সংবাদ শিরোনামঃ

বিভাজন নয় জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করুন ** ভিা চাই না কুত্তা সামলাও ** দেশ বড় ধরনের খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হবে ** রিপোর্টের সাথে বক্তব্যের কোনো মিল নেই ** খোল নলচে না পাল্টালে রাজনৈতিক বিতর্ক বাড়বে ** অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি রাষ্ট্রপ ** সরকারের প্রতি জনআস্থা কমছে ** সংঘাতের পথে পা বাড়িয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে সরকার ** সংবাদপত্রের পাতা থেকে ** বিশ্বের দেশে দেশে ভাষা : বাংলা ভাষার তাত্ত্বিক দর্শন এবং ভাষা চর্চা ** সাংবাদিকরা হত্যার টার্গেট কেন? ** দেশটা ক্রমশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে ** ভাষা আন্দোলনের শহীদদের চিরদিন এ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে ** মিয়ানমার-বাংলাদেশ সরাসরি চালু হতে যাচ্ছে নৌ ও বিমান যোগাযোগ সেতুবন্ধনে নয়া সম্ভাবনার দ্বার **

ঢাকা শুক্রবার ১২ ফাল্গুন ১৪১৮, ১ রবিউস সানি ১৪৩৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২

নিহত সাংবাদিক সাগর সারওয়ার এবং মেহেরুন রুনি

আবু মালিহা
গত ১১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি নামের সাংবাদিক দম্পতির হত্যাকাণ্ডে জাতি হতবাক হয়েছে। দেশ কোথায় চলেছে, এ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সে ইঙ্গিতই বহন করছে। ব্যক্তির স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? এ প্রশ্নের জবাব কেউ দিতে পারবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা দেশের জনসাধারণের নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে মাছ রাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও তাঁর স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি খুন হয়েছেন। রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার ৫৮/এ/২ ইন্দিরা রোড পশ্চিম রায়ের বাজারের শাহজালাল রশিদ লজের ভাড়া বাসায় (এ/৪ ফ্যাট) শুক্রবার গভীর রাতে তারা খুন হয়। সমস্ত জাতীয় দৈনিকগুলো তো প্রধান শিরোনাম হিসেবে বেদনাদায়ক খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। জাতি হতভম্ব হয়েছে বিভিন্ন চ্যানেল এবং দৈনিক সংবাদপত্রের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেখে এবং পড়ে। ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সমগ্র জাতি এবং এ প্রশ্নও জেগে উঠেছে যে, সাংবাদিকদের হত্যার টার্গেট করা হলো কেন? এ কোন বিচিত্র দেশে আমরা বাস করছি। দেশে কোনো সরকার আছে বলে তো এ ঘটনায় প্রমাণিত হয় না। আজ সরকার প্রতিনিয়তই গলাবাজি করে যাচ্ছে যে, বিগত যে কোনো সময়ের চাইতে আইন-শৃঙ্খলা অনেক উন্নত এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা অনেক বেশি। এ নৃশংস ঘটনায় সারা জাতি শোকে মুহ্যমান এবং সকল পেশাজীবী সংগঠন এবং মানুষের পক্ষ থেকে ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে দেশের জনগণ শঙ্কিত। কেননা, বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে অহরহ হত্যাকাণ্ড, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লুণ্ঠন অপহরণ, গুমসহ এমন কোনো অরাজক পরিস্থিতি নেই যা প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে। অথচ বর্তমান সরকার তথাকথিত মানবতা বিরোধী বা যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়েই বেশি ব্যস্ত। বিদেশি প্রভুদের (!) আজ্ঞাবহ সরকার আসলে এরচেয়ে বেশি কিছু চিন্তা করতেও পারছে না। কারণ, ‘ঘুড়ির লাটাই যে অন্যের হাতে’। তাই এ সমস্ত জাতীয় সঙ্কট ও সমস্যা নিয়ে ভাববার অবকাশ কই! ধিক্ সরকারের চিন্তা চেতনা এবং অবক্ষয়িত মন মানসিকতা নিয়ে। বিবেক বন্দকি রেখে আর যাই হোক, সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করা যায় না। ফরমায়েশী কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যস্ত হতে হয় বেশি। দেশের প্রতি দরদবোধ না থাকলে যে কোনো সরকারই দেশের বারোটা বাজাতে কসুর করে না। তবে প্রশ্ন হলো আমরা কী বাস্তবিকই সে ধরনের সরকারের পাল্লায় পড়লাম। জাতি হিসেবে আমরা তো বরাবরই স্বাধীনচেতা ছিলাম। কোন দেশের প্রতি আত্মসমর্পিত মনোভাব তো কোনোকালেই ছিল না। তবে কেন আমরা আজ অন্যের দায়বদ্ধতার নিগড়ে আবদ্ধ!

