সংবাদ শিরোনামঃ

সড়কব্যবস্থা ধ্বংসে আ’লীগের বিশ্ব রেকর্ড ** ক্ষমা করো হে প্রভু! আমরা এখনো ঘুমিয়ে আছি! ** মানবরচিত কোনো মতবাদ দিয়ে মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয় : মকবুল আহমাদ ** সরকার ব্যস্ত মামলা হামলার মাধ্যমে বিরোধী দল নির্মূলের কাজে ** জমজমাট ঈদ বাজার ভারতের দখলে ** সিরিয়ায় রক্তপাত থামছে না : বধিরের ভূমিকায় বাশার আল আসাদ ** আমরা কারো বিরুদ্ধে নই, জনগণের পক্ষে ** ভারতের সাথে কোনোরকম গোপন চুক্তি জনগণ মানবে না ** ফিরে দেখা ১৫ আগস্ট : ‘সুপথগামীদের’ ব্যাপারে কেন নীরবতা? ** ভারতীয় পানির চাপে যে কোনো মুহূর্তে সাতীরা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ** বাংলাদেশের রাজনীতি ঠিক উল্টো পথে চলছে ** আওয়ামী লীগ দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে : এটিএম আজহার ** সরকার কোরআন নাযিলের মাসে কোরআনের সৈনিকদের জেলখানায় বন্দি করে রেখেছে : তাসনীম আলম ** সাহিত্য েেত্র আমরা একটা গুণগত পার্থক্য সৃষ্টি করতে পেরেছি : আবদুল মান্নান তালিব **

ঢাকা শুক্রবার ৪ ভাদ্র ১৪১৮, ১৮ রমযান ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০১১

সড়ক মেরামত ও উন্নয়নের জন্য চলতি বছরের বরাদ্দকৃত ১৫১৪ কোটি টাকা ব্যবহৃত হয়নি

॥ মুহাম্মাদ মনির উদ্দিন॥
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন সারাদেশে জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলাসহ মোট মহাসড়কের ২১ হাজার ৪০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১৩ হাজার ৮০ কিলোমিটার অর্থাৎ ৬৮ ভাগ রাস্তায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী, গভীর খানাখন্দে ভরা। তার মধ্যে একান্ত দুর্দশাগ্রস্ত ও লণ্ডভণ্ড মহাসড়কের পরিমাণ জাতীয় ৩৫০ কিলোমিটার, আঞ্চলিক ৫৩০ কিলোমিটার ও জেলা ৫০০ কিলোমিটার। এসব রাস্তা মেরামতের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার বরাদ্দের দাবির বিপরীতে ১০৭ কোটি মঞ্জুরি পেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হরতাল বা অবরোধ নয় বরং রাস্তার অনুপযোগিতার জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ এমন ইতিহাস সম্ভবত এটাই প্রথম বাংলাদেশে। আর এটি ঘটে চলেছে গত ৭ দিন যাবত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। অপর দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানের দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলও বন্ধ রয়েছে মহাসড়কে। যোগাযোগমন্ত্রীর অদূরদর্শিতাপূর্ণ বক্তব্যে জনসাধারণ হতাশায় ভেঙে পড়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে সড়ক মেরামত ও উন্নয়নের জন্য ১৫১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু মেরামত বাবদ ৬৯০ কোটি ও উন্নয়ন খাতে ৮২৪ কোটি টাকার কোনো কাজই করা হয়নি। ফলে জনগণের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে মহাগুণ।

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের গাজীপুর চৌরাস্তা, মাওনা, শ্রীপুর, জাতীয় উদ্যানের ১ নম্বর গেট, বিমানবাহিনী গেট, চন্দ্রাবাজার ও ময়মনসিংহের ভালুকা অংশের সিডস্টোর বাজার, ভালুকা বাজারসহ অন্তত ৫০টি স্থানের বিভিন্ন অংশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কটি দিয়ে শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা কিশোরগঞ্জসহ ১৫টি জেলার ১৫শ’ বাস চলাচল করতো ।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে জাতীয় ৩৫০ কিলোমিটার, আঞ্চলিক ৫৩০ কিলোমিটার ও জেলা ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা মেরামত।

