সংবাদ শিরোনামঃ

আগাম নির্বাচন দিতে চায় সরকার ** খালেদা জিয়ার সাথে জামায়াত নেতাদের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ** সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী’র মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল ** আওয়ামী সরকারের অধীনে নির্বাচন বেগম জিয়ার প্রত্যাখ্যান ** দেশের স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার থাকতে হবে : শিবির সভাপতি ** বাড়ছে কোটিপতি বাড়ছে বৈষম্য ** সকল ক্ষেত্রে একটি বন্ধ্যাত্ব পরিস্থিতি বিরাজ করছে ** নৈতিক অবক্ষয় প্রধান কারণ ** শুরুর কথা শুনুন ** ফাঁসির মঞ্চে মর্দে মুমিন যুগে যুগে ** ফেলানী হত্যার বিচার না মেগাসিরিয়াল! ** ধেয়ে আসছে বন্যা॥ পানিবন্দী লাখ লাখ মানুষ ** সরকারি গাছ কেটে কর্মকর্তার শখের ফুল বাগান **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪২২, ১৪ শাওয়াল ১৪৩৬, ৩১ জুলাই ২০১৫

ফেলানী হত্যার বিচার না মেগাসিরিয়াল!

এম কে দোলন বিশ্বাস
বাংলাদেশের পনেরো বছর বয়সী কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার পুনর্বিচারেও অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে কাক্সিত বিচার না হওয়ায় ােভ প্রকাশ করেছেন ফেলানীর স্বজন, প্রতিবেশী, মানবাধিকার সংগঠন ও বিশিষ্টজনরা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ গণমাধ্যমে জানান, ‘ফেলানী হত্যার পুনর্বিচারের রায়ে আমরা মর্মাহত।’ ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু জানিয়েছেন, ‘ভারত সরকার বিচারের নামে তামাশা করেছে।’ অন্যদিকে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুম একে ‘লোক দেখানো বিচার’ ও ‘ভারতীয় সংবিধানের পরিপন্থী’ বলে অভিহিত করেছে। এ রায়কে আদালতে চ্যালেঞ্জ করবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। কুড়িগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন জানিয়েছেন, ‘এ রায় ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

বিচার নিয়ে কে কী বলছে সেটা বড় কথা নয়। তবে ফেলানী হত্যার বিচারের নামে বিশ্ব সত্যি দেখল ‘কিরণ মালা’, ‘বোঝে না সে বোঝে না’, ইত্যাদি আগ্রাসী ভারতীয় মেগাসিরিয়ালের মতই বন্ধু দেশের নাগরিক হত্যার বিচারের নামে ‘হোয়াইটওয়াস’।

গত ২ জুলাই ভারতের কোচবিহারে বিএসএফের ১৮১ ব্যাটালিয়নের সদরদফতরের সোনারি ক্যাম্পে আদালত বসিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা করে কোর্ট মার্শালের সমতুল্য বিএসএফের নিজস্ব আদালত রায়ে অমিয় ঘোষকে খালাস দেন। বিএসএফের পাঁচ সদস্যের নিজস্ব আদালতের প্রধান ছিলেন বিএসএফ আধিকারিক সি পি ত্রিবেদী।

আমরা বলকে চাই, পুনর্বিচারেও ন্যায়বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার। এ বিচার লোক দেখানো ছিল। এ বিচার মানবাধিকারকে সমুন্নত করেনি। এ রায় হতাশাব্যঞ্জক। তবে এ রায় অপ্রত্যাশিত ছিল না। কারণ যে আদালত আগে রায় দিয়েছেন সেই একই আদালত এবারও বিচার করেছেন, তাই রায় বদলাবে এমন আশা করার সুযোগ ছিল না। এটা খুবই দুঃখজনক, ফেলানী ন্যায়বিচার পেল না।

পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন রিভিউতে শুধু আইনের ভিত্তিতেই কথা বলতে হয়। সেখানে ফেলানীর পে শক্তিশালী আইনজীবী ছিল না, রাষ্ট্রও কোনো উচ্চ মতাসম্পন্ন আইনজীবীর দল পাঠায়নি। আর যে তদন্তে এ বিচার হয়েছে তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কেননা ফেলানী গুলি খেয়ে মরেছে, তাকে কেউ না কেউ তো মেরেছে, তদন্তে সেটা উঠে আসা উচিত ছিল। সুতরাং আমরা মনে করি, পুনঃতদন্ত করে পুনর্বিচার হলে ন্যায়বিচার হতে পারত। তাছাড়া ফেলানীর পে সাীও ছিল দুর্বল আর সাীদের ভাষাগত ব্যবধানের কারণে তাদের বক্তব্য হুবহু অনুবাদ হয়েছে কিনা ওসবই প্রশ্নও থেকে যায়। সর্বোপরি এ রিভিউ ছিল আইওয়াশ। এ বিচারের বিষয়টি ছিল লোক দেখানো। এখানে স্পষ্টই মানবাধিকার ও শিশু অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। জানা যায়, ৩ জুলাই সকাল ৭টার দিকে রায়ের খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফেলানীর বাবা-মা। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দণি রামখানা ইউনিয়নের বানারভিটা গ্রামের নুরুল ইসলাম প্রায় ১০ বছর ধরে দিল্লিতে ছিলেন। সেখানে তার সঙ্গেই থাকত ফেলানী। দেশে বিয়ে ঠিক হওয়ায় ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবার সঙ্গে ফেরার পথে কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় আটকে যায় ফেলানীর। এতে ভয়ে চিৎকার দিলে বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং পরে লাশ নিয়ে যায়।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দিষ্ট করে বলেছে কোথাও কোনো অন্যায় অবিচার হলে যে কেউ প্রতিবাদ করে আদালতে আসতে পারে। আগেকার ধারণা পাল্টে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। এর আগেও  ফেলানীর পরিবার একবার ভারতীয় আদালতে ফেলানী হত্যা নিয়ে মামলা করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তখন ফেলানীর পরিবারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি আর সহযোগিতা তারা পাননি। যদিও ভারতের সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেকের জীবনের অধিকার রয়েছে। শুধু ভারতের নাগরিক নয়, দেশের মাটিতে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির। এেেত্র সেটাও লঙ্ঘিত হয়েছে।

আমাদের প্রশ্ন, ‘এটা কে ঠিক করল যে শুধুমাত্র অমিয় ঘোষই অভিযুক্ত যেখানে ফেলানী মারা যায়, সেখান দিয়ে এর আগে আরও চল্লিশজন বেড়া পেরিয়েছে, বিএসএফ-বিজিবি টাকা নিয়েছে সবার কাছ থেকে। এটা ওয়েল রেকর্ডেড। তাই যারা সেই বেআইনি কাজের অনুমতি দিল ঘোষের সহকর্মী বা সিনিয়র অফিসাররা তারা কেনো দোষী হবেন না’।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর অনন্তপুর সীমান্তে ৯৪৭নং আন্তর্জাতিক পিলার ৩নং সাব পিলারের পাশ দিয়ে মই বেয়ে কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় টহলরত চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। সীমান্তে মই বেয়ে কাঁটাতারের বেড়া পেরোনোর সময় বিএসএফের ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের হাবিলদার অমিয় ঘোষ খুব কাছ থেকে তার ইনসাস ৫.৫৬ মিলিমিটার বন্দুক থেকে বুকে গুলি করে ফেলানীর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

ফেলানীকে হত্যা করে বিএসএফ সদস্যরা কাঁটাতারের ওপর ফেলানীর লাশ কয়েক ঘণ্টা ঝুলে রেখেছিল। কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি ওঠে।

বাংলাদেশ সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে উঠলে ঘটনার এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট কোচবিহার জেলার সোনারি এলাকায় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদরদফতরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। সাী দিতে এদেশ থেকে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম, মামা আ. হানিফ ১৮ আগস্ট লালমনিরহাট বুড়িমারী সীমান্ত দিয়ে ভারতের কুচবিহারে যান। ১৯ আগস্ট তারা ওই কোর্টে সাী দেন। আসাম ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (কমিউনিকেশনস) সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারক বেঞ্চ কঠোর গোপনীয়তায় এ বিচার পরিচালনা শেষে ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। রায় প্রত্যাখ্যান করে ১১ সেপ্টেম্বর ফেলানীর বাবা ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সে দেশের সরকারকে ন্যায়বিচারের আশায় পত্র দেন। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু হলেও ২৬ সেপ্টেম্বর আকস্মিকভাবে আদালত মুলতবি করা হয়। আবারো ১৭ নভেম্বর পুনর্বিচারের কার্যক্রম শুরু হলে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২২ নভেম্বর তা স্থগিত করা হয়। এ বছরের ২৫ মার্চ পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও বিএসএফ-এর সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অসুস্থ থাকায় তা হয়নি। অবশেষে ওই আদালতে তা শুরু হয় গত ৩০ জুন।

নিহত হওয়ার পর থেকে বিচার দাবিতে প্রতিবছর ফেলানীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে আসছে তার স্বজনরা। এ উপলে পারিবারিকভাবে আয়োজন করা হয় মিলাদ মাহফিলের। এ ছাড়া ‘আলোর আশা পাঠশালা’ সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধ দিবস ঘোষণার দাবিতে মোমবাতি প্রজ্বলন, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। ফেলানীর পরিবার নিজেদের সামর্থ্যের ওপর বিবেচনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সরকারিভাবে কারও কোনো খোঁজখবর নেই।

ফেলানী হত্যাকাণ্ড নিয়ে কানাডা প্রবাসী লেখক সাইফুলাহ মাহমুদ দুলাল ‘কাঁটাতারে ঝুলে আছে বাংলাদেশ’ শিরোনামের কবিতাটিতে তিনি লিখেছেন- মাটি ভিজে ফোঁটায় ফোঁটায় করলে তুমি কি হরণ/আমার বোনের রক্ত ঝরে ঘাসের গায়ে শিহরণ!/বন্ধুবেশী তাকে তাকে বন্দুকের মুখ সজ্জিত/অমানবিক মানবতা তুমি কি খুব লজ্জিত?/হয়তো সে বোন এটাসেটার বিনিময়ে ডিম আনতো/গুলি খেয়ে রাঙা হলো কুড়িগ্রামের সীমান্ত/কাঁটাতারে, বাঁশে বাঁধা ঝুলন্ত বোন ফেলানি/দাদাগিরি; তাও কমেনি দীপু মনির তেলানি!/তাই আদালত রায় দিলো হায় খালাস পেলো নির্দোষ/নয় খুনী সে, বিএসএফের বীর সেনানি অমীয় ঘোষ। (তথ্য সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-০৭.০৯.১৩) 

ভারত থেকে হরহামেশায় মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে পাঠানোর বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বিএসএফের সদস্যদের  বিরুদ্ধে। ওইসব মাদক আমাদের যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাদক বহনকারী কেউ বিএসএফ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়েছে- এমন কথা শোনা যায়নি। অথচ বিভিন্ন ঠুনকো অভিযোগে পাখির মতো গুলি করে বাংলাদেশী নিরীহ মানুষ মারা হচ্ছে। এসব বিষয়ের ন্যায়সঙ্গত সুরাহা হওয়া দরকার। নয়তো দু’দেশের জনগণের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর হবে না। ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার না হলে বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই দুদেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সীমান্তে অহরহ বাংলাদেশী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও ফেলানী হত্যার বিচারের দাবি এতটাই জোরালো ছিল যে শেষপর্যন্ত বিএসএফ বিচারকার্য শুরু করতে বাধ্য হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত এই বিচার যে এতটাই প্রহসনে পরিণত হবে তা কেউই কল্পনা করতে পারেনি।

