সংবাদ শিরোনামঃ

সংবিধান নিয়ে সরকারের জালিয়াতি ** সারাদেশে ৩৬ ঘণ্টার স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল ** অভিযোগপত্র ছাড়া মাসের পর মাস আটক রাখা মানবতাবিরোধী অপরাধ ** আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না ** শিাখাতের উন্নয়নে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রস্তাবনা ** হরতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবহার অবৈধ, অসাংবিধানিক অগণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন ** গায়ের জোরে সংবিধান নিয়ে প্রতারণা ** আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ৩৬ ঘণ্টার হরতাল পালিত ** চলনবিলে কৃষি জমি ভরাট করে গড়ে উঠছে আবাসন ** নিয়মিত কুরআন পড়েন টনি ব্লেয়ার ** হরতালের প্রতি ৮০ শতাংশের সমর্থন ** সাহিত্য একটি বিশাল এবং কষ্টকর কর্মক্ষেত্র ** গহীন গাঙের গদ্য **

ঢাকা শুক্রবার ৩ আষাঢ় ১৪১৮, ১৪ রজব ১৪৩২, ১৭ জুন ২০১১

ফেরদৌস আহমদ ভূইয়া
সংবাদপত্রে রাজনীতির নিউজ বরাবরই প্রাধান্য পেয়ে থাকে আর তা পাওয়া স্বাভাবিক, কারণ রাজনীতি সর্বস্তরের জনগণকে নাড়া দেয়। আর তাই সপ্তাহব্যাপী সবগুলো পত্রিকার লিড নিউজ ছিল হরতাল আহ্বান পালন ও হরতাল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঘটনার নিউজ। তবে গত সপ্তাহে রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক একটি বিশেষ প্রতিবেদন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

আর এ নিউজটি ছাপা  হয়েছে  গত ১২ জুন নয়া দিগন্ত ও আমাদের সময়ের প্রথম পাতায়। নয়া দিগন্তের নিউজটির শিরোনাম হচ্ছে ‘আন্দোলন প্রশ্নে ’৯০-এর মতো কঠোর অবস্থানে খালেদা জিয়া, প্রস্তুতি নিচ্ছেন মাঠে নামার’। আমাদের সময়ের প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘খালেদার সংকল্প : আর নয় ছাড়’, জুনেই ৭২ ঘণ্টার আরো একটি হরতাল আসতে পারে’। নয়া দিগন্তের রিপোর্টার মঈন উদ্দিন খান লিখিত তার প্রতিবেদনটিতে বলা হয় “আন্দোলন প্রশ্নে ’৯০-এর মতো কঠোর অবস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আওয়ামী লীগ সরকারের ‘ব্যর্থতা’ ও ‘ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে তিনি নিজেই মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামী জুলাই মাসেই শুরু হচ্ছে তার এ অভিযান। সারা দেশ চষে বেড়াবেন তিনি। আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করাই এর মূল ল্য। চলমান আন্দোলনকে খালেদা জিয়া দেশ ও জাতির অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে দেখছেন। এ েেত্র কোনো ছাড় দেয়ার পপাতী নন তিনি। বিরোধীদলীয় নেতার খুব কাছের লোকজন তার এই মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সঙ্গীরা আলাপকালে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রশ্নেও তিনি আপসহীন। আন্দোলন নিয়ে তার মনোবলও আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। ‘আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই, এবার লড়াই দেশ ও জনগণের জন্য’ এমন মনোভাব লালন করছেন তিনি।

খালেদা জিয়া মনে করছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ও স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আওয়ামী লীগ যতদিন মতায় থাকবে, ততদিন দেশ আরও ধ্বংসের দিকে যাবে।

আওয়ামী লীগ ফের মতায় যাওয়ার বাসনা থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করার পরিকল্পনা করছে বলে তিনি মনে করেন। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পাদিত চুক্তিগুলো কার স্বার্থে করা হয়েছে, তা নিয়েও তার প্রশ্ন রয়েছে। এসব নিয়েই তিনি আন্দোলনের মাঠে সরব থেকে কঠোর হতে চান।

বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘হরতাল পরিবেশবান্ধব’ বলে প্রধানমন্ত্রী যে রসিকতা করেছেন, বিরোধীদলীয় নেতা তা নিছক রসিকতা হিসেবে নেননি। ৩৬ ঘণ্টা টানা হরতাল পালনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া দেখিয়ে দিতে চান হরতাল কেবল রসিকতা নয়, এতে জনগণের সমর্থন রয়েছে। এর পরবর্তী ধাপে ৭২ ঘণ্টা হরতালেরও পরিকল্পনা চলছে।

গত ৫ জুন যেভাবে দেশব্যাপী হরতাল পালিত হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট খালেদা জিয়া। তবে গত সপ্তাহে বেশ কয়েকটি রুদ্ধদ্বার  বৈঠকে তিনি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। একই সাথে গ্রেফতারও এড়াতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন কেবল শুরু হয়েছে। এ লড়াই বিএনপি ও দেশের অস্তিত্বের লড়াই। সবাইকে তাই এক হয়ে কাজ করতে হবে।’ সব পেশাজীবী সংগঠনকেও তিনি একই পরামর্শ দিয়েছেন।

জানা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে ধীরে ধীরে সরকার পতনের ‘এক দফা’ আন্দোলনে নামতে পারে বিএনপি। আর এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন খালেদা জিয়া। তার আগে বৃহত্তর জেলাগুলো সফর করে, লং মার্চ, রোড মার্চ কর্মসূচি দিয়ে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তুলতে চান তিনি।

