গ্যুন্টার গ্রাস, একটি কবিতা ও মধ্যপ্রাচ্য সংকট

একটি কবিতা লিখে তুমুল বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন জার্মানির নোবেল জয়ী লেখক গ্যুন্টার গ্রাস। তার বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ আনা হচ্ছে। অবশেষে কবি নিজে মুখ খুলেছেন।

বিতর্কের সূত্রপাত একটি কবিতাকে ঘিরে। তাও আবার সংবাদপত্রে প্রকাশিত কবিতা। দৈনিক স্যুডডয়চে সাইটুংএ সেটি প্রকাশিত হয়েছিল গত ৪ এপ্রিল। ‘যা বলার, তা বলতে হবে’ এই শিরোনামে জার্মানির নোবেলজয়ী লেখক গ্যুন্টার গ্রাস কলম ধরেছেন। বিষয়বস্তু অত্যন্ত রাজনৈতিক এবং স্পর্শকাতর। ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি ও সে দেশের হুমকির মুখে ইসরাইল সে দেশের উপর আগাম হামলার বিষয়ে যে ভাবনা-চিন্তা করছে, সেই মনোভাবের তুমুল সমালোচনা করেছেন গ্রাস। ইসরাইলের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে এবং সে দেশ ইরানের মানুষকে মুছে ফেলতে পারে, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে জার্মানি ইসরাইলকে যে অত্যাধুনিক সামরিক ডুবোজাহাজ সরবরাহ করছে, সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও কড়া কথা শুনিয়েছেন গ্রাস।

বলা বাহুল্য কবিতাটি তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ইসরাইলের তুলনায় জার্মানিতেই গ্রাসের বিরুদ্ধে সমালোচনার সুর অনেক কড়া। লেখক, শিল্পী, রাজনীতিক থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যম সবারই বক্তব্যের সুর মোটামুটি এক। প্রথমত কবিতায় ইসরাইলের সমালোচনা বড়ই একপেশে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ বিশ্বের মানচিত্র থেকে ইসরাইলকে মুছে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। সেদেশ পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে, এমন সন্দেহও মোটেই অমূলক নয়। এই অবস্থায় ইরানকে ছেড়ে শুধু ইসরাইলের বিরুদ্ধে তোপদাগা কতটা যুক্তিযুক্ত। সমালোচকরা সেইসঙ্গে গ্যুন্টার গ্রাসএর নিজের অতীতের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কবিতায় তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যে অনেক কাল অপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত মুখ খুলতে হয়েছে তাঁকে। অথচ গ্রাস নিজে ১৭ বছর বয়সে হিটলারের এসএস গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করতে তাঁর কয়েক দশক সময় লেগেছে। গ্রাস এর প্রতিক্রিয়া এমন সমালোচনার ঝড়ের মুখে প্রথম দিন তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টাই করেন নি। বলেছিলেন, যা লেখার তা কবিতায়ই লেখা আছে।