॥ একেএম রফিকুন্নবী ॥
দীর্ঘ ৩০ দিন রমাদানের রোজা রাখার সুযোগ আমরা পেয়েছিলাম। রোজা রেখেছি ছোট-বড়, ধনি-গরিব সবাই। ইফতার করেছি, সাহরি খেয়েছি। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাযসহ তারাবি, কিয়ামুল লাইল, তাহাজ্জুদ নামাযসহ অনেক নফল নামায পড়ে তসবিহ-তিলাওয়াত করে রমাদানের পুরো হক আদায়ের চেষ্টা করেছি। ভুলের জন্য বার বার ক্ষমার আবদার মহান আল্লাহর কাছে করেছি। আল্লাহর নবীর শেখানো দোয়া, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম তুহিব্বুল আফুওয়া ফাফু আন্নি’ পড়ে ক্ষমার দরখাস্ত করেছি। আমরা আল্লাহর কাছে চেয়েছি নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেনÑ আশা করতে পারি, ইনশাআল্লাহ।
রমাদানের দায়িত্ব পালনের পর বছরের বাকি ১১ মাস আমাদের জন্য যে বার্তা দিয়ে গেল, তাও যথাযথভাবে পালন করতে আল্লাহর নবী নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন শাওয়াল মাসের ১ম দিনেই উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদুল ফিতরের নামায আদায় করেছি সবাই মিলে। ঈদের নামাযের পূর্বে আমরা ফিতরা আদায় করেছি। ছোট-বড়-বৃদ্ধ; এমনকি মহিলাদের অনেকের মসজিদ ও মাঠে নামায পড়ার সুযোগ ছিল। বৃষ্টি-বাদল না থাকায় সবারই আনন্দের সাথে উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের ঈদুল ফিতরের নামায আদায় করার সুযোগ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
শাওয়াল মাসের ২য় বড় কাজ ৬ রোজা রাখা। এক সাথেও রাখতে পারেন আবার ভেঙে ভেঙেও রাখতে পারেন। এ মাসের মধ্যেই রোজা রাখাতে হবে। আল্লাহর নবী বলেছেন, যারা রোজার মাসের ৩০ রোজা এবং শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখলো, গোটা বছর রোজা রাখার সাওয়াব মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাকে দিয়ে দেবেন। আল্লাহর কাছে কোনো কিছুরই অভাব নেই। বান্দা চাইলেই আল্লাহ দিয়ে দেবেনÑ এটা আল্লাহর ওয়াদা। মহান আল্লাহ ওয়াদার ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ, সচেতন এবং ওয়াদা রক্ষাকারী, কোনো সন্দেহ নেই।
রমাদানের পর আমাদের খেয়াল রখতে হবে সাপ্তাহিক সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং আরবী মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বীজের রোজার। আল্লাহর নবী এ রোজা ছাড়তেন না। তাই রমাদানের রোজা রাখার পর সুস্থ শরীরের অধিকারী সব ঈমানদার পুরুষ-মহিলার এ রোজা রাখা উত্তম। এছাড়া মহররমের রোজাসহ আরো নফল রোজা আমরা রাখতে পারি। রোজা রাখা আল্লাহর সন্তোষ ছাড়াও শরীরের সুস্থতার জন্যও প্রয়োজন।
রমাদানে আমরা ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামায সচেতনতার সাথে আদায় করেছি। রমাদানের পর বাকি ১১ মাসেও ৫ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে পড়ার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কোনোভাবেই এ নামাযে গাফিলতি করা যাবে না। বিশেষ করে এশা ও ফজরের নামায জামাতের সাথে আদায় করতে হবে। রমাদানে তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সুযোগ ছিল সাহরির আগে। এ অভ্যাসও জারি রাখতে হবে। মানুষ ইচ্ছা করলেই এ কাজ করার অসুবিধা হয় না। রমাদানে সচেতনভাবেই ইসলামের সবগুলো রুকনের প্রতি নজর ছিল। বাকি সময়েও এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। রোজার সময় অনেকে ওমরাহ করার সুযোগ পেয়েছেন। অনেকে কাবায় এতেকাফ করেছেন। উত্তম কাজ তারা করেছেন। ওমরাহর দরজা এখনো খোলা আছে। রোজার সময় ভিড় থাকে, তাই অনেকে পরিবারসহ ওমরাহর সময় বেছে নেন রোজার পর। যাদের সুযোগ আছে, তারা এ কাজ করলে উত্তম সাওয়াব পাবেন।
