সংবাদ শিরোনামঃ

এই দিন দিন নয় আরও দিন আছে... ** সাভারে বহুতল ভবনে ধস॥ লাশ বাড়ছেই ** ইসলামী শিবিরে ভাঙ্গন সৃষ্টির ষড়যন্ত্র ব্যর্থ ** দেশে সঙ্কট, বিদেশী কূটনীতিকরা তৎপর॥ নীরু বাঁশি বাজাচ্ছে ** মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি না দিলে সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে ** দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি ** গণমাধ্যমের ওপর ছোবল এবং ‘টেস্ট কেস’ ** রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে অবমাননার শাস্তি ** বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে ** পুলিশের গুলি শেষ হবে কিন্তু তৌহিদী জনতার সংখ্যা শেষ হবে না ** অভয়নগরে কালবৈশাখীর তাণ্ডব **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪২০, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৩৪, ২৬ এপ্রিল ২০১৩

হাবীবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল
আল্লাহ তা’আলা মানবজাতির হিদায়েতের জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্ব মানবগোষ্ঠীর জন্য সর্বশেষ নবী বা রাসূল। তিনি সকল নবী ও রাসূলেরও নেতা। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেয়। যদিও তারা ইতঃপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল। [সূরা আল ইমরান : ১৬৪] বর্তমানে বিভিন্নভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমাননা করা হচ্ছে, অথচ আমরা জানি না যে, এর পরিণাম কত ভয়াবহ। এ বিষয়ে আমাদের সঠিক জ্ঞান থাকা খুবই জরুরি। আলোচ্য প্রবন্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমাননার পরিণাম ও শাস্তি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সম্মান ও মর্যাদা : মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মান ও মর্যাদা আল্লাহ তা’আলা নির্ধারণ করেছেন। তাই ইচ্ছা করে তার মর্যাদা কেউ বাড়াতে বা কমাতে পারবে না। তারা নবীকে নিয়ে যতই কটূক্তি এবং অবমাননা করেছে আল্লাহ ততই তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। কুরআনে এসেছে, “আর আমরা আপনার খ্যাতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি। [সূরা ইনশিরাহ -৪]। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আজানে বিশ্বব্যাপী মসজিদে মসজিদে তাঁর নাম উচ্চারিত হচ্ছে। মুয়াজ্জিন ঘোষণা দিচ্ছে, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্) “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল।” তার সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কে নি¤à§‡œ আলোকপাত করা হলো।

এক . উত্তম চরিত্র ও মাধুর্যপূর্ণ আচরণের অধিকারী : আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন উত্তম চরিত্র ও মাধুর্যপূর্ণ আচরণের অধিকারী। এ বিষয়ে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলাই প্রশংসা করে বলেন, আর অবশ্যই তুমি মহান চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। [সূরা কলাম : ০৪]। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয় আমি মহৎ চারিত্রিক গুণাবলীর পূর্ণতা দান করার উদ্দেশ্যে প্রেরিত হয়েছি। [সুনান বায়হাকি : ২০৫৭১, সহিহ]

 à¦¦à§à¦‡. তিনি বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ: আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শুধু মানবমণ্ডলী নয়, বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

আর আমি তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্যে কেবল রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি। [সূরা আম্বিয়া : ১০৭] আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আমি উপহার স্বরূপ প্রদত্ত রহমত বিশেষ। [মুসতাদরিক লিলহাকিম : ১০০]

তিন. তিনি শেষ নবী : তাঁর বৈশিষ্ট্যের অন্যতম একটি দিক হচ্ছে, তিনি হচ্ছেন নবী পরস্পরা পরিসমাপ্তকারী-শেষ নবী। তারপর আর কোনো নবী আসবেন না। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, মুহাম্মাদ তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নন, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। [ সূরা আল আহযাব : ৪০]

চার. সকল নবী-রাসূলদের উপর তাঁকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে : যুগে যুগে যেসব নবী ও রাসূল আগমন করেছেন তাদের উপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘ছয়টি দিক থেকে সকল নবীদের উপর আমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। আমাকে জাওয়ামিউল কালিম তথা ব্যাপক অর্থবোধক বাক্য বলার যোগ্যতা দেয়া হয়েছে, আমাকে রোব (ভক্তি-মাখা-ভীতি) দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, গনীমতের মাল (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) আমার জন্যে বৈধ করা হয়েছে, আমার জন্যে সকল ভূমিকে পবিত্র ও সিজদার উপযুক্ত করা হয়েছে, আমি সকল মানুষের তরে প্রেরিত হয়েছি এবং আমার মাধ্যমে নবুয়ত পরস্পরা শেষ করা হয়েছে’। [সহিহ মুসলিম : ১১৯৫]

পাচ. তাঁর শাফাআত কবুল হবে : কিয়ামাতের কঠিন মুসিবতের দিনে আল্লাহ তা’আলার অনুমতিক্রমে তিনি গুনাহগার উম্মতের জন্য শাফায়াত করবেন। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি সকল আদম সন্তানের নেতা। এতে কোনো গর্ব-অহঙ্কার নেই। সেদিন আমার হাতে প্রশংসার ঝাণ্ডা থাকবে তাতে কোনো গর্ব-অহঙ্কার নেই। আদম থেকে নিয়ে যত নবী-রাসূল আছেন সকলেই আমার ঝাণ্ডার নিচে থাকবেন। আমি হচ্ছি প্রথম সুপারিশকারী এবং আমার সুপারিশই সর্ব প্রথম কবুল করা হবে। এতে কোনো গর্ব-অহঙ্কার নেই। [সুনান ইবনে মাজাহ : ৪৩০৮, সহিহ]

ছয়. তিনিই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তি : তিনিই সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তি হবেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, জান্নাতের দরজায় আমিই সর্বপ্রথম করাঘাত করব, তখন খাযেন (প্রহরী) জিজ্ঞেস করবে, কে আপনি? আমি বলব, মুহাম্মাদ। সে বলবে, উঠছি এবং আপনার জন্যেই খুলে দিচ্ছি। আপনার পূর্বে কারো জন্যে উঠব না এবং আপনার পরেও আর কারো জন্যে দাঁড়াব না। [ সহিহ মুসলিম : ৫০৭]

সাত. তাঁর আদর্শই সর্বোত্তম : যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি, জান্নাতের আশা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রত্যাশা করেন তিনি তাদের সকলের জন্যে উত্তম আদর্শ। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মাঝে উত্তম আদর্শ রয়েছে। [সূরা আল আহযাব : ২১]

আট. তাঁর উপর কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে : আল্লাহ তা’আলা যুগে যুগে মানবতার হিদায়াতের জন্য যেসব কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, তার মধ্যে আল কুরআন হলো সর্বশেষ আসমানী কিতাব, যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, আর যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে ‘আর তা তাদের রবের প হতে (প্রেরিত) সত্য, তিনি তাদের থেকে তাদের মন্দ কাজগুলো দূর করে দেবেন এবং তিনি তাদের অবস্থা সংশোধন করে দেবেন। [সূরা মুহাম্মদ : ০২]

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমাননা

বিশ্ব মানবণ্ডলীর হিদায়াতের জন্য আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই যে, তিনি বিভিন্ন সময় নানা রকমের বাধা বিপত্তি ও অবমাননার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর এমনিভাবেই আমরা প্রত্যেক নবীর জন্যে বহু শয়তানকে শত্রুরূপে সৃষ্টি করেছি, তাদের কতক শয়তান মানুষের মধ্যে এবং কতক শয়তান জ্বীনদের মধ্য থেকে হয়ে থাকে, এরা একে অপরকে কতগুলো মনোমুগ্ধকর, ধোঁকাপূর্ণ ও প্রতারণাময় কথা দ্বারা প্ররোচিত করে থাকে, আর আপনার রবের ইচ্ছা হলে তারা এমন কাজ করতে পারত না, সুতরাং আপনি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যা রচনাগুলোকে বর্জন করে চলুন। [সূরা আল-আন‘আম : ১১২]। তাঁর উপরও নবুয়তী জীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন রকমের কটূক্তি, অবমাননা এমনকি তাঁর পরিবারের উপর অপবাদ দেয়া হয়েছে। তাঁর নাম বিকৃতি করা, তার চরিত্র নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা, বিভিন্ন ইবাদাত নিয়ে ব্যঙ্গ করাসহ নানাভাবে পত্রিকা, ব্লগ, ফেসবুক ও বিভিন্ন মিডিয়ায় তাঁকে অবমাননা করা হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমাননা কত বড় জঘন্য অপরাধ তা নি¤à§‡œà¦¾à¦•à§à¦¤ বিষয় থেকে আরও সুস্পষ্ট হয়।

