সংবাদ শিরোনামঃ

সাঁড়াশি অভিযানের আড়ালে প্রতিপক্ষ দলন ** ঈদের পরে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ২০ দল ** বাজেট বৈষম্যমূলক-অসহনীয়, ব্যবসাবান্ধব নয় ** সিয়ামের প্রকৃত শিক্ষাকে ধারণ ও বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে হবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল ** বিরোধী রাজনীতিকদের চাপে রাখার কৌশল ** নিরপরাধ নেতাকর্মীদের জীবন নিয়ে নির্মম তামাশা মেনে নেয়া যায় না : ছাত্রশিবির ** দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম-গঞ্জে ** নেপথ্য খলনায়কদের আড়াল করতেই ক্রসফায়ার! ** সমাজে বিভক্তির কারণেই মৃত্যুর পরেও সম্মান পাননি মনিরুজ্জামান মিঞা : ড. এমাজউদ্দিন ** ‘অভিযান ছিল লোক দেখানো, বাণিজ্য হয়েছে পুলিশের’ ** ক্রসফায়ার : একটি ধারাবাহিক গল্প ** ক্রসফায়ার নয়, আদালতের মাধ্যমেই দোষীদের শাস্তি দিতে হবে ** টাকার ‘সাগর’ এবং অর্থমন্ত্রী ** রোজার তাৎপর্য ** একটি পারিবারিক বৈঠকের কিছু কথা ** ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার বুটিকস কারিগররা ** ‘বিশেষ’ অভিযান শেষ হলেও বন্ধ হয়নি গণগ্রেফতার ** সারাদেশে বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার মাহফিল **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ আষাঢ় ১৪২৩, ১৮ রমজান ১৪৩৭, ২৪ জুন২০১৬

আসন্ন ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে জর্জেট ও সিল্কের থান কাপড়ের ওপর পুঁতি, পাথর ও চুমকি বসাচ্ছেন একজন কারিগর