রোজার সময় আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ^াসের সাথে ক্ষমা পাওয়ার আশায় প্রায় ১৪ ঘণ্টা খাওয়া ও পান করা থেকে বিরত থেকেছি। দৃষ্টি নিম্নগামী ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য স্বচ্ছতার সাথে পরিচালিত করেছি। আচার-আচরণ ছিল আল্লাহকে রাজি-খুশি করার মানসিকতার। বাকি ১১ মাসও আমাদের আচার-আচরণ উত্তম থাকবে। ১২ মাসই আমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে জান্নাতের উপযোগী করে পরিচালিত করব, ইনশাআল্লাহ।
রোজার সময় ছোট-বড়, ধনী-গরিব মানুষকে আমরা সালামের আওতায় এনে আল্লাহর নবীর দেয়া দায়িত্ব পালন করেছি। বাকি ১১ মাসও সমাজে সালামের প্রচলন করে সমাজকে আল্লাহর রঙে রঙিন করার ব্যবস্থা করব, ইনশাআল্লাহ।
মহান আল্লাহ রমাদানে সাওয়াবের পরিমাণ অনেকগুণে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। মহান আল্লাহর দেয়ার হাত অনেক অনেক লম্বা। আমরা যদি বাকি ১১ মাসে তাঁর হয়ে যাই, তবে তিনিও আমাদের হয়ে যাবেন। তাই দোয়ার ফল পাওয়ায় আমাদের অসুবিধা হবে না, ইনশাআল্লাহ।
রমাদান মাসে মহান আল্লাহ আমাদের জীবনবিধান আল-কুরআন নাজিল করেছেন। আল-কুরআনের আলোকে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র চালাতে পারলেই আল কুরআনের সার্থকতা পাওয়া যাবে। আল কুরআন ভালো ও মন্দের পার্থক্যকারী। অতএব ভালো কাজ করব, মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকব। অন্যকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করব। ইসলামের আলোকে কুরআনের বিধান অনুযায়ী সমাজবিপ্লব করতে পারলে দুনিয়া ও আখিরাতের সব ভালোর প্রতিদান আমরা পাব, কোনো সন্দেহ নেই। সীমাহীন জান্নাত পেতে ১২ মাসই আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চলতে হবে, চালাতে হবে। সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী আল কুরআন আমাদের সামনে হাজির আছে। আমরা অনেকে দাবি করি তাহাজ্জুদ পড়ার। কিন্তু মানুষ সত্য কথা কোনটা বলেন, তা জানা নেই। আমাদের দুই কাঁধে দুজন আল্লাহর নিয়োগকৃত ফেরেশতা ভালোমন্দ লেখার জন্য রয়েছেন। অণুপরিমাণ ভালোও তারা লিখছেন আবার অণুপরিমাণ মন্দও তারা লিখে রাখছেন। কিয়ামতে তারা ভালো-মন্দের হিসাব আল্লাহর কাছে পেশ করবেন। আমরা কিন্তু তাদের লেখার কোনো বিরোধিতা করতে পারবো না। তাদের লেখার সাথে সাথে ভিডিও ক্যামেরায় ছবিও তারা পেশ করবে। তাই তাদের বক্তব্যই গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা ভালোর জন্য ভালো, মন্দের জন্য মন্দের ভাগীদার হব। কেউই সুপারিশ করে ফল বদলাতে পারবে না।
রমাদানে এবার অনেক জায়গায় ন্যায্যমূল্যে কম দামে মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিল অনেক যুবক। কম দামে বিক্রয় করে তারা যেমন মানুষের ভালোবাসা পেয়েছে; অন্যদিকে মহান আল্লাহর রহমতের ভাগী হয়েছে, কোনো সন্দেহ নেই। আরব দেশগুলোয় ব্যবসায়ীরা রমাদানে তাদের পণ্যসামগ্রীর দাম কমিয়ে দেয়। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরাও ভবিষ্যতে এ উদ্যোগ নিতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারেরও ভূমিকা থাকতে হবে। রমাদানের প্রয়োজনী পণ্য আমদানির শুল্ক কমিয়ে দিলে এবং তদারকি করলে জিনিসপত্রের দাম সহনীয় করা সম্ভব। আমরা ভবিষ্যতের দিকে আগ্রহভরে তাকিয়ে রইলাম।
