সংবাদ শিরোনামঃ

বিভাজন নয় জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করুন ** ভিা চাই না কুত্তা সামলাও ** দেশ বড় ধরনের খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হবে ** রিপোর্টের সাথে বক্তব্যের কোনো মিল নেই ** খোল নলচে না পাল্টালে রাজনৈতিক বিতর্ক বাড়বে ** অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি রাষ্ট্রপ ** সরকারের প্রতি জনআস্থা কমছে ** সংঘাতের পথে পা বাড়িয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে সরকার ** সংবাদপত্রের পাতা থেকে ** বিশ্বের দেশে দেশে ভাষা : বাংলা ভাষার তাত্ত্বিক দর্শন এবং ভাষা চর্চা ** সাংবাদিকরা হত্যার টার্গেট কেন? ** দেশটা ক্রমশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে ** ভাষা আন্দোলনের শহীদদের চিরদিন এ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে ** মিয়ানমার-বাংলাদেশ সরাসরি চালু হতে যাচ্ছে নৌ ও বিমান যোগাযোগ সেতুবন্ধনে নয়া সম্ভাবনার দ্বার **

ঢাকা শুক্রবার ১২ ফাল্গুন ১৪১৮, ১ রবিউস সানি ১৪৩৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২

মো. আসাদুজ্জামান আসাদ,পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ে উৎপাদিত হচ্ছে সুস্বাদু ও উৎকৃষ্ট মানের শরবত তৈরির ফল প্যাশন বা ট্যাং ফল। অত্যন্ত সুস্বাদু ও উৎকৃষ্টমানের শরবত তৈরি হচ্ছে এ ফল দিয়ে। স্বাদে-গন্ধে আর রংয়ে ট্যাঙ্ক শরবতের অবিকল। স্থানীয়ভাবে এ ফলকে ট্যাং ফল নামে নামকরণ করা হয়েছে। প্যাশন বা ট্যাং যে নামই হোক না কেন এ ফল দিয়ে সারা বছরই শরবতের চাহিদা মেটাচ্ছেন স্থানীয় ফল চাষীরা। এ ফলটি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা হলে স্থানীয় পর্যায়ে পুষ্টি চাহিদা মিটানো সম্ভব। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে এ ফল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলেও মনে করছেন সৌখিন চাষীরা। অবশ্য স্থানীয় কৃষি বিভাগও লাভজনক এ ফল চাষে জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।

পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় দুয়েকজন চাষী তিন চার বছর আগে এ ফলটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাষাবাদ শুরু করেন। দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভুজারিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক মো. মহসীন আলী তার বানিয়াপাড়া আদর্শ গ্রামে প্রথম এ ফলের চারা রোপণ করেন। মহসিন আলী ২০০৮ সালে সৌদি আরব প্রবাসী এক আত্মীয়ের কাছ থেকে এ ফলের দুটি চারা গাছ সংগ্রহ করে বাড়ির আঙিনার টিউবওয়েল পাড়ে লাগান।

ফলের চারা গাছ দুটি লাগানোর ২ বছরেই ফল দেয়া শুরু করে। গাছে ফল ধরলেও প্রথম দিকে জংলী ফল মনে করে এটা ব্যবহার করা হয়নি। পরে ওই আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারি এ ফল দিয়ে শরবত বানানো যায়। ওই আত্মীয়ের পদ্ধতি অনুযায়ী ফলটি দিয়ে শরবত বানাই এবং পান করি। এ ফলের শরবত অত্যন্ত সুস্বাদু। এ ফলের শরবতের স্বাদ, রং ও সুবাস বাজারে পাওয়া ট্যাংকের মত হওয়ায় স্থানীয় লোকজন একে ট্যাং ফল হিসেবে নামকরণ করেছেন। গত দু’বছর ধরে এ ফলের শরবত নিজেরা পান করে আসছি। এ ফলের শরবত গ্রামবাসী, আত্মীয়-স্বজন, অতিথি এবং দেখতে আসা সব লোকজনই পান করেন। এ ফলের শরবত নিজেদের এবং অতিথি আপ্যায়নে সারা বছরের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, কোনো প্রকার পরিচর্যা ছাড়াই গাছটি বেড়ে উঠে। অযতেœ বেড়ে ওঠা এ গাছে লতাপাতা ছাড়িয়ে বিশাল বড় হয়েছে। সারাবছরই গাছে এই ফলটি ধরে। গত বছরও ২-৩শ’ ফল ধরেছিল। এ বছর দুটি গাছেই ৩শ’ থেকে ৫শ’ ফল ধরেছে। প্রথম রোজা থেকে এ ফল দিয়ে শরবত বানানো শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এ ফল দিয়ে শরবত বানানো হচ্ছে। এখনও গাছে শতাধিক ফল রয়েছে।

