সংবাদ শিরোনামঃ

বৃহত্তর ঐক্যের উদ্যোগ ** দেশকে ২০৪১ সালের আগে উন্নত ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব : প্রধানমন্ত্রী ** স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে না পারার দায় কার? ** সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামুন : ডা. শফিক ** লুটপাটে উদ্বিগ হাইকোর্ট ** পর্দা নৈতিকতা আভিজাত্য ও মর্যাদার প্রতীক ** নীরব আগ্রাসনের শিকার বাংলা ভাষা ** মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে **

রেজি: ডিএ ৫১৭।। ৫৯ বর্ষ : ৪৬তম সংখ্যা ॥ ঢাকা শুক্রবার ১৩ ফাল্গুন ১৪২৭ ॥ ১৩ রজব ১৪৪২ : Friday 26 February 2021

মুহাম্মাদ ওবায়দুল্লাহ : দেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা। প্রায় ২১ লাখ জনঅধ্যুষিত এই জেলায় দীনি আন্দোলনের কাজে বহু আলেমেদীন, ইসলামী ব্যক্তিত্বের আগমন ঘটেছে। ১৯৬১ সালের কোনো একদিন মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম রাহিমাহুল্লাহর সাতক্ষীরা সফরে তাঁর হাতে মুত্তাফিক ফরম পূরণ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছিলেন মরহুম কাযী শামসুর রহমান। সেই থেকে তিনি দীনের কাজে, ইকামতে দীনের দাওয়াত নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার সকল প্রান্তে আমৃত্যু ছুটে বেড়িয়েছেন।
কাযী শামসুর রহমান ১৯৩৭ সালের ১ জানুয়ারি সাতক্ষীরা পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কাযী আব্দুল মতিন ও মাতা সৈয়দুন্নেসা। ১৯৬২ সালে তিনি হামিদা খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ছয় পুত্র ও ৪ কন্যাসন্তানের জনক।
তিনি ১৯৫৬ সালে সাতক্ষীরা পিএন উচ্চ বিদ্যালয় (বর্তমানে স্কুল অ্যান্ড কলেজ) থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে ১৯৫৯ সালে আইএ এবং ১৯৬১ সালে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড এবং ১৯৬৫ সালে ঢাকা ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ থেকে এমএড ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত লাবসা হাইস্কুল, সাতানি-ভাদড়া হাইস্কুল, কালিগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল, সাতক্ষীরা নাইট হাইস্কুল ও সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। 
১৯৬১ সালে জামায়াতে যোগদানের পর ১৯৬৭ সালে তিনি রুকনিয়াত লাভ করেন। ১৯৭০ সালে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এমএলএ) নির্বাচন করেন। ১৯৭১-পরবর্তী সময়ে তিনি ২৩ মাস কারারুদ্ধ ছিলেন। কারামুক্তির পর তিনি ১৯৮০ সাল পর্যন্ত খুলনা মহানগরী বাদে বৃহত্তর খুলনা জেলা আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি প্রধান শিক্ষকের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে সংগঠনকে সময়দানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ১৯৮১-১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি সাতক্ষীরা জেলা আমীর এবং পরবর্তী সময়ে তিনি কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব আঞ্জাম দেন। মরহুম ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে সাতক্ষীরা সদর আসন থেকে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। 
 à¦•à¦¾à¦¯à§€ শামসুর রহমান শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদরাসা ও সাতক্ষীরা নৈশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। সাতক্ষীরা এলাহী বক্স ইসলামিক সোসাইটির আওতায় ১৯৮১ সালে মোসলেমা আদর্শ একাডেমি, বায়তুল আমান জামে মসজিদ, বায়তুল আমান স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলামী আদর্শ ও ঐতিহ্যের আলোকে বহুমুখী কর্মকা- সম্পাদনের জন্য ধর্মপ্রাণ ও দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তা নিয়ে গঠন করেন আল আমীন ট্রাস্ট, সাতক্ষীরা ও পাটকেলঘাটা দারুল ইসলাম ট্রাস্ট। প্রতিষ্ঠা করেন সাতক্ষীরা জেলার অন্যতম দীনি শিক্ষায়তন পাটকেলঘাটা আল আমিন ফাজিল মাদরাসা। সাতক্ষীরা শহরের অদূরে কৈখালি নামক স্থানে সূফী ফজলুল করীম মাদরাসা ও এতিমখানা, ওমর বিন খাত্তাব জামে মসজিদ স্থাপন করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে সাতক্ষীরা ইসলামী ব্যবসায়ী সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। এই সমিতির চারতলা সুদৃশ্য ভবনে সাতক্ষীরায় ইসলামী ব্যাংকের প্রথম শাখা স্থাপিত হয়। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকাসহ দেশের সব জেলার সাথে সরাসরি টেলিফোন ডায়ালিং ব্যবস্থা স্থাপন, সাতক্ষীরা আধুনিক হাসপাতালকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ, এলাকায় অসংখ্য রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, মন্দির, সেবা আশ্রম ইত্যাদি নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জনসেবায় নিবেদিত কাযী শামসুর রহমান অনেক মসজিদ, মাদরাসায় অজুখানা স্থাপন; বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ টিউবওয়েল স্থাপন; গরিব ও দুস্থদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য তাদের মাঝে ভ্যান ও রিকশা, সেলাই মেশিন, শ্যালো মেশিন, বাইসাইকেল ইত্যাদি বিতরণ করেন। আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে প্রদান করেছেন নগদ অর্থ এবং অনেক গৃহহারা মানুষের গৃহনির্মাণের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন তিনি। তার মাধ্যমে জাতীয় সংসদের মসজিদে নিয়মিত আজান ও নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি ছিলেন অশৈশব সমাজসেবী। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসিম ময়না তাঁর জানাজায় এ কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, কাযী ভাইয়ের নেতৃত্বেই আমরা বিয়েশাদিতে সহযোগিতা, রমজানে সেহরী, পার্টিসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা- করতে শিখেছি।       
মরহুম ১৯৯৯ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ভারতের ব্যাঙ্গালোরে ডাক্তার দেবী শেঠীর তত্ত্বাবধানে তার বাইপাস সার্জারি সম্পন্ন হয়। ২০০২ সালে দু’বার এবং ২০০৪ সালে একবার মোট তিনবার তিনি ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ২০০৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আল্লাহর রাহে এ সার্বক্ষণিক দা’য়ী ইন্তেকাল করেন। পরদিন শহীদি ঈদগাহের সদস্য তৎকালীন সমাজকল্যাণমন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ লাখো জনতার উপস্থিতিতে সাতক্ষীরা পিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফুটবল মাঠে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জানাজা শেষে তাকে সুলতানপুরস্থ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
লেখক : প্রভাষক, বাংলা বিভাগ, সাতক্ষীরা পিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।