মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট
বিভ্রান্তির অবসান
॥ জামশেদ মেহ্দী ॥
বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন নীতি; বিশেষ করে বিগত ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে অনেক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। সাপ্তাহিক সোনার বাংলার এ প্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন বিরোধীদলীয় গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতার সাথে কথা বলেছেন। কথা বলে বোঝা গেছে, তারা মার্কিন ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। তাদের দু-একজন তো বলেই ফেললেন যে, ভারত আওয়ামী লীগের পক্ষে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিল। রাশিয়া তো সরাসরি আওয়ামী লীগের পক্ষে বিবৃতিই দিয়েছিল। চীনও আওয়ামী লীগের পক্ষে স্পষ্ট ভূমিকা নিয়েছিল। চীন এবং রাশিয়া তো সরাসরি বলেই দিয়েছিল, আমেরিকা নাকি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। তারা সরাসরি না বললেও পরোক্ষভাবে বলেছেন, আমেরিকা বিএনপিকে সমর্থন করেছে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাই কমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী তো বলেই ফেলেছেন, ভারতের চাপে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নির্বাচন ইস্যুতে আর সক্রিয় দেখা যায়নি।
কিন্তু দিন শেষে কী দেখা গেল? ৬ মাস আগেও আমেরিকার যে ভূমিকা ছিল, ৬ মাস পরও সেই একই ভূমিকা। নট নড়ন-চড়ন। আর কেউ কেউ বলেন, যথাপূর্বং তথা পরং। আসলে অভিযোগ বলুন আর অনুযোগ বলুন, আমেরিকা যা বলেছিল, সেখানেই রয়েছে। তারা তো কোনোদিন বলেনি যে, তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাবে। আমার কাছে আমেরিকার ভূমিকা ছিল অল থ্রু ক্লিয়ার। তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিল। তারা তো কোনো সময় বলেনি যে, তারা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। তারা তো বলেনি যে, এ সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে না। সোজা কথা, বাংলাদেশে তাদের রেজিম চেঞ্জের কোনো পলিসি ছিল না। তবে অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নীতি; বিশেষ করে গণতন্ত্র, বিচার প্রক্রিয়া ইত্যাদি ব্যাপারে তাদের ভূমিকার ভাষা ছিল ডিপ্লোম্যাটিক বা কূটনৈতিক। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে সাধারণত এ ভাষাতেই কথা বলে আমেরিকা।
কিন্তু এবার অর্থাৎ এপ্রিলে বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে রিপোর্ট বেরিয়েছে, সেই রিপোর্টে বাংলাদেশ অংশে কূটনৈতিক ভাষার আশ্রয় নেওয়া হয়নি। যা বলা হয়েছে. সেটি ছিল ব্লান্ট। অর্থাৎ একেবারে সোজাসাপ্টা বলে দিয়েছে। যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মামলা ও বিচার সম্পর্কে দ্বিধাসংকোচের ঊর্ধ্বে উঠে তাদের কথা বলে দিয়েছে।
রিপোর্টটির বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে বাংলাদেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, উচ্চ আদালতের বিচার প্রক্রিয়া ইত্যাদি সব বিষয়ে বিধৃত রয়েছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, বাংলাদেশে স্বাধীন আন্দোলনে বাধা দেয়া হয়। রিপোর্টে আছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের অক্ষমতা। রাজনৈতিক অংশগ্রহণে গুরুতর ও অযৌক্তিক বাধা। বাংলাদেশের সরকারে আছে মারাত্মক দুর্নীতি। দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠনগুলোর ওপর আছে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ অথবা হয়রানি। সরকারের তরফ থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, নিষ্ঠুর নির্যাতন, অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ ও শাস্তি দেয়া হয়। আছে জীবনের প্রতি হুমকি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক বন্দি ও আটক। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যে বিষয়টি সচেতন বাংলাদেশিদের দৃষ্টিকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে, সেটি হলো যুদ্ধাপরাধের বিচার, জামায়াত নেতৃবৃন্দের ফাঁসি, তাদের আটক করা এবং বেগম জিয়ার কারাদণ্ড। সরকার ওই রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করতে গিয়ে তারা শুধুমাত্র বেগম জিয়ার কারাদণ্ড সম্পর্কে বলেছে। বলেছে, বেগম জিয়ার কারাদণ্ড বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। শুধুমাত্র এটুকু বললেই কি রিপোর্টটি প্রত্যাখ্যান করার শক্ত ভিত্তি থাকে? স্বচ্ছতার খাতিরে সরকারের উচিত ছিল রিপোর্টটির প্যারাওয়াইজ রিপ্লাই দেওয়া।
যুদ্ধাপরাধের বিচার শীর্ষক অংশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেসব যুদ্ধাপরাধ ও নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে, তার বিচার করার জন্য ২০১০ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেই আদালত শাস্তি দিয়েই যাচ্ছে। এর মধ্যে আছে মৃত্যুদণ্ড। অনেক পর্যবেক্ষক এ প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দেখেন। কারণ আদালত বাছাই করে অভিযুক্ত করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের। এতে খেয়াল-খুশিমতো ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বেআইনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুলিশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ, তার তদন্ত নিজেরাই করেছে। তারা এমন সব ঘটনা ঘটিয়েছে, যেখানে তাদের শারীরিক মারাত্মক প্রহারে মানুষ আহত হয়েছে, অথবা মারা গেছেন। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে কতজন মানুষ মারা গেছেন, তার মোট কোনো সংখ্যা সরকার প্রকাশ করেনি। এমনকি এসব ঘটনার স্বচ্ছ তদন্তও করেনি। এ তদন্ত যারা করেছেন, তাদের স্বাধীনতা ও পেশাগত মান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে মানবাধিকারবিষয়ক গ্রুপগুলো।
