সন্ত্রাসের প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ

অবিলম্বে জঙ্গি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে : ছাত্রশিবির

শিক্ষাঙ্গনে অব্যাহত সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি ও বিসিএস-এ ছাত্রলীগকে অনৈতিক সুবিধা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানীতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল : আজিজ ফারুকী

স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাস ও  নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং বিসিএস পরীক্ষায় ছাত্রলীগকে অনৈতিক সুবিধা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বক্তব্যের প্রতিবাদে গত ২৩ নভেম্বর রোববার রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। খিলগাঁও এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, হত্যা, হামলা, অস্ত্রবাজী, চাঁদাবাজি আর ধারাবাহিক নৃশংসতা চালিয়ে জঙ্গিপনার ষোলকলা পূরণ করেছে ছাত্রলীগ। অন্যদিকে এই নরঘাতকদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে এইচটি ইমামের মতো নৈতিকতাহীন ব্যক্তিরা। কিন্তু ছাত্রসমাজ তা কিছুতেই মেনে নিবেনা। অবিলম্বে জঙ্গি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পূর্বের বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি রেজাউল হক রিয়াজের নেতৃত্বে মিছিলটি খিলগাঁও এলাকা থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় শাখা সেক্রেটারি এম শামিম, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলামসহ শাখার বিভিন্ন  পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ছাত্রলীগ অস্ত্রনির্ভর জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে।  প্রশাসন ও পুলিশের সামনে প্রকাশ্য অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্যাম্পাসগুলোকে পরিণত করেছে মিনি ক্যান্টনমেন্টে। কিন্তু তাদের কেউ কিছু বলছে না। সরকার ও প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণেই প্রতিটি ক্যাম্পাসকে ছাত্রলীগ বার বার ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত করছে। এই নরঘাতকরা নিজের দলের নেতাকর্মীদের যেমন হত্যা করছে তেমনি প্রতিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদেরও হত্যা নির্যাতন করছে। ছাত্রলীগের ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতায় ক্যাম্পাসগুলো ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশবাসী। এতোকিছুর পরও নিয়ন্ত্রণ না করে উল্টো প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম তাদের অনৈতিকভাবে বিসিএস এ সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। তার এই ঘোষণা ছাত্রলীগের তাণ্ডবকে যেমন উৎসাহিত করেছে তেমনি মেধাবী ছাত্রদেরকে চরম অবমূল্যায়ন ও অপমান করা হয়েছে। কিন্তু ছাত্রসমাজ ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বা এইচটি ইমামের মতো ব্যক্তিদের অপমান সহ্য করবে না। অবিলম্বে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। এইচটি ইমামের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ছাত্রসমাজের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় ছাত্রসমাজ নিজেদের মেধার মূল্যায়ন ও জান-মালের নিরাপত্তা রক্ষার প্রশ্নে কাউকে ছাড় দিবে না। প্রয়োজনে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী ও তাদের দোষরদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করে প্রতিটি ক্যাম্পাসে প্রতিরোধ আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। আর তখন যে কোনো পরিস্থিতির জন্য ব্যর্থ প্রশাসনকেই দায়ভার বহন করতে হবে।            

ঢাকা মহানগরী পশ্চিম : রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম শাখা। শাখা সেক্রেটারি সাঈদুর রহমান স্বপনের নেতৃত্বে মিরপুর ১নং গোল চত্বর থেকে মিছিলটি বের হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন অফিস সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ফরাজী, স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক ওযেজ খান নুর সোহেল প্রমুখ।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ : কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মনির আহম্মেদের নেতৃত্বে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা। সকাল ১০টায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অনুষ্ঠিত এ মিছিল ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক শাহিন আহমেদ খান। এসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি খালেদ মাহমুদ, দক্ষিণের সেক্রেটারি সাদেক বিল্লাহসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা মহানগরী উত্তর : রাজধানীর বসুন্ধরা গেইটে মিছিল করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা। সকাল ৮ টায় অনুষ্ঠিত মিছিলটি রাজধানীর বসুন্ধরা গেট থেকে শুরু হয়ে কুড়িল চৌরাস্তায় গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক রাকিব মাহমুদ সজল ও ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি আনিসুর রহমান বিশ্বাস।