বিএফইউজে ও ডিইউজে’র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল

শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া না হলে সরকার পতনের আন্দোলন

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর সরকারি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে গত ২৪ জানুয়ারি শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র সভাপতি ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন বিএফইউজে ও ডিইউজে’র নেতৃবৃন্দ। একই সাথে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় দেশব্যাপী সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন শুরু করারও হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন নেতৃবৃন্দ। সভায় সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য-এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

গত ২৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার না হলে দেশব্যাপী সাংবাদিক সমাজ সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন শুরু করবে। আর এই আন্দোলন একবার শুরু হলে তা হবে সরকারের জন্য অপ্রতিরোধ্য।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি (বিএফইউজে) ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথভাবে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাবের ফটক থেকে শুরু হয়ে কদম ফোয়ারা মোড় হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে এসে আবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে শেষ হয়। বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি এম. আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বিএফইউজে’র  মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-স¤à¦ªà¦¾à¦¦à¦• কাদের গনি চৌধুরী, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ডিইউজে’র প্রচার সম্পাদক আকন আব্দুল মান্নান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিইউজে’র সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম প্রধান। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ভিন্নখাতে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে সরকার। তবে দেশবাসী যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে সরকারের পক্ষে জনগণের আন্দোলন ঠেকানোর উপায় নেই। তিনি বলেন, শওকত মাহমুদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সেলিম র্ভূঁইয়াকে মুক্তি দিতে হবে এবং আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। একই সাথে তিনি বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ারও দাবি জানান।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সংহতি জানিয়ে বলেন, এই সরকার যেভাবে মিডিয়ার ওপর দমন পীড়ন শুরু করেছেন তাতে মনে হয় তারা গণতন্ত্র চায় না। তিনি বলেন, দেশে এখন যা চলছে তা স্বৈরশাসক আইয়ুবের শাসন। তবে গণতন্ত্র নির্বাসনে পাঠিয়ে আর মিডিয়াকে ভয় দেখিয়ে সরকার ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। তিনি বলেন, মামলা দিয়ে আর পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করে দেশের মানুষকে শাসন করা যাবে না। তিনি আগামীতে প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বের হয়ে সুস্থ রাজনীতি চালু করারও পরামর্শ দেন।

বিএফইউজে’র মহাসচিব এমএ আজিজ বলেন, শওকত মাহমুদ শুধু সাংবাদিকদের নেতাই নন, তিনি একজন অত্যন্ত ভদ্র মানুষ, তার বিরুদ্ধে বাসে আগুন দেয়ার মতো মিথ্যা মামলা দেয়া অন্যায়। তিনি বলেন, সারাদেশে বিএফইউজে’র উদ্যোগে অঙ্গ ইউনিয়নগুলোয় কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আব্দুল হাই শিকদার বলেন, আমরা আশা করবো সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার করে  নেবেন। সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শওকত মাহমুদ সব সময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। আজ তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে পুরো সাংবাদিক সমাজকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।