রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৪র্থ সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ॥ ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী ॥ ১৯ এপ্রিল ২০২৪

॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥
চলমান উপজেলা নির্বাচনেও আস্থা নেই মূলধারার বিরোধীদল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর। কেন আস্থা নেই, তা ব্যাখ্যা না করলেও বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নির্বাসনে। এ নিয়ে পর্যবেক্ষকমহল, নাগরিক সমাজ ও সাধারণ ভোটার কারো মধ্যে কোনো বিতর্ক নেই। বিগত ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন সম্পর্কে অনেকের অভিমত, বিরোধীদল ছাড়া এ নির্বাচনকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি না দেয়া গেলেও, দলীয় জাতীয় কাউন্সিলের স্বীকৃত দেয়া যেত, কিন্তু ভোটার অনুপস্থিতির রেকর্ডের কারণে তাও দেয়া যায়নি। আসলে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব- এ কথা আর কেউ বিশ্বাস করে না। তাই দলীয় প্রতীক ও মনোনয়ন ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনেও কারো আস্থা নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ইতোপূর্বে স্থানীয় সরকার দখলের সহজ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অতীতের ঐতিহ্যের তোয়াক্কা না করে দলীয় প্রতীকে মনোনয়নের ব্যবস্থা করেছিল। কী সেই কূটকৌশল, তা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, অর্থাৎ পুলিশ, প্রশাসন নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্টরা যেন খুব সহজেই বুঝতে পারে কার পক্ষে তাদের কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের মনোনীত প্রার্থী কারা। নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংসের পর এখন আর মূলধারার বিরোধীদল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, কমিউনিস্ট পার্টির মতো দলের নেতারা নিজের মান-সম্মান বাঁচাতে সরকারের পাতানো নির্বাচন নামের ফাঁদে পা দিতে রাজি নন। তাই তারা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ও শক্তিশালী কমিশনের অধীনে একটি জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার পক্ষে।
কী ভাবছেন বিরোধীদলের নেতারা
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পরিষদ স্থায়ী কমিটি গত ১৫ এপ্রিল সোমবার রাতে বৈঠক করে বর্তমান সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট বর্জনের ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদও গত ১৩ এপ্রিল শনিবার উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে বিএনপি অটল রয়েছে। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই তো সুষ্ঠু হবে না- এ কথা তারা বার বার প্রমাণ করেছে। এখন পর্যন্ত আমাদের যে সিদ্ধান্ত, তা হচ্ছে- শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাব না। কারণ তার অধীনে কোনো নির্বাচন কখনো অবাধ-সুষ্ঠু হয় না।’
 জামায়াতে ইসলামীর একাধিক সূত্রে প্রকাশ, তারা হিসাব-নিকাশ করে দেখেছেন, ভোট হবে একটা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। এতে অংশ নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভালো করার সুযোগ কম। উল্টো বিরোধীদলের অংশগ্রহণ সরকারকে রাজনৈতিক সুবিধা দেবে। এছাড়া ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখানো শুরু হয়েছে, যা পরে আরও বাড়তে পারে। এসব বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, ‘জামায়াত উপজেলা নির্বাচন করছে না। সবকিছু পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। এরপরও কেউ প্রার্থী হলে তার বিষয়ে সংগঠন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
১৮৯১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা, ১২ পদে একক প্রার্থী
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেড়শটি উপজেলার তিনটি পদের বিপরীতে ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তথ্য জানিয়েছেন। এবার সম্পূর্ণ অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হওয়ার পরপরই নির্বাচন কমিশন বিস্তারিত তথ্য হাতে পেয়েছে। ইসির তথ্যানুযায়ীÑ দুটি উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। উপজেলা দুটি হলো বাগেরহাট সদর ও মুন্সীগঞ্জ সদর। এদিকে চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ১১ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে কক্সবাজার সদর, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় একক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ১৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায়। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে পদে ৭টি উপজেলায় একক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। উপজেলাগুলো হলো- কুষ্টিয়া সদর, চাঁদপুরের মতলব উত্তর, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, নোয়াখালীর হাতিয়া, বাগেরহাট সদর ও মৌলভীবাজারের বড়লেখা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায়। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল আর ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। এ ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।
আওয়ামী লীগ চায় বিরোধীদলমুক্ত নির্বাচন
আওয়ামী লীগ আর বাকশাল একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ ঘোষণা না দিলেও তারা মনে-প্রাণে একদলীয় বাকশালী চেতনা ধারণ ও লালন করে। তার প্রতিটি নির্বাচনের আগে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করে- যাতে বিরোধীদল অংশগ্রহণ করার সুযোগ না পায়। অতি সাহস দেখিয়ে কেউ মাঠে নামলে তার সাথে এমন আচরণ করা হয়, শুধু নির্বাচন নয়, তার নিজের নামও ভুলিয়ে দেয় সরকার। এক্ষেত্রে নিজের দলের লোকদেরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছাড় দিতে রাজি নয়, অতিবাকশালী অনেক নেতা। তারা দলীয় প্রধানের নিদের্শে ডামি প্রার্থীও মেনে নিতে নারাজ।