যাক্ ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ নিয়ে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ এলিট ফোর্সগুলো দায়িত্ব নিয়েছে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের উৎস খুঁজে বের করতে। দেখা যাক, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ ব্যাপারে কতটুকু সাফল্য দেখাতে পারে এবং জাতিও যাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। আজ দেশে স্বাভাবিক মৃত্যুরও গ্যারান্টি নেই। দুঃসহ যন্ত্রণা আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ যেন ধেয়ে আসছে প্রতিটি মানুষের জীবনে। এহেন দুর্বিষহ জীবন যন্ত্রণা আর কতদিন চলবে! মানুষের জীবনে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার কী আদৌও কোনো ফরমূলা বের করতে পারবে। মনে তো হয় না! কারণ যেখানে সরকারের দলীয় সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী প্রতিনিয়তই দেশের সর্বত্র আতংকের রাজত্বে পরিণত করেছে, সেখানে এমন ভবিষ্যদ্বাণী কীভাবেই বা করা যায়। প্রতিটি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় আজ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো মায়ের বুক খালি করছে ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসী গুণ্ডাবাহিনী। যাদের বেশির ভাগই আশ্রয় এবং প্রশ্রয় দাতা সরকারের মন্ত্রী-মিনিস্টার থেকে শুরু করে দলীয় নেতৃবৃন্দের ছত্রচ্ছায়ায় চলছে দৌরাত্ম্য। নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে ভয় আর উৎকণ্ঠায় চলে প্রতিটি মুহূর্ত। কখন না জানি কার জীবনে নেমে আসে বিপদ আর মৃত্যুর খড়গ। এক অদ্ভুত ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি করে চলেছে নানা ছুতায়। যেন সর্বগ্রাসী ত্রাসের রাজত্ব কায়েমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেন সরকার ইজারা দিয়ে রেখেছে! ধিক্ আইনের শাসন ও বর্তমান সরকারের অপরাজনীতির নানামুখী ভূমিকায়! দেশের জনগণ ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা অবশ্যই এর অবসান চায়।

আজ সাংবাদিক বন্ধুরাও সন্ত্রাসের কৃপানতলে নিজেদের আত্মাহুতি দিতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ জন সাংবাদিক ভাইদের হারালাম অপরাজনীতির বলি হয়ে। এ ধরনের বেদনাদায়ক হতাশার চিত্র যেন আমাদের আর দেখতে না হয়। সাম্প্রতিককালের সাংবাদিক দম্পত্তির হত্যাকাণ্ড যেন জাতির প্রকৃত অবস্থা ফুটে উঠেছে। এ জাতির দুর্ভাগ্য আর কত প্রলম্বিত হবে। সমগ্র জাতি সবিস্ময়ে তারই দিকে তাকিয়ে আছে! সত্যিই পরিত্রাণ লাভের কী কোনো পূর্বাভাষ দেখা যাচ্ছে! সে প্রশ্ন রেখেই সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ শিগগিরই সাংবাদিক দম্পত্তির হত্যাকাণ্ডের কু বের করে প্রকৃত আসামিদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করন। যেন ‘মেঘ-এর জীবনের মতো আর কারো সন্তানের জীবনে যেন জীবন যন্ত্রণার দুর্যোগের ঘনঘটার মেঘ নেমে না আসে। পাশাপাশি সাংবাদিক দম্পত্তির শিশু-সন্তান মাহিন সারওয়ার মেঘ (৫) এর ভবিষ্যৎ জীবন যেন প্রস্ফুটিত হয় আলোক উদ্ভাসিত হয়ে। সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে এই প্রত্যাশা।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট ও সহ-সভাপতি সিলেট লেখক ফোরাম।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।