সংবাদ শিরোনামঃ

আন্তর্জাতিক চাপে সরকার ** গুমের সঙ্গে এই সরকার জড়িত ** যেমন কর্ম তেমন ফল ** শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে ** উৎপাদন খরচ কমলেও বাড়লো বিদ্যুতের দাম ** গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : বিএনপি ** প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিক্ষোভ, উত্তাল মালয়েশিয়া ** দেশ আতঙ্কিত অথচ সরকার বলছে শান্তিপূর্ণ ** রাষ্ট্র ও সরকারকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ** অনুভূতির সাগরে কুরআনের দেশে ** গুম দিবসও গুম হয়ে গেলো! ** ছোটদের বন্ধু নজরুল ** বন্যায় সারাদেশে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি অপর্যাপ্ত সরকারি সাহায্য ** রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা ** যশোরের শার্শায় বাণিজ্যিকভাবে বেদানা চাষ **

ঢাকা, শুক্রবার, ২০ ভাদ্র ১৪২২, ১৯ জিলকদ ১৪৩৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগ দাবিতে কুয়ালালামপুরের সেন্ট্রাল মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভে যোগ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ (মাঝে)। রয়টার্স

॥ ফেরদৌস আহমদ ভূইয়া ॥
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নের মডেল মালয়েশিয়ায় হঠাৎ করে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হাজার হাজার মানুষ। অবশ্য বিরোধীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখেও পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্তেই অনড় রয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক। একইসঙ্গে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ভুলে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তিনি। গত ৩১ আগস্ট সোমবার মালয়েশিয়ার জাতীয় দিবসে এসব কথা বলেন নাজিব। এসময় সমগ্র জাতিকে এক হয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এদিন স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি আরও বলেন, সবাই এক না হলে কষ্টে গড়া মালয়েশিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।

পৃথিবীর মানচিত্রে নিজস্ব ভূখণ্ড নিয়ে মালয় জাতির আত্মপ্রকাশ ঘটে ৩১ আগস্ট। ১৯৫৭ সালের ৩১ আগস্ট ব্রিটিশদের কাছ থেকে রক্তপাতহীন প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতা অর্জন করে মালয়েশিয়া। দণি-পূর্ব এশিয়ার একমাত্র ফেডারেল রাষ্ট্র হচ্ছে মালয়েশিয়া। ওয়েস্টমিনিস্টার সংসদীয় পদ্ধতির সরকার দ্বারা দেশটি পরিচালিত। দেশটির জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ বাদায়ীকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তারপর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক ২০০৯ সালে দেশটির ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাসীন হয়েছেন। ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) হচ্ছে মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক জোট। নাজিব রাজ্জাক এ জোটের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী।

দেশটির আয়তন ৩ লাখ ২৯ হাজার বর্গকিলোমিটার, লোকসংখ্যা মাত্র ৩ কোটি। মালয়েশিয়ার অর্থনীতি এশিয়ার মধ্যে ৬ষ্ঠ আর বিশ্বের ২০তম। মালয়েশিয়ার মুদ্রার নাম রিঙ্গিত আর মাথাপিছু আয় ২৫ হাজার মার্কিন ডলার। এশিয়ার মধ্যে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল, ১৯৫৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্বির হার ৬ দশমিক ৫।

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগসহ স্বচ্ছ নির্বাচন, দুর্নীতিমুক্ত সরকার, অর্থনৈতিক সুরা ও প্রতিবাদের অধিকার আদায়ের দাবিতে ২৯ আগস্ট শনিবার সকাল থেকে আন্দোলনে নেমেছে দেশটির পাঁচটি রাজনৈতিক দল। শনি ও রোববার টানা দু’দিন নাজিবের পদত্যাগ দাবিতে কুয়ালালামপুরে হাজার হাজার জনগণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। মালয়েশিয়ার আরও কয়েকটি শহরে বিক্ষোভের খবর মিলেছে। মালাক্কা থেকে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অবশ্য বিরোধীদলের এবারের বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য নতুন একটি মাত্রা হচ্ছে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আগের প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের অংশগ্রহণ। বিরোধী দলের দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগ দাবি করছেন।

কিন্তু নাজিব রাজ্জাক তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ৭০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেননি দাবি করে তিনি বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের আন্দোলন ‘হারাম’। তিনি পদত্যাগ করবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। ৫৮তম স্বাধীনতা দিবসে দেয়া ভাষণে নাজিব বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে দেশের বাকি জনগণ (বিক্ষোভকারী ২৫ হাজার ছাড়া) সরকারের পইে রয়েছেন।

নাজিব বলেন, ‘আমরা যদি এক না হই, যদি সংহতি হারাই, বন্ধন বিনষ্ট করি, সব সমস্যার সমাধান হবে না এবং আমরা অনেক কষ্টে যা গড়ে তুলেছি, তার সব ধ্বংস হয়ে যাবে।’