আমাদের সময়ের রিপোর্টার আনোয়ার চৌধুরী লিখিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয় “সরকারকে আর বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ছাড়নীতির পরিবর্তে তিনি অগ্রসর হচ্ছেন কঠোর আন্দোলনের পথে।

সরকারের ক্ষমতায় থাকা নিয়ে গত ১২ জুন সবগুলো পত্রিকায় একটি নিউজ ছাপা হয়েছে। নিউজটির হেডিং ছিল ‘ডিসেম্বরের পর এই সরকার না-ও থাকতে পারে : অলি”। প্রথম আলোসহ অধিকাংশ পত্রিকায় এ খবরটি ছাপা হয়।

এলডিপি সভাপতি ড. কর্নেল অলি আহমদ (অব.) বলেছেন, ডিসেম্বরের পর বর্তমান সরকার মতায় নাÑও থাকতে পারে। কারণ এই সরকারের সমস্যার পাল্লা অনেক ভারি হয়ে গেছে। গত আড়াই বছরে সরকার ১৫টি সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এসব সমস্যার মাধ্যমে তারা জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু যারা এই চেষ্টা করছে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর পর্যবেণ ও গঠনমূলক সমালোচনার ল্েয গত ১১জুন হোটেল সুন্দরবনে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসেম্বরের পর এই সরকার মতায় নাÑও থাকতে পারে, এরকম কথা আপনি কিসের ভিত্তিতে বলছেন, এর পেছনে কি কারো কোনো ইঙ্গিত আছে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে কর্নেল অলি বলেন, ‘কারো ইঙ্গিতে নয়, আমার হƒà¦¦à§Ÿ বলছে বলতে তাই আমি বলছি। নিজের অন্তর থেকে বলছি, আল্লাহ্-রাসূলের (সা.) নির্দেশে বলছি।’ সংবাদ ব্রিফিংয়ে এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমও উপস্থিত ছিলেন।

ড. অলি বলেন, এলডিপির গঠনতন্ত্রে হরতালসহ যে কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা না থাকলে এলডিপি বিএনপির ৩৬ ঘণ্টার হরতালে পূর্ণ সমর্থন জানাতো।

গত ১৫ জুন কালের কণ্ঠ ও সমকালের লীড নিউজটি ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত দুটি বিভাগ নিয়ে। কালের কণ্ঠের লিড নিউেজের শিরোনাম ছিল ‘ঘুষ শেখায় শিক্ষা ভবন’ আর সমকালের লিড শিরোনামটি ছিল ‘দুর্নীতির মধুর হাঁড়ি’ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর’। এ দুটি  নিউজে দুই বিভাগের দুর্নীতির বিভিন্ন ঘটনা তলে ধরা হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ৫ অগ্রাধিকারের মধ্যে দ্বিতীয়টি ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না  করে বরং দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো ক্ষমতাহীন করে দিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে দুর্নীতি বেড়ে চলেছে। তারই একটি চিত্র উঠে এসছে শীর্ষস্থানীয় দুটি পত্রিকার এ দুটি প্রতিবেদনে। একইভাবে দেশের ঐতিহ্যবাহী পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাকের লিড নিউজটিও ছিল সরকারের আর একটি বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে। ১৫ জুনের লিড নিউজটি ছিল ‘সরকারি গাড়ি কিনতে নীতিমালা লঙ্ঘন’ গুণতে হবে অতিরিক্ত সাড়ে ছয় কোটি টাকা।’

১৫ জুন দৈনিক দিনকালের প্রথম পাতায়  হরতালের দিনের একটি মৌন মিছিল নিয়ে বক্স নিউজ ছাপা হয়। নিউজটির হেডিং ছিল ‘এই বর্বরতার জবাব কি!’ নিউজটি ছিল মিডিয়া জগতের অভিনেতা, অভিনেত্রী শিল্পী, কবি ও গীতিকারসহ জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্বদের হরতালের সমর্থনে মিছিল করা নিয়ে। গত ১২ জুন ৩৬ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, চাষী নজরুল ইসলাম ও ছড়াকার আবু সালেহসহ প্রায় ৬০-৭০ শিল্পী ও কলাকুশলী সকালের দিকে এফডিসির সামনে থেকে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি এফডিসির সামনে থেকে শুরু হয়ে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত গিয়ে ফিরে ্আসার পথে কোনো প্রকার উস্কানি ছাড়াই পিছন থেকে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। তাদের হামলায় অনেকে আহত হন। বিশেষ করে আবু সালেহ মারাত্মক আহত হয়েছে। পুলিশ চাষী নজরুল ইসলাম, কণ্ঠশিল্পী রিজিয়া পারভীনসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। শান্তিপূর্ণ ঐ মৌন মিছিলে হামলার কারণে পরিচালক প্রযোজক ও শিল্পী সমিতির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রযোজক সামতির সভাপতি গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন সামান্য একটি মিছিলকে কেন্দ্র করে এরকম ঘটনা ঘটানো হবে তা আমারা কল্পনাও করতে পারিনি। তিনি বলেন আমরা যে এলাকায় মিছিল করেছি সে  এলাকায় ১৪৪ ধারা ছিল না এবং আমরা কোনো আইনও লঙ্ঘন করিনি।

কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনিন বলেন আমরা তো শিল্পী। আমরা জানি কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা উচিত নয়। আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা করতে চাইনি। শুধু মৌন মিছিল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের উপর সরকারের এ রকম পদক্ষেপ নেয়া ঠিক হয়নি।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।