হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের অভিযোগে মোরশেদ গ্রেফতার

বগুড়া সংবাদদাতা : বগুড়ার শাজাহানপুরের রহিমাবাদ পালপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে মোরশেদ (৩৪)কে পুলিশ অবশেষে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সুপারের সরাসরি হস্তক্ষেপে গত ১৮ মে সোমবার ভোর রাত ৩টার দিকে আড়িয়া বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এর আগে গত ১৭ মে রোববার মোরশেদের ভাই তারাজুল ও তারাজুলের শ্বশুরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মোরশেদের কোনো দলীয় পরিচয় পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন সরকারের সময় ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকেই সে এসব অপকর্ম করতো বলে অভিযোগ রয়েছে। তার অত্যাচারে পালপাড়ার কয়েকটি পরিবার দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

এদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনকারী মোরশেদকে গ্রেফতার করলেও নিজেদেরকে নিরাপদ ভাবতে পারছে না পালপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা। মোরশেদের সহযোগী সাজ্জাদ, মোরশেদ বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হানজেলা ও তার বাহিনীর ভয়ে আতংকিত পালপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকশ’ মানুষ। মোরশেদকে গ্রেফতারের পর সাজ্জাদ ও হানজেলাকে গ্রেফতারের দাবিতে গত ১৭ মে সোমবার দুপুরে শাজাহানপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে পালপাড়ার হিন্দুরা। এ সময় তারা অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানায়।

শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল মান্নান জানান, সন্ত্রাসী মোরশেদকে গ্রেফতারের পর ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তার গডফাদার এবং সহযোগীদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যাবে। তিনি আরও জানান, পালপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

মোরশেদ ও তার বাহিনী দীর্ঘদিন যাবত পালপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। মোরশেদ বাহিনীর লোকেরা বিভিন্ন সময়ে পালপাড়ার বাসিন্দাদের নিকট থেকে চাঁদাবাজি করতো। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার বাড়িঘর ভাঙচুর ও মারপিট করতো। এমনকি বিভিন্ন সময় পালদের তৈরি মাটির জিনিসপত্র ভাঙচুর এবং মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।

মোরশেদ বাহিনীর জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় পালপাড়ার বাসিন্দারা বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি দেয়া সত্ত্বেও পুলিশ মোরশেদকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বাধ্য হয়ে রাত জেগে পাহারা বসায় গ্রামবাসী। অবশেষে গত রোববার সকালে পুলিশ সুপার মোজাম্মেল সরেজমিন পালপাড়া পরিদর্শনে যান। তিনি সেখানকার নির্যাতিত মানুষের সাথে কথা বলে দ্রুততম সময়ে সন্ত্রাসী মোরশেদকে গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দেন। পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতেই পুলিশ মোরশেদের ভাই তারাজুল ও তারাজুলের শ্বশুরকে গ্রেফতার করে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ গত ১৭ মে সোমবার ভোর রাতে মোরশেদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।