সংবাদ শিরোনামঃ

তীব্রতর হচ্ছে আন্দোলন ** পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে ** শক্তি নয় সমাধান সংলাপে ** টানা অবরোধ হরতালে অচল দেশ ** সংলাপে বসতে বহির্বিশ্বের প্রচণ্ড চাপে বেকায়দায় সরকার ** অনুমতি ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিযান ** আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকার টিকে আছে ** রাজনৈতিক দমন নিপীড়ন বন্ধ করুন ** আবারও দৃশ্যপটে বিদেশী কূটনীতিকরা ** অভিযান নামের নির্যাতন ** গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের অবরোধে অচল দেশ ** আল মাহমুদের কবিতা কার প্রেমে, কার সান্নিধ্যে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪২১, ১ রবিউস সানি ১৪৩৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সাইনবোর্ড

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পিয়ন-আনসারের কাছে পণবন্দী আবেদনকারীরা। অফিসের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে পাসপোর্ট প্রার্থীদের। আর এই দুর্নীতির নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করছেন এক সহকারী পরিচালক। ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ভুক্তভোগী আবেদনকারীদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

কয়েকজন আবেদনকারীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সাধারণ পাসপোর্টের জন্য তিন হাজার ও জরুরির জন্য ছয় হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয়। আবেদনপত্রের কাগজপত্র বাবদ খরচ প্রায় ৫০ টাকা। নিয়মানুযায়ী সাধারণ পাসপোর্ট এক মাস ও জরুরি দুই সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহের কথা। কিন্তু নিয়মের এই বালাই নেই ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে। আবেদনের সঙ্গে ঘুষের টাকা পাওয়া গেছে কি-না সেটাই মুখ্য বিষয়। পাসপোর্টের ধরন বুঝে দ্বিগুণ-তিনগুণ ঘুষ নিয়ে থাকেন তারা।

দেশের ৩৩ জেলায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস স্থাপনের অংশ হিসেবে ঝিনাইদহ শহরের কোর্টপাড়ায় অফিস ভাড়া নিয়ে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস করা হয়। ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দেয়া তথ্যমতে, মাসে অফিস ভাড়া ১৮ হাজার টাকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ১ লাখ টাকার বেশি, অন্যান্য খরচ প্রায় ৫ হাজার টাকা। মাসে দেড় লাখ টাকা হিসাবে বছরে সরকারের ব্যয় ১৮ লাখ টাকা। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অফিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এক বছর পর ২০১৪ সালের পহেলা ডিসেম্বর পাসপোর্ট অফিসের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। তবে কার্যক্রম শুরু পর থেকেই অনিয়ম আর দুর্নীতির আঁখড়ায় পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিস। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত সবাই অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়াও দালালদের দৌরাত্ম্য ও গ্রাহক ভোগান্তি তো নিত্যদিনের ঘটনা।

অতিরিক্ত টাকা ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া খুবই দুঃসাধ্য

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। ডেলিভারিও হয় সমপরিমাণ। পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বর্তমানে অফিসে শতাধিক আবেদন পড়ে আছে। আর সকল কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে পড়ে আছে আড়ইশ পাসপোর্ট। পাসপোর্ট ফরম পূরণ করে আনলেও দালাল ছাড়া অফিসে জমা নেয়া হয় না। অফিস কর্তৃপক্ষ প্রসেস হয়ে আসতে বলেন (দালাল হয়ে)। আর দালাল ছাড়া অনুনয়-বিনয় করে জমা দিলেও তাতে হাজারো ভুল বের করে আবেদন বাতিল করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পাসপোর্ট বিতরণের সময় থাকলেও দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তা বিতরণ করা হয়।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক দালাল জানান, প্রতিটি পাসপোর্ট জমা নিতে অতিরিক্ত ২ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারা সবাই পেয়ে থাকে। যার মধ্যে অফিস পায় ১ হাজার টাকা, পুলিশি তদন্ত বাবদ ৫০০ টাকা, সত্যায়িত বাবদ ১০০ টাকা, ফরম পূরণ বাবদ ১০০ টাকা ও দালাল নিজে ৩০০ টাকা পেয়ে থাকে। এ ছাড়া কর্তব্যরত আনসার ও কর্মচারীরা যে যেভাবে পারে পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ লোকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। অতিরিক্ত টাকা রাজনৈতিক নেতা ও অফিসের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়ে থাকে। শহরের বড় ভাই, ছোট ভাই ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীর নামেও ২০-২৫টা করে পাসপোর্ট জমা নেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া গ্রামগঞ্জ থেকে পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা-পয়সা ছিনিয়েও নেয়ার ঘটনাও ঘটছে।

আদায়ের অতিরিক্ত টাকার শতকরা ৭০ ভাগ নেন অফিসের লোকজন আর বাকি ৩০ ভাগ টাকা রাখা হয় রাজনৈতিক ও দালালদের জন্য। গ্রাহকরা আরও জানান, আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ও সরকার নির্ধারিত ফি (ব্যাংক চালান) জমা দিয়ে চালানপত্র দেয়ার পরও অফিসের কর্মকর্তারা নানা ধরনের ভুল চিহ্নিত ও তা সংশোধন করে অন্যদিন জমা দেয়ার কথা বলে চ্যানেল ফি না দেয়া গ্রাহকদের বিদায় করে দেন। পাসপোর্টের আবেদন ফরমের পেছনে সত্যায়িত করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিবরণ উল্লেখ থাকলেও উদ্দেশ্যেমূলকভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সত্যায়ন লাগবে বলেও আবেদনকারীকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। অফিস থেকে বেরিয়ে এলেই আবেদনকারীকে ঘিরে ধরে দালালচক্রের ৩-৪ সদস্য।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আফজাউল আলম জানান, কোনো ধরনের অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয় না এবং অফিসের ভেতরে কোনো দালাল প্রবেশ করতে পারে না। বাইরে দালালদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।