সংবাদ শিরোনামঃ

সমুদ্রে এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ ** পরবর্তীতে বলবৎ আইন দিয়ে পূর্বে সংঘটিত অপরাধের বিচার করা যায় না ** সরকার জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে ** উপদেষ্টারা সরকার ও দলসহ দেশকে ডুবাতে বসলেও হাসিনার বোধোদয় হচ্ছে না ** বাংলাদেশের ১৭শ’ একর জমি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা ** ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ ** ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে...’ ** মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা চলছে লুটপাট ** সীতাকুণ্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড করতে বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে উপকূলীয় গাছ সাবাড় করার অভিযোগ ** সরকার বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধী মতবাদ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ** চবি সভাপতিসহ ৮ নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেশব্যাপী শিবিরের বিক্ষোভ ** দেশ সন্ত্রাস রাজনীতি ** ভারতে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিংশিবির **

ঢাকা শুক্রবার ৯ চৈত্র ১৪১৮, ২৯ রবিউস সানি ১৪৩৩, ২৩ মার্চ ২০১২

॥ খন্দকার মহীউদ্দীন আহমদ॥
তালেবানদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান শান্তি প্রক্রিয়ার তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্তে আফগানিস্তানের কান্দাহারে বিগত ১১ মার্চ এক মার্কিন সৈন্যের নির্বিচার গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ১৬ জন বেসামরিক আফগান নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। নিহতদের মধ্যে নারী শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর পুরো আফগানিস্তান জুড়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ন্যাটো নেতৃত্বাধীন ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স ফোর্স এক বিবৃতিতে বলেছে, কান্দাহারে গুলি চালিয়ে বেসামরিক ব্যক্তিদের হতাহতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক মার্কিন সেনাকে আটক করা হয়েছে। ন্যাটো একে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। বিবিসির সংবাদদাতা কুয়েনটিন সমারভিল কাবুল থেকে জানান, ওই সেনা রোববার সকালে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে ও বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করতে থাকে। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মনে হচ্ছে। গত মাসে আফগানিস্তানে ন্যাটোর একটি ঘাঁটিতে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটিতে যখন তীব্র মার্কিন বিরোধী মনোভাব বিরাজ করছে ঠিক এমন সময় এ ঘটনা ঘটল। মার্কিন সেনা কর্তৃক কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় শুরু হওয়া প্রচণ্ড ক্ষোভ এবং অব্যাহত সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৪০ জন সাধারণ আফগান নিহত হয়। এরপর আফগান নিরাপরাধ নাগরিক হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে মার্কিন বিরাধিতা আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আফগানিস্তানে মোতায়েন বহুজাতিক বাহিনীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মার্কিন সেনার নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যেই আফগান  ও বহুজাতিক বাহিনীর সম্পর্কে মারাত্মক ফাটল ধরছে। পাশাপাশি বেসামরিক আফগানদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ ও আতঙ্ক। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গত মঙ্গলবার জালালাবাদ শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০০ ছাত্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তারা কান্দাহারে মার্কিন সেনার হামলার নিন্দা জানায়। বিক্ষোভকারীরা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ ওবামা নিপাত যাক ‘স্লোগানে’ পুরো এলাকা মুখরিত করে ফেলে।

