সংবাদ শিরোনামঃ

তীব্রতর হচ্ছে আন্দোলন ** পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে ** শক্তি নয় সমাধান সংলাপে ** টানা অবরোধ হরতালে অচল দেশ ** সংলাপে বসতে বহির্বিশ্বের প্রচণ্ড চাপে বেকায়দায় সরকার ** অনুমতি ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিযান ** আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকার টিকে আছে ** রাজনৈতিক দমন নিপীড়ন বন্ধ করুন ** আবারও দৃশ্যপটে বিদেশী কূটনীতিকরা ** অভিযান নামের নির্যাতন ** গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের অবরোধে অচল দেশ ** আল মাহমুদের কবিতা কার প্রেমে, কার সান্নিধ্যে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪২১, ১ রবিউস সানি ১৪৩৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকার টিকে আছে

॥ কামরুল হাসান॥
বর্তমান সরকারের কোনো জনসমর্থন নেই, সরকার জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। এ জন্যে কিছু মন্ত্রী অতিরিক্ত কথা বলেন।

গত ১৭ জানুয়ারি শনিবার রাতে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণে’র উপস্থাপনায় আরটিভি’র ‘আওয়ার ডেমোক্রেসি’ অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ’র সম্পাদক নূরুল কবীর।

নূরুল কবীর বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই হচ্ছে না। আ’লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা লড়ছে। বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব এই তিন বাহিনী প্রধানের যে বক্তব্য তা কোনো রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তার হতে পারে না। তারা রাজনৈতিকভাবে পার্টিজম, দৃষ্টিভঙ্গিগতভাবে ফ্যাসিস্ট এবং সাংস্কৃতিকভাবে অশ্লীল বক্তব্য দিয়েছেন। অথচ আ’লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত, বামপন্থী এবং যারা পার্টি করে না তাদের টাকায় এদের বেতন দেয়া হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইনে আদালতের বিচার ছাড়া কাউকে হত্যা করার বিধান নেই। যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রমাণ করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে। এটাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজ।

নূরুল কবীর বলেন, পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মানুষ যারা হত্যা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাউকে স্পটে গ্রেফতার করতে পারেনি। কারণ এরা রাজনৈতিক সুবিধাভোগী। এদেরকে ছাড়া সরকার চলতে পারেনা, সরকার ছাড়া এরা চলতে পারেনা। অর্থাৎ এদেশে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ’৯৬ সাল থেকে এটা দেখছি। আওয়ামী লীগের সংগ্রামের সময় শেরাটনের সামনে একবাসে আগুন দিয়ে ১৫ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে।

নূরুল কবীর বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যখনই দলীয় পক্ষপাতিত্ব, অশ্লীল, অগণতান্ত্রিক, নিয়ম বহির্ভূত এবং আইনবহির্ভূতভাবে বক্তৃতা দেয় এবং কাজ করে তখনই এসব প্রতিষ্ঠান জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে উঠতে থাকে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।

তিনি বলেন, ইতিহাসে কে কী ভূমিকা পালন করেছে বা করেছেন, কোর্ট তার নির্দেশ দিতে পারেননা। বিএনপির প্রতিষ্ঠতা জিয়াউর রহমান আইএসআইয়ে’র দালাল ছিলেন মানুষ এটা যেমন বিশ্বাস করে না। ঠিক তেমিন শেখ মুজিবুর রহমান রাজাকার ছিলেন এটাও কেউ বিশ্বাস করে না। কাউকে ফেরেশতা কিংবা শয়তান বললে ইতিহাসের কিছু যায় আসে না। ইতিহাস তার নিজের গতিতে চলবে। স্বাধীনতার সমস্ত আন্দোলনে নয়, চূড়ান্ত পর্বে শেখ মুজিবুর রহমান মহান নেতা।

