সংবাদ শিরোনামঃ

স্থানীয় সরকার ধ্বংসের নীলনকশা ** কেন মানুষ অথৈ সাগর পাড়ি দিচ্ছে, দায় কার? ** দেশকে রাজনীতিহীন করার ষড়যন্ত্র ** গণতন্ত্রহীনতা দেশকে সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাবে ** আফগানিস্তানে শান্তির সম্ভাবনা ** গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে : বিচারপতি আব্দুর রউফ ** নরেন্দ্র মোদির সফর : বাংলাদেশের প্রত্যাশা! ** গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নতি কখনই সম্ভব নয় ** নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন ** সোনা নয়, সোনালী ফাঁস ** নিখোঁজ আর গুম ** জগতসেরা পর্যটক ইবনে বতুতা ** বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই ** কুষ্টিয়ায় পারিবারিক কলহে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, ৩ শাবান ১৪৩৬, ২২ মে ২০১৫

॥ খন্দকার মহিউদ্দীন আহমদ॥
কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হলো বহু প্রতীক্ষিত তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যকার শান্তি আলোচনা। গত ২ ও ৩ মে কাতার সরকারের মধ্যস্থতায় রাজধানী দোহার উত্তরে সমুদ্র তীরবর্তী শহর আলখোরে অনুষ্ঠিত আলোচনার শেষ পর্বে আলোচকরা হাসিমুখে বেরিয়ে এলেও অপেক্ষমাণ সংবাদ মাধ্যমকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি তারা। তবে দোহায় সাংবাদিক সম্মেলনে তালেবান প্রতিনিধি শের মোহাম্মদ আব্বাস স্টানেকজাই বলেন, সব বিদেশী সৈন্য চলে না যাওয়া পর্যন্ত শান্তিচুক্তি সম্ভব নয়। তালেবানদের চুক্তি না করার যুক্তির সাথে একমত পোষণ করেনি আফগান কর্তৃপক্ষ। আফগানদের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, বিদেশী সেনারা প্রায় সবই চলে গেছে। এখন যে ১০,০০০ (দশ হাজার) বিদেশী সৈন্য অবস্থান করছে তারা আফগান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছে। তালেবানরা হামলা বন্ধ করলে তারাও চলে যাবে।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত দোহা আলোচনা উভয় পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও তালেবানরা বিষয়টি দেখছে তাদের নৈতিক বিজয় হিসেবে। আফগান সরকারকে চাপের মুখে রেখে বাড়তি কিছু আদায় করার কৌশল হিসেবে আলোচনা শুরুর পূর্বে তারা অনেকটা হঠাৎ করেই পুরো আপগানিস্তানে সরকারি বাহিনীর উপর হামলা বাড়িয়ে দেয়। হামলায় উভয় পক্ষের ক্ষয়ক্ষতি হলেও  সরকারি বাহিনীর ক্ষতির পরিমাণ ছিলো অনেক বেশি। উল্লেখযোগ্য বিষয় এবারের আলোচনায় প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান ও চীনা প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। আফগান সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনায় ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির  চাচা কাইয়ুম কোচাই। ৮ সদস্য বিশিষ্ট তালেবান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন শের মোহাম্মদ আব্বাস। সামগ্রিক বিবেচনায় আফগানিস্তানে শান্তিচুক্তির প্রেক্ষাপট তৈরিতে প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। ফলাফল বিবেচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি না হলেও পারস্পরিক বোঝাপড়াও ভবিষ্যৎ আলোচনার ক্ষেত্র তৈরিতে এক কদম অগ্রগতি হয়েছে তা হয়তো কোনো পক্ষই অস্বীকার করবে না। কেননা, কয়েক বছর পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় কাতারে তালেবানদের রাজনৈতিক দফতর খোলা এবং এরই সূত্র ধরে পাকিস্তানে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা আফগান নেতাদের মুক্তির পর শান্তি আলোচনার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে তা বিফলেই গেছে। এই প্রথমবারের মতো চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে আফগান সঙ্কট নিরসনে সরাসরি আলোচনার সূত্রপাত হলো। কারজায়ী আমলে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হলেও উভয়পক্ষের আস্থা সঙ্কটের কারণে তা সফলতার মুখ দেখেনি। আফগানিস্তানে সরকার পরিবর্তন এবং ড. আশরাফ ঘানির মতো একজন মধ্যমপন্থী ব্যক্তির রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের পর অন্তত আলোচনার পথ উন্মুক্ত হলো।