বাংলাদেশের মানুষ শতকরা ৯২ ভাগ এক আল্লাহয় বিশ্বাসী এবং ধর্মপ্রাণ। শুধুমাত্র তাদের গাইড করতে পারলে দেশটাকে সমৃদ্ধশালী করতে বেশি সময় লাগবে না। যেমন আল্লাহর একটি আইন ‘ব্যবসা হালাল সুদ হারাম’কে কেন্দ্র করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ শুরু করেছিলেন ১৯৮৩ সালে একদল মর্দে মুমিন ভাই। ব্যাংকটি অল্পসময়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো এবং লাভজনক ব্যাংক হিসেবে দেশে-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছিল। কিছুদিন পূর্বে সরকারের সহযোগিতায় ব্যাংকটি দখল করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের অবস্থা মোটেই ভালো নয়। লাখকোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অভিজ্ঞ লোকদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা বলে, যারা ব্যাংক দখল করেছে, তারা ব্যক্তিগতভাবে ব্যর্থ হবে। সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত হবে। দেশের ক্ষতিকারক হিসেবে তারা চিহ্নিত হবে। ব্যাংক তার লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
এভাবে দেশের সব ক্ষেত্রেই রমাদানের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্রে কুরআনের আলোকে জীবন সাজাতে পারলে এ বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি এগিয়ে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যেই দেশের আনাচে-কানাচে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে কুরআনের আলোকে। তারা ভালো করছে। মানুষের দোয়া এবং আল্লাহর সাহায্য তাদের সাথে রয়েছে। মানুষকে ফাঁকি দিয়ে সাময়িক লাভবান হওয়া যায়। কিন্তু ভবিষ্যতের লাভের পরিমাণ শূন্য হবে।
মনের শান্তি আসল শান্তি, মানুষকে ফাঁকি দিয়ে দখল বাণিজ্য করে সাময়িক লাভবান দেখলেও ঘরে অশান্তিতে ভরা। একটু খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। ভোটের রাজনীতিতেও অশান্তি বিরাজ করছে। এখানে জোর যার মুল্লুক তার চলছে। পরিণতি ভালো না। আল্লাহর চোখ ফাঁকি দিয়ে জনগণের ক্ষতি করে ভোটের অধিকার হরণ করে বেশিদিন ভোগ-বিলাসে থাকা যাবে না। অতীতেও কেউ পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
দেশে দেশে নমরূদ, ফিরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাবরা আল্লাহর সাথে পাল্লা দিয়ে বেশিদিন রাজ্য চালাতে পারেনি। তাদের পরিণতি দুনিয়াতেই লাঞ্ছনার হয়েছে, আবার কাল কিয়ামতে তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। জাহান্নামের অতল গহ্বরে। দেশের জনগণের সাথে শত্রুতা করে ভোটের অধিকার হরণ করে বেশিদিন জনগণের ভাগ্য হরণ করা যাবে না। পরিণতি হবে আল্লাহর অভিশাপ, অশান্তি আর অশান্তি।
আমরা সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের সব নাগরিকের ভালো চাই। সবার কল্যাণ চাই। মহান আল্লাহর সাহায্য চাই। পরিণতি ভালো হোকÑ কামনা করি। ছোট দেশ হলেও দেশের মানুষ ভালো, পানি, মাটি ভালো। ফসল ফলানোর ভালো উদ্যোগ নিলে কৃষি বিভাগকে তৎপর করতে পারলে কৃষিপ্রধান এ দেশ উন্নত হবে; সমৃদ্ধ হবে। দুনিয়ার কাছে উন্নত জাতি হিসেবে পরিচিত হতে পারব, ইনশাআল্লাহ। রমাদানের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে দেশকে ভালোবেসে দেশের উন্নয়ন করাই আমাদের লক্ষ্য হোক, এটাই কামনা।
রমাদান কুরআন নাজিলের মাস। এ মাসে কুরআনের আইন বাস্তবায়নের পদক্ষেপ হিসেবে রোজা, ইফতার, সাহরি, তারাবিসহ শবেকদরের রাতের ইবাদত আমাদের ঈমানের বলে বলীয়ানের বাণীতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমরা আগামী ১১ মাস কাজেকর্মে আল কুরআনের আলোকে কর্মপন্থা গড়ে তুলতে চাই। দেশের আপামর জনশক্তিকে দলমত-নির্বিশেষে কুরআনের সত্য বাণীতে চলার পথকে প্রসারিত করতে চাই। দেশের মানুষকে সত্যের পথে ডাকতে চাই। অসত্য পথ থেকে বিরত রেখে তাদের চলার পথ গড়তে চাই। খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে ধনী-গরিব সবার ন্যায্য পাওনার নিশ্চয়তা দিতে চাই। যার যার অধিকার তাকে দিয়ে কর্মফলের নিশ্চয়তা দিতে চাই। ভালোকে ভালো বলব, মন্দকে মন্দ বলে দিকনির্দেশনা দেব। এভাবেই ১১ মাস চলতে পারলে রমাদানের শিক্ষা কার্যকর হবে। প্রিয় মাতৃভূমিকে সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত করে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণে চালাতে চাই। মহান আল্লাহর সাহায্য আমাদের কল্যাণে আসবে, ইনশাআল্লাহ।