নূরুল কবীর বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে বাকস্বাধীনতাও রক্ষা করতে হবে- এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিএনপি চেষ্টা করলেও তার মতামত আওয়ামী লীগের ওপর চাপাতে পারবে না। আর আওয়ামী লীগ চেষ্টা করলেও তার মতামত বিএনপির ওপর চাপাতে পারবে না। সমাজ বিভক্ত হয়ে আছে, দুঃখজনকভাবে এটাই সত্যি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অনির্বাচিত সরকার থাকা উচিত নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে বিশ্বাস করে না। সরকার যেমন ৫ জানুয়ারির নির্বাচন গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করবে, ঠিক তেমনি বিএনপি এটাকে গণতন্ত্রের হত্যা দিবস হিসেবে পালন করবে তা স্বাভাবিক। সরকার গঠন করার জন্যে যতটা আসন দরকার তা নিশ্চিত করেই এই নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

নূরুল কবীর বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। এর বিচার হওয়া দরকার। আওয়ামী লীগ ৬ বছর ক্ষমতায় এখন এর বিচার হচ্ছে। আরেকজন ক্ষমতায় আসবে বলে ‘ওই অজুহাতে’ নির্বাচন দেবেননা- এটা খোঁড়া যুক্তি ছাড়া কিছু নয়।

ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার স্থগিত থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগ-বিএনপি ক্ষমতার বাহিরে থেকে পেছনের সমস্যা সমাধান করুক। তাদের নিজেদের ইতিহাস ব্যাখ্যা সংক্রান্ত কিছু অজুহাত আছে যা চরমতম অগণতান্ত্রিক। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে না। কারণ বর্তমান সরকার স্বাভাবিকভাবে ক্ষমতা ছাড়ার যোগ্যতা হারিয়েছে।

বাংলাদেশ এখন উত্তাল

বর্তমানে বাংলাদেশ দুইভাগে বিভক্ত। একদল আওয়ামী লীগ এবং অন্যটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী। একদিকে বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি, অন্যদিকে সরকারি দলের শক্তি প্রদর্শনের খেলায় বাংলাদেশ এখন উত্তাল। এর ফলে জনগণকেই পোহাতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ। রাজনৈতিক দলগুলোর অগণতান্ত্রিক আচরণে বর্তমানে বাংলাদেশ চরম অস্বস্তিতে ভুগছে। তাই এমতাবস্থায় সরকারের পবিত্র দায়িত্ব হবে আলোচনার পথ উন্মুক্ত করা। ইহা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ বাংলাদেশের জন্য নেই।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন গত ১৬ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে চ্যানেল আইয়ের ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি জটিল ঝঞ্ঝাটের মধ্যে রয়েছে। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ পাওয়া যায় প্রতিদিন বেশিমাত্রায় গাড়ি এবং এর সাথে সাধারণ জনগণের আগুনে পোড়ার ঘটনা। এর ফলে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। অথচ সাধারণ জনগণের সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধ এবং সরকারি দলের মারমুখী ভূমিকা এই দুই রাজনৈতিক যাঁতাকলে সাধারণ জনগণ আজ পিষ্ঠ।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমস্ত শক্তি দিয়ে বিরোধী দলকে নিয়ন্ত্রণ করার একধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যার ফলশ্রুতি মোটামুটি হিসেব করে বলা যায় যে, সরকারের এমন আচরণ খোদ সরকারকেই নিয়ন্ত্রণহীন করে ফেলতে পারে। সরকার যদি তার এই নিয়ন্ত্রণ চরিত্র বজায় রাখে, তবে তা হবে অত্যন্ত বাড়াবাড়ি পদক্ষেপ। গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূলভিত্তি হলো সমঝোতা এবং এটা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের বর্তমান অশান্ত পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক তৎপরতা, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহল থেকে নানান প্রশ্নের সাথে চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেহেতু বাংলাদেশে জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে রয়েছে। এমতাবস্থায় জাতিসংঘের ব্যাপারে সরকারকে অত্যন্ত গভীর পর্যবেক্ষণ করা উচিত। কারণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের দায়িত্ব হলো সাধারণ জনগণকে নিরাপত্তা দেয়া। তাই সরকারকেই আলোচনার পথ বের করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতির ইতিহাসে কোনো সঙ্কটই জোর করে সমাধান হয়নি। সমঝোতার জন্য আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুই দলকেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, তবে প্রথম পদক্ষেপ সরকারের তরফ হতে আসতে হবে। যদি সরকারি দল শক্তি দিয়েই এর সমাধান চায়, তবে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ।

আমরা এলোমেলো পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি

গত কয়েক বছর ধরে নিম্নমধ্য মানের গণতান্ত্রিক পরিবেশে বসবাস করছি। এক দলের নেতাকর্মী অন্যদলের নেতাকর্মীর মুখ দেখতে চায় না। অর্থাৎ নিশ্চিহ্নকরণের রাজনীতিতে চলে এসেছি। যে দলীয় ক্ষমতায় থাকুক না কেন বিরোধী দলকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করে। এর ফলে রাজনীতিতে চরম সহিংস-সংঘাত চলে এসেছে। সব মিলে আমরা এলোমেলো পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।

গত ১৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে সাইফুল ইসলামের উপস্থাপনায় বৈশাখী টেলিভিশনে ‘জিরো আওয়ার’ অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সাদ’ত হোসেন।

সাদ’ত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি যেসব ভুল করছে সেসব ভুল তাদের কাছে সঠিক মনে হয়। তারা কৌশলের রাজনীতি করেন। কৌশল সফল করতে যা প্রয়োজন তাই করছেন। এর মধ্যে অনেক নিষ্ঠুরতা-অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে কারো কাছে মানবতাবোধ থাকে না। বরঞ্চ যারা সহিংসতা-সংঘর্ষ করে পার্টি তাদেরকে হিরো ভাবে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো সময়-ই নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে পারেনা। এরা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রাষ্ট্রযন্ত্র বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে বিরোধী দল মোকাবেলায়

সন্ত্রাস এবং বিভিন্ন অপকর্ম তৎপরতা বন্ধ করতে রাষ্ট্রের পক্ষ হতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তা পুরোপরি সফল নয়। তবে একেবারেই যে বিফল তাও বলা যাবে না। বর্তমানে রাষ্ট্র যন্ত্র সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসী তৎপরতা মোকাবেলায় যতটুকু ব্যবহার হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে বিরোধী দল মোকাবেলায়।

সময় টেলিভিশনের ‘সম্পাদকীয়’ অনুষ্ঠানে গত ১৮ জানুয়ারি রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফেরদৌস হোসেন এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অধ্যাপক ফেরদৌস হোসেন à¦¬à¦²à§‡à¦¨Ñ à¦¬à¦¾à¦‚à¦²à¦¾à¦¦à§‡à¦¶à§‡à¦° প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলসহ অনেক রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। বর্তমানে আন্দোলনের নামে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংস অবস্থা বিরাজ করছে। বিরোধী দলের পক্ষ হতে যথাক্রমে হরতাল এবং অবরোধের ধারাবাহিক কর্মসূচি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আর সরকার দলের পক্ষ হতে এই হরতাল- অবরোধ কর্মসূচি দমনের যত চেষ্টা। যার ফলশ্রুতিতে সারাদেশ আজ পেট্রোল বোমায় দগ্ধ। সরকারের পক্ষ হতে বিভিন্ন যৌথ অভিযান কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও এখন পর্যন্ত পেট্রোল বোমা এবং সন্ত্রাস দমনে তেমন কোনো আলোর মুখ দেখা যায়নি। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পোড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশে যে দলই ক্ষমতায় থাকুক সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড সবসময় বিরোধী দলীয় পক্ষ করে এবং একে দমন করার জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি চালায়, এটা চিরন্তন সত্য বাক্য। অর্থাৎ যখন বিএনপি ক্ষমতায় থাকে, তখন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। আবার আওয়ামী লীগ যখন সরকারি ক্ষমতায় থাকে, তখন বিরোধী দল বিএনপি সন্ত্রাসমূলক তৎপরতা চালায়। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির আবহাওয়া হুবহু এরকমই।