২০১৫ সালের শুরুতে আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের পর কার্যত দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর উপর তালেবান বাহিনীর উপর্যুপরি হামলায় দিশেহারা দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এখন তালেবানরা দেশটির উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমসহ সব অঞ্চলেই তাদের উপস্থিতি বাড়িয়েছে। উপর্যুপরি তালেবান হামলার প্রেক্ষাপটে তড়িঘড়ি করে গত ২৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান প্রেসিডেন্ট ঘানি। যুক্তরাষ্ট্র সফরে তিনি প্রেসিডেন্ট ওবামাকে পুরোপুরি মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার না করার দাবি জানান। হোয়াইট হাউসে উভয় পক্ষের আলোচনা শেষে বলা হয়েছে যে, এই মুহূর্তে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে না। আফগান ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার সুযোগ গ্রহণ করেই কাতার শান্তি আলোচনায় তালেবান পক্ষ অনড় অবস্থান নেয় এবং চাপের কৌশল গ্রহণ করে। তালেবানদের অনড় অবস্থানে ভবিষ্যতে আলোচনার পথ রুদ্ধ করবে এমনটা বলার সময় আসেনি। কেননা, সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটা তালেবানদের কৌশলগত অবস্থান। তারা আলোচনায় বসবে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য করে আরো কিছু দাবি আদায় করে নিবে। এই সুযোগের অপেক্ষায় হয়তো রয়েছে তালেবান।

তালেবানদের বশে আনতে তালেবান ঘাঁটিতে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে আফগান সরকারি বাহিনী। বাল্ক প্রদেশের আন বুর্জ পর্বতমালায় এক হামলায় তালেবান বাহিনী পর্যুদস্ত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলীয় হেলমন্দ প্রদেশেও তালেবান বিরোধী একটি বড় অভিযান চালায় আফগান সরকার। ‘অপারেশন জুলফিকার’ নামের ঐ অভিযানে আফগান এয়ার ফোর্স ও সশস্ত্র বাহিনী পুরোপুরি অংশগ্রহণ করলেও তারা শতভাগ সফল হয়নি। ন্যাটো বাহিনীর সাহায্য ছাড়া পরিচালিত এই অভিযানে উভয় পক্ষের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ হলেও চূড়ান্ত বিজয় কোনো পক্ষই অর্জন করেনি।

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে তালেবানদের আগ্রাসী মনোভাব এবং উপর্যুপরি হামলায় বিস্মিত আফগান বাহিনী। আফগান ন্যাশনাল আর্মির বিভিন্ন সেনা ছাউনিতে তালেবানদের হামলার ধরন দেখে তারা দিগি¦à¦¦à¦¿à¦• দিশেহারা।  এসব হামলায় বাল্ক প্রদেশ, কুন্দুজ সাবায়ের, বাগলান ও শের-ই-পুল প্রদেশে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে সরকারি শিবিরে।

অনুমান করা হচ্ছে নিরাপত্তা পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করেই আফগান প্রেসিডেন্ট ভারতের সাহায্য কামনায় গত ২৮ এপ্রিল এক রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লি পৌঁছেন। আশরাফ ঘানি প্রথম দিল্লি সফরের সময় আফগানিস্তান ছিল তালেবানী হামলার প্রেক্ষাপটে লণ্ডভণ্ড। এমন বাস্তবতায় দিল্লি তাকে নিরাশ করেনি। দিল্লির সাথে কাবুলের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা চুক্তি রয়েছে যা নাকি কারজায়ী আমলেই সম্পাদিত। কাবুল দিল্লি নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়বস্তু আজ পর্যন্ত জনসম্মুখে প্রকাশ করা না হলেও ধারণা করা হচ্ছে দিল্লি কাবুলের নিরাপত্তা  বজায় রাখতে সামরিক সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আফগান প্রেসিডেন্টের দিল্লি সফরের সামরিক প্রাপ্তির বিষয়ে কোনো কিছু প্রকাশ করা না হলেও এই সফরের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রাপ্তি অনেক। ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে ভারতের বিনিয়োগ ২.২ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থের মধ্যে ভারতের সামরিক সহায়তাও রয়েছে। আফগানিস্তান খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ একটি দেশ। ভারত এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চায়। আশরাফ ঘানির দিল্লি সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ৫ বছরে ৯০ বিলিয়ন ডলারের পাইপ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তুর্কেমিনিস্তান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ঐ পাইপ লাইন এর এই মেগা প্রজেক্ট সম্পন্ন হলে লাভবান হবে প্রতিবেশী সব দেশই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনপুষ্ট এই বিশালাকার পাইপ লাইন প্রজেক্টের বাস্তবায়নে ভারতের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। ভারতের গ্যাস সঙ্কট মোকাবেলায় এই বিশালাকার পাইপ লাইনের ভূমিকা অপরিসীম। আফগানিস্তানে সাহায্য দানকারী দাতা দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান ৪র্থ। ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে ভারত বরাবরই আফগানিস্তানে তার ভূমিকা রেখে আসছে। বিষয়টি পাকিস্তানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট হওয়ায় পাকিস্তান এ বিষয়ে কখনও বিরূপ মন্তব্য করেনি। যদিও দিল্লি কাবুল নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে পাকিস্তান তার উদ্বেগের বিষয়টি পরিষ্কার করেছে।