মহসীন আলীর ছেলে পঞ্চগড় ড. আবেদা হাফিজ স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মো. শাহজাহান আলী জানান, তীব্র গরমে তৃষ্ণা মেটাতে এবং শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে এ ফলের সরবত অত্যন্ত উপকারী। প্যাশন ফলটি প্রথমে সবুজ পরে সোনালী রং ধারণ করে। প্যাসন ফলটি দেখতে কাগজি লেবু বা কমলালেবুর মতোই।

প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এ ফলটির উপরিভাগের পাতলা আবরণ (চছা) তুলে ফেলে ফলের ভেতরের সুগন্ধিযুক্ত মজ্জা ৫-৬ মিনিট পানিতে চুবিয়ে রাখলে পানির রং ট্যাং শরবতের রং ধারণ করে। ওই পানিতে অতিরিক্ত পানি মিশিয়ে সামান্য চিনি দিয়ে গুলিয়ে নিয়ে শরবত তৈরি করা যায়।

এ প্যাশন ফল দিয়ে জুস তৈরির জন্য সংশ্লিষ্টরা কেউ এগিয়ে আসলে এবং প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতের ব্যবস্থা করলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ফলের বাগান সৃজন করে উৎপাদন করা সম্ভব বলে সচেতন মহল মনে করেন।

শাহজাহান আলী আরও জানান, কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেলে এ ফল গাছটি সঠিকভাবে চাষাবাদ শুরু করলে লাভজনক ফল হিসেবে এর চাষাবাদ বৃদ্ধি করা সম্ভব।

সুস্বাদু ও সুগন্ধিযুক্ত এ ফলের শরবতের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এ ফল গাছ ও ফলটি দেখতে আসছেন। দেবীগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এ ফলের চাষের কথা শুনে বিষয়টি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে জানালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আলীমুজ্জামানসহ কৃষি বিভাগের একটি টিম সৌখিন প্যাশন ফল চাষী মহসীন আলীর বাসায় যান। এ ফল থেকে কিভাবে শরবত তৈরি করা যায় তা কর্মকর্তারা প্রত্য করেন এবং শরবত পান করেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্যাশন একটি বিদেশি ফল। এ ফলের গাছটি দেখতে জংলি লতাপাতা গাছের মত। প্যাশন ফলগাছটি একটি দীর্ঘজীবী লতাজাতীয় উদ্ভিদ। ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে ও আর্জেন্টিনা এ ফলটির আদিনিবাস। প্রায় সারাবছরই এ গাছটি ফল দেয়। তবে গরমকালে এর ফলন বেশি হয়। খাগড়াছড়ি জেলাসহ পাহাড়ি এলাকায় এ ফলটির চাষ শুরু হয়েছে। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট প্যাশন ফলের একটি স্থানীয় জাতও উদ্ভাবন করেছেন। বারি প্যাশন ফল-১ নামে প্যাশন ফলের এ জাতটি বর্তমানে পাহাড়ি এলাকায় চাষাবাদ শুরু হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আলীমুজ্জামান জানান, পঞ্চগড়ের মাটি ও আবহাওয়ায় প্যাশন ফল চাষ করা সম্ভব। ফলের শরবত উৎকৃষ্টমানের। এ ফলের বাণিজ্যিকভাবে আবাদ সম্প্রসারণে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। পঞ্চগড়ে এ ফল চাষের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কৃষি কর্মকর্তাদেরও অবহিত করেছি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সঙ্গে আলোচনা করে স্থানীয় কৃষকদের এ ফল চাষে প্রশিণ প্রদানের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।