 à¦à¦•. মানবাধিকার লঙ্ঘন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অপবাদ ও তাঁর ব্যাপারে কুৎসা রটনা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ ধরনের জঘন্য কাজ কোনো বিবেকবান মানুষ করতে পারে না। যারা এ ধরণের কাজে লিপ্ত থাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাদেরেকে দণ্ডিত হতে হবে।

দুই. রাসূলের অবমাননা অনৈতিক কাজ : মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কর্মময় জীবনে সদা ব্যস্ত ছিলেন কীভাবে মানুষের কল্যাণ করা যায়। তার গোটা জীবন ছিল মানব কল্যাণে নিবেদিত। অপরের কষ্ট সহ্য করতেন না তিনি। কুরআনুল করীমে এসেছে, “তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছে, যে তোমাদের মধ্যেরই একজন। তোমাদের তি হওয়া তাঁর পে দুঃসহ কষ্টদায়ক, তোমাদের সার্বিক কল্যাণেরই সে কামনাকারী। ঈমানদার লোকদের জন্য সে সহানুভূতি সম্পন্ন ও করুণাসিক্ত। [সূরা তওবাহ : ১২৮]

তিন. রাসূলের অবমাননা শাস্তিযোগ্য অপরাধ : মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবজ্ঞা করা, তুচ্ছ জ্ঞান করা, তার শানে বেয়াদবি করা অর্থাৎ তাঁর প্রতি অবমাননাকর কোনো উক্তি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রসিদ্ধ আলেম কাজী ইয়াজ (রহ.) বলেন, ‘উম্মতের ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালী দেয়া বা তাকে অসম্মান করার শাস্তি হচ্ছে হত্যা করা। এ ব্যাপারে সকলের ইজমা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালী দিবে বা তাঁর অসম্মান করবে সে কাফের হয়ে যাবে এবং তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।’ (আস সারিমুল মাসলূল ১/৯)

চার. রাসূলের প্রতি অবমাননা একটি ফিতনাহ : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে অবমাননা একটি ফিতনাহ তুল্য অপরাধ। কারণ এর ল্য হলো মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা ও সমাজে অশান্তি তৈরি করা। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি হিংসার আগুন জ্বালিয়ে দেয়াসহ ধর্মপ্রিয় মানুষকে আঘাত করা।

পাঁচ. রাসূলের অবমাননা একটি জুলুম : চরিত্র হচ্ছে মানব জীবনের এক অমূল্য সম্পদ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। যে রাসূলের চারিত্রিক সার্টিফিকেট স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দিয়েছেন তাঁর ব্যাপারে অবমাননাকর উক্তি করা চরম জুলুম ভিন্ন অন্য কিছুই নয়।

 à¦›à§Ÿ. রাসূলের অবমাননা একটি রাষ্ট্রদ্রোহিতা : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার ধর্ম পালন ও সংরক্ষণের অধিকার দেয়া হয়েছে। অন্য কোনো ধর্ম বা কোনো ধর্মের নেতার বিষয়ে কটূক্তি করা সংবিধান তথা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমাননার পরিণাম ও শাস্তি : রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমাননা এবং তাঁকে বিদ্রুপ করার অধিকার কারো নেই। যে রাসূলকে অবমাননা এবং তাঁকে বিদ্রুপ করবে তার পরিণাম হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। আর এ অপরাধের জন্য তাকে শাস্তিও পেতে হবে। নি¤à§‡œà¦¾à¦•à§à¦¤ আলোচনায় রাসূলের অবমাননার পরিণাম সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

এক. কাফের ও মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী হয়ে যাবে : যে রাসূলের অবমাননা করবে সে মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী এবং কাফির হিসেবে বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে কুরআন মজীদে বলা হয়েছে, ‘মুনাফিকরা ভয় করে যে, তাদের বিষয়ে এমন একটি সূরা অবতীর্ণ হবে, যা তাদের অন্তরের বিষয়গুলি জানিয়ে দেবে। বল, ‘তোমরা উপহাস করতে থাক। নিশ্চয় আল্লাহ বের করবেন, তোমরা যা ভয় করছ’। আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, অবশ্যই তারা বলবে, ‘আমরা আলাপচারিতা ও খেল-তামাশা করছিলাম। বল, ‘আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা বিদ্রƒà¦ª করছিলে’? তোমরা ওযর পেশ করো না। তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ। যদি আমি তোমাদের থেকে একটি দলকে ক্ষমা করে দেই, তবে অপর দলকে আযাব দেব। কারণ, তারা হচ্ছে অপরাধী। [সূরা আত তাওবাহ : ৬৫-৬৬]

