সংবাদ শিরোনামঃ

সমুদ্রে এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ ** পরবর্তীতে বলবৎ আইন দিয়ে পূর্বে সংঘটিত অপরাধের বিচার করা যায় না ** সরকার জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে ** উপদেষ্টারা সরকার ও দলসহ দেশকে ডুবাতে বসলেও হাসিনার বোধোদয় হচ্ছে না ** বাংলাদেশের ১৭শ’ একর জমি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা ** ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ ** ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে...’ ** মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা চলছে লুটপাট ** সীতাকুণ্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড করতে বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে উপকূলীয় গাছ সাবাড় করার অভিযোগ ** সরকার বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধী মতবাদ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে ** চবি সভাপতিসহ ৮ নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেশব্যাপী শিবিরের বিক্ষোভ ** দেশ সন্ত্রাস রাজনীতি ** ভারতে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিংশিবির **

ঢাকা শুক্রবার ৯ চৈত্র ১৪১৮, ২৯ রবিউস সানি ১৪৩৩, ২৩ মার্চ ২০১২

নয়া ৬ মামলায় ৫৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ

সোনার বাংলা রিপোর্ট
গত ২০ মার্চ সবকয়টি মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর কারাবন্দী ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে জেলগেট থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। সন্ধ্যে সাড়ে ৭টার সময় জেল থেকে বের হওয়ার পরপরই তাকে গ্রেফতার করে ডিবির ঢাকা দক্ষিণ কার্যালয়ে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ পরদিন ২১ মার্চ তাঁকে নতুন ৬টি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আদালতে হাজির করে ৫৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। ৩টি মামলার শুনানি শেষে আদালত একটি মামলায় জামিন দিয়েছে এবং ২টি মামলায় মোট ৪দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। আদালত বাকি ৩ মামলার শুনানির দিন আগামী ২ এপ্রিল ধার্য করেছে।

সরকারের এ রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।

জেলগেট থেকে যেভাবে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত  সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম সকল মামলায় জামিন পেয়েছেন, ২০ মার্চ তিনি মুক্তি পাচ্ছেন, এ খবর নিশ্চিত হওয়ার পর এ প্রতিবেদক দ্রুত জেলগেটে গিয়ে যে দৃশ্য দেখলেন, তাতে মনে হলো না কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশের কারাগার থেকে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দলের নেতা বা কোনো রাজবন্দিকে মুক্তির আয়োজন চলছে। এ প্রতিবেদকসহ দেশের অন্য শীর্ষ প্রেস ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক জেলগেটে প্রতীক্ষা করছেন। তাদের জানানো হচ্ছে না, ঠিক কয়টার সময় তাঁকে মুক্তি দেয়া হবে। আইনজীবীগণও জেলগেটে অপেক্ষা করছেন। জেল পুলিশ ছাড়াও ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) সদস্যরা যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝেই কান ফাটানো হুইসেল। কিছুক্ষণ পর পর সাংবাদিক ও আইনজীবীদের তারা প্রশ্ন করেছে, আপনারা এখানে কেন?

হঠাৎ বিদুৎ চলে গেল। চারদিক অন্ধকার। তিনটি সাদা মাইক্রোবাস দিয়ে আড়াল করা হলো, জেলগেট। সাংবাদিকগণ যেন ছবি নিতে না পারেন, সমস্ত ফাঁকা জায়গা বন্ধ করে দাঁড়ালো পুলিশ। ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে উঁচুতে ক্যামেরা ধরে বিভিন্ন কৌশলে ছবি নেয়ার চেষ্টা করলেন সাংবাদিকগণ। কেউ কেউ সফল হলেন, কেউ হলেন না। জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামসহ জামিনে মুক্তি পাওয়া ১২ জনকে মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হলো। কে নিয়ে গেল? কোথায় নিয়ে গেল? জানার জন্য কাউকে পেলেন না সাংবাদিকগণ। যদিও বর্তমান সরকার তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে, এমন ভাষণের ক্যাসেট সুযোগ পেলেই বাজায়। একটু পর সাংবাদিকগণ টের পেলেন, কেমন তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে সরকার।

এটিএম আজহারের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মশিউল আলম প্রেসব্রিফিং দেয়ার সময় লাঠি হাতে তেড়ে এলো পুলিশ। তারা আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল, ক্যামেরায় হাত দিল, আইনজীবীদের গায়েও হাত দিল। অ্যাডভোকেট মশিউল আলম এ সময় বলেন, এটিএম আজহার উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিনে ছিলেন। ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করা যাবে না উচ্চ আদালতের এমন নির্দেশ সত্ত্বেও তাকে পুলিশের ঘেরাও এর মধ্য থেকে সাদা মাইক্রোতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা তার জীবন নিয়ে শংকিত। ব্রিফিং চলাকালেই পুলিশ সাংবাদিক ও আইনজীবীদের উপর চড়াও হয়। তারা ধাক্কা দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিতে চায়। সাংবাদিকরা এর কারণ জানতে চাইলে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা ক্যামেরার সামনে মুখ ঢেকে কারাগারের প্রধান ফটকের ভেতরে আশ্রয় নেয়।