জনগণের ভোগান্তি ও মৃত্যু দিন দিন বেড়েই চলছে

বর্তমানে দেশের এই বৈরি মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল মনে করছে যে, তারা নিজ নিজ অবস্থানে সঠিক এবং সাধারণ জনগণের বিশাল সমর্থন তাদের রয়েছে। যদি এই অবস্থানে দুই দলই অনড় থাকে, তবে বাংলাদেশ পিছনের দিকে ধাবিত হবে এবং জনগণের ভোগান্তি ও মৃত্যু দিন দিন বেড়েই চলবে।

গত ১৮ জানুয়ারি রোববার চ্যানেল আইয়ের ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক একথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, বিরোধী দলের পক্ষ হতে দেয়া অবরোধ এবং হরতাল সারাদেশে মোটমুটি ভালোই প্রভাব ফেলেছে। এর দরুন সরকার বিরোধী দলের সহিংস আন্দোলন ঠেকাতে পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবি মোতায়েন করেছে। বিরোধী দলের ডাকা এই অবরোধ কমাতে সরকারের এই পদক্ষেপে হয়তো কিছুটা সহিংসতা কমলেও, এই পথে কোনোদিন সমাধান সম্ভব নয় এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও তা ভালো করে বুঝেন। অবরোধের ফলে সারা দেশে পেট্রোল বোমাসহ নানান সহিংসতার জন্ম দিয়েছে। তবে এই সহিংসতা এবং পেট্রোল বোমা যে বিএনপি প্রয়োগ করছে তারও কোনো হদিস এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে সরকারের পক্ষ হতে বলা হচ্ছে যে, এর পিছনে বিরোধী দল বিএনপির হাত রয়েছে। হরতাল-অবরোধের ফলে দেশের রাজনীতি, সামাজিক এবং অর্থনীতির চরম ক্ষতি হচ্ছে। দিন-দিন বাংলাদেশ সামনে নয়, বরং পিছনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অথচ রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অবস্থানে এখনও অনড়।

তিনি আরো বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশের রাজনীতি খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। বিরোধী দল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সরকার সেই আন্দোলন ঠেকাতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বসেছে। এমতাবস্থায় আন্দোলনের নামে দেশে যে সহিংসতা চলছে তাতে বিএনপির নামই বার বার উঠে আসছে। এর ফলে বিএনপির জনসমর্থন বাড়ছে না, বরং কমছে। অন্যদিকে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল তাদের নিজ অবস্থান েেথকে অনড়। ফলশ্রুতিতে সাধারণ নিরীহ মানুষই মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

আওয়ামী লীগের উচিত বিএনপির রাজনৈতিক

দাবিতে সাড়া দেয়া

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে বিএনপি একটি প্রধান রাজনৈতিক দল এবং এই দলের জনসমর্থন এখনও বর্তমান। শুধু মাত্র একটা অসুখের চিকিৎসা না করার জন্য বর্তমানে বাংলাদেশে হরতাল-অবরোধের মতো নানান উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উচিত হবে বিএনপির রাজনৈতিক দাবিসমূহের প্রতি সাড়া দেয়া।

গত ১৯ জানুয়ারি সোমবার সময় টেলিভিশনের ‘সম্পাদকীয়’ অনুষ্ঠানে সিনিয়র সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান একথা বলেন।

নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যে দল সরকার পরিচালনায় থাকে, তার দায়িত্ব সবসময় বিরোধী দলের চেয়ে এক ধাপ বেশি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের সরকার বিরোধী দলকে সংলাপের আহ্বান জানালেও বর্তমানে সরকার সংলাপের জন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে না।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য মহান অর্জন। মুক্তি যুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে এদেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতি অস্বাভাবিক অবস্থানে রয়েছে। তাই এই রাজনীতিতে আমাদের একটা বিশাল সমাধান দরকার এবং এই সমাধান বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথেই সম্ভব। কিন্তু বর্তমান সরকার বিএনপিকে বিরোধী দল হিসেবে কোনো সম্মান প্রদর্শন করছে না

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ এমন ্একটি টার্নিং পয়েন্টে আছে যে, এই মুহূর্তেই একটা জাতীয় সংলাপের প্রয়োজন এবং এই সংলাপই আমাদের জাতীয় সন্ধির দিকে নিয়ে যাবে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।