এদিকে এই হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তালেবান। তালেবান ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক শহীদের রক্তের বদলা হিসেবে খুনি মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া হবে। এতে আরও বলা হয়, হতাহতের শিকার অধিকাংশই নারী শিশু ও বৃদ্ধ ব্যক্তি। ওই নিষ্ঠুর হত্যাকারী নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখন ওই সেনাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে এই অমানবিক ঘটনার দায় এড়াতে চাচ্ছে মার্কিনীরা। তালেবান বলছে, যদি অপরাধী সেনা প্রকৃতই মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে থাকে তবে তা মার্কিন বাহিনীর জন্য আরেকটি নৈতিক পরাজয়। কেননা, এতে স্পষ্ট যে তারা মানসিক রোগীর হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে। তারা সে অস্ত্রের ব্যবহার করছে নিরস্ত্র আফগানদের ওপর। এই ঘটনার পর তালেবানরা আফগান প্রেসিডেন্ট কারজাইর দুই ভাই ও শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওপর হামলাও চালিয়েছে। প্রতিশোধমূলক এই হামলায় একজন আফগান সেনা নিহত ও একজন আফগান পুলিশ আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে তালেবানরা ঘোষণা দিয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চলমান আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছে। তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার শর্তাবলী পরিবর্তন করায় তারা আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছে। আফগান পার্লামেন্ট এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং বিদেশি বাহিনীর কর্মকাণ্ডে আফগানদের ধৈর্যচ্যুতি হচ্ছে বলেও পার্লামেন্টে বলা হয়েছে। আফগান পার্লামেন্টে যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী মনোভাব এখনকার বাস্তবতায় প্রখর হয়ে উঠেছে। পার্লামেন্ট নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সমস্ত বিদেশি বাহিনীকে দেশ ত্যাগ করতে বলেছে। কারজাইর আপন ঘরেই এখন মার্কিন বিরোধী মনোভাব তুঙ্গে। আফগানীরা এই সমস্ত উদ্দেশ্যমূলক ঘটনায় বিব্রত। প্রতিটি ঘটনাই শান্তি আলোচনা ও উদ্যোগকে ব্যাহত করছে অথচ নির্বিকার যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হত্যাকাণ্ডের জন্য আফগান প্রেসিডেন্ট কারজাইর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি এর পেছনে যেই দায়ী তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ওবামা দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষমা চাননি। অথবা কোনো প্রকার দায়দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। ১৬ জন নিরীহ মানুষ হত্যার দায়ে একজন মার্কিন সৈন্যের মৃত্যুদণ্ডও যদি দেয়া হয় তবে তা দুর্ঘটনার জন্য যথেষ্ট নয়। মার্কিনীরা বিগত একদশক  ধরে এভাবে নিরীহ আফগানদের হত্যা করে চলছে। যুদ্ধের ময়দান বানিয়ে প্রতিনিয়তই সেখানে চলেছে হত্যাযজ্ঞ। ড্রোন হামলায় হাজারো নিরপরাধ মানুষ তারা হত্যা করেছে।

সাম্প্রতিক ঘটনায় পরিষ্কার যে, আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি চায় না সাধারণ আফগানরাও। মার্কিন বাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবস্থান করছে। তবে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ওবামা সংবাদ মাধ্যম সিবিসির কেডিকে-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মার্কিন সেনার গুলিতে ১৬ জন আফগান নিহত হওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনায় আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার করতে তিনি আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়েছেন। পিটার্সবুর্গে কেডিকে-কে ওবামা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আমাদের সেনাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করেছে। অব্যাহত মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ওবামা বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যদের দায়িত্বশীলতার সাথেই প্রত্যাহার করা হবে। এদিকে হামিদ কারজাই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ন্যাটো বাহিনীর উচিত পল্লী এলাকা ও গ্রামগুলো থেকে সরে এসে প্রধান ঘাঁটিগুলোতে অবস্থান নেয়া এবং আফগান সৈন্যদের উচিত ২০১৩ সালের মধ্যেই দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়া। এদিকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৬ জন বেসামরিক আফগান হত্যার ঘটনায় দায়ী মার্কিন সেনাকে  বুধবার গভীর রাতে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

