জানুয়ারির মধ্যে হজ্বের টাকা জমা দিতে হবে

রানা মুহম্মদ মাসুদ, দ্য রিপোর্ট : সৌদি সরকারের অনলাইন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে হজ্ব ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ সরকার।

ধর্মমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী বছর হজ্বে যেতে মোয়াল্লেম ফি জমা দেয়াসহ হজ্বের কার্যক্রম জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করা হবে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাচ্ছে হজ্ব প্যাকেজ।

আগের বছরগুলোতে হজ্বের দু’তিন মাস আগে (শাবান/রমজান মাস) মোয়াল্লেম ফি জমা দেয়াসহ হজ্বের কার্যক্রম শেষ হলেও ২০১৫ সালের হজ্বের কার্যক্রম সাত মাস আগে শেষ করা হবে।

চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি হজ্বযাত্রীরা ১ জুন পর্যন্ত হজ্বের টাকা (মোয়াল্লেম ফি, বাড়ি ভাড়া, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ, বিমান ভাড়া ও অন্যান্য টাকা) জমা দেয়। সাধারণত মার্চ মাসে মন্ত্রিসভায় হজ্ব প্যাকেজ অনুমোদন পায়। চলতি বছর ১০ মার্চ হজ্ব প্যাকেজ অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

ধর্মমন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য বছর সৌদি আরবের সঙ্গে হজ্ব চুক্তির পর হজ্বের কার্যক্রম শুরু হতো। এবার হজ্ব চুক্তির আগেই জানা যাবে মোট হজ্বযাত্রীর সংখ্যা। আগামী ৬ বা ৭ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের হজ্বচুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যমান কোটা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হজ্ব করার জন্য সৌদি আরব যেতে পারেন। ধর্মমন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (হজ্ব) মো. জাহাংগীর আলম দ্য রিপোর্টকে বলেন, সৌদি সরকারের বাধ্যবাধকতার কারণে আমাদের হজ্ব ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। সৌদি সরকার হিজ্বরি রবিউস সানি মাসের ১ তারিখ থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। আমাদের মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম আগেই সম্পন্ন করতে হবে।

ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর সৌদি আরবের হজ্বমন্ত্রী বাংলাদেশের ধর্মমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, চলতি বছর সম্ভব না হলেও আগামী বছর হজ্ব কার্যক্রম পুরোপুরি অনলাইনে সম্পন্ন করা হবে। প্রত্যেক এজেন্সিকে আবশ্যিকভাবে সৌদি আরবে ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। বাড়ি ভাড়া ও খাবারসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ও পরিশোধ করতে হবে ওই হিসাবের মাধ্যমে।

এজেন্সিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের হজ্বযাত্রীদের একসঙ্গে একই ফ্লাইটে, একই বাড়িতে রাখতে হবে। এক প্যাকেজের হজ্বযাত্রীদের অন্য প্যাকেজের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা যাবে না বলেও সৌদি সরকারের ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, হিজরি ১৪৩৬ সনের রবিউস সানি মাসের ১ তারিখ থেকে হজ্বযাত্রীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু করবে সৌদি সরকার। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ বা ২৩ জানুয়ারি রবিউস সানি মাস শুরু হবে। ধর্মমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সৌদি সরকার এক মাসব্যাপী হজ্বযাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালাবে। আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে (হিজরি সনের ৯ জিলহজ্ব হজ্ব) পবিত্র হজ্ব অনুষ্ঠিত হবে।

ধর্মমন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজ্ব পালনের এবারো দুটি প্যাকেজের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে ধর্মমন্ত্রণালয়। তবে বিমান ভাড়ার জন্য প্যাকেজ মূল্য নির্ধারণে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

এবার সমাপ্ত হজ্বে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ্ব পালনের বিধান রাখা হয়। প্যাকেজ-১ এর মাধ্যমে হজ্ব পালনে খরচ ধরা হয় তিন লাখ ৫৪ হাজার ৩১৬ টাকা। অপরদিকে প্যাকেজ-২ এর মাধ্যমে খরচ হয় দুই লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ টাকা। দুটি প্যাকেজেই কুরবানির জন্য আলাদা ১০ হাজার ৫০০ টাকা (৫০০ রিয়াল) নিতে হয়েছে। এবার সৌদি আরবে যাওয়া সর্বমোট বাংলাদেশী হজ্বযাত্রীর সংখ্যা ৯৮ হাজার ৬০৫ জন।