আন্দোলনকারীদের দাবি, শনি ও রোববারের বিক্ষোভে তিন লাখ জনগণ অংশ নিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ বলছে সংখ্যাটা মাত্র ২৫ হাজার। আন্দোলনে সস্ত্রীক যোগ দিয়েছেন নাজিব রাজ্জাকের দলের প্রবীণ রাজনীতিক ও অত্যন্ত জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি নাজিবকে ‘দূষিত নেতা’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, দেশে এখন আর আইনের শাসন নেই। তাই সনাতন পদ্ধতিতেই এ প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাত করতে হবে। আমরা অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাত করব। রোববার রাতে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শেষ হয়।

নাজিব বিরোধীদের আন্দোলন দু’দিন শেষে ইতি টানার কথা থাকলেও পরে রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নেয় নেতাকর্মীরা। ফলে দলগুলোর নেতাকর্মীরা সন্ধ্যার পরপরই আন্দোলনস্থল কুয়ালালামপুরের দাতারান মারদেকা ছাড়তে শুরু করলেও পরে আবার জড়ো হতে থাকে। আন্দোলনকারীদের হাতের ব্যানারগুলোতে মতাসীন দল বিরোধী কোনো প্ল্যাকার্ড না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী নাজিব ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এসব ব্যানার, পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘নাজিব কিছু টাকা দাও, বিয়ে করব’। ‘নাজিব কিছু টাকা দাও, ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হব’।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন রিংগিতের দুর্নীতির অর্থে কত বস্তা চাল পাওয়া যাবে, কত কাপ কফি কিনতে পারবে, কত প্যাকেট কেএফসি কেনা যাবে, ইমপিচ পিএম, নাজিবকে গ্রেফতার কর লেখা স্লোগান দেখা যায়।

প্রথম দিনের কর্মসূচিতে লোকসমাগম কয়েক হাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও দ্বিতীয় দিন  ৩০ আগস্ট রোববার দুপুরের পর থেকে দাতারান মারদেকা ও তার আশপাশের হলুদ টি-শার্টধারী নেতাকর্মীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে।

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে গত ২৯ আগস্ট শনিবার থেকে দুই দিনের বিক্ষোভ শুরু করে মানবাধিকার সংগঠন বেরসিহ (মালয় শব্দ বেরসিহ’র অর্থ ‘পরিষ্কার’)। দ্বিতীয় দিন রোববার সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা পরিকল্পনামতো হলুদ শার্ট পরে কুয়ালালামপুরের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে নতুন করে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ বিভিন্ন সড়কের মুখ অবরোধ করে ওই স্কয়ার ও এর আশপাশে যোগ দিতে বাধা দেয় বিক্ষোভকারীদের। আয়োজকদের দাবি, নানা বাধা উপো করে অন্তত দুই লাখ মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। যদিও পুলিশ বলছে, বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ২৯ হাজার।

পুলিশের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। বিক্ষোভকারীরা নাজিব রাজ্জাকের বিকৃত ছবি, কার্টুন ও তাঁর পদত্যাগের দাবিসংবলিত স্লোগান লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারী আইনজীবী সাইমন টাম বলেন, ‘আমরা যত বেশি সম্ভব জনগণ জড়ো হয়ে  প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবির বার্তা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’

গত ২৯ আগস্ট শনিবার বিক্ষোভের প্রথম দিনেই হাজারো মানুষ রাজপথে নামে। ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে জড়ো হয়ে নাজিব রাজ্জাকবিরোধী নানা স্লোগান দেয় তারা। সন্ধ্যার দিকে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা কিছু কমে আসে। রাতেও ওই স্কয়ার ও এর আশপাশে ছিল অনেক বিক্ষোভকারী। রাতে আকস্মিকভাবে বিক্ষোভকারীদের সামনে হাজির হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তাঁকে দেখে উল্লাস প্রকাশ করে বিক্ষোভকারীরা। মাহাথির তাদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী নাজিবের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

মালয়েশিয়ার সরকারি গণমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, পদত্যাগ না করার অবস্থানে অটল আছেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব। তিনি বলেছেন, যারা হলুদ শার্ট পরে বিক্ষোভ করছে, তারা দেশের মুখে কালিমা লেপন করছে। নাজিব শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

উপপ্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বিক্ষোভের আয়োজকদের শাস্তির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘তারা কী বলছে, আমরা সব শুনছি। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন আইনে অভিযোগ আনা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী নাজিব ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট নামের একটি রাষ্ট্রীয় তহবিলের ৭০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করছে বিক্ষোভকারীরা। নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগের পাশাপাশি দেশটির নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারেরও দাবি তাদের। কুয়ালালামপুরের স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। এর আগে, কর্মসূচি ঘোষণার পর পরই পুলিশ এ বিক্ষোভকে অবৈধ ঘোষণা করে। বিক্ষোভ ঠেকাতে নানা কঠোর পদপে নিয়েছে দেশটির সরকার। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং কুয়ালালামপুরের বেশকিছু এলাকা বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়াও আয়োজক সংগঠন বেরসিহ’র একটি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়ার কর্তৃপ। এ ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে বিক্ষোভ সংক্রান্ত তথ্য প্রচার করছিল বেরসিহ’র কর্মীরা। দেশজুড়ে বেরসিহ’র হলুদ টি-শার্ট নিষিদ্ধ করা হয়। বিক্ষোভের আগেই ১৬৩ তরুণকে আটক করা হয়। তবে সবকিছু উপো করেই বিক্ষোভ কর্মসূচি এগিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে আয়োজকরা।

নাজিবের আর্থিক কেলেঙ্কারি, মুদ্রা রিংগিতের দরপতন ও জনজীবনে এর বিরূপ প্রভাবসহ নানা কারণে এ বিক্ষোভের ডাক দেয় সরকারবিরোধীরা। সকাল থেকে হলুদ টি-শার্ট পরে দলে দলে আন্দোলনে যোগ দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় হর্ন বাজিয়ে, পতাকা উড়িয়ে, সোগো, পাসার সেনি ও পেতালিং স্ট্রিট প্রদণি করে তারা। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ২টায় সবচেয়ে বড় র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

মূলত মালয়েশিয়ার পাঁচটি বিরোধী দলের ডাকে এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। এগুলো হলো- ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন পার্টি (ডিএপি), পার্টি ইসলাম সে-মালয়েশিয়া (পাস), পার্টি কেয়াদিলান রাকয়েত (পিকেআর), পার্টি সোসাইলিস মালয়েশিয়া (পিএসএম) ও সারাওয়াক ন্যাশনাল পার্টি (এসএনএপি)। এর আগে ‘বেরসিহ’ স্লোগানে ২০০৭, ২০১১ ও ২০১২ সালে আন্দোলন করে বিরোধী দলগুলো। বেরসিহ’র প থেকে বলা হয়, মালয়েশিয়ার জনগণ যে এখন আর ভয় পায় না সরকার তা বুঝতে পারেনি। আমরা আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন নীতিমালার পরিবর্তন চাই যার মধ্য দিয়ে একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও দুর্নীতিমুক্ত সরকার ব্যবস্থা গঠিত হবে।

৫৮ বছর বয়সী স্কুলশিকিা শায়লা দেভারাজ বলেন, আমরা নাজিবকে দেখাতে চাই, জনগণ আর তাকে চায় না।

আয়োজকরা বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের আমরা দেখতে পাচ্ছি বছরের শুরু থেকে প্রায় প্রতি মাসেই বিক্ষোভ করা হচ্ছে। তবে এবার আমরা বড় ধরনের বিক্ষোভ আয়োজন করেছি। সরকার যদি এবার সাড়া দিতে ব্যর্থ হয় তবে আমরা এ যুদ্ধ চালিয়ে যাব।’

 à¦œà¦¨à¦—ণের শক্তি দেখানোর সময় হয়েছে : মাহাথির : সরকারের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার জনগণের শক্তি দেখানোর সময় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি বলেন, সবকিছু আইন অনুযায়ী চললে এর প্রয়োজন হতো না। গত ২৯ আগস্ট শনিবার বেরসিহ’র উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন তিনি। মালয়েশিয়ার দীর্ঘ সময় ধরে মতায় থাকা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের সমালোচক। ফিলিপিন্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোসের দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বলেন, ফার্দিনান্দ জনগণকে চাপে রেখেছিলেন। জনগণ শক্তি দেখিয়ে তাকে বিদায় করেছে।

মালয়রা বিভক্ত

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগ ও নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে বাধ্য করার পদ্ধতি হিসেব বিক্ষোভের পথ বেছে নেয়ায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে মালয়রা। এক জরিপ বলছে, ৪৭ শতাংশ জনগোষ্ঠী মানবাধিকার সংগঠন বেরসিহর উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমর্থন করেন না। তারা মনে করেন, এতে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা হবে। তাতে কতটুকু অর্জন হবে সে বিষয়ে তারা সন্দিহান। অন্যদিক, ৪৩ শতাংশ জনগোষ্ঠী এ বিক্ষোভকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।

