সংবাদ শিরোনামঃ

বিভাজন নয় জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করুন ** ভিা চাই না কুত্তা সামলাও ** দেশ বড় ধরনের খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হবে ** রিপোর্টের সাথে বক্তব্যের কোনো মিল নেই ** খোল নলচে না পাল্টালে রাজনৈতিক বিতর্ক বাড়বে ** অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি রাষ্ট্রপ ** সরকারের প্রতি জনআস্থা কমছে ** সংঘাতের পথে পা বাড়িয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে সরকার ** সংবাদপত্রের পাতা থেকে ** বিশ্বের দেশে দেশে ভাষা : বাংলা ভাষার তাত্ত্বিক দর্শন এবং ভাষা চর্চা ** সাংবাদিকরা হত্যার টার্গেট কেন? ** দেশটা ক্রমশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে ** ভাষা আন্দোলনের শহীদদের চিরদিন এ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে ** মিয়ানমার-বাংলাদেশ সরাসরি চালু হতে যাচ্ছে নৌ ও বিমান যোগাযোগ সেতুবন্ধনে নয়া সম্ভাবনার দ্বার **

ঢাকা শুক্রবার ১২ ফাল্গুন ১৪১৮, ১ রবিউস সানি ১৪৩৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২

মুদ্রার উল্টা পিঠ : সত্য সন্ধানে ট্রাইব্যুনাল ’৭৩

খোল নলচে না পাল্টালে রাজনৈতিক বিতর্ক বাড়বে

॥ মিনা ফারাহ, নিউইয়র্ক॥
অভিযুক্ত আসামি সাঈদীর তিন সাী পালিয়ে গেলে বিজ্ঞ বিচারক প্রশ্ন করলেন, আসামিদের তো আপনাদের হেফাজতের বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই, প্রধান তদন্তকারী এবং অন্য প্রসিকিউটরও অনুপস্থিত, এইভাবে কি বিচার চলতে পারে? উত্তরে রানা দাসগুপ্ত যা বলেছেন, এজন্য আদালতের কাছে মা চাইছি, সাীদের আমরা ধরে রাখতে পারিনি, বাইরে যাওয়ার কথা বলে তারা চলে গেছে। অন্যান্য অভিযুক্তদের বেলাতেও একই ঘটনা ঘটছে।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহল বিচারের শক্তিকে কি চোখে দেখছে? দুর্বল নাকি সবল? সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক নাকগলানোদের ভিড় বাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের পরে শক্তির মধ্যে তীব্র ােভের সঞ্চার হয়েছে। এর মধ্যে যোগ হয়েছে আল-জাজিরা টেলিভিশনের সাংবাদিক, যিনি গোলাম আযমের সাাৎকার নেয়ার বিষয়টা পুরোপুরি ঠিক করে ফেলেছেন। দেশের ভেতরে থেকে আমরা যা-ই ভাবি না কেন, দাতা গোষ্ঠীর কাছে নতজানু বাংলাদেশকে সবসময়ই বিষদাঁতহীন সাপের মতো থাকতে হবে। ট্রাইবুন্যাল ’৭৩-এর জয় হোক, কিন্তু এখানে অনেক কিছু ঢুকে গেছে।

“মিসরের অত্যাচারী রাজা ফেরোর কৌশল ছিল কৃতদাসদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব ও কলহ বজায় রাখা, কিন্তু কৃতদাসরা যখন অধিকার বিষয়ে জেগে উঠলো সেটাই ছিল কৃতদাস প্রথা শেষ হওয়ার প্রথম ঘণ্টা। ...তার নিগ্রোত্বই কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের বোঝা, আর শ্বেতাঙ্গদের লজ্জা ...আকাশ যথেষ্ট অন্ধকার না হলে তারার আলো পুরোপুরি দেখা যায় না।” Ñকথাগুলো নির্যাতিত নিগ্রোদের উদ্দেশ্যে ’৫০-এর দশকে এভাবেই বলতেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ নেতা ড. মার্টিন লুথার কিং। ১৯৭৫ সালে আমাদের ফেরোইজমের সমাপ্তি হলেও শ্বেতাঙ্গ আর কৃষ্ণাঙ্গদের মতো ৩৭ বছর ধরে দু’টি পকে কলহে লিপ্ত রাখার কৌশলটি অত্যন্ত সফল হয়েছে। অব্যাহত উত্তপ্ত অস্থির আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ যে কোনো মুহূর্তে থামিয়ে দিতে পারে জাতীয়তাবাদ ও জাতিসত্তা।

