রাজশাহী সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডলসহ ১০ জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। গত ২২ এপ্রিল সোমবার সকালে রাজশাহী মহানগর আদালত চত্বর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এদিকে নগর জামায়াত জানায়, তারা আগে থেকেই উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহী জেলা জজ আদালতে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর কেরামত আলী, সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল, সাবেক মহানগর শিবির সভাপতিসহ ২০/২৫ জন নেতা হাজিরা দিতে যান। আদালত চত্বরে উপস্থিত হওয়ার পরপরই রাজশাহীর পুলিশ ও ডিবি তাদের ঘেরাও করে। একপর্যায়ে তাদের কোর্ট কাস্টডিতে আটকিয়ে রাখে পুলিশ। এ সময় আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আদালতে হাজিরা দিতে আসা মামলার জামিন বাতিল হলে সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডলকে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অন্য নেতা-কর্মীরা হলেন- মতিহার থানার রবিউল ইসলাম, বোয়ালিয়া উত্তরের সাজ্জাদুল হক, রাজশাহী পূর্ব জিলার শহিদুল ইসলাম, রওশন আলম, মাসারুল ইসলাম ও সোহেল রানা এবং এয়ারপোর্ট থানা এলাকার গিয়াস উদ্দিন। এদিকে রাজশাহী মহানগর ডিবি অফিসের একটি সূত্র জানায়, জামায়াতের নেতা-কর্মীদের পুরাতন কয়েকটি মামলায় আটক করা হয়। ইতোপূর্বে তারা মামলার হাজিরা না দেয়ায় তাদের নামে ওয়ারেন্টও জারি হয়। এদিকে গণমাধ্যম কর্মীরা ছবি ধারণ করতে গেলে ৩ সাংবাদিককে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। এ সময় সাংবাদিক নেতাকর্মীরা রাজশাহী মহানগর ডিবি অফিসে এলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
জামায়াতের নিন্দা ও প্রতিবাদ : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডলসহ ১০ জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরী আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা কেরামত আলী, মহানগরী নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসেন এবং নায়েবে আমীর এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম। নেতৃবৃন্দ বলেন, জামায়াতের নেতাকর্মীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিতে আদালত চত্বরে উপস্থিত হওয়ার পরপরই মহানগর পুলিশ ও ডিবি তাদের ঘেরাও করে। আদালত চত্বরে পুলিশের এ ভূমিকা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। রাজশাহী মহানগরী সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল পুলিশের বেষ্টনী ভেদ করে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। পুলিশের হয়রানি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আদালতে নিরাপত্তার আশ্রয় চাইলে তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। পুলিশ আদালত অঙ্গন থেকে আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করে। নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে গ্রেফতারকৃত মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারিসহ অন্য নেতাকর্মীদের মুক্তির জোর দাবি জানান।
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতারের এ ঘটনা পুলিশের আদালত অবমাননার শামিল : মিয়া গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরী সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডলসহ ১০ জনকে আদালত চত্বর থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবৃতি দিয়েছেন।
গত ২২ এপ্রিল সোমবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২২ এপ্রিল সোমবার রাজশাহী জেলা জজ আদালতে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ড. মাওলানা কেরামত আলী, সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল, সাবেক মহানগর শিবির সভাপতিসহ ২০-২৫ নেতাকর্মী হাজিরা দিতে যান। তারা আগে থেকেই উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত ছিলেন। গত ২২ এপ্রিল সোমবার আদালত চত্বরে উপস্থিত হওয়ার পরপরই রাজশাহীর পুলিশ ও ডিবি তাদেরকে ঘেরাও করে। আদালত চত্বরে পুলিশের এ ভূমিকা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, অনেকেই সেখান থেকে গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন। রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল পুলিশের বেষ্টনী ভেদ করে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। পুলিশের হয়রানি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আদালতে নিরাপত্তার আশ্রয় চাইলে তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। পুলিশ আদালত অঙ্গন থেকে আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করে। সাংবাদিকরা পুলিশের এ ভূমিকার প্রতিবাদ করলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় এবং অনেকের ক্যামেরা কেড়ে নেয়।
তিনি বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের এ ন্যক্কারজনক ভূমিকা বেআইনি ও আইনগত এখতিয়ারবহির্ভূত। আসামিরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে তাদের গ্রেফতার করার কোনো সুযোগ নেই। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে সম্পূর্ণ অন্যায় করেছে। পুলিশের এ ভূমিকা আদালত অবমাননার শামিল। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।