রমাদানের শিক্ষা মানুষে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা কিংবা বিদ্বেষ পরিহার করে একে-অপরকে সহযোগিতা করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে মারামারি, হানাহানি বন্ধ করে দলমত-নির্বিশেষে এক আল্লাহর অনুসরণ-অনুকরণ করে সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে হবে। ধনী-গরিবের পার্থক্য কমাতে হবে। শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক শিল্পবান্দব করতে হবে। শিল্পের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে।
দেশের শিক্ষিত যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে চাকরির জন্য পাঠাতে হবে সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতার মাধ্যমে। দেশের শ্রমিকদের মেধা অত্যন্ত ভালো। একবার কাজ দেখিয়ে দিলে তারা কাজ দ্রুত করতে পারে। কাজের সাথে সাথে নৈতিক প্রশিক্ষণও তাদের দিয়ে দিতে হবেÑ যাতে করে বিদেশে গিয়ে মহান আল্লাহর বাণীর প্রচার করতে পারে এবং বাস্তব জীবনে সৎ ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে সঠিক পথে কাজ করতে পারে। দেশের মান-সম্মান বৃদ্ধি করতে পারে। দেশে দেশে প্রমাণ করতে হবে আমরা গরিব দেশের শ্রমিক হলেও এক আল্লাহয় বিশ^াসী এবং সততার সাথে, যোগ্যতার সাথে সঠিক সময়ে কাজ করতে সক্ষম। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
আর একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই। রমাদানের শিক্ষার সাথে জড়িত পারস্পরিক সৌহার্দ্য-সহমর্মিতার স্বাক্ষর রেখে ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধ করার প্রয়াস চালানো। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা, মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতায় ইসরাইল-ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বন্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ইরান বাস্তবে ইসরাইলের হাত ভেঙে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। মুসলিম দেশগুলো সবাই মিলে ইসরাইলের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। ইসরাইলের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রকেও কড়া বার্তা দিতে হবে মানবতার শত্রু ইসরাইলের ক্ষমা নেই। নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে তার দেশে খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য ইসরাইলের জনগণও চাপ দিচ্ছে। রমাদানে যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষ অসহায়ভাবে রোজা পালন করেছে। মহান আল্লাহ তাদের সাহায্য করুন।
দেশের বিনাভোটের সরকার রমাদানের পবিত্রতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইফতারের মতো একটি বড় ইবাদত করতে উৎসাহ দেয়নি। যদিও সাধারণ জনগণ ছাত্র-শ্রমিক মেহনতি মানুষ সোনারগাঁও হোটেল থেকে শুরু করে পথে-প্রান্তরে রিকশা-ঠেলাগাড়ি থামিয়ে একসঙ্গে ইফতার করেছে। আমার স্বচক্ষে তা দেখার সুযোগ হয়েছে। আমি নিজেও তাদের সাথে মাঝে মাঝে শরিক হয়েছি, তাদের উৎসাহ দিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের সাহায্য করলে কোনো দল বা গোষ্ঠী রমাদানের ফসল ঘরে তুলতে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। বাকি ১১ মাস আমরা আল্লাহকে মেনে তাঁর দেয়া আল কুরআনের বাণী ও রাসূলের দেখানো পথে দেশে খোদার রাজ কায়েমের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক : সাবেক সিনেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।