সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

হাফিজুর রহমান, তুরস্ক থেকে : রাত তখন ১০.৩০ মিনিট। ক্যান্টিনে রাতের খাবার খেতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাতই আনকারার আকাশে যুদ্ধ বিমানের প্রচুর শব্দ। ভাবলাম, কী হলো? যুদ্ধ-টুদ্ধ লাগলো নাকি? ক্যান্টিদের দিকে বের হলাম। পথিমধ্যে অন্যান্য লোকজনও দেখি বিষয়টা খেয়াল করছে। জিজ্ঞাসা করলাম, কী হইছে? কেউই উত্তর দিতে পারল না।

ক্যান্টিনে টিভির ব্রেকিং নিউজ দেখলাম যে, ইস্তাম্বুলের এশিয়া-ইউরোপ সংযোগ ব্রিজ বন্ধ করে সেনাবাহিনী গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। তখনো ভাবছিলাম, সম্ভবত সন্ত্রাসী হামলা হইছে..! তাই সতর্কতা।

কিন্তু না..! কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থতি পাল্টে যেতে লাগলো। ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক এয়ারপোর্ট বন্ধ করে সেনা ট্যাঙ্ক এয়ারপোর্টের দখল নিল। কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী বিনালী ইলদিরিম মিডিয়াকে জানালেন, সেনা বাহিনীর একটি অংশ ক্যু করেছে। কিন্তু আমরা তাদেরকে ছাড় দিবনা।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে কোন ভরসা পেলাম না। সবকিছু সেনাবাহিনীর দখলে করে নিচ্ছে। একে পার্টির অফিস, প্রেসিডেন্ট অফিস, সরকারি নানা অফিস এমনকি রাষ্ট্রীয় টিভি। রাত ১২টার কিছু পরে রাষ্ট্রীয় টিভি থেকে ঘোষণা এল যে, ‘সেনা শাসন জারি করা হয়েছে। কেউ যেন রাস্তায় বের না হয়। এখন থেকে সেনাবাহিনী দেশ চালাবে’।

পুরো হতভম্ব। কী হবে..! আমাদের ডরমেটারির সবাই ক্যান্টিনে টিভির সামনে। পাশের রাস্তা দিয়ে সেনা ট্যাঙ্ক মুহূর্তে মুহূর্তে টহল দিচ্ছে। সবার মনে ভয় আর আফসোস! দেশটা শেষ!

এদিকে প্রেসিডেন্ট মিডিয়াতে বক্তব্য দিতে পারছেন না। উনি ব্যক্তিগত সফরে অন্য শহরে ছিলেন। রাত আনুমানিক ১২.৩০ এর দিকে একটি মিডিয়াতে স্কাইপিতে প্রেসিডেন্ট ৩/৪ মিনিটের একটি বক্তব্য দিতে সক্ষম হন। এতে তিনি সকলকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান এবং ইস্তাম্বুলের এয়ারপোর্টে আসতে বলেন। উনি স্পষ্ট বলেন যে, আমি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, কোন বিপদগামী কাউকে সফল হতে দিবনা। আপনারা এয়ারপোর্টে আসেন, আমি আসতেছি। আপনাদের সাথে রাস্তায় নামব।

এরদোগানের এই ঘোষণার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই দেখলাম জনগণ রাস্তায় নামা শুরু করল। ক্যান্টিন থেকেই নিজ চোখে দেখলাম কিভাবে সেনা ট্যাঙ্কের সামনে লোকজন শুয়ে পড়ল। ট্যাঙ্কের গতিরোধ করার চেষ্টা করল। পুরো তুরস্কের কয়েক মিলিয়ন লোক রাস্তায়। সেনা বাহিনীর সাথে অনেকটা যুদ্ধ হচ্ছে। সেনাবাহিনী কয়েকটি জায়গায় উপর থেকে বোমা বর্ষণ করছে।

সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের পক্ষ নিল এবং ক্যুয়ের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানাল। তারপরও পরিস্থিতি পুরোই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তবে ইতিমধ্যে এরদোগানকে রিসিভ করতে কয়েক মিলিয়িন লোক ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টে অবস্থান নিয়ে সেনা ট্যাঙ্ক দখল করে নিল। জনজোয়ারে সেনাবাহিনী এয়ারপোর্ট থেকে পিছু হটল।

রাত ৪টার দিকে প্রেসিডেন্ট যখন এয়ারপোর্টে পৌঁছলেন তখনো ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন জায়গায় গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। এরদোগান প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য দিলেন এবং জানালেন তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখনো যারা ব্যারাকের বাইরে আছে তাদেরকে ব্যারাকে ফিরে যেতে আহ্বান জানান। আর এ ঘটনা ফেতুল্লাহ গুলেনের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছে বলে জানান।

আমরা লাইভ দেখছিলাম। এরদোগানের মাথার উপর আই মিন এয়ারপোর্টের উপর বিদ্রোহী যুদ্ধবিমান তখনো ব্যাপক মহড়া দিচ্ছে। যাক, এরমধ্যে পুলিশ, সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ, নৌবাহিনী, স্পেশাল ফোর্স সরকারের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করল। যদিও সেনাপ্রধান বিদ্রোহীদের হাতে জিম্মি ছিল।

সকাল হতে লাগল। ভোর ৫টা-৬টার দিকে ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ার, বসফরাস ব্রিজ, আনকারার প্রেসিডেন্ট প্যালেসসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ৬ হাজার জন বিদ্রোহী সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থতি এখন পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তবে জনগণ এখনো রাস্তায়। তবে সেনাবাহিনীর সাথে মোকাবেলা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে ১২১ সেনা ও পুলিশসহ ২৬৫ জন সাধারণ জনতা। অবশ্য এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আহত ১৪৪০ জন।

এ ক্যুতে সফল হলে তুরস্কে আরেক সিসির জন্ম নিত, হয়ে যেত মিশর। কিন্তু গত ১৬ জুলাইর ক্যু সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারায় তুরস্কের ইসলাম ও গণতন্ত্র মজবুত হলো। অবিশ্বাস্যভাবে সকল জনতার মুখে তাকবীর, আল্লাহু আকবরের মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো তুরস্ক। রাত ১টা থেকে টানা তুরস্কের মসজিদগুলো থেকে আজান প্রচারিত হচ্ছিল। মসজিদ থেকে লোকজনকে রাস্তায় নামার জন্য আহ্বান ও সাহস দেওয়া হচ্ছিল। মানে একটা বিপ্লব।

প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাহসী নেতৃত্ব, সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা এবং জনতার আত্মত্যাগের এই বিরল দৃষ্টান্ত সমসাময়িক রাজনৈতিক ইতিহাসের মাইলফলক হয়ে থাকবে।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।