॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥
ভারসাম্যহীনতার পরিণতি পঙ্গুত্ব- এ কথা ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কোনো দেশে শক্তিশালী বিরোধীদল ও জাতীয় সংসদ না থাকলে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। পরিণতিতে সেই জাতিও পঙ্গুত্ববরণ করে। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় ক্ষমতাসীনরা লাভবান হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না। শরীরের কোনো অঙ্গের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মানে, সেই অঙ্গের অতি স্বাস্থ্যবান হওয়া নয়, ক্যান্সারের মতো অসুস্থতা। যদিও তা স্ফীত হয়ে যায়। দেশের বিগত দেড় দশকের রাজনীতির অবস্থাও এমন হয়েছে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী শাসনে রাজনীতিতে যে ভারসাম্যহীন অবস্থা বিরাজ করছে, তার পরিণতি শুধু বিরোধীদল নয়, আওয়ামী লীগকেও ভোগাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের একটি বক্তব্য বিশ্লেষণের দাবি রাখে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান আওয়ামী লীগের নিজের স্বার্থে তৈরি করা। ‘এটা দলের জন্য। এ সংবিধানকে কেটে এক-তৃতীয়াংশ করেছে তারা একজন ব্যক্তির জন্য এবং যেখানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। এটা নাকি কোনোদিনই পরিবর্তন করা যাবে না। সংবিধান তো মানুষের জন্য! সেই মানুষের সংবিধান তারা নষ্ট করে ফেলেছে। আমার সবসময় মনে হয়, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা- তারা নিজেদের এ দেশের মালিক মনে করে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এ বাস্তবতা থেকে যদি বেরিয়ে আসতে হয়, তাহলে বড় রকমের ঝাঁকুনি দরকার। বড় রকমের যুদ্ধ-সংগ্রাম দরকার। এ সংগ্রাম-যুদ্ধে আমরা আছি।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘আপনি গ্রামের চায়ের দোকানে যাবেন। কেমন করে বুঝবেন কোন লোকটা আওয়ামী লীগ করে, কোন লোকটা করে না? যে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি টেবিল চাপড়াচ্ছে, জোরে কথা বলছে, অন্যকে গালি দিচ্ছে আপনি নিশ্চিত থাকবেন সেই লোকটা আওয়ামী লীগ করে।’ ‘আওয়ামী লীগ’ শব্দটা এখন গালিতে পরিণত হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
এ বক্তব্য শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একার নয়। বিশেষ করে গত ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন প্রসঙ্গে নাগরিক সমাজের একাধিক প্রতিনিধিই বলেছেন, ‘প্রধান বিরোধীদল; বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থীদের ডামি করে যে নির্বাচন করেছে, তাকে জাতীয় নির্বাচন নয়, বড়জোর দলীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের সাথে তুলনা করা যায়।’ সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘এ নির্বাচনে রাজনৈতিক সংকট তো কাটবে না। বরং আরও বাড়বে। তবে সরকার যদি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন, সুশাসন ও দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ নেয়, তাহলে আমরা ভালো দিকে যাবো।’ সেই পথের তাপ ইতোমধ্যেই দেশবাসী এবং ক্ষমতাসীনরাও অনুভব করছে।
কী সেই তাপ
বিভিন্ন জাতীয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন ও অন্যান্য সূত্রে প্রকাশ, ডামি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূলে দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাড়ছে। তৃণমূলে বিভেদ দূর করতে দ্রুত মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আর যেসব ইউনিটে সম্মেলন হয়েছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেগুলোয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর নেতা ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (গত ২ এপ্রিল) জানা যায়, ৪ এপ্রিল খুলনা এবং ২১ এপ্রিল ময়মনসিংহ বিভাগের বৈঠক হওয়ার কথা। ঈদের পর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিভাগের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। একাধিক সূত্রে প্রকাশ, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের বৈঠকে অভ্যন্তরীণ বিভেদ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীকে সমর্থন করা না করার বিষয়টিই ঘুরেফিরে এসেছে। এ থেকে দলের নীতিনির্ধারকদের মত হচ্ছে, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন এবং অপূর্ণাঙ্গ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে দিলে বিভেদ কিছুটা কমে যাবে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাচন এবার দলীয় প্রতীকে না হলেও দল থেকে কোনো একজন প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে তৃণমূল থেকে। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, কেন্দ্রীয়ভাবে বা কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া ঠিক হবে না। স্থানীয়ভাবে কেউ একক প্রার্থী ঠিক করতে পারলে তাতে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করবে না। এর আগে রোজার শুরুতে সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করেন। এ বৈঠকেও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠনের সুপারিশ এসেছে। গত বছরের শুরুতে সারা দেশে সম্মেলন কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীদলের আন্দোলন কর্মসূচির কারণে আওয়ামী লীগ সারা দেশে দল পুনর্গঠনের কার্যক্রম স্থগিত করে। দলটি ওই সময়ে টানা রাজপথে মিছিল-সমাবেশ নিয়ে বিরোধীদলকে চাপে রাখার চেষ্টা চালায়। ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর বিরোধীদল এখনো রাজপথের কর্মসূচিতে জোর দেয়নি। এ অবস্থাকে সংগঠন গোছানোর সময় বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। জেলা ও মহানগর মিলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা ৭৮টি। এর মধ্যে ৯টি জেলায় সম্মেলন হয়নি। সম্মেলন না হওয়ার তালিকায় চাঁদপুর জেলা ও চট্টগ্রাম মহানগর রয়েছে। গত রোববার (৩১ মার্চ) চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া যেসব জেলায় সম্মেলন হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আগেই মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ওয়ার্ড এবং থানা কমিটিগুলো হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন সদস্যের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরই মধ্যে ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মারা গেছেন। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। দলটির সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের লক্ষ্য হচ্ছে, সারা দেশের মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা। একই সঙ্গে আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে সব সাংগঠনিক ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা। সেজন্য ঈদের পর থেকেই সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। উপজেলা নির্বাচনের সময় দলীয় সম্মেলন করা কঠিন। তবে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ করা যাবে। উপজেলা নির্বাচনের পর সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ দেওয়া শুরু হতে পারে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে জুনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। এর মধ্যে যেসব ইউনিটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেগুলোও সম্পন্ন করা হবে। দলীয় বিভেদ সম্পর্কে এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ বড় দল। পদ-পদবির জন্য প্রতিযোগিতা থাকবেই। এতে মনোমালিন্যও হতে পারে। কেন্দ্রের কাজ হবে তৃণমূলে দূরত্ব কমানো এবং মনোমালিন্য দূর করা।
তার মানে গণতন্ত্রহীনতার প্রভাবে দল হিসেবে আওয়ামী লীগও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সর্বত্র এক ভারসাম্যহীন অবস্থা বিরাজ করছে।
সর্বত্র এক ভারসাম্যহীন অবস্থা
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বর্তমান প্রধান চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক ভারসাম্যহীনতা। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ধীরে ধীরে ভারসাম্যহীনতা প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। আইনের শাসন ও জনপ্রশাসনে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার জন্য এ ভারসাম্যহীনতা বিরাট অন্তরায় সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। ফলে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে আছে ক্ষমতাসীন দলের গণতন্ত্রায়ন। দলটি আর কিছুতেই অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারছে না। ফলে শূন্যতা পূরণে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে অযোগ্যতা ও অদক্ষতা এখন দুর্নীতির চেয়ে জনস্বার্থের জন্য বহুগুণ বেশি ক্ষতিকর ভূমিকা রাখছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অরাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আসলেই নিরাপদ হচ্ছে, না আরো বিপদ বাড়াচ্ছেÑ এমন প্রশ্ন এখন তাদের অনেক নেতার মাথাতেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
তারা মনে করেন, জনপ্রশাসন চালাতে গেলে রাজনৈতিক বা বহুদলীয় ভারসাম্য লাগে। প্রশাসনের কিছু লোক আওয়ামী লীগ এবং কিছু লোক বিএনপি, জামায়াত কিংবা অন্য দল করবে। এটা কোনো লুকাছাপার বিষয় নয়। অথচ বাস্তবে এ রাজনৈতিক মতামতের জন্য পুরস্কার বা তিরস্কারের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু তার চেয়ে জনস্বার্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে যদি ‘দলীয় আনুগত্য বা বিশ্বস্ততা’ এবং ‘ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা’র মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করা সম্ভব না হয়। বর্তমানে যা চলছে, তাকে দলীয়করণ; এমনকি ‘পার্টিয়ার্কি’ বা দলতন্ত্র দিয়ে বর্ণনা করা চলে না। ‘দলীয় নিয়ন্ত্রণ’ কথাটির মধ্যে একটি সমষ্টিগত চিন্তার প্রতিফলন ঘটে। কিন্তু ব্যক্তিতন্ত্র বা দলতন্ত্র এ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।’
আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে পরিচিত একটি জাতীয় দৈনিকের মন্তব্য কলামে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগ চাইলেই এসব চিত্র পাল্টে দিতে পারে না। অনেকের মতে, আমলাতন্ত্রের চাপে আওয়ামী লীগ স্বকীয়তা হারাচ্ছে। একজন কনিষ্ঠ মন্ত্রী আলাপ প্রসঙ্গে আমাকে বললেন, নেত্রী নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বন্দী। তার কাছে ঘেঁষা ক্রমেই দুরূহ হয়ে উঠেছে। সরকার পরিচালনায় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কতগুলো নীতিনির্ধারণী সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে, তার তালিকা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। রাজনৈতিক শূন্যতা বা বিরাজনৈতিকীকরণের সুযোগে আমলাতন্ত্র সবকিছুতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগ সর্বশেষ গাজীপুরেও রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে পারেনি। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে যত বেশি ব্যবহার করবে, ততই আওয়ামী লীগের ক্ষয় বাড়বে। আর ভয়াবহভাবে দুর্নীতির পাশাপাশি অদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।’
দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ও লজ্জাজনক ব্যর্থতা হচ্ছে দুর্নীতি দমন করতে না পারা। দলটির ২০১৮ সালের ইশতেহারে ১ নম্বর ‘বিশেষ অঙ্গীকার’ হওয়া সত্ত্বেও বাস্তবে দুর্নীতি দমনে কোনো কার্যকরী উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। বরং এটি বর্তমানে ‘নিউ নরমাল’ বা স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় পরিণত হয়েছে। দৈনন্দিন কার্যক্রমের সঙ্গে দুর্নীতিকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন দল এ প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। প্রভাব-প্রতিপত্তি কিংবা অর্থ ছাড়া কোনো কাজ এগোয় না, কোনো কিছুরই বাস্তবায়ন হয় না।
ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় অঙ্গ সংগঠনগুলোর সুনাম ও তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি বড়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জনপ্রতিনিধিসহ যারা দলের উচ্চপদগুলোয় আছেন, তাদের কথা নাইবা বললাম। স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম, যা মূলত একটি প্রশাসনিক কাজ, সেটি আওয়ামী লীগ দখল করে নিয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া এতটাই অর্থনির্ভর হয়ে পড়েছে যে, সেটা প্রায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতির জন্ম দিচ্ছে। ‘নির্বাচিত’ হওয়ার খরচ আকাশচুম্বী হয়ে পড়াই মূলত এর নেপথ্যের কারণ। দুর্নীতি কেবল আমাদের প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকেই গ্রাস করেনি, বরং এটি ক্ষমতাসীন দলকে একদম ভেতর থেকে সবচেয়ে মারাত্মকভাবে কুরে কুরে খাচ্ছে।’
সংকটমুক্তির পথ গণতন্ত্র : এ ভারসাম্যহীন অবস্থা থেকে মুক্তির পথ একটিই- তা হলো জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং গণতন্ত্রের পথে ফিরে এসে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামত ও আদর্শের আলোকে সরকার গঠন এবং পরিচালনা। কিন্তু বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগ ক্ষমতার তাপে এ বাস্তবতা মেনে নিতে চাচ্ছে না। তাই জনগণের ঐক্য আন্দোলন ছাড়া এ ভারসাম্যহীন অবস্থা দূর করার বিকল্প কোনো পথ নেই বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আন্দোলন ছাড়া কোনো পটপরিবর্তন হবে না- এটা বাংলাদেশের মানুষ মনে করে। আর রাজপথে যারা থাকতে পারে না, তাদেরকে জনগণ আর ক্ষমতায় আনবে না। একমাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- নিরাপত্তা সংকটের আশঙ্কা
- রাজনৈতিক দল ও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলেই দেশে কল্যাণকর পরিবর্তন আসবে আশা করা যায়
- বিরোধীদলীয় রাজনীতিতে বৃহত্তর ঐক্যের সুবাতাস
- ভারতীয় পণ্যে সয়লাব ঈদবাজার
- বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে সাধারণ ছাত্রসমাজ
- নিজের দল হারলেও দেশকে হারিয়ে দেননি তিনি
- খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা আমীরে জামায়াতের
- মানুষের পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য : ওবায়দুল কাদের
- স্মরণীয় সাংবাদিক মুহাম্মদ কামারুজ্জামান
- অরুণাচলের ৩০ স্থানের নতুন চীনা নাম
- ইমরান খানের সাজা বাতিল করলো ইসলামাবাদ হাইকোর্ট