সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মানববন্ধনে নেতারা

মুক্ত চিন্তা বন্ধ করতেই মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক বিশিষ্ট সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী বলেছেন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলা গণতন্ত্রমনা মানুষ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক সমাজ, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের ওপর হামলা। নিজস্ব মতপ্রকাশ ও মুক্ত চিন্তা বন্ধ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারের লোকেরাই তার উপর হামলা চালিয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত পেশাজীবী নির্যাতন ও অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জিন্নাতুন নেসা তাহমিনা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর এম এ আজীজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তাজমেরী এস ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম, চাষী নজরুল ইসলাম, প্রকৌশলী আ ন হ আক্তার হোসাইন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএফইউজে’র সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।

মাহবুব উল্লাহর হামলাকারীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না-প্রশ্ন রেখে বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করতে কোনো মামলা লাগে না। পুলিশ এখন আমাদের বলছে মামলা করতে। মাহবুব উল্লাহ কারো পক্ষে কথা বলেননি। শুধু মতপ্রকাশ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, মাহবুব উল্লাহর ওপর কে হামলা করেছে, তা চিহ্নিত করা হচ্ছে না। আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই আমরা রাজপথে আছি, থাকবো যতক্ষণ পর্যন্ত না মাহবুব উল্লাহর হামলাকারী এবং সাগর-রুনি ও পেশাজীবীদের হত্যার বিচার না হচ্ছে। বিএফইউজে’র সাবেক এই নেতা বলেন, এ হামলা মুক্ত চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর হামলা। এটা শুধু লজ্জাজনকই নয় বেদনাদায়কও বটে। তিনি বলেন, রাজপথে রক্ত দিয়ে হলেও পেশাজীবীদের ওপর হামলা বন্ধ করা হবে। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা হবে।

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি শওকত মাহমুদ নিরাপত্তার মুখোশ খুলে রাজনৈতিক নেতা ও পেশাজীবীদের রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে জিহাদ করে জেলে গেছেন। আমরাও সত্য কথা বলবো এবং সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদও অব্যাহত থাকবে। তিনি ড. মাহবুব উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। শওকত মাহমুদ বলেন, ১৯৭০ সালে ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে (মাহবুব উল্লাহ) গ্রেফতার করা হয়েছিল। তখন শীর্ষ এক নেতা তার গ্রেফতারের পর বিবৃতি দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। তিনি নাম বলেননি আমিও নাম বলতে চাই না। শুধু এতটুকু বলতে চাই একথা বলায় অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার পর পরই তার ওপর হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে দুই হাজারের বেশি সাংবাদিকের ওপর নির্যাতন হয়েছে। তারা সত্য কথা বলায় নির্যাতিত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মতপ্রকাশ করতে পারে না। সত্য কথা, স্বাধীন মত প্রকাশ করলেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, যে দেশে শিক্ষকের উপর হামলা করা হয় সেদেশে শিক্ষা থাকে না। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলেও তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। নিজস্ব মতপ্রকাশ ও মুক্ত চিন্তা বন্ধ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।