১৬ জন গ্রামবাসীকে হত্যাকারী মার্কিন সেনার নাম রবার্ট ব্লেইস, সে একজন স্টাফ সার্জেন্ট। গত শুক্রবার রাতে কুয়েত থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাকে কানসাসের লিডেনওয়ার্থের এক সেনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ব্লেইসের বিরুদ্ধে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়নি। তবে মার্কিন সেনা আইনেই তার বিচার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে মার্কিন সেনাকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য দেশটির ক্ষুব্ধ পার্লামেন্ট সদস্য ও জনগণের দাবির মুখেই অভিযুক্ত সৈন্যকে হস্তান্তর করা হলো। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনসহ সাধারণ আফগান ও পার্লামেন্ট সদস্যরা আফগানিস্তানের প্রচলিত আইনে দেশটির অভ্যন্তরে দায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যের বিচার দাবি করে আসছিল। কান্দাহার থেকে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য শেকিবা হাশিমি বলেন, এটি আমাদের দাবির পরিপন্থী। এ দেশের অভ্যন্তরে যদি তার বিচার করা না হয় তবে আমেরিকানদের বিরুদ্ধে আফগান জনগণ আবারো উঠে দাঁড়াবে।  সন্দেহভাজন ওই সেনা কর্মকর্তাকে এভাবে সরিয়ে নেয়ার অর্থ হলো যুক্তরাষ্ট্র কখনও সেই সেনাকে আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে না। এতে করে আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে আফগানরা। ওই হত্যাকাণ্ড ও পূর্বেকার ঘটনাগুলো বস্তুতপক্ষে আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করল। শান্তি প্রক্রিয়াও প্রশ্নের সম্মুখীন হলো। গত দুই মাসেরও কম সময়ে আফগানিস্তানে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় ৬ জন মার্কিন ও ৩০ জন আফগান সেনা নিহত হয়েছে। একই সময়ে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ক’জন আফগান সেনা কর্তৃক দু’জন ন্যাটো কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। স্মরণ করা যেতে পারে যে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত ৭০ জন ন্যাটো সৈন্য নিহত হয়েছে। সাম্প্রতিককালে ন্যাটো ও আফগান বাহিনীর মধ্যেও আস্থা ও বিশ্বাসের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এ যাবতকালে গৃহীত সমস্ত পদক্ষেপই বিফল প্রমাণিত হয়েছে যা কাক্সিক্ষত সুফল বয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের যে ঘোষণা রেখেছে সে ক্ষেত্রে বিপদ রয়েছে। সেনা প্রত্যাহারের পর কি ঘটবে তা নিয়ে ওবামা প্রশাসন উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সাথে যে কৌশলগত স্ট্র্যাটেজিক এগ্রিমেন্ট  করতে চেয়েছে তাও ঝুলে আছে এ বিষয়ে আফগানিস্তানের শর্তাবলী অনুযায়ী চুক্তি সম্ভবপর নয়। অন্যদিকে তালেবানদের সাথে যে শান্তি চুক্তি করতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী তাতেও সাফল্যের সম্ভাবনা কম। এই আলোচনার পূর্বশর্ত অনুযায়ী পাঁচজন তালেবান নেতাকে গুয়ানতানামোর জেল থেকে মুক্তি দিলেও শেষাবধি এই প্রক্রিয়ায় তেমন সফলতা এখনও আসেনি। এতে প্রবল আপত্তি রয়েছে কারজাই সরকারেরও। যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যের হাতে ১৬ জন আফগান নিহত হওয়ার পর তালেবানরা সেই আলোচনাও স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা আফগান সরকারের সাথে কোনো শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণে অসম্মতি প্রকাশ করে বলেছে, তারা মনে করে যে, বিদেশি বাহিনীর দ্বারা অধিকৃত আফগান সরকারের সাথে কোনো আলোচনা অর্থহীন। অন্যদিকে আফগানিস্তান পাকিস্তান সম্পর্কে সত্যিকার অর্থে কোনো অগ্রগতি হয়নি। পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসে যে ফাটল ছিল তা রয়েই গেছে। ইসলামাবাদে পাক-ইরান-আফগানিস্তান সম্মেলনে ঐক্যের সুর বাজলেও বাস্তবে আফগান ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পাক-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক। আফগানিস্তান চায় পাকিস্তান তালেবানদের আলোচনায় বসতে উৎসাহিত করুক। পাকিস্তান বলছে আমরা সেটা করতে পারি না। কেননা, আমাদের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। পাক-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বর্তমান সময়ে সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তাই আফগান-তালেবান ইস্যুকে পাকিস্তান তার জন্য দেখছে ‘ট্রাম্পকার্ড’ হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সাথে নমনীয় আচরণ করলে হয়তো বা তখন পাকিস্তান তার শক্তি সমর্থকে ব্যবহার করছে। পাকিস্তান কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার নীতিতে আফগান সমস্যার সমাধান/নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে আগ্রহী বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বর্তমান বাস্তবতায় আফগান যুদ্ধের অবসানের যেমন দ্রুত কোনো সমাধান দেখা যাচ্ছে না। তেমনি বারাক ওবামাও নির্বাচনপূর্বে এই ইস্যুতে তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। তালেবানরাও এখন আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে মনে করছে। মার্কিনবিরোধী প্রচণ্ড ক্ষোভ ও জনসমর্থনহীন কারজাই সরকার এবং পাকিস্তানের নিরবতা তালেবানদের জন্য ভিন্ন রাজনৈতিক হিসাবও কৌশল প্রণয়নের রাস্তা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তালেবানদের শক্ত অবস্থান তাই প্রমাণ করে। পাশাপাশি ২০১৩ সালের মধ্যে পশ্চিমা সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়ার ওবামার অঙ্গীকার এবং আফগান সরকারের দাবি আফগানদের ভীতকে আরও মজবুত করে দিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট আফগান সরকারের অভ্যন্তরে এই দাবি এখন জোড়ালো।

এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লিওন প্যানেট্টাও স্বীকার করেছেন কোরআন পুড়ানো এবং ১৬ জন আফগান হত্যার ঘটনায় ‘গভীর সঙ্কটময়’ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনা প্রতিটিই গভীর সঙ্কটাপন্ন। বাস্তবতা হলো পশ্চিমারা আফগান ছাড়তে চাইছে না, আবার ধরেও রাখতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে তাদের সমস্ত কলাকৌশলই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কেননা তারা খুব ভালে করেই জানে যে, তাদের আফগান ত্যাগের পর তালেবানরাই ক্ষমতায় ফিরে আসবে। পশ্চিমাদের নিজস্ব মূল্যায়নেও তা পরিষ্কার। সাম্প্রতিককালে ন্যাটোর এক গোপন প্রতিবেদনও তা সুস্পষ্ট হয়েছে। ‘স্টেট অব দি তালেবান’ শিরোনামের ওই গোপন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ‘তালেবান জঙ্গিদের শক্তি সামর্থ্য এবং তহবিল প্রাপ্তি ও জিহাদে উদ্বুদ্ধকরণ ও কৌশলগত দক্ষতা অক্ষুণœ রয়েছে। তাছাড়া কারজাই সরকারের দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ অধিকাংশ আফগানরাও চায় ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত তালেবানরা ক্ষমতায় ফিরে আসুক। পশ্চিমাদের বাস্তবতা জেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে আফগান রণাঙ্গন ও রণাঙ্গনের বাইরের সমস্ত শক্তিগুলোর মধ্যকার সুদৃঢ় ঐক্য যেমন প্রয়োজন তেমনই প্রয়োজন শান্তি স্থিতিশীলতা অর্জনে দৃঢ় প্রত্যয়। ওবামা বা পশ্চিমাদের পক্ষে ২০১৪ সালের পর আফগান রণাঙ্গনে টিকে থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে আসছে। বস্তুত কোনো বিকল্প পথ নেই তাদের। এখন তারা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বিশ্বের পরাক্রমশালী শক্তিগুলো নিঃস্ব ও নিরীহ আফগানদের হাতে পরাস্ত হওয়ার দৃশ্য এবার অবলোকন করবে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ। আফগানিস্তান কখনও মাথানত করেনি এখনও করবে না।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক। ঊসধরষ : সড়যরথধযসধফ১৫@ুধযড়ড়.পড়স

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।