দুই. দুনিয়াতে আল্লাহর লানতপ্রাপ্ত ও আখিরাতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে : যে রাসূলের অবমাননা করবে সে দুনিয়াতে আল্লাহর লানতপ্রাপ্ত ও আখিরাতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। এ বিষয়ে কুরআন মজীদে বলা হয়েছে, “নিশ্চয় যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ্ তাদের প্রতি দুনিয়া ও আখিরাতে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি।” [সূরা আল-আহযাব : ৫৭]

আর রাসূলকে অবমাননা এবং তাঁকে বিদ্রুপ করার মাধ্যমে তাঁকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়া হয়। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, “আনাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাসারা ছিল সে ইসলাম গ্রহণ করল এবং সূরা আল-বাকারা ও আল ইমরান শিখল। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কেরানীর কাজ করত। সে পুণরায় নাসারা হয়ে গেল এবং বলতে লাগল মোহাম্মদ আমি যা লিখি তাই বলে এর বাহিরে সে আর কিছুই জানে না। এরপর সে মারা গেল, তখন তার সাথীরা তাকে দাফন করল, সকালে উঠে দেখল তার লাশ বাইরে পড়ে আছে, তখন নাসারারা বলতে লাগল, মুহাম্মাদের সাথীরা এই কাজ করেছে; কেননা সে তাদের ধর্ম ত্যাগ করেছিল। তখন তারা আরও গভীর করে কবর খনন করে তাকে আবার দাফন করল, আবার সকালে উঠে দেখল তার লাশ বাইরে পড়ে আছে। তখন তারা বলল, এটা মুহাম্মাদ এবং তার সাথীদের কাজ; কেননা সে তাদের ধর্ম ত্যাগ করে এসেছিল। তখন তারা আবার আরও গভীর করে কবর খনন করল এবং তাকে দাফন করল, আবার সকালে উঠে দেখল তার লাশ আবার বাইরে পড়ে আছে, তখন তারা বুঝল, এটা কোনো মানুষের কাজ নয়, তখন তারা তার লাশ বাইরেই পড়ে থাকতে দিল”। [সহিহ বুখারী ও মুসলিম]

তিন. মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে : যদি কোন ব্যক্তি বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সে রাসূলের অবমাননা করেছে, তবে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। এ বিষয়ে উম্মতের সকল ওলামায়ে কেরাম একমত হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার দ্বীন (ইসলামকে) পরিবর্তন করলো তাকে তোমরা হত্যা কর। [বুখারী ৩০১৭; ৬৯২২; তিরমিজি ১৪৫৮; আবু দাউদ ৪৩৫৩; নাসায়ী ৪০৭০]

চার. শাস্তি না দিলে গোটা জাতি আল্লাহর গজবে পতিত হবে : রাসূলের অবমাননা করার পর যদি সামর্থ্য থাকার পরও শাস্তি না দেয়া হয় তবে গোটা জাতি আল্লাহর গজবে পতিত হবে। আল-কুরআনের সূরা আন-নূরের ৬৩ নং আয়াতে এসেছে, ‘অতএব যারা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসা অথবা যন্ত্রণাদায়ক আজাব পৌঁছার ভয় করে।’

পাঁচ. তার সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে : যারা রাসূলের অবমাননার কাজে জড়িত থাকবে তাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে। আর যে তোমাদের মধ্য থেকে তাঁর দ্বীন থেকে ফিরে যাবে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, বস্তুত এদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখিরাতে বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তারাই আগুনের অধিবাসী। [সূরা আল বাকারাহ : ২১৭]

আমাদের করণীয়

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটাক্ষ ও বিদ্রুপ করার মতো জঘন্য অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর নিশ্চুপ থাকার কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে একজন ঈমানদার বান্দাহ হিসেবে প্রত্যেকরই যোগ্যতা অনুযায়ী ভূমিকা রাখতে হবে। যেসব করণীয় রয়েছে সেগুলো হলো :

এক. প্রতিবাদ করা : আমাদের প্রধান করণীয় হলো : যারা রাসূলের অবমাননা করে তাদের বিরুদ্ধে সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিবাদ করা। একজন মুসলিম কখনও এমন হতে পারে না যে, সে মহানবীর অবমাননা হওয়ার কথা জানার পরও নিশ্চুপ বসে থাকবে। কেননা এটি একটি মহা অন্যায় কাজ। আর ঈমানের লক্ষণ হলো অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। কুরআন মজীদে এসেছে, আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। [সূরা আত তাওবাহ :৭১]। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, আবু সাঈদ খুদরী রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোনো অন্যায় কাজ হতে দেখে, তবে সে যেন তা নিজের হাত দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়। আর যদি সে সক্ষম না হয়, তাহলে সে যেন মুখ দ্বারা প্রতিহত করে। আর যদি সে এতেও সক্ষম না হয়, তাহলে সে যেন অন্তর দিয়ে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। আর এটা সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচয়। [সহিহ মুসলিম : ১৮২]