এদিকে আফগান প্রেসিডেন্ট আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিল্ক রূটে আফগানিস্তান সংযুক্ত করার প্রস্তাব করেছেন। পররাষ্ট্র বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি স্পর্শকাতর ‘সিল্ক রূট’-এ সংযুক্তির ঘোষণা দেন। তার মতামত হচ্ছে আফগানিস্তানের অর্থনীতির গতিশীলতা অর্জনে সিল্করূটের কোনো বিকল্প নেই। চিন, ভারত ও ইরানের সহযোগিতা ছাড়া আফগান অর্থনীতির উন্নয়ন সম্ভব নয় তাই তিনি পাকিস্তানকে বাদ দিয়েই অর্থনীতির উন্নয়নের নতুন কাঠামোর ঘোষণা দিয়েছেন। আফগানিস্তানের দুর্গম বাদাখসান প্রদেশের সাথে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সিল্ক রোড সংযুক্ত করার জন্য আফগান সরকার ইতোমধ্যে চীনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। প্রস্তাবিত সিল্ক রোড নির্মাণে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ইতোমধ্যে অর্থায়ন শুরু করেছে এবং ৪৪ কিলোমিটারের রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে।  এছাড়া ১০৮ কিলোমিটারের কাজ চলছে তবে চীন সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে আরও ৩০৮ কিলোমিটারের রাস্তা তৈরি করতে হবে। আফগান সরকার এই ৩০৮ কিলোমিটারের রাস্তা তৈরির জন্য চীনা অর্থায়নে একটি চুক্তিও করেছে। বিষয়টি প্রতিবেশী পাকিস্তানের জন্য স্পর্শকাতর হলেও পাকিস্তান প্রকাশ্যে কিছুই বলেনি। রাজনৈতিক ও সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে পাকিস্তান বিষয়টি ভালোভাবে নাও গ্রহণ করতে পারে। কেননা পাকিস্তানের বন্ধু ও প্রতিবেশী চীন এর সাথে পাকিস্তানের নাকের ডগায় আফগানিস্তান স্পর্শকাতর সিল্ক রূটের সম্প্রসারণের কাজে হাত দিয়েছে তাও পাকিস্তানকে মাইনাস করে। বিষয়টি পাকিস্তানের জন্য আত্মমর্যাদার লড়াই হয়ে উঠতে পারে। এমন বিবেচনায় আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি ঘটার সম্ভাবনাও রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিল্ক রূট সম্প্রসারণ প্রকল্পে পাকিস্তানকে মাইনাস করে পাকিস্তানের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা হলে পাকিস্তান তা মেনে নেবে না। অন্যদিকে চীন যখন এই প্রকল্পে আগে থেকেই সংযুক্ত হয়েছে সেই বিবেচনায় পাকিস্তানকে চীনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ‘ওভার রিএ্যাক্ট’ করার বিষয়টি চীন ভালোভাবে দেখবে না। তবে চীন ও ভারতের সাথে আফগানিস্তানের সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন পাকিস্তানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠবে অন্তত বাস্তবতা তাই বলে।

পরিস্থিতি যাইহোক না কেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের বিষয়ে আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠীর স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা এবং চীন ও ভারতের কাছাকাছি অবস্থানের কারণেও পুরো বিষয়টি ভিন্ন আঙ্গিকে বিচার বিশ্লেষণেরও প্রয়োজন রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের যে উন্নয়ন ঘটেছে তাও বিবেচনায় আনতে হবে। পাশাপাশি উভয় নেতার পারস্পরিক সম্পর্ক বর্তমানে যে উচ্চতায় পৌঁছেছে সেখানে ব্যক্তিগত রসায়ন এর বিচারও রয়েছে। সেই বিবেচনায়ও চীন এই প্রকল্পে ভারতের সহযোগিতার বিপক্ষে যাবে না, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। সুতরাং পাকিস্তানকেই তার স্বার্থ বিবেচনায় সুসম্পর্কের হাত বাড়াতে হবে।

আফগানিস্তান বিষয়ে তালেবানদের উৎকণ্ঠা কতটুকু বাস্তবসম্মত তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। ন্যাটো সৈন্য বাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর বিষয়টি নিয়ে তালেবানদের কালক্ষেপণ হিতে বিপরীত হতে পারে। কেননা যুদ্ধ বিগ্রহে তালেবানরাও ক্লান্ত। সাধারণ আফগানরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়। চায় দারিদ্র্যমুক্ত আফগানিস্তান। অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা এখন সময়ের চূড়ান্ত দাবি। এ বিষয় উপেক্ষা করলে সাধারণ জনগণ বেকে বসতে পারে। পাকিস্তানকে তার নিরাপত্তা বিষয়ে ভাবতে হবে তাতে সন্দেহ নেই। পাশাপাশি আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে তালেবান ও আফগান সরকারের সাথে একযোগে কাজ করার বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যু পাকিস্তানকেই নিশ্চিত করতে হবে। আফগানিস্তানে স্থিতিশীল সরকার দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তির লক্ষ্যেই প্রয়োজন। এখন এ বিষয়ে সকল পক্ষকেই আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।  তালেবান নেতাদের একাংশের দোহায় চাকচিক্যময় অবস্থান এবং কাতার সরকারের রাজনৈতিক সমর্থন ও সহযোগিতা বৃহত্তর শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানকেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে শান্তি আলোচনা আবারও শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।