মুক্তিযুদ্ধের প-বিপরে বিকল্প নয়, বাংলাদেশে এখন সবচে’ প্রয়োজন সত্যের সন্ধান। সুষ্ঠু এবং বিতর্কহীন মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ’৭১-এর ইতিহাসে ফিরতেই হবে। বেয়াক্কলের মতো আচরণের জায়গা নেই, যারা বোদ্ধা, উকিলের মতো না ভাবার কারণ নেই। বেশ কয়েকদিন ধরেই মুদ্রার উল্টা পিঠ সন্ধানে নানান জায়গায় খুঁজে যা পেলাম, তার কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো :

শুরুতেই গণহত্যা শব্দটির সংজ্ঞা থেকে প্রথম দু’টি  আর্টিকেল: ১) একটি গ্র“পের সদস্যদের হত্যা; ২) একটি গ্র“পের সদস্যদের ভয়ানক মানসিক এবং শারীরিক তি করা। হলোকাস্টের ভিকটিম র‌্যাফায়েল লেমকিনের পরিবারের ১৮ সদস্য নিহত হলে বাকি জীবন তিনি গণহত্যা শব্দটি প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে নিজেকে শেষ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতাসহ অমানবিক কষ্ট শেষে গণহত্যা শব্দটি জাতিসংঘে প্রথম স্বীকৃত হয় ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর তারিখে। মৃত্যুকালে তার ঘরে ৫ হাজারের অধিক বই, প্রায় প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি লাইনের নিচেই লাল দাগ ছিল।

মুক্তিযুদ্ধে সবচে’ উত্তপ্ত সেক্টর কামালপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে আমাদের বাড়িটি। ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত শেরপুরে ৬০ জনের বেশি মানুষ খুন হয়নি। আমার ধারণা, একাত্তরের আবেগে অতিরঞ্জিত একটি গোষ্ঠী ট্রাইব্যুনালে প্রভাব ফেলছে, বিচারিক স্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমিও চাই, কিন্তু সাবধান! বিচার যেন অতীতের মতো আগামী ৪০ বছরের জন্য আরেকটি ফেরোইজমের কারণ না হয়।

৩১/১২/৭১ এন.বি.সি সন্ধ্যার খবর, মিরপুর বিহারি কলোনি ঢাকা থেকে রণ নেশন। মুক্তিযুদ্ধে মতায় থাকা পাকিস্তানিরা নৃসংশভাবে হত্যা, ধর্ষণ, লুট করেছে, বাংলাদেশীদের কাছে যার à¦¨à¦¾à¦®Ñ à¦œà§‡à¦¨à§‹à¦¸à¦¾à¦‡à¦¡à¥¤ বিজয় শেষে বাঙালিরা মতায় গিয়ে, পাকিস্তানি দোসরদের উপর একই কুকর্ম করে নাম দিয়েছে বিচার। যুদ্ধ শেষে মুক্তি-গেরিলারা প্রতিশোধে লিপ্ত হয়েছে যাদের অনেকের সঙ্গে অপরাধের সম্পর্কে নেই। কর্তৃপ একে প্রোপাগান্ডা বললেও ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকার সমর্থিত পত্রিকাগুলোতে নানান উত্তেজক শব্দ ব্যবহার করায় পরিস্থিতি আরো ভয়ানক হয়ে উঠছে। প্রাণের ভয়ে বিহারিরা ছুটে যাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে। ভারতীয় সেনাবাহিনী দুটো কাজ করছে, ১) বিহারিদের থেকে অস্ত্র সংগ্রহ, ২) মুক্তিদের হাত থেকে বিহারীদের রা। কোন সরকারি নির্দেশ ছাড়াই উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা স্বঘোষিত পুলিশ সেজে আইন হাতে তুলে নিয়ে অনেককেই গোপন স্থানে নিয়ে গেছে, পরবর্তীতে যাদের আর কখনোই দেখা যায়নি। ব্যক্তিগত প্রতিশোধে লিপ্ত হয়েছে অনেকেই। 

ওয়ালটার কংক্রাইট, সি.বি.এস সন্ধ্যার খবর। কাদের সিদ্দিকীর হাতে ৪ যুবক হত্যার ঘটনাস্থল থেকে সচিত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা জনসভায় কাদের সিদ্দিকী যখন প্রতিশোধ না নিয়ে সুষ্ঠু বিচারের কথা বলছেন বাইরে তখন তার ১২ হাজার সৈন্যদের কয়েকজন সন্দেহভাজন কিছু লোককে পেটাচ্ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে কাদের সিদ্দিকী নিজ হাতে বেয়োনেট খুঁচিয়ে ৪ সন্দেহভাজন কলাবরেটরকে সাংবাদিকদের সামনে হত্যা করেছেন (ফুটেজে তারিখ অস্পষ্ট)।

০৬/২/৭২ এন.বি.সি, ঢাকা থেকে লিজ ট্রটা। বিহারী কলোনিতে কলেরায় মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তাদের খাবার শেষ হয়ে গেছে। এক সপ্তাহের বেশি কারফিউতে নারায়ণগঞ্জের জুট মিলের বাইরে বিহারি ক্যাম্পে শ্রমিকদের অমানবিক অবস্থা বিরাজ করছে। রেডক্রস বলছে, বাংলাদেশ সরকার বিহারি কলোনিতে খাদ্য সরবরাহের অনুমতি বন্ধ রেখেছে। সংঘর্ষে প্রায় ৩৫০ জন বিহারির মৃত্যু হয়েছে, জীবনের ভয়ে তারা আদমজী মিলের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছে। 

৫/৫/১১-তে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, বাংলাদেশে সুষ্ঠু বিচার অত্যন্ত সমস্যাগ্রস্ত, কারণ রাজনীতি এখানে ব্যক্তিগত ব্যবসা এবং শাস্তির জন্য যাদের ধরা হয়েছে সবাই বর্তমান হাসিনা সরকারের প্রতিপ।

দি হিন্দু পত্রিকার ঝানু সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান লিখেছেন, অভিযোগকৃত ৭ জনই যেহেতু বিরোধীদলের, সন্দেহ এটা কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তাণ্ডব? সরকার এতে অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে। বারবার এই বিচারের প্রাপ্তি নিয়ে মন্ত্রীদের আত্মবিশ্বাসের পুনরাবৃত্তিতে ট্রাইব্যুনালের স্বাধীনতা ুণœ হবে। সুষ্ঠু বিচার হলেই হবে না, সুষ্ঠু বিচার যে হয়েছে, তা প্রমাণ করতে হবে।

নভেম্বর ২, ২০১১, এএফপি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বরাত দিয়ে লিখেছে, বিবাদী পরে উকিল এবং অভিযুক্তদের হুমকির বিষয়টি তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন এশিয়ার ডাইরেক্টর ব্রাড এডামস। বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা সুষ্ঠু বিচারকাজে ধূম্রজালের সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ সরকার যদি সুষ্ঠু বিচার করতে চায়, তাহলে উকিল ও সাীদের হুমকির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা দরকার।

১৮/৫/১১ তারিখে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেয়া চিঠিতে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে যে, সরকার ভালো উদ্যোগ নিলেও সুবিচার নিশ্চিত করতে ৪০ বছর পর প্রমাণ জোগাড় করা চ্যালেঞ্জ। চিঠিতে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ’৭৩-এর ড্রাফটে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড রাখলেও পরবর্তী দুই শতাব্দীতে সিয়েরালিওন, রুয়ান্ডা, যুগোশ্লোভিয়ার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে যে পরিবর্তন এসেছে, বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালও এর অংশীদার। অন্য অর্থে ট্রাইব্যুনালকে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন করতে হবে। এই বিচার ভবিষ্যতে অপরাধীদের পে খারাপ উদাহরণের সৃষ্টি হতে পারে বলে উদ্বিগ্ন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। আন্তর্জাতিক সত্ত্বেও এই বিচার মূলত অভ্যন্তরীণ কারসাজি বলে ওয়েব জনমতের অভিযোগ।

মার্কিন সিনেটর গুজম্যান তার চিঠিতে বাংলাদেশ সরকারকে বেশ ক’টি সংস্থার নাম উল্লেখ করে লিখেছেন, আন্তর্জাতিক মান নিয়ে প্রশ্ন, স্বচ্ছতার অভাব। এতে করে ট্রাইব্যুনাল নিয়ে উচ্ছৃঙ্খলতা এবং রাজনৈতিক অশান্তি এবং বিতর্ক বাড়বে।

