অপরাধ কে না বলুন

মাহফুজ আল মাদানী
ইসলামই শান্তির ধর্ম। কারণ, প্রকৃত স্বাধীনতা এখানেই। নেই কলহ, বিবাদ-বিসম্বাদ, গুম, হত্যা আর সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান। ইসলাম এগুলোর কোনটির ন্যূনতম সমর্থন করে না। বরং এগুলোর বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান প্রকাশ্য, সুস্পষ্ট। বিশ্বের যত ইজম বা মতবাদ শান্তির স্লোগান নিয়ে আবিষ্কৃত হোকনা কেন তাতে শান্তির লেশমাত্র নেই। রয়েছে শান্তি নামক মরীচিকা। প্রকৃত শান্তির একমাত্র স্থান ইসলামের ছায়াতলে। এটাই মহান রাব্বুল আলামীনের মনোনীত ধর্ম। রাহমানুর রাহীমের ঘোষণা, নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহর নিকট মনোনীত ধর্ম (সূরা আলে ইমরান : ১৯) আল্লাহর এই মনোনীত ধর্মে নেই বিশৃঙ্খলা, ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টির কোনো অবকাশ। যার হাতে আমাদের সকলের প্রাণ, সেই মহান সত্ত্বার সুস্পষ্ট ঘোষণা- নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না (সূরা আল কাসাস : ৭৭) সেই ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টির পন্থা অনেক বেশি যা গুণে শেষ করার মতো নয়। চুরি, ডাকাতি, লুণ্ঠন, হত্যা, গুম, ধর্ষণসহ নানা প্রকৃতির অপরাধের মাধ্যমে ফ্যাসাদ তৈরি করা হয়। খুন-হত্যা তার মধ্যে জঘন্য। যা অমার্জনীয় অপরাধ। ইসলাম কখনই তা সমর্থন করে না। কুরআনের à¦­à¦¾à¦·à§à¦¯à¦®à¦¤à§‡Ñ à¦¯à§‡ কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকে হত্যা করে (সূরা আল মায়েদা : ৩২)। এখানে নফস বা প্রাণ দ্বারা শুধু মুসলমান উদ্দেশ্য নয়, বরং যে কোনো ধর্মের মানুষের প্রাণ। একটি প্রাণ ধ্বংস করা অনেক জঘন্য অপরাধ। আর যদি সেই প্রাণ মুসলমান বা মুমিনের হয় তাহলে সেই অপরাধ এর চেয়েও আরো জঘন্য। আল কুরআনের à¦­à¦¾à¦·à¦¾à§ŸÑ à¦¯à§‡ ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন তাকে অভিসম্পাদ করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন (সূরা আন নিসা : ৯৩)।ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টির একটি অভিনব রূপ হলো ‘গুম’। যা ইদানীংকালে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি ও প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। ‘গুম’ à¦¹à¦²à§‹Ñ “অপরাধজনিতভাবে লুক্কায়িতকরণ” (বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলা অভিধান, পৃ” ৩৬৩)। গুম শব্দের সাথেই অপরাধ শব্দটি সংযুক্ত রয়েছে। তার মানে বুঝতে আর বাকি নেই যে, এটা অবশ্যই অপরাধ। “গুম” সন্ত্রাসবাদের প্রকার সমূহের একটি। যে যে উপায়ে সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি হয় ‘গুম’ তার মধ্যে অন্যতম। কোনো সমাজ বা মতবাদ অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। পবিত্র ধর্ম ইসলামও এ রকম সীমালংঘনমূলক কর্মসমূহকে কখনও প্রশ্রয় প্রদান করে না। তাই হাদীস শরিফে à¦à¦¸à§‡à¦›à§‡Ñ “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজ দেখে তবে সে যেন তার হাত দ্বারা তা প্রতিহত করে। যদি সক্ষম না হয় তার জিহ্বা অর্থাৎ কথার মাধ্যমে প্রতিহত করে। যদি তাতেও সক্ষম না হয় তবে অন্তর দ্বারা ঘৃণা পোষণ করে। আর অন্তর দ্বারা ঘৃণা পোষণ করাই ঈমানের দুর্বলতা।গুম করার মাধ্যমে মানুষের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়। যে মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন, তাকে গুম করার মাধ্যমে শুধু স্বাধীনতা খর্ব করা নয়, পরে তাকে হত্যাও করা হয়। যাকে গুপ্তহত্যা বলে। এই গুপ্তহত্যা কোনো বিবেকবান মানুষ বা সুশীল সমাজ মেনে নিতে পারে না।পরিশেষে এটাই বলবো, আসুন আমরা আমাদের সমাজকে অপরাধ ও নিকৃষ্টতম কাজ থেকে মুক্তি দেই। বিশেষ করে ‘গুম’ সম্পর্কে ‘পাঠ্যবইয়ে’ এর ক্ষতিকর দিক তুলে ধরার প্রস্তাব করছি। সমাজের সকল লোককে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করি।