স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপো করে অবৈধভাবে চলছে সীমান্তে খাটাল ব্যবসা

আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় গরু মহিষ দেশে প্রবেশ করছে

আবু সাইদ বিশ্বাস : আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় গরু মহিষ দেশে প্রবেশ করছে। পুলিশ বিজিবি ও স্থানীয় সরকারদলীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সহায়তায় অবৈধ এ ব্যবসা গড়ে উঠেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপো করে মহলটি সাতীরাসহ সীমান্তবর্তী জেলাসমূহের খাটাল মালিকদের এ ব্যবসায় বাধ্য করছে। তবে বেশির ভাগ খাটাল ব্যবসায়ীরা সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা। এতে করে একদিকে সরকার যেমন হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, তেমনি ব্যাপকভাবে তির সম্মুখীন হচ্ছে দেশীয় গরু চাষিরা।

 à¦®à§‹à¦Ÿà¦¾ অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এসব অবৈধ খাটাল মালিক ও তার সহযোগীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত শাখা- ২ এর উপসচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার এর ৭ আগস্ট ১৪ স্বারিত এক পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সনে সীমান্ত এলাকায় গবাদি পশুর বিট/খাটাল স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা হয়। তবে ২০১৪ সনে উক্ত বিট/খাটালসমূহের অনুমতি বা নবায়ন প্রদান করা হয়নি। উল্লিখিত গবাদি পশুর বিট/খাটালসমূহের মাধ্যমে অবৈধভাবে গবাদি পশু বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা যায়। এমতাবস্থায় সীমান্ত এলাকায় অনুমতি/ নবায়নবিহীন অবৈধ/খাটাল দিয়ে যাতে গবাদি পশু প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। পত্রটি সাতীরা, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পত্রের অনুলিপি দেয়া হয়েছে মহাপরিচালক বিজিবি পিলখানা, ঢাকা, বিভাগীয় কমিশনার খুলনা/রাজশাহী এবং পুলিশ সুপার সাতীরা, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁকে।

পত্রে বন্ধ করতে বলা হয়েছে সাতীরার কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা বিওপি, চান্দুড়িয়া বিওপি, সদর উপজেলার ঘোনা বিওপি, ভোমরা বিওপি, বৈকারী বিওপি, বৈকারী বিওপি সন্নিকটে, কুশখালী বিওপি, দেবহাটার কোমরপুর বিওপি, ভাতশালা বিওপি, যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভুলট বিওপি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনোহরপুর বিওপি, মাসুদপুর ও নওগাঁর সাপাহার উপজেলার খঞ্জনপুর এর বিট বা খাটাল। মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশ আসার পরও বহাল তবিয়তে অবৈধ খাটালে গরু মহিষ তুলে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন একাধিক ব্যক্তি ও সিন্ডিকেট।

 à¦­à¦¾à¦°à¦¤ থেকে আসা প্রতিটি গরু মহিষ থেকে নেয়া হচ্ছে ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা। এর মধ্যে সামান্য কিছু গরু মহিষ স্থানীয় কাস্টমসের মাধ্যমে করিডোর করিয়ে নেয়া হচ্ছে। যেখানে দেয়া হয় গরু বা মহিষ প্রতি ৫০০ টাকা। বাকী টাকা যায় অন্যান্যদের পকেটে। আরো খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গরু মহিষের সাথে ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ মালামাল এদেশে আনা হয়। যেগুলো মাঝে মধ্যে বিজিবি-পুলিশের হাতে ধরাও পড়ে।

এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম তরিকুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর তাৎণিকভাবে খাটালে গরু মহিষ তুলতে নিষেধ করা হয়েছে।

লিখিতভাবে নিষেধ করার পরও কিভাবে খাটালে গরু মহিষ উঠছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপকে জানানো হবে। একই সাথে উপরের নিদের্শনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপো করে মোবাইল ম্যাসেজে কিভাবে খাটালে গরু-মহিষ উঠছে, সাতীরা ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন (নীলডুমুর) এর অপারেশন কর্মকর্তা মেজর আহাদুল ইসলাম আহাদের কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপরে কাছে জানতে হবে। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যে সব বিজিবি সদস্য সীমান্তে অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের ব্যাপরেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।