২৪ মার্চ ২০১১, দি ইকোনোমিস্ট। বিচারকদের অনেকেই দুর্বল এবং অনভিজ্ঞ। এই বিচার যে আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে সেই আশা ুণœà¥¤ অনেক বিদেশি দূতই মনে করছেন এই বিচার প্রতিপকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে যা গ্রামীণ ব্যাংকের নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকেও অবসরে যেতে বাধ্য করেছিল। এই বিচার সুষ্ঠু না হয়ে অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে।

নিউইয়র্ক টাইমস ১৭ নভেম্বর ২০১১। সাঈদির বৃটিশ আইনজীবী ব্যারিস্টার জন কেমি, সরকার যাকে বিচারকাজে অনুমতি দেয়নি, লিখেছেন, ট্রাইব্যুনাল ’৭৩-কে যদিও সূচনাকালে দণি এশিয়ার মডেল হিসেবে ন্যুরেমবার্গের বিকল্প বলে তুলে ধরা হয়েছিল, আসলে ব্যবহার হয়েছে ভিন্ন উদ্দেশ্যে অর্থাৎ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে প্রায় ৩০ হাজার বন্দিদের সাধারণ মা ঘোষণার কাজে। প্রাথমিক দলিলটি আন্তর্জাতিক আইনের মানদণ্ডের চেয়ে নিচু। দলিলে বিবাদী পরে তথ্য ও আইনি অধিকার সীমিত। ট্রাইব্যুনাল সংশোধন করে বিষয়টি আরো খারাপ করা হয়েছে। মামলার আইন চ্যালেঞ্জের সুযোগ তুলে নেয়া হয়েছে। আরো লিখেছেন, সাঈদীর এক উকিলের বিরুদ্ধে রায়টে অংশগ্রহণ করার জন্য হুমকি দিলেও তিনি তখন ইউরোপে। প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বরাত দিয়ে লিখেছেন, সত্যিই যদি বিচার নিরপে হয়, সেটা উন্নতিকামী দেশগুলোর জন্য ভালো উদাহরণ হতো। গণকের ভূমিকায় রানাদাস গুপ্তের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন, ২০১২ সাল হবে রায় এবং ২০১৩ সাল হবে কার্যকরের বছর। তার কথা সত্য হলে রায় হবে শাস্তির বদলে প্রতিশোধ। রায় নিয়ে মন্ত্রীদের উপর্যুপরি এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বক্তব্যেরও সমালোচনা করা হয়েছে।

ক্রাইমস অব ওয়ার অনলাইনে জন কেমি লিখেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার সভ্য গণতন্ত্রের জন্য আঘাত, যা বিংশ শতাব্দীর স্বৈরশাসকদের বেলায় ঘটেছে। প্রতিশোধ দিয়ে ভোট নিশ্চিত সম্ভব, মাঠ উত্তপ্ত হচ্ছে, ফলে পরবর্তীকালে এই বিচার দুটো দলের জন্যই আন্দোলনের ইস্যু হতে পারে। বড় বড় দালানগুলোতে বিশাল ম্যূরাল এবং পোস্টারগুলো সোভিয়েত সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয় বলে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন (বাংলাদেশকে রাজনৈতিক পোস্টারাইজেশনের কথা কি মিথ্যা?)।

আন্তর্জাতিক জুরি কমিশনের মতে, সিনিয়র পাকিস্তানি অফিসার ও সহায়তাকারী উভয়পরেই বিচার হওয়া উচিত (যা ট্রাইব্যুনাল ’৭৩-এর আর্টিকেলেও বহাল)।

মার্চ ২১, ২০১১। স্টেট ডিপার্টমেন্টের যুদ্ধাপরাধ বিষয় স্টিফেন র‌্যাপের ১০ পৃষ্ঠার সারমর্ম পড়লে সবচেয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ, অন্যান্য েেত্র সব পরে অপরাধীদের বিচার সম্ভব, বাংলাদেশের েেত্র তা ভিন্ন (তিনি কি ১৯৫ জনের কথা বলছেন?) লিখেছেন, যুদ্ধ আইন পাশ হয়েছে ’৭৩ সালে, আন্তর্জাতিক আইন পরিশুদ্ধ করে পরবর্তীতে যে সকল পরিবর্তন হয়েছে, এই ট্রাইব্যুনালের তা গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্য আলোচনায় বলেছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তাদের জন্য অন্ধ ইমিউনিটি, অবশ্যই এটা অভিযুক্তদের পে সমর্থন এবং যারা অভিযুক্তের বাইরে তাদের বিপে নয়, কিন্তু ন্যূরেমবার্গ ট্রায়ালে সিনিয়রদেরই বিচার হয়েছে। কম্বোডিয়ায় বিচারের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ গ্যালারি পরিদর্শন করেছে, বিচারকাজ উন্মুক্ত এবং ভিডিও কভারেজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে (কম্বোডিয়ার বিচার জাতিসংঘের সহায়তায় আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে)।

বিডিআইএনএন সাইটের তথ্যনির্ভর রিপোর্ট থেকে ১৯৫ জনের বিচার কেন আইনের আওতাভুক্ত তার পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায়। নানান টালবাহানায় ১৯৫ জনকে ফিরিয়ে দিলেও জুলাই ২০, ১৯৭৩-এর অ্যাক্টে রয়েছে আন্তর্জাতিক আইন যা জাতিসংঘের আইনের আওতাভুক্ত, সেই অর্থে ’৭৩-এর ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সুতরাং এই আইনে সকল পরে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি পেতে হবে। যদিও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান কেউই এই বিচার চায়নি, তারপরেও আর্টিকেল ৪৭(৩) যুদ্ধাপরাধী ও সহযোগীদের বিচারের কথা বলা হয়েছে, কোনো সরকারই সেটা বাতিল করেনি।

অনলাইন ডন এএফপি’র উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, “সকলেই ’৭১-এ বিহারি এবং পাকিস্তানিদের নৃশংসতার কথা বলছে, কিন্তু কেউই বলছে না, বিহারিদের ওপর যে পরিমাণ প্রতিশোধ নেয়া হয়েছিল। আমাদের ধারণা, একমাত্র শান্তাহার শহরেই কয়েক হাজার বিহারি হত্যা করা হয়েছে।” কথাগুলো বিহারি নেতা আহমেদ সিদ্দিকি বলেছেন, সংবাদ সংস্থা এএফপিকে।

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অপর পকেও বিচার চাইতে বাধ্য করেছে, এই শিরোনামের লেখাটিতে সায়রুননেছার ছবিসহ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার পরিবারের ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে খুন হয়েছে। সিদ্দিকীর দাবি, আমরা কোনো বিচার চাই না তবে অপরাধের স্বীকারোক্তি চাই, তাহলেই আমাদের ত সারবে। শর্মিলা বোসের বিতর্কিত ডেড রেকনিং বই থেকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বিহারি হত্যার বিষয়টিকে অস্বীকার করে চলেছে।” বোস আরো উল্লেখ করেছেন, যেদিন জহির রায়হান উধাও হলো পুরো দেশ তখন সরকারের দখলে সুতরাং বিহারিদের হাতে তখন গণহত্যার খবর সন্দেহজনক হয়তো এটা সুযোগ সন্ধানীদের কাজ।

অনলাইনের উতপ্ত ওয়েবসাইটে কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, সোনালী ব্যাংক লুট, প্রায় ২০ কিলোগ্রাম স্বর্ণ চুরি ও হিন্দু সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ছাড়াও মোফাজ্জেল হোসেন মায়া, গাজী গোলাম দস্তগির যারা মুক্তিযুদ্ধের গর্বে গর্বিত একইভাবে তারা রাজাকার এবং বিহারি হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। ওয়েব জনমত, ’৭১-এ যারা যুদ্ধ পরবর্তী গণহত্যা প্রত্য করেছেন তাদের অনেকেই জীবিত; তাদের বিচার না হলে বিচার হবে একতরফা। (নাৎসি কিংবা ইহুদি... মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, বিহারি, রাজাকার, মুক্তিযোদ্ধা সব পরে মানুষ মারা গেছে। সাংবাদিকদের সামনে কাদের সিদ্দিকীর হাতে সক্রিয় বেয়োনেট খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা, গণহত্যা সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত)। 

সারমর্ম : বিচার কাজে ন্যূনতম ভুল তথ্য থাকলে পরবর্তীতে নব্য ফেরোইজমের উত্থান হবেই কারণ দুই পই শক্তিশালী। শুরু থেকেই ’৭৩-এর ট্রাইব্যুনালের গঠনতন্ত্র এবং সুষ্ঠু বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে অতিরিক্ত কৌতূহলের ধূম্রজাল। আইসিসিএফ যদিও জোর গলায় বলছে, বিষয়টা অভ্যন্তরীণ, স্থান, কাল, পাত্র, প্রোপট সবই বাংলাদেশী, সুতরাং বিচারও হবে কোনো বিদেশিদের নাকগলানো ছাড়াই, কিন্তু এখানে তিনটি সমস্যা:- ১) আইসিসিএফ হয়তো জানে না ট্রাইব্যুনাল ’৭৩ আভ্যন্তরীণ আইন নয়। (মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে অনেকেই হয়তো অতিরঞ্জিতভাবে আপ্লুত হয়ে অনেক কথাই বলছেন, আসলে গুরুত্ব বা গাম্ভীর্য কিছুই জানেন না। এখানে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি চলবে না)। ২) ১৯৫ জন মূল অপরাধী এবং সহযোগীদের বিচার এখন পর্যন্ত বহাল। সুতরাং ১৯৫ জনের যারা বেঁচে আছে, তাদেরও বিচার প্রয়োজন। ’৭৪-এ ৯ই এপ্রিলে তিন পরে চুক্তিতে পাকিস্তান ওয়াদা করেছিল বিচার তারা করবে কিন্তু করেনি। উদাহরণ স্বরূপ, ন্যূরেমবার্গ ট্রায়াল যেখানে শুধু সিনিয়রদের বিচার হয়েছে। এক বছরে সম্পন্ন এই বিচারে ২৪ জন মূল নাৎসিদের ১২ জনকে ফাঁসি, ২ জনকে মুক্তি, বাকিদের নানান মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। হিটলার এবং গোয়েবলস আত্মহত্যা করেছিল বলে বিচার হয়নি। (তখন জীবিত যুদ্ধাপরাধী বোরম্যান এবং হেস-এর বিচার না করলে ন্যূরেমবার্গ হয়তো গ্রহণযোগ্য হতো না। সংগ্রাম পত্রিকাসহ ’৭১-এর নানান আর্কাইভ থেকে সংগৃহীত তথ্য বর্তমান বিচারকাজে একটি অন্যতম সহায়ক। তবে তথ্য উপাত্তের প্রতুলতা নিয়ে প্রশ্ন। ন্যূরেমবার্গ ট্রায়ালে ২ মিলিয়নের অধিক তথ্য উপাত্ত খাড়া করা হয়েছিল। তবে সন্দেহ নেই যে, বিচারকাজে আর্কাইভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই অর্থেই বলছি ’৭১-এর আর্কাইভসহ বিশেষ করে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও টিভি ফুটেজে যত আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবর দেখলাম, এতে আমার কাছে দুইপরেই গণহত্যার বিষয়টি পরিষ্কার)। ৩) সংগ্রাম পত্রিকার সঙ্গে গোলাম আজম সাাৎকারে যা বলেছেন, ২০০১ সালের আগে যুদ্ধাপরাধী শব্দটি উচ্চারণ হতো না। ১৯৫ জনকে মুক্তি দিয়ে শেখ মুজিব বিচারের সমাধান করে ফেলেছেন। জামায়াত ছাড়া বিএনপি মতায় যেতে পারতো না। ভবিষ্যতের পরাজয় ঠেকাতেই জামায়াতের ওপর আঘাত। (আন্তর্জাতিক মহল কি এই প্রশ্নই তুলছে না? জাতির উদ্দেশ্যে সাাৎকারে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ বারবার তার সহায়তা চেয়ে তাকে মন্ত্রী বানানোর জন্য বাড়িতে লোক পাঠিয়েছিল)।

আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন বিশেষজ্ঞসহ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস, আন্তর্জাতিক বার এসোসিয়েশন, আমেরিকান সোসাইটি অব ইন্টারন্যাশনাল ল’... অসংখ্য পর্যবেকদের অণুবীণ যন্ত্রের তলে এই বিচার।

১৯/৫/১১ তারিখে ওয়াশিংটনে এএসআইএল’র মিটিং স্টিফেন র‌্যাপের উপস্থিতিতে যে পর্যায়ের উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাপ বললেন, রাজনৈতিক প্রতিপ যে বিবাদী প বিষয়টি কি কাকতালীয় না? অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত অভিযোগ, বাছাই করে পছন্দের বিচার নিয়ে। এই কাজটি করার আগে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার চিন্তা করবে বলে হুশিয়ার করে দিলেন ব্যারিস্টার জন কেমি। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ স্টিফেন কে আল-জাজিরাকে অত্যন্ত কঠিন ভাষায় জানালেন বিচার কাজ পপাত দুষ্ট এবং গ্রহণযোগ্যতাহীন। সন্দেহাতীত প্রমাণ ছাড়াই ৪০ বছর আগের বিচারকাজ সুষ্ঠু হবে না। অভিযোগ, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিজেই অতীতে এই বিষয়ে এক অনুসন্ধানে অংশগ্রহণ করেছেন। সুতরাং এই বিচারে তিনি শুধু সাী হতে পারতেন।

০৭/২/৭২ তারিখে সি.বি.এস নিউজে ওয়াল্টার কংক্রাইট বললেন, ২৪ হাজার পাকসেনাকে অস্ত্রসহ ক্যান্টমেন্টে রাখা হয়েছে। সিবিএস খবরে প্রকাশ, পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় ২৪ হাজার পাকসেনাদের অস্ত্র সমর্পনের খবর কি সত্য নয়? বিপদ বুঝে ভারতীয় সেনারা স্বেচ্ছায় তাদেরকে অস্ত্রসহ ক্যান্টনমেন্টে লুকিয়ে রেখেছিল। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়ে বিহারি এবং পাকসেনাদের নিরাপত্তার কারণে নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী বলে নানান তথ্য রয়েছে ’৭১-এর আর্কাইভে।

সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এরশাদের সময়ে এবং পরেও গোলাম আজমের সঙ্গে দেখা করার জন্য যখন শেখ হাসিনা তার দপ্তরে গেলেন, তখন কি তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধমুক্ত? কারণ অভিযোগের সময়কাল তারও ১৫ বছর আগের, নিশ্চয়ই জানতেন, ৩৮ জনের সঙ্গে তার পিতাই গোলাম আজমের নাগরিকত্ব নিষিদ্ধ করেছিলেন।

সারা দেশেই বিড়াল দিয়ে ধান ভানার উদাহরণ। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের একটি সাাৎকার পড়ে বিস্মিত হয়েছি। অন্যদের মতো তিনিও বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল ’৭৩-এর আইন এবং অপরাধ দু’টোই অভ্যন্তরীণ, তাই বিচার হবে অভ্যন্তরীণ আইনেই। অন্যান্য স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবীদের মতো তিনিও আন্তর্জাতিক মহলের নাকগলানো নিয়ে প্তি। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন বিশেষজ্ঞরা ঢাকায় এলে সুজানা লিনটন আইনমন্ত্রীসহ এক সেমিনারে বললেন, বিচার মোটেও অভ্যন্তরীণ নয়, অবশ্যই এখানে আন্তর্জাতিক তদারকির প্রয়োজন; বিচারে আমাদের কৌতূহল আছে এবং সহায়তা দিতে চাই।

বাংলাদেশ! সত্যিই তুমি সেলুকাসের বিচিত্র দেশ! যার যা বিষয় নয়, নাক গলালে যা হয়, আমার চোখে বাংলাদেশের এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এরাই যখন জাতির নেতৃত্ব দেয়, আন্তর্জাতিক মহল সেই সুযোগের অপোয় থাকে, আমাদের দুর্বলতাগুলো গত ৪০ বছর ধরে বাংলাদেশকে পেছন থেকে টানছে, আর এই সুযোগে দেশটা হয়ে উঠছে মগের মুল্লুক। উভয় পরে অপরাধীদের বিচার না হলে ট্রাইব্যুনাল ’৭৩ বিতর্কিত হয়েই থাকবে। গুরুত্ববহ জায়গায় যে কোনো মাপেরই ইগো, অনভিজ্ঞতা, আবেগ, ১৬ কোটি মানুষের জন্য অশনি সংকেত। ড. কিংয়ের কথাই বলতে হয়, আলোক প্রত্যাশী বাংলার আকাশ এখন যথেষ্ট কালো, তারার আলো না দেখার কারণ নেই। মুদ্রার উল্টা পিঠ লেখাটিতে উল্লিখিত ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, ভেন্ডারবিল্ট ইউনির্ভাসিটি অব আর্কাইভ থেকে।

ঙহষু ভধপঃং পধহ ঁহাবরষ ঃৎঁঃয.

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।