন্তু পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যে তদন্ত করা হয়েছে তাতে তারেক রহমানের নাম ছিল না। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রথম যে তদন্ত হয় তাতেও তারেক রহমানের নাম আসেনি এবং অভিযুক্ত মুফতি হান্নান তারেক রহমানের নাম জড়িয়ে কোন স্টেটমেন্ট দেন নি।

এরপর বিচার শুরু হওয়ার পর ৬০ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর আবার মুফতি হান্নানকে রিমান্ডে নেয়ার পর এবার তিনি ২১ আগস্টের হামলায় তারেক রহমানের নাম জড়িয়ে স্টেটমেন্ট দিলেন। এ থেকেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে রাজনীতিকরণ শুরু হলো।

রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদ সম্পর্কে খারাপ চিন্তা-চেতনার উদয় হচ্ছে

বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনীতির নামে অপরাজনীতির মেলা চলছে। আমাদের রাজনীতিকবিদরা শ্রদ্ধার পরিবর্তে একে অপরকে হেয় এবং নিচে টেনে নামাতে ব্যস্ত থাকে। রাজনীতিবিদদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির ব্যক্তি রাজনৈতিক ফায়দা লুটে রাজনীতির পরিবর্তে সমাজে অপরাজনীতি ছড়াচ্ছে। যার ফলে সাধারণ জনমনে রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদ সম্পর্কে খারাপ চিন্তা-চেতনার উদয় হচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার চ্যানেল আইয়ের ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে রাজনৈতিক আবহাওয়া সঠিক মাত্রায় রাখা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে তাতে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে। প্রধান রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে কোনো সম্প্রতির রাজনীতি দেখা যায় না। এটা আমাদের রাজনীতিবিদদের একটি চরম দুর্বলতা। এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকে বিপথগামী করছে অসাধু রাজনীতিবিদরা।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতি হলো একটি রাষ্ট্রের মধ্যে সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া। পরস্পরে মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উত্তম পথ হলো রাজনীতি। কিন্তু বাংলাদেশে এর চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। রাজনীতিবিদদের এই মনমানসিকতা থেকে ফিরে দাঁড়াতে হবে দেশ এবং জনগণের কল্যাণের স্বার্থে।

সরকারের ভুলত্রুটি বের করে চোখে চোখে রাখাই হচ্ছে সাংবাদিকতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেছেন, পৃথিবীর সকল সরকার মিথ্যা বলে এবং জনগণ থেকে তথ্য লুকাতে চায়। আর সাংবাদিকতার দায়িত্ব হচ্ছে সেই মিথ্যার জায়গায় সত্য প্রতিষ্ঠা করে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দেওয়া। কাজেই সরকারের ভুলত্রুটি বের করে চোখে চোখে রাখাই হচ্ছে সাংবাদিকতা।

গত শনিবার বিকেলে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনে মতিউর রহমানের সঞ্চালনায় ‘ফ্রন্টলাইন’ নামক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে সরকারের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ফুটে ওঠে বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে। নীতিমালায় বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার কথা বলা হয়েছে কিন্তু বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ? সব সরকারের আমলেই বিটিভি অর্ধসত্য-অসত্য দিয়ে ভরা থাকে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম বিশ্লেষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, গণতন্ত্র হচ্ছে একটি মূল্যবোধ। যার মূল কথা হচ্ছে টলারেন্স। যেমন; সংসদে বিরোধী দল সরকারের সমালোচনা করে তুলোধুনো করবে। আর তারা যেন তুলোধুনা করতে পারে সে দায়িত্ব সরকারের। ঠিক তেমনি সাংবাদিকরা সরকারের ভুলত্রুটি ধরতে গিয়ে বিরুদ্ধ অবস্থানে থাকলেও নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও সরকারের। আর এর নামই গণতন্ত্র।

সম্প্রচার নীতিমালার মাধ্যমে জনগণের বাক স্বাধীনতা ক্ষুণœ হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই নীতিমালার মাধ্যমে বাক স্বাধীনতা ক্ষুণœ হবে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে যদি নীতিমালা চাওয়া হয়ে থাকলে আমি বলবো এটি আত্মঘাতী হয়েছে। সরকারের কাছে সাংবাদিকদের নীতিমালা চাওয়ার কথা নয়। আমি মনে করি, প্রত্যেকটি গণমাধ্যমের নিজস্ব নীতিমালা থাকবে।