চলতি মাসের ১৫-২১ আগস্ট মারদেকা সেন্টার মালয়েশিয়ার এক হাজার দশজন নিবন্ধিত ভোটারের মতামতের ভিত্তিতে এ জরিপ সম্পন্ন করে। এতে বিভিন্ন ুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীরাও মতামত প্রকাশ করে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬০ শতাংশ মালয়, ৩১ শতাংশ চীনা ও ৯ শতাংশ ভারতীয়। এদিকে বিক্ষোভে নিজেদের মধ্যে ফুল বিতরণ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা। বেরসিহ’র এ আন্দোলনে হলুদ রং বেছে নিয়েছে। ব্রিকসফিল্ডের ৪৫ বছর বয়সী নারী ম্যারি তার বাগানের হলুদ ফুলগুলো নিয়ে ভোরেই বিক্ষোভস্থলে জড়ো হয়েছেন।

হলুদ ফুল বিতরণ করে আন্দোলনকারীদের চাঙ্গা করতে চান তিনি। ২৭ বছর বয়সী লি উইই টিং তার বন্ধুদের একটি গ্রুপ নিয়ে বেলা ১১টায় হাজির হয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চাই। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা চাই।

বিক্ষোভের নামে সহিংসতায় উস্কানি দেবেন না : নাজিব

বেরসিহ’র বিক্ষোভ আয়োজনে ুব্ধ হয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক। তবে বিরোধীদের বিক্ষোভের অধিকার স্বীকার করলেও সময় ও স্থান নিয়ে তিনি বিরক্ত। তাদের বিক্ষোভ স্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর স্বাধীনতা দিবস প্যারেডের মহড়া হওয়ার কথা রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে নাজিব বলেন, ‘আপনারা বিক্ষোভ করতে চান ভালো কথা। কিন্তু সহিংসতায় উস্কানি দেবেন না। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য আর ভুল বোঝাবুঝি যাই থাকুক, জাতীয় দিবসকে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়াবেন না।’ ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্তি পাওয়া মালয়েশিয়ার ৫৮তম স্বাধীনতা দিবস ছিল গত ৩১ আগস্ট  সোমবার।

মালয়েশিয়ায় জাতীয় ঐক্যের ডাক রাজ্জাকের

মালয়েশিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রোপটে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। একই সঙ্গে পদত্যাগ করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।

মালয়েশিয়ার জাতীয় দিবস উপলে এক ভাষণে নাজিব বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে মত প্রকাশের েেত্র এই ধরনের বিক্ষোভ সঠিক পন্থা নয়। রাজ্জাকের ভাষ্য, গণবিক্ষোভ অপরিপক্বতার প্রতীক। দেশের অধিকাংশ মানুষ তাঁর সরকারকে সমর্থন করে।  মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার মনে রাখা উচিত, ঐক্যবদ্ধ না থাকলে সংহতি ও একতা হারাব।’  বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারিও দেন রাজ্জাক। এর আগে উপপ্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বিক্ষোভের আয়োজকদের শাস্তির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেন। পুলিশের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। বিক্ষোভকারীরা রাজ্জাকের বিকৃত ছবি, কার্টুন ও তাঁর পদত্যাগের দাবিসংবলিত স্লোগান লেখা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করে।

-বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি ও মালয়েশিয়ান ইনসাইডার।

মাহাথিরকে ‘তলব’ করবে মালয়েশীয় পুলিশ

 à¦®à¦¾à¦²à§Ÿà§‡à¦¶à¦¿à§Ÿà¦¾à§Ÿ গত সপ্তাহান্তের সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জনপ্রিয় নেতা মাহাথির মোহাম্মদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশীয় পুলিশ।

হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের পদত্যাগের দাবিতে কুয়ালালামপুরে ওই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। এতে পূর্বঘোষণা ছাড়াই হাজির হন মাহাথির।

পুলিশের প্রধান বলেছেন, বিক্ষোভে অংশ নিয়ে মালয়েশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির যে মন্তব্য করেছেন তাতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

‘আমরা তাকে তলব করব। তিনি বক্তৃতা দিয়েছেন এবং অভিযোগ উত্থাপন করেছেন,’ বলছিলেন  মালয়েশিয়া পুলিশের প্রধান খালিদ আবু বকর।

‘তিনি (মাহাথির) দাবি করেছেন যে ইউএমএনও (মতাসীন দলের) নেতারা ঘুষ নিয়েছেন, কাজেই এ সম্পর্কে আমরা আরো তথ্য জানতে চাইব।’

৯০ বছর বয়সী মাহাথিরের উপস্থিতি কুয়ালালামপুরের হাজারো বিক্ষোভকারীর মধ্যে প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টি করে।

এ সময় মাহাথির বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বাঁচতে মতা আঁকড়ে ধরে থাকতে চাচ্ছেন নাজিব।

এক সময়ে নাজিবের পরামর্শক মাহাথির সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।