দুই. শাস্তির ব্যবস্থা করা : মহানবীর অবমাননাকারীদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা ঈমানের দাবি। একশ্রেণির নামধারী মুসলিম তারা বলে এ বিচার আল্লাহ করবেন, অতএব আমাদের কিছুই করার দরকার নেই। ঈমানদার হিসেবে এ ধরণের কথা বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা রাসূল নিজেই তাকে অবমাননা করার শাস্তি কার্যকর করেছেন এবং সাহাবায়ে কিরামও তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাই যে মহানবীর অবমাননা করে তাকে দুনিয়াতেই শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ইবনে খাতাল রাসূলের কটূক্তি করেছিল, সেজন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, আনাস ইবনে মালেক রাদিআল্লাহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন মক্কায় প্রবেশ করে মাত্র মাথায় যে হেলমেট পরা ছিল তা খুললেন, এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি এসে বললো, ইবনে খাতাল (বাঁচার জন্য) কাবার গিলাফ ধরে ঝুলে আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (ঐ অবস্থায়ই) তাকে হত্যা করো। [বুখারি ১৮৪৬; মুসলিম ৩৩৭৪; ]

তিন. জাতিকে সতর্ক করা : মহানবীর অবমাননা করার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে জাতিকে সতর্ক করা সময়ের দাবি। কেননা জেনে-না জেনে, বুঝে-না বুঝে নানানভাবে মহানবীর অবমাননা করা হচ্ছে। এর কারণে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। সেজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত জাতিকে সতর্ক করা। আল্লাহ তা’আলা সতর্ক করে বলেন, আর তোমার পূর্বেও অনেক রাসূলকে ঠাট্টা-বিদ্রƒà¦ª করা হয়েছিল; পরিণামে তারা যা নিয়ে ঠাট্টা করত তাই বিদ্রƒà¦ªà¦•à¦¾à¦°à§€à¦¦à§‡à¦°à¦•à§‡ ঘিরে ফেলেছিল। [সূরা আম্বিয়া : ৪১] ‘বরং আমি মিথ্যার উপর সত্য নিক্ষেপ করি; ফলে তা মিথ্যাকে চূর্ণÑবিচূর্ণ করে দেয় এবং নিমিষেই তা বিলুপ্ত হয়। আর তোমাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ তোমরা যা বলছ তার জন্য’। [সূরা আম্বিয়া : ১৮]

চার. ঐক্যবদ্ধ হওয়া : রাসূলের অবমাননা বন্ধে ঈমানদার ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো বিরোধ থাকতে পারবে না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিজেদের মধ্যে কর্মপন্থা নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু রাসূলের অবমাননার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালনে কোন ধরণের সংশয় রাখা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ এ বিষয়ে কুরআন মজীদে ঘোষণা এসেছে এভাবে, আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধ করেছে তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর। আর তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আজাব। [সূরা আল ইমরান : ১০৫]

পাঁচ. আল্লাহর নিকট বেশি বেশি ক্ষমা চাওয়া : রাসূলের অবমাননা করার কারণে যে কোনো সময় গোটা জাতির উপর আল্লাহর গজব আসতে পারে। সেজন্য আল্লাহর নিকট বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘আর তোমরা ভয় কর ফিতনাকে যা তোমাদের মধ্য থেকে বিশেষভাবে শুধু জালিমদের উপরই আপতিত হবে না। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ আজাব প্রদানে কঠোর।’ [সূরা আনফাল : ২৫]

ছয়. তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা : যারা অবমাননা করে তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে কুরআন মজীদে বলা হয়েছে, আর তিনি তো কিতাবে তোমাদের প্রতি নাজিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ে উপহাস করা হচ্ছে, তাহলে তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথায় নিবিষ্ট হয়, তা না হলে তোমরাও তাদের মতো হয়ে যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদের সকলকে জাহান্নামে একত্রকারী। [ সূরা আননিসা : ১৪০]