সওজের প্লানিং সার্কেল সূত্র জানায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার জন্য ৯০৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। কিন্তু দরপত্রের জালিয়াতির কারণে গাজিপুর অংশের ৩০ দশমিক ২৫ কিলোমিটার বাস্তবায়ন হয়ে পড়েছে অনিশ্চিত। ফলে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে মাওনা পর্যন্ত ৩০ দশমিক ২৫ কিলোমিটার অংশের দরপত্র প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির কারণে কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। মাওনা থেকে ত্রিশালের রায়মণি পর্যন্ত ২৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার চার লেনে করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমবিইসি-পিবিএলের সাথে প্রায় ২৮৪ কোটি টাকার বিনিময়ে। রায়মণি থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ২৭ দশমিক ৩৩ কিলোমিটারের কাজ দেয়া হয়েছে এসইএল-টিওএমএকে। তাদের সাথে চুক্তি ২৬৬ কোটি টাকার।

শফিকুল ইসলাম (২৮) এসেছেন বাড়ি যেতে। ময়মনসিংহের এ লোকটির ঘরে শিশুসন্তান। অনেক দিন হলো তার মুখ দেখা হয়নি। কিন্তু এ কি! সব গাড়ি যে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে! কোথায় যাবেন ভাই ? প্রশ্ন করতেই হুমড়ে পড়লেন কথার যুদ্ধে। মিয়া ইয়ার্কি হরইন? কই যাইবাম বুঝুইন না আতে (হাতে) ব্যাগ দেইক্ক্যা। সপ্তাহ খানেক হলো এ সড়কে যানবাহন চলে না জানেন না? জবাবে শফিক- আমরা কি আর এতকিছুর খবর-টবর রাহি? চাইর মাস পরে বাইত যাইতাছি অনহা দেহি গাড়ি যানা। সরকার করেডা কি? তারা খালি বড় বড় গপ্পো হরে আঐইক সামনের ইলেকশনডা বুঝবো নে মজাডা। মাইনষের দিগে মন নেই। হুদা আছে দলবাজি আর গলাবাজিতে?

নেত্রকোনার যাত্রী মো. সোহাগ বলেন, দেশটা চালাচ্ছে কে? ৩৬ বছর পর নিজের বাবার হত্যাকারীদের বিচার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেচে উড়ছেন। মহাব্যস্ত হয়ে কাজ করছেন, অথচ ৭ সাত দিন যাবত মহাখালী স্টেশনে গাড়ি চলছে না এটা নিয়ে কি তিনি একটা মুহূর্তও ভাবছেন?

টাঙ্গাইলের যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভাই! আমরা কি মানুষ? আমাদের কথা কি সরকার চিন্তা করে? টাঙ্গাইল রোডে গাড়ি চলাচল বন্ধ এতে যে সাধারণ মানুষ কত ক্ষতিগ্রস্ত সে হিসাব কে রাখে?

মহাখালী স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানে স্থানে ড্রাইভার কণ্ট্রাক্টারদের জটলা। মেহেদী, আবুল হাসান, মিলন ও রেজাউল নামের গাড়িশ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, তাদের পরিবার চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রেজাউল বলেন, ভাই ৪ বার আপডাউন করলে দৈনিক ৪শ’ টাকা পাইতাম আমরা। অথচ গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় কোনো কাজ নেই। মালিক কি আর বসে বসে টাকা দেয়? আমরা শুধু ভোট দিয়ে নেতা বানাই আর ক্ষমতায় গিয়ে সবার কথা উনারা ভুলইয়া যান।

মহাখালী বাস-মিনিবাস শ্রমিক সমিতির অফিসে সৌখিনের চালক ওয়াজেদুর রহমান ওয়াজেদ বলেন, ভাই! আমাদের খবর নিবার কারণে আপনাকে ধন্যবাদ। এইযে ৭ দিন ধরে বসে আছি সরকারের কেউ কি আমাদের খবর নিছে, নেইনি। আমরা বেঁচে আছি না মরে গেছি, আমাদের পরিবার কি ভাবে চলছে? সরকারের কোনো লোকই তার খবর রাখেনি। দেশের মানুষের কথা কি ভাববে উনারাতো আছেন শুধু ভারতকে নিয়ে। যত্তসব দালালের দল! দুলাল, জাহাঙ্গীর, বাদশা, মুহসিন ও ইয়াছিন তার সুরে সায় দেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রেলের উপর যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। দিশেহারা যাত্রীদের প্রশ্ন সড়কটিতে কবে থেকে গাড়ি চলাচল শুরু হবে। জামালপুরের মোহাম্মদ আলী (৫০) ঢাকায় এসেছিলেন চোখের চিকিৎসা করাতে। মহাখালী গিয়ে ফিরে এসেছেন বাস চলাচল বন্ধ থাকায়। তিনি বলেন, বাবা আমি বুড়া মানুষ! রেলে এমন কষ্টে কিভাবে বাড়িতে যামু? দাঁড়ানোরও তো জায়গা দেখি না।

আছিয়া খাতুন ৩টি সন্তান ও মালামাল নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। আছিয়া জানান, তিনিও মহাখালী থেকে কমলাপুর রেল স্টেশনে এসেছেন। দুটি ব্যাগ ও শিশু সন্তানদের নিয়ে এই ভিড়ের মাঝে কিভাবে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে যাবেন সেটাই ভাবছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি ও ঢাকা সড়ক পরিবহনের সাধারণ সম্পাদক এবং এনা ট্রান্সপোর্টের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, আমরা অনেক দিন আগ থেকেই সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে একাধিকবার চিঠি দিয়ে, টেলিফোনে দু’বার স্মারকলিপি দিয়েও জানিয়ে ছিলাম ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডটি দূরপাল্লার গাড়ি চলা চলে সমস্যা হচ্ছে। দুই ঘণ্টার রাস্তা যেতে সময় লাগছে ৮ ঘণ্টা। তাছাড়া বর্ষা শুরু হলে রাস্তাটি একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়বে। কিন্তু যোগাযোগমন্ত্রী বা সওজের কোনো কর্মকর্তাই সে দিকে মন দেয়নি। এ স্টেশন থেকে প্রতিদিন ১৫শ’ গাড়ি যাতায়াত করে। একদিন গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকলে ৭৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়। গত এক সপ্তাহে আমাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ সদু বলেন, এ স্টেশনে ১০ হাজার বাসশ্রমিক কাজ করে থাকে। এ এক সপ্তাহ গাড়ি বন্ধ থাকাতে আমাদের পরিবরের কমপক্ষে ৫০ হাজার লোক আয় উন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এদের জন্য সরকারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আগে থাকতে রাস্তা মেরামত করলে এমন অবস্থা হতো না।

মহাসড়ক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা সার্কেলের প্রধান প্রকৌশলী ইফতেখার কবির বলেন, আমরা ২০১০-১১ অর্থবছরে যে সব সড়ক জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করতে হবে তার একটি প্রতিবেদন দিয়ে ছিলাম। এসবের মধ্যে জাতীয় সড়কের ৩৪৯২ দশমিক শূন্য ১ কিলোমিটারে একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী সড়কের পরিমাণ ০-১০ শতাংশ, খারাপ ৮ দশমিক শূন্য থেকে ৯ শতাংশ, মোটামুটি খারাপ ৬ দশমিক শূন্য থেকে ৭ শতাংশ, চলার উপযোগী ৪ দশমিক শূন্য থেকে ৫ শতাংশ এবং ভাল রাস্তার পরিমাণ শূন্য থেকে ৩ শতাংশ। আঞ্চলিক সড়কের ৪২৬৮ দশমিক ২০ মধ্যে একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী শূন্য হতে ১১ শতাংশ, খারাপ শূন্য হতে ১২ শতাংশ, মোটামোটি ৭ দশমিক শূন্য থেকে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, সাভাবিক ৫ দশমিক শূন্য হতে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। জেলা সড়কের ১৩২৮০ দশমিক ০১ কিলোমিটারের একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী শূন্য হতে ১২ দশমিক শূন্য শতাংশ, খারাপ ১০ দশমিক শূন্য হতে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ, মোটামোটি ৮ দশমিক শূন্য হতে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এ হিসেবে মোট ৩টি বিভাগের ৬৮ শতাংশ রাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য মেরামত করতে হতো। তার মধ্যে একান্ত জরুরি ছিল ২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা মেরামত। আর এজন্য বাজেট প্রস্তাব করা হয়ে হয়েছিল ৩৭৯৯ কোটি টাকা। কিন্তু সরকার মঞ্জুর করেছিল মাত্র ৭০০ কোটি টাকা। (প্রতিবেদককে সম্ভোধন করে) আপনিই বলুন এ টাকা দিয়ে কি ৬৮ শতাংশ রাস্তা মেরামত করা সম্ভব? (‘উনারা শুধু আছেন লবিংটবিংয়ে। কাজের দিকে নেই দৃষ্টি’ বলছিলেন সেখানে বসে থাকা এক ব্যক্তি)। তাছাড়া চলতি অর্থবছরে (আগস্ট) একটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে তন্মধ্যে ৮৫০ কিলোমিটার সড়ক একেবারে ব্যবহার অনুপযোগী। ১৮৩৫ কিলোমিটার সড়কের মাঝে মাত্র ২০ হতে ২৫ কিলোমিটার সড়ক মোটামুটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী।

