সংবাদ শিরোনামঃ

অর্থ লুটের মহোৎসব ** ভোটে আগ্রহ নেই মানুষের ** সারাদেশে গুম হত্যা আতঙ্ক ** ড. মাসুদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের মিছিল ** প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে : খালেদা জিয়া ** পানির জন্য হাহাকার ** ক্ষমতার নিশ্চয়তা পেলেই আগাম নির্বাচন ** তিস্তা এখন ধু ধু বালুচর ** তেলের দাম কমানোর নামে প্রহসন ** সরকার দায় চাপানোর কৌশল নিয়েছে ** আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে ** ওনারা বললে দোষ হয় না! ** মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি কি সুদূর পরাহত? ** পার্বতীপুরে পানির জন্য হাহাকার ** টাঙ্গাইলের ছয় উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই! ** কুষ্টিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বাড়ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ বৈশাখ ১৪২৩, ২১ রজব ১৪৩৭, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ইরানসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে যখন ওয়াশিংটন-রিয়াদ সম্পর্কের টানাপোড়েন চরমে, ঠিক তখনই এক সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরব সফরে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। দুই পরে মধ্যে সম্পর্কের যে অনেকটাই অবনতি হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা সৌদি আরব কেউই তা মুখে না বললেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই সফরের শুরু থেকেই তা চোখে পড়েছে।

বারাক ওবামা সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর তাকে অভ্যর্থনা জানান রিয়াদের গভর্নর যুবরাজ ফয়সাল-বিন-বান্দার আল-সৌদ। অথচ কোনও দেশের প্রেসিডেন্ট সৌদি আরব সফরে আসলে সৌদী বাদশাহই অভ্যর্থনা জানানোর রীতি রয়েছে। এমনকি বারাক ওবামাকে অভ্যর্থনা জানানোর ঘটনাটি সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও দেখানো হয়নি। অথচ এর কিছুণ পরই টিভিতে অন্যান্য জ্যেষ্ঠ রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাদশাহকে দেখা যায়, তিনি গালফ কাউন্সিলের অপর পাঁচ রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে করমর্দন করছেন।

এই বাস্তবতায় দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক বিশ্লেষণ হাজির করেছে। বিশ্লেষণে সৌদী-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, এর ভবিষ্যৎ, দুই দেশের স্বার্থ এবং ভবিষ্যতের সৌদি আরব নিয়ে আলোচনার পর দুই দেশের সম্পর্ককে ‘অসফল বিয়ে’র সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

সৌদি আরব আর যুক্তরাষ্ট্র কি শক্তিশালী জোট?

জোট মানেই হলো তার মধ্যকার সদস্যরা কিছু সাধারণ মূলনীতিকে ধারণ করবে। কিন্তু মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর বিশ্লেষণে সৌদি আরবকে কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সিএনএন বলছে, সৌদি আরবে বিদ্যমান রয়েছে চরম লিঙ্গীয় বৈষম্য। সেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, নেই ধর্মের স্বাধীনতা। বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শিয়া-খ্রিস্টান এবং ইহুদিদের প্রতি সৌদী ওয়াহাবিবাদের আচরণ বিদ্বেষমূলক।

সিএনএন বলছে, সৌদি আরব আর ইসলামিক স্টেট (আইএস) এক জিনিস নয়। তবে আল-কায়েদার মতো সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ওয়াহাবিবাদ থেকেই গড়ে উঠেছে। এমনকি সিরিয়ায় আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন আল-নুসরা ফ্রন্টকে সৌদী সরকার অর্থায়নও করেছে।

মার্কিন কংগ্রেসে সম্প্রতি একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার হামলায় তিগ্রস্তরা সরাসরি অভিযুক্ত রাষ্ট্রের কাছে তিপূরণ চাইতে পারবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ৯/১১ হামলার তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান বব গ্রাহাম এই বিষয়টি নিয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে অনুরোধ করেছেন। অর্থাৎ তদন্ত কমিটি হামলার জন্য সৌদি আরবকেই দোষারোপ করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর বিপরীতে সৌদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইর তার ওয়াশিংটন সফরকালে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে ওই আইন পাস করা হলে সৌদী আরব দেউলিয়া হয়ে পড়বে। আর এর আগেই সৌদী কর্তৃপ তাদের কাছে গচ্ছিত থাকা প্রায় ৭৫০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ মার্কিন সম্পত্তি বিক্রি করে দেবেন।

সৌদী-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে কি অভিন্ন স্বার্থ বিদ্যমান?