সম্প্রতি এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে। যার অধিকাংশই পত্রিকায় আসেনি। যেমন যেসব এলাকায় একক প্রার্থী এবং বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে, সেই সব এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বিরা সরে দাঁড়িয়েছেন ঐ একক প্রার্থীর জনপ্রিয়তার কারণে এমনটা ভাবার কারণ নেই। তারা আসলে নাটোরের সিংড়া উপজেলা দেলোয়ার হোসেনের মতো সাহস দেখিয়ে হাসপাতাল কিংবা পাতাল (কবর)-এ যেতে রাজি নন।
একাধিক সূত্রে প্রকাশ, পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হচ্ছে। লুৎফুল হাবীব উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালকও। সিংড়া থানা ও ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন লুৎফুল হাবীব। গত ১৪ এপ্রিল রোববার পর্যন্ত তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। মনোনয়ন জমার শেষদিন সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য দেলোয়ার হোসেন নাটোর স্টেশন এলাকার একটি কম্পিউটার দোকানে আসেন। এ সময় তার বড় ভাই ও কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক এবং কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সি ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেয়ার জন্য বের হন। তারা কোড নম্বর জানার জন্য নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে এলে কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করেন। একপর্যায়ে তাদের জোর করে ওই মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পুলিশ দাবি করছে, পরে তাদের উদ্ধার করেছে। তবে অন্য সূত্র বলছে দুর্বৃত্তরা তাদের অজ্ঞান অবস্থায় বাসার কাছে ফেলে গেছে।
রাজশাহী থেকে একটি সূত্র জানিয়েছে, দেলোয়ার কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। অচেতনের মতো পড়ে আছেন। ওয়ার্ডের চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে আইসিইউ লিখে দিয়েছেন। তার সিরিয়াল নম্বর ১২। রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত তার স্বজনরা ওয়ার্ডে অপেক্ষা করছিলেন। সিটি স্ক্যান করানোরও প্রস্তুতি চলছিল। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহম্মদ বলেন, আইসিইউতে তার অধীনে থাকা একটি বেড দিচ্ছেন। রোগীর অবস্থা ভালো নয়। তারা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল লতিফ শেখ জানান, প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের মনোনয়ন সময়মতো জমা হয়েছে। তার তথ্য নির্বাচন কমিশনেও পাঠানো হয়েছে।
মনোনয়নপত্র জমা হলে কী হবে, তিনি ইতোমধ্যে নিজের নাম ভুলে গেছেন। নিজ দলের মধ্যে থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদেরই যেখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই, সেখানে বিরোধীদলের নিরাপত্তা আশা করা কতটা বাস্তবসম্মত।
মর্নিং শোওস দ্য ডে
‘Morning shows the day’ অর্থাৎ সকালই বলে দেয় দিনটি কেমন হবে। এ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত বিগত নির্বাচনগুলো এবং চলমান উপজেলা নির্বাচন শুরুর আগের পরিবেশ বিশ্লেষণের পর শঙ্কা প্রকাশ করে এমন মন্তব্য করেছেন পর্যবেক্ষকরা। যদিও উপজেলা নির্বাচন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার শঙ্কা থাকলেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দলের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতারাও এবারে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না; সহযোগী সংগঠনগুলোর তৃণমূল নেতারা প্রার্থী হতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। প্রার্থীর ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে উপজেলা নির্বাচনে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘এবারে চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন হবে। উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে অনড় থাকবে নির্বাচন কমিশন।’
 নির্বাচন কমিশন যাই বলুক। দেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচনই শুধু নয়, গোটা নির্বাচনব্যবস্থাই আজ প্রশ্নবিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হোক, তা সরকার চায় না, আগের কোনো সরকারও চায়নি, এমনকি ভবিষ্যতেও কোনো সরকার স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে চাইবে না। আমাদের দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, কিন্তু দিন দিন স্থানীয় সরকার দুর্বল হচ্ছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কীভাবে স্থানীয় সরকার হস্তক্ষেপের শিকার হয়ে থাকে, তা আমি দেখেছি, অতীতে বাধ্য হয়ে আমাকেও এ হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘স্থানীয় সরকারে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি ফান্ড দেওয়া হয়, কিন্তু এ ফান্ডের অর্থ কোথায় ও কীভাবে ব্যবহার করা হয়, এর কোনো স্বচ্ছতা নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অর্থের ব্যবহার একটি গাইডলাইনের মাধ্যমে করা উচিত। এজন্য স্থানীয় সরকার কমিশন করতে হবে।’
 পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এমনভাবে সাজানো যে, স্থানীয় সরকারের ‘নির্বাচিত’ প্রতিনিধিরাও মূলত সংসদ সদস্যদের কব্জায় বন্দি। তাই  জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন সব পর্যায়ের স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের স্বাধীনভাবে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। তাই নিয়ম রক্ষা এবং সংসদ সদস্যদের প্রভাব-বলয় বাড়াতে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি লেবেল লাগানো কিছু মোসাহেব তৈরি ছাড়া এসব নির্বাচনের কোনো গুরুত্ব নেই। টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় সরকার ও সংসদ সদস্যদের ক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করার আগে কোনো নির্বাচনই জনগণের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না।



এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।