সংবাদ শিরোনামঃ

হোসনি মোবারক উৎখাত : কিন্তু মিসরে গণতন্ত্র এখনো বহু দূর ** বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন ** দেশের স্বাধীন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইলে অবশ্যই ইসলামকে জীবনযাপনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে ** দোষারোপের রাজনীতি আর কতদিন? ** সংবিধান সংশোধন করে জাতির ঘাড়ে ধর্মনিরপেক্ষতা চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা হতে বিরত থাকুন ** বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মদ (সা.) ** প্রধানমন্ত্রীর অসহায়ত্ব ** দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে তার দলেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে ** সরকার মুখে সুন্দর কথা বললেও কাজ করে তার ঠিক উল্টোটা ** ভার্চুয়াল থেকে রাজপথে ** ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে আমরা ৪০ বছর পরেও স্বাধীনতার সুফল থেকে বঞ্চিত ** দেশে এখন অনিয়ম-দুর্নীতি বেড়ে গেছে -এরশাদ **

ঢাকা শুক্রবার ০৬ ফাল্গুন ১৪১৭, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৩২, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১১

ধারাবাহিক উপন্যাস ৪

গহীন গাঙের গদ্য

।। মোশাররফ হোসেন খান ।।
(গত সংখ্যার পর)
তা হোক।
সেই কষ্টের চেয়েও এখন তার কাছে মেয়ের এই আনন্দ ও খুশিটুকুর মূল্য অনেক-অনেক বেশি।
এর সুখটাও অন্যরকম। এই সুখটুকু থেকে সে এই মুহূতেআর বঞ্চিত হতে চায় না।
ফারিহা খুশিতে ডগমগ।
সে দৌড়ে চলে গেল অন্য ঘরে।
ওর মায়ের সাথে ফিসফিস করে কি যেন বললো।
মা-মেয়ের হাসির শব্দে রশিদের বুকটা ভরে উঠলো এক অপার আনন্দে। যে শ্রাবণের টই-টুম্বুর পুকুর।
কয়েকটি মাকড়সা, টিকটিকি আর তেলাপোকা ছাদের গায়ে ঘুরাফেরা করছে। একটি পোকা শিাকরের জন্য ওৎ পেতে আছে বাদামী রঙের টিকটিকি। সে বেল সুযোগের অপেÿায়।
রশিদ ঘরের ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আসলে ছাদ নয়, ছাদকে অতিক্রম করে তার দৃষ্টি এবং স্শৃতি চলে গেছে শৈশব-কৈশোরে।

আববার কাছ থেকে নতুন জামা, নতুন জুতো কিংবা সামান্য একটা কিছু পেয়েই কী যে খুশি হয়ে উঠতো।
মনে পড়ছে, শীতের সময়ে আববা সুতির নতুন চাদর কিনে আনলে খুশিতে সেই রাতে তার ঘুম হতো না। সকালে, খুব ভোরে-সেই নতুন ভাঁজ ভাঙ্গা চাদর গায়ে দিয়ে ভাপওঠা পুকুর পাড়ে বসে থাকতো। যাতে পাড়ার ছোটরা, তার সাথীরা সেটা দেখতে পায়। আবার নতুন লূঙ্গি কিনে আনরেও তেমনটি করতো। দিনে পরার পর রাত্রে শুবার সময় সেটা খুলে ভাঁজ করে রেখে দিত বালিশের নিচে। যেন মহা মূল্যবান কোনো সম্পদ। পরদিন আবার পরতো। কত সাবধানে। যেন ভাঁজ না ভাঙে। যেন ধুলো না লাগে। কত সতর্কতা। যতদিন ময়লা না হবে, যতদিন মা সেটা জোর করে ধুযে না দেবে ততোদিনই চলতো এই ধরনের প্রক্রিয়া। খুশির ঢলে উপচে উঠতো সেই সময়গুলো। অন্র কোনো  কিছুর বিনিময়ে সেই খুশি কেনা সম্ভব হত না। সে এক সম্পূর্ণ আলাদা এক অনুভূতির কম্পন।
এখন সময় কত বদলে গেছে।