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক : ঢাকা-রাজশাহী সড়কের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কটি ২০০৪ সালে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। তৈরির কয়েক দিন পরই ৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথটির বিভিন্ন অংশ দেবে যায়। জন্য চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এরপর কয়েক দফা সড়কটি মেরামত করা হয়। কিন্তু এখনো বড় বড় গর্তে ভরা এবং অনেক স্থান দেবে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে এর অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ায় বাস মালিকরা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

ফরিদপুর-আলফাডাঙ্গা : ফরিদপুর-আলফাডাঙ্গা রাস্তার ৩৪ কিলোমিটার সড়কেও বড় বড় গর্ত। শনিবার থেকে ওই রাস্তায়ও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফরিদপুর সওজ সূত্র জানায়, পুরো সড়কে পিচের চিহ্ন নেই। হাঁটু সমান গর্তে প্রতিদিনই যানবাহন বিকল হয়ে যাচ্ছিল। পথটিতে প্রতিদিন শতাধিক বাস চলাচল করতো। শরীয়াতপুরের মাঝিকান্দি থেকে সদর পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তায় দু’টি গাড়ি চলাচলে বিঘœ ঘটে থাকে।

এলজিআরডি সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকারের অধীনে ৭২ হাজার কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে ৪৩ হাজার কি.মি. রাস্তার পিচ উঠে গেছে। কমপক্ষে ৩ হাজার কিলোমিটার সড়ক ভেঙে নতুনভাবে তৈরি করতে হবে। বাকি প্রায় ৩০ হাজার কিলোমিটার সড়কের স্লোব বা শোল্ডার নষ্ট হয়ে গেছে।

যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, আমি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি দেখেছি। এখানে পানি জমার কারণে এত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করি অতিদ্রুত সময়ের মাঝে তা ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, মহাসড়ক মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য ১৪০০কোটি টাকা চাওয়া হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই সামান্য টাকা দিয়ে সড়ক মেরামত ও সংস্কার করা যাচ্ছে না।

সওজের ডিএইচএম সূত্রটি আরো জানায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ১২২ কিলোমিটারের পুরোটাই চলাচলের অনুপযোগী। এলেঙ্গা-মির্জাপুর ও মির্জাপুর-টাঙ্গাইল শহর পর্যন্ত প্রায় ১২০ কিলোমিটার সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর থেকে বড় দারোগার হাট পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার। যশোর-খুলনা মহাসড়কের প্রায় ৬০ কিলোমিটার। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ২ কিলোমিটার পানিতে ডুকে থাকে। তাছাড়া এ সড়কের আরো প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ ব্যবহার অনুপযোগী। তালা-পাইকগাছা সড়কের ১০ কিলোমিটার দু’তিন ফুট পানির নীচে থাকে বলে যান চলাচলে সমস্যা হয়।

সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর’র (সওজ) হিসাব মতে, মেরামতের অভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা সড়কের বেহাল দশা। ঢাকা-টাঙ্গাইল ও মির্জাপুর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সড়ক, কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক, ঢাকা-রাজশাহী সড়কের বনপাড়া-হাটিকুমরুল অংশ ও যশোর-খুলনা মহাসড়ক। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড সড়ক। এগুলোকে মেরামত করা না হলে অচিরেই বড় সমস্যায় পড়তে হবে যাত্রীদের। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাসিব মোহাম্মদ আহসান বলেন, বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকাতে অতিদ্রুত রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার পাশে অবৈধ দোকানপাট, অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল এবং নিয়মিত মেরামত না করাতে দেশের অধিকাংশ সড়কে বেহাল দশা। সরকারের দায়িত্বশীল মহলকে এ দিকটা আরো ভালোভাবে মনযোগ দিতে হবে। তা না হলে যাতায়াতে মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দলীয় ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা লোক দেখানো কাজ করে চলে যায়। এতে করেও রাস্তার সঠিক কাজ হচ্ছে না। এসব বিষয়ের কারণে প্রতিনিয়ত মানুষকে কষ্টের মাঝে পড়তে হচ্ছে।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।