আসামিদের শনাক্ত করতে না পারাটা ভারতের আদালতের ব্যর্থতা। কিন্তু ঘটনাতো মিথ্যা নয়। ফেলানীর লাশ যে কাঁটা তারে ঝুলে ছিল এটাতো সত্যি। বাইরের কেউ এসেতো তাকে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখেনি। অন্য কেউ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এমনটি যদি সত্য হয় তাহলে তখন বিএসএফের ভূমিকা কি ছিল। এসব প্রশ্নের উত্তর কী বিএসএফ তথা ভারতের কাছে আছে। ফেলানী মারা যাওয়ার পর তার স্বজনদের আহাজারি করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। কিন্তু বিএসএফের প থেকে যখন বিচারের কথা শোনানো হয়েছিল তখন তার স্বজনরা স্বাভাবিক ভাবেই আশায় বুক বেধেছিল এই ভেবে যে, নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের অন্তত বিচার হয়তো পাচ্ছে; কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটিও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ায় এখন আর সান্ত্বনার জায়গা বলতে তাদের কিছুই রইলো না। ভারত প্রহসনের এই বিচার করে কী অর্জন করতে চাইছে তা আমাদের  মোটেও বোধগম্য নয়। তবে এ বিচারের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আস্থার সঙ্কট যে আরও বাড়বে তাতে সন্দেহ নেই। ভারত যে সব সময় আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এই প্রহসনের বিচারও তারই আরেকটি প্রমাণ।  ফেলানী বিচারের েেত্র বিজিবির বড় ধরনের ভুমিকা ছিল। ফেলানী হত্যার আসামিরা বেকসুর খালাস পাওয়ায় এখন বিজিবির ভূমিকা কী হবে তা ঠিক করতে হবে।

ফেলানী তার স্বজনদের কাছে আর কখনও ফিরে আসবে না এটা ঠিক। কিন্তু নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হলে সীমান্তে বিএসএফ খেয়াল খুশি আচরণ করতে পারতো না। সীমান্তে যেভাবে পাখির মতো অহরহ নিরীহ গরু ব্যবসায়ীদের হত্যা করা হয় সে কাজটি থেকে তারা নিবৃত হতো। আর যাই হোক কারও ওপর গুলিবর্ষণ করার আগে কিছুটা হলেও ভেবে দেখতো। গুলিবর্ষণ না করেও যে ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেগুলোর েেত্র তারা আরও সচেতন হতো। ফেলানীর হত্যাকারীদের বেকসুর খালাস দিয়ে প্রকারান্তরে বিএসএফকেই উৎসাহিত করা হয়েছে। তারা পরবর্তীতে এর চেয়ে জঘন্যতম ঘটনা ঘটাতেও কুণ্ঠিত হবে না। এভাবে অন্তত প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক টিকে থাকতে পারে না। এেেত্র আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে আরও প্রতিক্রিয়াশীল হতে হবে।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। এ কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ সব সময়ই চায় ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। তবে ভারত এ ব্যাপারে কতটা আন্তরিক সেটাও বিবেচনার বিষয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মানুষ হত্যা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এটিকে মৃত্যুপ্রাচীর বলে অভিহিত করছেন। গণমাধ্যমেও ভারতের দেয়া কাঁটাতারের বেড়াকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ রক্ত ঝরানো বেড়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতার ৪৪ বছর উদযাপন করেছে বাংলাদেশ। অথচ এখনও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশীদের লাশ পড়া বন্ধ হয়নি। ভারতের সহযোগিতায় অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ভারতের হাতেই বারবার লঙ্ঘিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে, এটি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়। বরং লজ্জাজনকও বটে।

লেখক : সাংবাদিক।

ই-মেইল - dulonbiswas@gmail.com

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।