সিএনএন-এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় আইএস এবং বাশার-বিরোধী অবস্থানে যেমন মার্কিন এবং সৌদী রাজতন্ত্রের মধ্যে মিল ও সহযোগিতা রয়েছে তেমনি ইরান প্রশ্নটি সৌদি আরবের এক অমীমাংসিত বিরক্তির কারণ। ইরান ইস্যুটি সৌদি আরবের কাছে সবসময়ই স্পর্শকাতর। সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে সৌদি আরব দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির পারমাণবিক চুক্তি এবং এরপর দেশটির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টিও সৌদি আরব ভালোভাবে নেয়নি। আর এেেত্রও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সৌদী শাসকদের বিরাগভাজনের কারণ। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য কমে যাওয়া রোধেও যুক্তরাষ্ট্র কার্যকর ভূমিকা নেয়নি বলে মনে করে সৌদী সরকার।

ক্রমশ কি ভেঙে পড়তে শুরু করেছে সৌদি আরব?

অনেক বিশেষজ্ঞ সৌদি আরবকে ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে বলে মতপ্রকাশ করেছেন। তবে সিএনএন-এর ওই প্রতিবেদনে তা নাকচ করা হয়েছে। সেখানে সৌদী ব্যবস্থার কতগুলো সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে। সিএনএন বলছে, বয়স্ক ও অভিজ্ঞ বাদশাহর পর নতুন, বয়সে তরুণ, অনভিজ্ঞ রাজা মতাসীন হলে তিনি সদা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকবেন। আর এটি রাজ পরিবারের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য কমে যাওয়া এবং ইয়েমেনে এক ব্যয়বহুল যুদ্ধ সৌদী অর্থনীতিকে ভীষণভাবে তিগ্রস্ত করেছে। যার ফলে প্রথমবারের মতো সৌদী বাজেটে সঙ্কোচননীতি প্রয়োগ করা হয়।

তবে দেশটি ইরাক, মিসর, ইয়েমেন বা সিরিয়ার মতো অস্থিতিশীলও নয়। তবে অভ্যন্তরীণভাবে প্রাসাদকেন্দ্রিক অস্থিরতা সবসময় থেকেছে। তবে সৌদি আরব নিশ্চিতভাবেই বদলাবে। তা বিবর্তনের মধ্য দিয়েই হোক, অথবা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে।

সৌদী-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কি নষ্ট হবার পথে?

সিএনএন মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের মধ্যে চলমান অস্থিরতা সত্ত্বেও তাদের সম্পর্ক নষ্ট হবে না। তবে এখনই এই সম্পর্কের উন্নয়নও সম্ভব নয়। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতি বাস্তবায়নের জন্য আঞ্চলিক বিশ্বস্ত বন্ধুর প্রয়োজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। আর বিশ্ববাজার স্থিতিশীল রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখাটা খুবই জরুরি। কারণ এর সাথে জড়িত মার্কিন বাজারও। সেই সাথে সৌদি আরবের দরকার মার্কিন সুরা।

যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব এমন এক সম্পর্কে আবদ্ধ যেখানে পরস্পরকে ছেড়ে দেওয়াও সম্ভব নয়, আবার পুনর্মিলনীও কষ্টকর। দুই পরে অনৈক্যের মধ্য দিয়েও কোথাও চাপের মুখে সৌদি আরব সহযোগিতা করবে, আবার কোথাও সেই অনৈক্যের জানান দেবে। সিএনএন-এর বিশ্লেষণে তারা এই সম্পর্ককে এমন এক ‘অসফল বিয়ে’র সঙ্গে তুলনা করেছেন, যেখানে বিচ্ছেদ সম্ভব নয়, আবার ভালোবাসায় আবদ্ধ হওয়াও প্রায় অসম্ভব। 

 à¦¨à¦¤à§à¦¨ মার্কিন প্রেসিডেন্টের কালে কি সম্পর্ক দৃঢ় হবে?

সিএনএন বলছে, এ বিষয়টি পরিষ্কার যে, সৌদী সরকার নতুন মার্কিন প্রশাসনের দিকেই তাকিয়ে আছে। তারা মার্কিন আকাক্সার বাইরে যাবেন না। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক বিভিন্ন েেত্র তারা নিশ্চিতভাবেই আগামী মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে আরও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন। তবে মার্কিন সুরা নিশ্চয়তা, সিরিয়ায় আইএস এবং বাশার-বিরোধী অবস্থানে যেমন মার্কিন এবং সৌদী রাজতন্ত্রের মধ্যে মিল ও সহযোগিতা রয়েছে। তেমনি ইরান প্রশ্নটি সৌদি আরবের এক অমীমাংসিত বিরক্তির কারণ। আর এই অবস্থান ২০১৭ সালে সহসাই পরিবর্তিত হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্র : সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।