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া : আসন্ন ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে কুষ্টিয়ার ৫ সহস্রাধিক বুটিকস কারিগরের। জর্জেট ও সিল্কের থান কাপড়ের ওপর পুঁতি, পাথর ও চুমকি বসিয়ে তারা তৈরি করছেন নানা ডিজাইনের বাহারি শাড়ি ও অন্যান্য পোশাক। বর্তমানে এ শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকদের দম ফেলার ফুরসত নেই। ঈদের বাজার ধরতে দিন-রাত সমানে কাজ করে চলেছেন তারা। মানের দিক থেকে উন্নত এখানকার নকশিপণ্য ইতোমধ্যে ঢাকাসহ দেশের সব বড় শহরের বাজার দখল করেছে। শুধু দেশ নয়, বিদেশেও এসব হস্তশিল্পীদের কাজ করা শাড়ির চাহিদা রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে ঢাকা, চিটাগাং, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অভিজাত বিপণিগুলোতে এসব শাড়ি বিক্রি হয় দেদার। আর ঈদের আগে এর চাহিদা বেড়ে হয় আকাশচুম্বী। তাই ঈদকে সামনে রেখে এখানকার নকশিপণ্যের বিপুল চাহিদা মেটাতে এখন দিনরাত কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে এসব বুটিকস শিল্পীদের। গ্রামের একেবারে নিভৃত পল্লীতে বাহারি ডিজাইনের কাপড় তৈরি হলেও তারা প্রতিযোগিতায় নামছে ভারতসহ অন্যান্য দেশের দামি কাপড়ের সঙ্গে। সূত্রমতে, স্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টায় প্রায় একযুগ আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী-খোকসা এবং এর আশপাশের গ্রামগুলোতে গড়ে ওঠে বেশ কিছু হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান। এখন সেটির সংখ্যা ছাড়িয়েছে শতাধিক। সরেজমিনে দেখা যায়, কুমারখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ঘরের মেঝেতে কাঠের পাটাতনে শাড়ির চার কোণায় বেঁধে বাহারি রংবেরঙের পাথর বসিয়ে বুটিকস কারিগরা তৈরি করছেন নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর নকশা। এখানে মেশিনে কোনো কাজ করা হয় না। ঘরের মেঝেতে কাঠের পাটাতনে নিজেদের উদ্ভাবিত কৌশলে বিভিন্ন রঙের শাড়িকে চারকোণায় বেঁধে বাহারি রংবেরঙের পাথর বসিয়ে তৈরি করা হয় নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর নকশা। গ্রাহক বা শিল্পোদ্যোক্তারা তাদের পছন্দমতো শাড়ির কাপড় এনে দেন। তারপর বুটিকস কারিগররা শুধু ক্যাটালগ দেখে বিভিন্ন ডিজাইনের নকশা ও পাথর বসিয়ে কাজ সম্পন্ন করেন। নকশার কাজে ওয়েট লেইস, মাখন, লেদার জর্জেট, পাথর, জরি, চুমকি, মাল্টি পুঁতি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এরপর কাপড় ও কাজের মান অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়। এখানে শাড়ির দাম নির্ধারণ হয় ডিজাইন ভেদে। এবারের ঈদে বেশি চাহিদা পার্টি শাড়ি ও লেহেঙ্গা শাড়ির। ছুফিয়ান, নেট, শিপন ও লেক্সমি কাপড়ের ওপর বিভিন্ন ডিজাইন সংবলিত একেকটি শাড়ির দাম ৪ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বুটিকস কারিগররা জানান, তারা পূর্বপুরুষের কাছ থেকে শেখা পদ্ধতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। একটি শাড়িতে পাথরের কাজ করতে ৩-৪ জন শ্রমিক এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে। একটি কাপড়ে ডিজাইন করে একজন বুটিকস কারিগর পান ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। নিজ বাড়িতে বসেই তারা তৈরি করতে পারেন এসব ডিজাইন। অধিকাংশ নারী শাড়ি নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হাতের কাজ শেষে কারখানায় জমা দিয়ে তাদের পারিশ্রমিক নিয়ে যান। মাসে তাদের আয় অন্তত ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। কুমারখালি উপজেলার বুটিকস কারিগর মর্জিনা খাতুন জানান, ঈদকে সামনে রেখে ৬ মাস আগে থেকে কাজ শুরু হয়েছে। গ্রাহকরা অথবা শিল্পোদ্যোক্তারা এসে কাপড় দিয়ে অর্ডার দিয়ে যান। রোজার প্রথম সপ্তাহের পর আর অর্ডার নেয়া হয় না। এক সময়ে গ্রাম্য নারীরা রান্নার কাজ আর সন্তানের লালন পালন ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতেন না। সময় পেলে শখের বশে নকশি কাঁথা, বালিশের কাভারে ফুল আঁকাসহ বিভিন্ন কাজ করতেন। কিন্তু গ্রাম্য এসব নারীর মানসিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তারা এখন আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রয়াসে পুরোদমে কর্মক্ষেত্রে জড়িত হয়ে পড়েছেন। মাত্র এক দশকের ব্যবধানে বেশ বদলে গেছে এখানকার নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার চালচিত্র। আর এ পরিবর্তন একটি অভাবী দরিদ্র জনপদ থেকে নারীদের আতœà¦•à¦°à§à¦®à¦¸à¦‚স্থানের জনপদে পরিণত করেছে। হস্তশিল্পের বর্ণিল আভায় আলোকিত এখন এখানকার বিভিন্ন জনপদ। শহর ও গ্রামাঞ্চলের বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূরাও ঝুঁকে পড়েছেন এ হস্তশিল্পের দিকে। ইতোমধ্যে প্রশিক্ষিত হয়ে বাড়িতে ও কারখানায় কাজ করে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এখন অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করছেন। শুধু তাই নই, অভাবী সংসারে জন্ম নেয়া অনেক শিক্ষার্থী এ কাজ করে পড়ালেখার খরচ জোগাচ্ছেন। এর ফলে এসব এলাকায় বাল্যবিবাহ রোধে সহায়তা করছে অনেকখানি। নারীদের পাশাপাশি এ কাজের জন্য পুরুষরাও এখন এগিয়ে আসছেন। বর্তমানে কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় ব্যক্তি প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে শতাধিক হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান। সম্ভাবনাময় এসব হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠানে ৫ সহস্রাধিক নারী প্রশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি এখন রীতিমতো আত্মনির্ভরশীল। মাসে তাদের আয় অন্তত ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। খোকসার বুটিকস কারিগর বিউটি খাতুন জানান, তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে দিনমজুর স্বামী পরান মণ্ডলের সামান্য উপার্জনে তাদের পরিবারে দুঃখ-কষ্টের সীমা ছিল না। এই দুর্বিষহ জীবনযাপনে জর্জেট, সিল্কের থান কাপড়ের ওপর পাথর, চুমকি ও পুঁতি বসানো কাজ শুরু করি। এরপর রুমাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। স্থানীয় সোনালী হস্তশিল্পের পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, আমার হস্তশিল্পে প্রায় ৯০০ নারী শ্রমিক কাজ করছেন। আমাদের দেশী কাপড়ের বাজার যখন বিদেশী কাপড় আর ডিজাইনের দাপটে হিমশিম খাচ্ছে তখন কুষ্টিয়ার এই হস্তশিল্প মনে করিয়ে দেয় দেশীয় ঐতিহ্যের কথা। এসব পণ্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা বাজারজাত করছেন। ঈদকে সামনে রেখে তাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। কুমারখালী হস্তশিল্পের পরিচালক রিনা আহসান জানান, একজন দক্ষ প্রশিক্ষিত নারী মাসে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। হাতের কাজ করা এসব শাড়ি মানসম্পন্ন হওয়ায় ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভারত থেকে বিভিন্ন ডিজাইনের বাহারি লেইস বাজারে আসার কারণে তাদের ব্যবসায় মন্দার সৃষ্টি করেছে। এটা এই ব্যবসার জন্য হুমকি। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্পকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নেয়া সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।