২১ ফেব্রুয়ারির আলোচনা সভায় অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ

ভাষা আন্দোলনের শহীদদের চিরদিন এ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে

গত ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসকাব কনফারেন্স লাউঞ্জে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলে ভাষা শহীদদের স্মরণে ঢাকা মহানগরী জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ

সোনার বাংলা রিপোর্ট
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ বলেছেন, স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার আদায়, অন্যায় ও জুলুমের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এ দেশের মানুষ জীবন দিয়েছেন। তারা হারিয়ে যাননি, শহীদ হয়েছেন। সেই শহীদদের চিরদিন এ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আজো অধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। আজ স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। শহীদদের কাছ থেকে আমরা এ শিক্ষাই পেয়েছি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসকাব কনফারেন্স লাউঞ্জে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলে ভাষা শহীদদের স্মরণে ঢাকা মহানগরী জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার। আরো বক্তব্য রাখেন মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি সেলিম উদ্দিন, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, মহানগরী নেতা ডা. রেদুয়ানুল্লাহ শাহেদী, অ্যাডভোকেট মশিউল আলম প্রমুখ। রাজধানীর রমনা, সবুজবাগ, রামপুরা, ডেমরা, খিলগাঁও, দক্ষিণখান, সূত্রাপুর, তেজগাঁও, দারুসসালাম, আদাবর, শাহআলী, উত্তরা, বাড্ডা, কাফরুলসহ  থানায় থানায় আলোচনা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জাতীয় প্রেসকাবে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় একেএম নাজির আহমদ বলেন, স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু থাকলে দলীয় পেশিশক্তি ব্যবহার করার সুযোগ থাকে না। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। বর্তমানেও অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের জন্য তিনি দোয়া করার আহ্বান জানান।

৫২’র ভাষা আন্দোলনকে ভাষাগত মানবাধিকারের সংগ্রাম উল্লেখ করে নাজির আহমদ বলেন, মাতৃভাষায় কথা বলা সকলের অধিকার। এই অধিকার বাস্তবায়নের আন্দোলনে অংশ নিয়ে আমাদের বেশ কিছু ভাই শহীদ হয়েছিলেন। আবার অনেকে জীবিত আছেন, যাদের এ অবদান ছিল। তাদের একজন অধ্যাপক গোলাম আযম। তিনি এই ভাষার মাসেও মজলুম হিসেবে প্রিজন সেলে জীবনযাপন করছেন।’’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলুমের বিরুদ্ধে রক্তদানকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। জাতিসংঘের  যে সকল কর্মকর্তারা বাংলাকে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য কাজ করেছেন তাদের জন্য দোয়া করতে হবে। সরকার  যেন সত্য গোপন করা ও মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকে এ জন্য দোয়া করতে হবে।

তিনি বলেন, যারা কখনো মিথ্যা বলেননি, কখনো কাউকে আঘাত করেননি, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক গোলাম আযমকে খেতে দেয়া হচ্ছে না, ঘুমোতে দেয়া হচ্ছে না, তিলে তিলে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। কৃতি এই ভাষা সৈনিককে আটকে রেখে নাস্তিক মার্কা লোকদের সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে মুসলিম লীগের মতো অবস্থা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেলিম উদ্দিন বলেন, প্রতিটি অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অধ্যাপক গোলাম আযমের অবদান ছিল। গোলাম আযমের সামান্য তি হলে কেউ সুখে থাকতে পারবেন না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে গোলাম আযমকে মুক্ত করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন। ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শহীদরা ভাষা আন্দোলনে যে ল্েয জীবন দিয়েছেন, সে ল্য পূরণ হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে জামায়াতের অফিস খুলতে দেয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজ মানুষের নিরাপত্তা নেই। স্বাধীনভাবে চলার ও কথা বলার অধিকার নেই। ভাষা আন্দোলনের চেতনা আজ ভূলুণ্ঠিত। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না’ বলে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তাতে প্রমাণিত হয় এটি একটি ঘৃণিত উদ্যোগ। এ উদ্যোগ যুদ্ধাপরাধীর বিচারের টার্গেট নয়, জামায়াতকে দুর্বল করাই এ বিচারের টার্গেট। তিনি অবিলম্বে জামায়াত নেতাদের মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় অধিকার আদায়ে কঠোর আন্দোলন করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