সাংবাদিকদের প্রতিরোধের মুখে ডিএমপির পুলিশ সদস্যরা চলে গেলে জেলপুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের কাছে দুঃখ প্রকাশের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে, অ্যাডভোকেট আ. রাজ্জাক প্রেস ব্রিফিং দেন। তিনি বলেন, তারা জামিননামাসহ প্রয়োজনীয় কাজগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু না জানিয়ে এটিএম আজহারুল ইসলামসহ ১৩ জনকে কাদের হাতে তুলে দিলেন, তা আমাদের জানানো হয়নি। দুটি সাদা মাইক্রোবাসে করে তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হলো? যারা নিয়ে গেল ওরা কারা, আমরা জানি না? তাদের পুলিশের গাড়িতে নয়, সাদা মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা অর্থাৎ তাঁর আইনজীবীগণ এবং পরিবার ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরাসহ গোটা দেশবাসী  এ জাতীয় নেতার জীবন নিয়ে শঙ্কিত। তাঁর দায়ের কার পাঁচটি মামলায় আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন, নতুন মামলায় গ্রেফতার না করার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারপর তাঁকে এভাবে গ্রেফতার আইন আদালত ও গণতন্ত্রের প্রতি অশ্রদ্ধা ও অবজ্ঞার শামিল। মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সাংবাদিক ও আইনজীবীদের সাথে পুলিশ যে অসসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে, তারও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

এ প্রতিবেদক প্রত্যক্ষ করেন, ঠিক সন্ধ্যা ৭টার সময় দুটি সাদা মাইক্রোবাস এসে কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে আড়াআড়িভাবে দাঁড়ায়। এর একটি হলো স্বদেশ টেক্সটাইল্স (প্রা.) লিমিটেড ও অপরটির নং হচ্ছে ঢাকা মেট্টো-চ-৫১-৬২৪৮। গাড়ি দুটির ভেতরেই সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা বসা ছিল। কারারক্ষী, পুলিশ ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাইক্রোবাস দুটি ঘিরে রাখে। ফটকের সামনে থেকে সাধারণ পথচারীদের সরিয়ে দেয়। ঠিক ৭টা ১৫ মিনিটে এটিএম আজহারুল ইসলামসহ ১৫ জনকে দুটি মাইক্রোতে উঠানো হয়। এর মধ্যে এটিএম আজহারকে উঠানো হয় ঢাকা মেট্টো-চ-৫১-৬২৪৮ নং মাইক্রোতে। দায়িত্বরত পুলিশ মানুষের ভিড় সরিয়ে মাইক্রো দু’টিকে চলে যাওয়ার পথ করে দেয়। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে পুরো এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। নিয়ে যাওয়ার পরপরই বিদ্যুৎ চলে আসে।

জানা যায়, এটিএম আজহারুল ইসলামকে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মগবাজারস্থ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শেষে বাসায় যাওয়ার পর গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর একে একে তাকে ৫টি মামলায় জড়ানো হয়। এর মধ্যে পল্টন থানায় ৩টি মামলা। যার নং হচ্ছে ১৮(৯)১১, ১৯(৯)১১ ও ২০(৯)১১। এ ছাড়া রমনা থানায় ২টি মামলা, যার নং ৩৪(৯)১১ ও ৩৫(৯)১১। এসব মামলায় তাকে ২৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে যায়। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এটিএম আজহারুল ইসলামকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে। তার উপর এমন নির্যাতন করা হয়েছে যা কোনো জাতীয় নেতাকে এখন পর্যন্ত করা হয়নি।

এটিএম আজহারুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক তাসনীম আলমকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে, হয়রানি করার জন্য ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়েছিল। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি দাগি আসামিদের মতো ডাণ্ডাবেড়ি পড়ানোতে দেশে বিদেশে তীব্র সমালোচনা হয়। পরে তাকে আর ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়নি।

৫টি মামলার মধ্যে ৪টিতেই তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। ১টি তিনি নিম্ন আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হন। উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেয়ার পাশাপাশি তাকে হয়রানিমূলকভাবে গ্রেফতার না করার জন্য নির্দেশনা দেয়। যার রিট পিটিশন নং ১৬৩৮/২০১১। এতে সুনির্দিষ্ট ওয়ারেন্ট ছাড়া তাকে গ্রেফতার না করার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

এটিএম আজহারুল ইসলাম জামিন লাভ করবেন এমন খবরে দুপুরের পর থেকেই জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে। দুপুর গড়িয়ে বিকাল, সন্ধ্যা হয়ে যায়। কারা রক্ষী ছাড়াও পুলিশের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। সাদা পোশাকধারী পুলিশ কয়েক গাড়ি এসে নামে কারা ফটকের সামনে। পুলিশের এ তৎপরতায় মনে হচ্ছিল নেতিবাচক কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এটিএম আজহারুল ইসলামকে ডিবি পুলিশের দক্ষিণ শাখার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে উত্তরা যড়যন্ত্র বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখনো হবে। অন্য একটি সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অংশগ্রহণ করার স্বীকারোক্তি আদায়, বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে চাপ দিতেই তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।