ঢাকা শহরের ছেলে-মেয়েদের কাছে নতুন জামা-কাপড় পাবার তীব্র আনন্দের সেই বহিঃপ্রকাশ নেই। এগুলি তাদের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের আনন্দ আর উৎসবে এখন যুক্ত হয়েছে কত কিছু। টিভি, ভিসিআর, কম্পিউটার, ইন্টানেট, ই-মেইর, ফোন, ফ্যাক্স আরও কত কিছু। শহরের ছেলে-মেয়েরা তাদের আনন্দ বা বিনোদনের জন্য কত বিচিত্র উপাদান হাতের কাছেই পেয়ে যাচ্ছে।

এখন আর এরা শরৎ, হেমমত্ম, শীত, বর্ষা কিংবা বসমেত্মর মত প্রকৃতির নানা বৈচিত্র্যের মাঝে আনন্দ খোঁজে না। জোছনা, পূর্ণিমা কিংবা সূর্য বা নÿত্রের দিকেও তাকায় না। তাকায় না ঢেউ তোলা মেঘমালার দিকেও।
নতুন ফসল, শ্রাবণের নদী, শহরতের কাশফুল, গরম্নর হাম্বা ডাক, বাবুই পাখির বাসা বা বাদুড়ের কিচির মিচির শব্দ, হাঁসের প্যাক প্যাক ডাকের মধ্যে এরা আর আনন্দের কোনো উপাদান খোঁজে না। ওসব চেনে না, জানেও না।
কিন্তু রষিদ তো ভুলতে পারে না তার সেই শৈশব মাড়ানো পথের কথা, মাঠের কথা, থই থই নদী কিংবা শাপলা ভাসা সেইসব খাল-বিলের কথা। তার কেবলই মনে পড়ে। দোলা দিয়ে যায় তার হৃদয়ে। কম্পন তোলে এক অন্য রকমের অনুভূতি। নিজের মনেই আবৃত্তি করতে থাকে :

উত্তর-বর্ষায় জেগেছে নতুন ভোর। শরতের
স্নিগ্ধ শিরশিরে আবৃত্ত। কৃষকের ভারী পদছাপ
পড়ে আছে নরোম ঘাসের বুকে। অবিকল যেন
ভেজা মাটির শরীরে পাঁচটি আঙৃুল এঁকে গেছে
কোনো এক মহৎ শিল্পের সুষমামন্ডিত ছবি।

এ আমার সবুজ ফসল আর সিক্ত মৃত্তিকার
নিজস্ব অর্জন। ঘুঘরো বা কেঁচা অাঁকা চিত্রকর্ম,
প্রচছদত্ত কী বিস্ময়কর। পৃথিবীর আর কোন
শিল্প আছে এর সাথে তুলনীয়? ভ্যানগগ নন,
নন লিউনার্দো কিম্বা এ্যানজেলো, এ আমার দেশ-
বৈচিত্র্যে ভাস্বর-জগৎ বিখ্যাত এক স্থির চিত্র।

এইভাবে শহরের মানুষেরা কি কখনো ভাবে নিজের দেশটি সম্পর্কে।
ছোটদের কথা বাদ দেয়াই ভাল।
অথচ কী বৈচিত্র্যপূর্ণ এই দেশ!
নেই এর গ্রাম বাংলায়।
না, সেই ভাইবে সম্ভবত শহরের কেউই গ্রাম বাংলাকে মনে রাখেনি।
একটা আফসোসের দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে রশিদের বুখ থেকে। যেন বাতাসভর্তি বেলুনের মুখটা হঠাৎ করেই খুলে গেল এবং তা প্রসারিত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো তার খাটে, ঘর এমনকি পুরো বাসাটিতেই। (চলবে)

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।