নারীদের জন্য আতঙ্কিত জনপদ কুষ্টিয়া

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া থেকে : নারীদের জন্য আতঙ্কের জনপদ কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়ায় ঘরে বাইরে সবখানেই অনিরাপদ নারী। উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, ধর্ষণ, খুন, নির্যাতনসহ নানা ধরনের সহিংসতা।  স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ, কুষ্টিয়ায় গত ২২ মাসে ৩১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ ১৮ নভেম্বর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়–য়া এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। ৩০ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পল্লীতে (৫) এক বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। ২১ অক্টোবর দৌলতপুরে এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের পলাশীর চর এলাকায় সে গণধর্ষণের শিকার হয়। ৯ আগস্ট কুষ্টিয়ার ইবি থানা এলাকায় মফিজ উদ্দিন মন্টু (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ ধর্ষণ করে এক কিশোরীকে। ইবি থানার বেড়বাড়াদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গত ৭ আগস্ট কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দরিদ্র অসহায় এক পিতার কিশোরী মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের শাদীপুর গ্রামে কিশোরী ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ৩ আগস্ট কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ধর্ষণের ন্যায় বিচার না পেয়ে নাছিমা খাতুন (২৮) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। উপজেলার হাসিমপুর বাজারের পাশের ঝন্টু ডাক্তারের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। ২৯ জুন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর বাড়াদি পাড়ায় প্রতিবন্ধী শিশু (৯) ধর্ষণের শিকার হয়। ১ জুন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় (২৪) এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার মরিচা ইউপির বৈরাগীরচর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ২৯ মার্চ কুষ্টিয়ায় অর্পা রানী পাল (৮) নামের এক শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত অর্পা রানী শহীদ বীরপ্রতীক দিদার কিন্ডার গার্ডেনের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। ৪ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার পল্লীতে (৬) বছর বয়সী এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করে ষাট বছর বয়সী বৃদ্ধ। সদর উপজেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মাধপুর গ্রামে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ৮ মার্চ কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক প্রতিবন্ধী যুবতী (২৫) ধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ২০১৩ সালে ২০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সূত্র জানায়, ১২ জানুয়ারি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ভাদালিয়া গ্রামের নানা বাড়ি থেকে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয় এক মাদরাসা ছাত্রী। ২৫ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া গ্রামের হাশিয়ারা খাতুন (১২) বছরের এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সে দিঘলকান্দি গ্রামের হাসেম আলীর মেয়ে। ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রী গৃহশিক্ষক কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়। সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের মাতপুর গ্রামে ওই স্কুল ছাত্রীর নিজ বাড়িতে গৃহশিক্ষকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। ১২ মার্চ কুষ্টিয়ায় তানিয়া রহমান মৌ (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শহরের জিকেঘাট এলাকা থেকে মৌর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ মার্চ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া এলাকায় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে এক কিশোরী ধর্ষণের স্বীকার হয়। ২২ এপ্রিল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের হঠাৎপাড়ায় এক লিচু বাগানে শাপলা (২৩) নামের এক গৃহধূকে ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। শাপলা বাহিরচর ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া গ্রামের রমজান আলীর প্রথম স্ত্রী। ৭ মে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মশান কেউপুর গ্রামে দরিদ্র ভ্যান চালকের মেয়ে স্কুল ছাত্রী (১৩) ধর্ষণের শিকার হয়। ২৪ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পল্লীতে প্রথম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। ২৮ মে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে (১১) এক মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণের স্বীকার হয়। ২ জুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবতীকে দু’বন্ধু মিলে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। উপজেলার খলিষাকুন্ডি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ১৫ জুন কুষ্টিয়া শহরতলী চৌড়হাস ক্যানেল পাড়ায় চতুর্থ শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে (১২) একশ টাকার লোভ দেখি পাশের বাড়িতে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে। ৩ জুলাই কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের পল্লীতে পৃথকভাবে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার  পিয়ারপুর ইউনিয়নের তাজপুর এলাকার এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী (২০) বাড়িতে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

৩ জুলাই একই দিন দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউপির ইসলামপুর হাজীর এলাকায় স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে (৮) ধর্ষণ করে। ৫ আগস্ট কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের কোদালিয়া পাড়া এলাকায় (৩) বছরের এক শিশুকে তার চাচা ধর্ষণ কর। ২৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগর আদর্শপাড়ায় (১৩) বছরের এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ২ অক্টোবর কুষ্টিয়া শহরতলী জুগিয়া বাঁধ এলাকায় (১১) এক মানষিক প্রতিবন্ধী ধর্ষণের শিকার হয়। ৩ অক্টোবর দৌলতপুর উপজেলারে (৬) বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করে। ৯ অক্টোবর রুকসানারা খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর  অমানবিক নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যা করে তার খালাতো ভাই। ১৪ অক্টোবর কুষ্টিয়ার মিরপুরে লম্পট স্বামী শরিফুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে তারই তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে। ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া গ্রামে (১৮) এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়।