সাত. রাসূলের সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা : রাসূলের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার এবং তাঁর মর্যাদার হানি করে এমন কোনো কাজ পরিচালিত হলে উম্মতের দায়িত্ব হলো তার সমস্ত শক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করা। আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্মানকে উচ্চকিত করেছেন। অতএব, তাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেক উম্মতের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সূরা ফাতহের ৮ ও ৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে। (হে মুমিনগণ!) যাতে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তাকে সাহায্য কর ও সম্মান কর। আর আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা কর সকাল-সন্ধ্যায়।’ সাহাবায়ে কিরাম রাসূলকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন। যখন কুরআনের সূরা হুজরাতের ২ নং আয়াত আবতীর্ণ হলো, হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো না এবং তোমরা নিজেরা পরস্পর যেমন উচ্চস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না। এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সকল আমলÑনিষ্ফল হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না।’ আবু বকর রাদিআল্লাহু আনহু বললেন, আল্লাহর কসম, আমি নিতান্তই আপনার সাথে ক্ষীণ আওয়াজ ছাড়া কথা বলব না।

আট. রাসূলের কটূক্তিকারীদের ঘৃণা করা : যারা রাসূলকে কটূক্তি করে তাদেরকে রাসূলের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে ঘৃণা করা ঈমানের দাবি। অনেকে রাসূলের উম্মত দাবি করে কিন্তু রাসূলের শত্রুদের সাথে উঠা-বসা ও তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কুরআনের ঘোষণা হলো, ‘তুমি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোনো সম্প্রদায় পাবে না যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদের ভালোবাসে। হোক না এ বিরুদ্ধাচারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা তাদের জ্ঞাতি-গোত্র।’ [সূরা মুজাদালাহ : ২২]

নয়. রাসূলের আদর্শ জাতির সামনে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের প্রিয় নেতা। তাঁর উম্মত হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো তার আদর্শ জাতির সামনে তুলে ধরা। এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এই হাদিসে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুলুাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘একটি বাণী হলেও আমার পক্ষ থেকে পৌঁছিয়ে দাও।’ [সহিহ বুখারি : ৩৪৬১২]

দশ. নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা : আজকে অনেক মুসলিম নিজের অবস্থান কোন দিকে তা স্পষ্ট করে না। যেহেতু কিছু লোক রাসূলের অবমাননাকারীর পক্ষাবলম্বন করেছে, সেহেতু নিজের অবস্থান কোন পক্ষে তা ঘোষণা দিতে হবে। কেননা রাসূলের অবমাননা হলে কোনো ঈমানদার ব্যক্তির অবস্থান অস্পষ্ট হতে পারে না। যে এমনটি করবে সে মুনাফিক। কুরআন মজীদে এসেছে, “তারা এর মধ্যে দোদুল্যমান, না এদের দিকে আর না ওদের দিকে। আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনও তার জন্য কোন পথ পাবে না।” [ সূরা আন-নিসা : ১৪৩]

সরকারের করণীয়

সরকার একটি রাষ্ট্রের পরিচালক এবং অভিভাবক। সরকারের অন্যতম কাজ হলো শিষ্টের লালন আর দুষ্টের দমন। অতএব সরকারের দায়িত্ব হলো যারা রাসূলের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছে তাদের সবাইকে এবং যারা তাদের সহযোগী তাদেরকেও গ্রেফতার করে বিচারের সস্মুখীন করা। কোনো ধরণের অজুহাত তৈরি করে প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকা। কুরআন মজীদে সরকারের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘তারা এমন যাদেরকে আমি জমিনে ক্ষমতা দান করলে তারা সালাত কায়েম করবে, জাকাত দেবে এবং সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে; আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহরই অধিকারে’। [সূরা হজ:৪১]

শেষ কথা

প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিমের দেশে আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি ও অবমাননাকর বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমাদের একেবারে বসে থাকার সুযোগ নেই। প্রিয় নবীর উম্মত হিসেবে প্রত্যেককে তার নিজ নিজ জায়গা থেকে সাধ্য অনুযায়ী ভূমিকা পালন করতে হবে। ঈমানের দাবি হলো : লেখনী, বক্তব্য, আলোচনা, খুতবাহ, জনসংযোগ, সেমিনার, মিডিয়াসহ সর্বস্তরে শরীয়াহসম্মত বিভিন্ন উপায়ে প্রতিবাদ করার মাধ্যমে এ ধরনের মহাঅন্যায় কাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে ঈমানী দায়িত্ব পালন করার তাওফিক দিন। আমীন!

লেখক : চেয়ারম্যান, তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।