ডেমরা : ডেমরা থানা জামায়াতের উদ্যোগে ভাষা শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল থানা আমীর হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়, প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগরী নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হালিম। বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম ও তুরাগ থানা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল মালেক পাটোয়ারী প্রমুখ।

রামপুরা : রামপুরা থানার উদ্যোগে ভাষা শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল থানা আমীর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে  প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি মো. সেলিম উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি হাসান ইমাম, থানা নায়েবে আমীর এ টি এম শোয়াইব হোসেন মিল্লাত, থানা কর্মপরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন, আব্দুল হাদী ও ফজলে আহম্মেদ  প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকার ভাষার মাসেও জনগণের ভাষার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সরকার একতরফাভাবে সংসদে কালো আইন পাস করে জনগণের কথা বলা বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে। জনগণ সরকারের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। তিনি ভাষা সৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযমসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি করেন।

সবুজবাগ : সবুজবাগ থানার দণি দাও ইউনিয়নের উদ্যোগে ভাষা শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল থানা কর্মপরিষদ সদস্য শামছুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি মো. সেলিম উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি মাওলানা মনির হোসেন, এস এম আলমগীর কবির ও মতিউর রহমান প্রমুখ।

দণি খান : থানা কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুল হক, ডা. আবু তাহের, আবু বকর সিদ্দিক ও সাবেক শিবির নেতা সবুজ প্রমুখ।

সূত্রাপুর : থানা আমীর এ বি এম সাইফুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি কামরুল আহসান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মোখলেছুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, আনোয়ার হোসেন ও আবুল হোসাইন প্রমুখ।

উত্তরা : থানা আমীর অ্যাডভোকেট জাকির হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মীম আতিকুল্লাহ, মনিরুজ্জামান, মাওলানা নূরুল আমীন ও বিশিষ্ট শিাবিদ অধ্য মঞ্জুরুল হক প্রমুখ। পরিচালনা করেন থানা সেক্রেটারি মাহমুদুর রহমান।

তেজগাঁও : থানা আমীর মাওলানা মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা শরীফ হোসাইন ও খন্দকার শফিক প্রমুখ। পরিচালনা করেন থানা সেক্রেটারি সালা উদ্দিন।

দারুসছালাম : জামায়াতে ইসলামী দারুস ছালাম থানার ৯নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে ভাষা শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিলে ওয়ার্ড সভাপতি আবু তাহের আনসারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন থানা আমীর মো. বেলাল হেসেন, উপস্থিত ছিলেন আবু সাদ, মাসউদুর রহমান প্রমুখ।

আদাবর থানা : থানা আমীর মো. দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেক্রেটারি আ ন ম হাসান নোমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা আলী আক প্রমুখ।

শাহআলী : থানা আমীর মিজানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি দৌলত আহমদ, থানা কর্মপরিষদ সদস্য আমজাদ হোসাইন, সাইদুর রহমান ও মাওলানা আবু দাউদ প্রমুখ।

কাফরুল : থানা আমীর লস্কর মো. তসলীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম।

রমনা : থানা সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লা, হাবিবুর রহমান খান ও সাবেক শিবির নেতা আতাউর রহমান সরকার।

বাড্ডা থানা : জামায়াতে ইসলামী বাড্ডা থানার ভাটারা ও বাড্ডা ইউনিয়নের উদ্যোগে পৃথক দুইটি দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ভাটারা ইউনিয়ন আমীর আবুল কাশেম ও বাড্ডা ইউনিয়ন আমীর কে এ মিজানের সভাপতিত্বে মাহফিল দু’টিতে বক্তব্য রাখেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দিন, ফখরুদ্দিন মো. কেফায়াতুল্লাহ, আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।