তিনি মিডিয়াকে স্বাধীন রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারিনি, আমরা নিরপেক্ষ সংসদ প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি, স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠন করতে পারিনি, স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন গঠন করতেও ব্যর্থ হয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবো। আর মিডিয়া একটু একটু করে দাঁড়াচ্ছে তাতেও আমরা ঘাঁ দিচ্ছি। তাই এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।

বিশিষ্ট গণমাধ্যম বিশ্লেষক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, সাংবাদিকরা ভুল করলে সাত খুন মাফ তা বলবো না কিন্তু তাই বলে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে আটক করানো বা হাউসে পুলিশ ঢুকিয়ে দেওয়া কখনই কাম্য নয়। আমি মনে করি, কোথায় যেন সরকারের অস্থিরতা কাজ করছে। যে কারণে সম্প্রচার নীতিমালার মধ্যে এত গোলমাল। তারা গণমাধ্যমকে সামাল দিতে চাচ্ছে। একটু আলাপ-আলোচনা করলে মনে হয় এত সমস্যা হওয়ার কথা ছিলো না। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে কোনো সরকারই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে চায় না। অনেক সরকারই ক্ষমতায় এসে গণমাধ্যমের লাগাম টেনে ধরতে চেয়েছে। কিন্তু তাতে গণমাধ্যমেরই জয় হয়েছে।

গণমাধ্যমের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে পারলে অনেকের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সংসদে বিরোধী দল নেই। বিএনপি সংসদের বাইরে বিরোধী দল হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। এর ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে সরকার বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছে না।

গত ২২ আগস্ট শুক্রবার রাতে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ‘পূর্বাপর’ টকশোতে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আলোচার বিষয় ছিল ‘সম্প্রচার নীতিমালা একটা রাজনৈতিক পরিকল্পনা?

বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, গণমাধ্যম মূলত সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। গণমাধ্যমের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে পারলে অনেকের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে। এমনকি টকশোতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মতামত ব্যক্ত করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক কমিশন হয়েছে। কিন্তু কোনো কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। তবে, সম্প্রচার নীতিমালার জন্য যে কমিশন করা হয়ে তা কতটা স্বাধীন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

আ’লীগ সর্বপ্রথম দেশে সংসদ অধিবেশন বর্জনের রাজনীতি শুরু করেছেন

কলামিস্ট ও সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ গত ২৬ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে এসএটিভি’র ‘লেট এডিশন’ টকশোতে  বলেছেন, ’৭১ সালে এদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ বঙ্গবন্ধু বা শেখ মুজিব নাম ধরে ডাকেনি। তারা ভালোবেসে মজিবর মজিবর বলে ডাকতেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের গলার জোর অনেক বেশি, তারাই সর্বপ্রথম দেশে সংসদ অধিবেশন বর্জনের রাজনীতি শুরু করেছেন। ’৮০ সালে জাতীয় সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে ৪৪-৪৫ দিন হয়েছে, সেই অধিবেশনে একটা দিনও আ’লীগ অংশগ্রহণ করেনি। ২ জন ব্যক্তি ছাড়া সবাই বেতন-ভাতা নিয়েছেন। এ ২ জন à¦¬à¦²à§‡à¦›à§‡à¦¨Ñ à¦¯à§‡à¦¹à§‡à¦¤à§ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করিনি সেহেতু বেতনÑভাতা নেব না।

হরতাল প্রসঙ্গে মাহফুজ উল্লাহ বলেন, আ’লীগই ’৮০ সালে হরতালে বোমাবাজি শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রবাসে রয়েছেন এটি হয়তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিশ্বের বহু রাজনৈতিক নেতা দেশে নিজেকে নিরাপদ না মনে করে প্রবাসে থেকেছেন। তারেক রহমান হয়তো এই মুহূর্তে দেশে নিজের অস্তিত্ব নিরাপদ মনে করেন না।

মাহফুজুল্লাহ আরো বলেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী শেখ মুজিবের চামড়া তুলে ডুগডুগি বানাতে চেয়েছিলেন। তারা এ কথা এখন পর্যন্ত অস্বীকার করেননি। কিন্তু বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু চুপ করে ছিলেন। তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।