সংবাদ শিরোনামঃ

অর্থ লুটের মহোৎসব ** ভোটে আগ্রহ নেই মানুষের ** সারাদেশে গুম হত্যা আতঙ্ক ** ড. মাসুদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের মিছিল ** প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে : খালেদা জিয়া ** পানির জন্য হাহাকার ** ক্ষমতার নিশ্চয়তা পেলেই আগাম নির্বাচন ** তিস্তা এখন ধু ধু বালুচর ** তেলের দাম কমানোর নামে প্রহসন ** সরকার দায় চাপানোর কৌশল নিয়েছে ** আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে ** ওনারা বললে দোষ হয় না! ** মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি কি সুদূর পরাহত? ** পার্বতীপুরে পানির জন্য হাহাকার ** টাঙ্গাইলের ছয় উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই! ** কুষ্টিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ বৈশাখ ১৪২৩, ২১ রজব ১৪৩৭, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

আব্দুল্লাহ আল মামুন, নীলফামারী : উজানে গজলডোবা ব্যারেজের মাধ্যমে ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করায় প্রতিবছর শুকনো মওসুমে তিস্তা নদী ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়।

এ বছরও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ সময় তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট বন্ধ করে রেখেও প্রধান খালে নেওয়ার মতো পানি পাওয়া যায় না। ফলে প্রতিবছর প্রকল্প এলাকা কমিয়েও স্বাভাবিকভাবে সেচ কার্যক্রম চালাতে পারছে না কর্তৃপ।

১৯৭৯ সালে দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। মূল নদী থেকে পানি নিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে মরুময় উত্তরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুরসহ পাঁচ জেলার ৩৫টি উপজেলার ৫ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করাই ছিল প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ জন্য নীলফামারী জেলার ডালিয়ায় তিস্তা নদীর উপর নির্মাণ করা হয় তিস্তা ব্যারেজ। এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তা জানুয়ারি মাস থেকে ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তিস্তার পানি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমেছে। সামান্য কিছু এলাকায় হাঁটু পানি থাকলেও বেশিরভাগ এলাকায় পানিশূন্যতা বিরাজ করছে। স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী মো. আব্দুল্লাহ ইবনে খালিদ দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বার বার থেমে যাচ্ছে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি। আর এ চুক্তি বাস্তবায়ন যত দেরি হচ্ছে ততই সম্যায় পড়ছেন এ এলাকার মানুষ।

দিন দিন তিস্তার পানি কমে যাওয়ায় গেল বছরের চেয়ে চলতি রবি ও খরিপ-১ মওসুমে ৩৭ হাজার ৫ শ’ হেক্টর জমি কমিয়ে আনা হয়েছে। এবার ২৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পানিপ্রবাহ কম থাকায় চলতি মওসুমের অর্ধেক জমিতে পানি সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ২১ জানুয়ারি থেকে তিস্তা সেচ ক্যানেলে পানি সরবরাহ শুরু করা হয়। কিন্তু দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া অঞ্চলের সেচ ক্যানেলের সুবিধাভোগীরা পানির জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সেচ ক্যানেলের মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান কর্তৃপ। নদী পাড়ের মানুষেরা জানান, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা তাদের পুরনো পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, চলতি রবি ও খরিপ-১ মওসুমে তিস্তা ব্যারেজে ২১ জানুয়ারি থেকে সেচ দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু উজানের পানিপ্রবাহ দিন দিন কমে আসায় তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারেজের কমান্ড এলাকায় সম্পূরক সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, গত বছর সেচনির্ভর রবি ও খরিপ-১ মওসুমে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় ৬৫ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার ল্যমাত্রা ছিল। কিন্তু পানির অভাবে সেচ দেওয়া সম্ভব হয়েছিল মাত্র ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলে ৩৭ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমি সেচের আওতা থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে।

তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের এই কর্মকর্তা জানান, যেহেতু তিস্তার পানি চুক্তি এখনো হয়নি, সেেেত্র গত বছরের মতো চলতি বছরেও তিস্তার পানি প্রাপ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এবার রবি ও খরিপ-১ মওসুমে আবাদে সেচ দেওয়ার জন্য ২৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমির ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ডালিয়ায় ১০ হাজার ও নীলফামারীতে ১৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমি। সেচ দেওয়া সম্ভব হবে না দিনাজপুর জেলার ২০ হাজার ও রংপুর জেলার ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুরুতুজ্জামান জানান, জানুয়ারিতে গড়ে তিস্তা নদীতে এক হাজারের বেশি কিউসেক পানি থাকলেও এপ্রিল মাসে কমে দাঁড়ায় সাড়ে তিনশ’ কিউসেকে।

তিনি বলেন, পানির বর্তমান অবস্থানের কারণে তিস্তা সেচ ক্যানেলনির্ভর জমিগুলোতে সেচ প্রদানে হিমশিম খেতে হবে।

তিস্তা ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। এটি সিকিম ও জলপাইগুড়ির প্রধান নদী। সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই নদী।

তিস্তা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা কয়েক বছর ধরে বিকল্প ব্যবস্থায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। কিন্তু ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। গত ১০ বছর আগে যেখানে ৬০-৭০ ফুট গভীরে পানি পাওয়া যেত, সেখানে ১০০ থেকে ১২০ ফুটে পানি পাওয়া যাচ্ছে। ফলে কৃষকদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে তিস্তা নদীতে যে জেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন তাদের অবস্থাও এখন বেশ খারাপ। নদীতে পানি না থাকায় তারা মাছ ধরতে পারছেন না। ফলে অর্ধাহারে-অনাহারে নিদারুণ কষ্টে তাদের জীবন চলছে। গত ১০ বছর আগেও তিস্তার এই অবস্থা ছিল না। কিন্তু ভারত থেকে উজানের ঢলে পলি পড়ে তিস্তা পানিশূন্য হয়ে পড়েছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।