বেগম খালেদা জিয়ার মামলা, বিচার এবং কারাদণ্ড সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, ইতোপূর্বে কেউ তা বলেনি। রিপোর্টে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি এমন অজুহাতে মিথ্যা অভিযোগসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টে এসব কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ওই বছরে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই বছরও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপি চেয়ারপারসনকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বাংলাদেশের হাসপাতালে। এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে ২০০৮ সালের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাকে ১০ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে তাকে জেলখানা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২০২০ সালে সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করে গৃহবন্দি করা হয়। রাজনৈতিক বন্দি ও আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ও দেশের ভেতরকার আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার তথ্য-প্রমাণে ঘাটতি আছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, তাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য রাজনৈতিক ছক সাজানো হয়েছে। পক্ষান্তরে প্রসিকিউটররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করেছেন।
আমরা প্রথমেই বলেছি এবং এখনো বলছি যে, রিপোর্টটি এত বিস্তৃত এবং খুঁটিনাটি যেকোনো পয়েন্টই বাদ যায়নি। এমনকি প্রায় ৮ বছর হলো ভারতে অবস্থানরত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের অপহরণ এবং অতঃপর মেঘালয়ের মাটিতে তাকে দেখা পাওয়ার ঘটনাও বিবৃত রয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশে ফেরার একটি ট্রাভেল পাস নিশ্চিত করেন জুনে। তিনি বাংলাদেশ থেকে জোরপূর্বক গুম করার পর বৈধ কাগজ ছাড়া অবস্থানের কারণে ভারতে আট বছর আটকে আছেন। ২০১৫ সালে তাকে ঢাকার বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়। ভারত সীমান্তের কাছে তাকে ছেড়ে দেয়ার আগে দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন।
এ রিপোর্ট বিস্তারিত পড়লে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশ প্রশ্নে মার্কিন অবস্থানের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। শুধু তাই নয়, আমেরিকা বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে সরকারি বয়ানের সাথে একমত নয়। অনেক দিন পর এ সম্পর্কে মুখ খুলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। গত ২৫ এপ্রিল পিটার হাস চট্টগ্রামে এ সম্পর্কে যা বলেছেন, ‘দৈনিক বণিক বার্তায়’ ২৭ এপ্রিল তা ছাপা হয়েছে। রিপোর্টটির শিরোনাম, ‘সমৃদ্ধি কেবল মেগা প্রকল্পে নয়, নাগরিক স্বাধীনতায়ও থাকতে হবে- পিটার হাস’।
দৈনিক বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, আমরা পৃথিবীর প্রতিটি দেশের ওপর প্রতি বছর একটি প্রতিবেদন তৈরি করি। আমরা এটিকে বাস্তবসম্মত করার চেষ্টা করি। কিন্তু মানবাধিকার ইস্যু যদি খতিয়ে দেখা না হয় এবং সে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা না হয়, তা এমনিতে কেটে যাবে না।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে মৌলিক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনগত স্বাধীনতা এবং দেশটি কতটা সমৃদ্ধ, এসবের যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছে। আমি মনে করি, এ বিষয়গুলো সত্যি গুরুত্বপূর্ণ। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যে দেশের জনগণ যত বেশি স্বাধীন, সে দেশের অর্থনীতি তত বেশি উন্নত। তাই আমি মনে করি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে চায়। কারণ এটি প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১-এর অংশ। বাংলাদেশকে বুঝতে হবে, সমৃদ্ধি কেবল মেগা প্রকল্প, এটা-ওটা করার মধ্যে নয়; এর বড় অংশই নিহিত প্রত্যেক নাগরিকের বাছাই করার স্বাধীনতার মধ্যে। কোনো দেশের উন্নয়নে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট ২০২৩ এবং পিটার হাসের বক্তব্য পড়লে এটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে, বাংলাদেশ সম্পর্কে আমেরিকার অবস্থানের এক চুলও নড়চড় হয়নি। বরং সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে এবার কঠোরভাবে।
ভারত আমেরিকাকে চাপ দিয়ে নিউট্রালাইজ করেছে, এমন ধারণা বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন নাকচ করে দেন। গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলো কীভাবে দেখে এ প্রশ্নের উত্তরে ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আমরা দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি। এ সম্পর্ককে আমরা অন্য দেশের লেন্স (দৃষ্টি) দিয়ে দেখি না। গণমাধ্যমসহ নানা জায়গায় শুনেছি যে, ভারতের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে যুক্তরাষ্ট্র। এটা সত্যি নয়।
ওপরে যতগুলো ঘটনার উল্লেখ করলাম, তার প্রেক্ষিতে বলা চলে যে, বাংলাদেশে মার্কিন ভূমিকা সম্পর্কে নির্বাচনের কিছু আগে এবং অব্যবহিত পরে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল, এসব ঘটনার পর সেগুলোর নিরসন হবে।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- নতুন কৌশলগত পথে সরকার
- নীরব সামাজিক আন্দোলন
- প্রচণ্ড দাবদাহ, মানুষেরই কর্মফল
- ১ কোটি ২০ লাখ টন চালের অপচয় রোধ করতে হবে
- বিপদের ঝুঁকিতে ২১ জেলা
- সড়ক-মহাসড়ক মৃত্যুফাঁদ
- সারা দেশে জামায়াত, বিএনপি ও শিবিরের পানি ও স্যালাইন বিতরণ
- যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নজিরবিহীন বিক্ষোভ
- ইসলামী শ্রমনীতিই শ্রমিক ও মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের গ্যারান্টি : ডা. শফিকুর রহমান
- নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা