সংবাদ শিরোনামঃ

সার্বভৌমত্ব এখন ঝুঁকির মুখে ** ত্রিমুখী লড়াই জমে ওঠেছে ** বাংলাদেশ ভারতের পানি আগ্রাসনের শিকার : মির্জা ফখরুল ** সারাদেশে জামায়াতের বিক্ষোভ ** জনবিচ্ছিন্ন সরকারের উদ্বিগ্নতা বাড়ছে ** মাওলানা নিজামী ও সাঈদীকে বিচারের নামে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলুন : নূরুল ইসলাম বুলবুল ** রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা ** বিজেপি নেতার খায়েশ : কান টানলে কিন্তু মাথাও আসবে! ** ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফির ছোবলে যুব সমাজ ** ২২৬ এমপি কোটিপতি কর দেন না ৪২ জন ** সরকার জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করতেই বিচারের নামে শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যার গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে ** ঝিড়ি-ঝর্ণা, নদী-ছড়ার দূষিত পানি ব্যবহার করছে অধিবাসীরা **

ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪২১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৩৫, ২৫ এপ্রিল ২০১৪

মো. চাঁন মিয়া
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনের জন্য ৫ জানুয়ারি ‘গণ’ছাড়া অর্থাৎ ভোটারবিহীন একতরফা, আসন ভাগাভাগির ও নজিরবিহীন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া নির্বাচন হিসেবে খ্যাত। এ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়া, স্পিকার, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ অনেক ভিভিআইপিরাও ভোট দিতে পারেনি। ইতোমধ্যে এ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ভাগ্যে ‘কলঙ্কের রাজতিলক’ পড়েছে, যা অনেক খ্যাতনামা বিশ্লেষক ও সমালোচকদের লেখনি ভাষায়, বক্তৃতায় ও টকশোতে মতামত প্রকাশ করেছেন। সরকার পরিবর্তনের এ নির্বাচনে ১৫৩ আসনের কোনো নির্বাচন না হলেও ১৫৩ জন এমপি হয়েছেন। তাদের মধ্যে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীও আছেন। বাকী ১৪৭ আসনে একতরফা ভাগভাগির নির্বাচন হয়েছে, তাতে ভোটার উপস্থিতি ছিল নগণ্য, বিরোধী জোটের মতে, এ নির্বাচনে ৫ শতাংশের নিচে ভোটার ভোট প্রয়োগ করেছেন, সে হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ভোট প্রদান করেনি। এটাই বাস্তবতা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর নির্বাচন কমিশন ৪০%-এর উপরে ভোটার উপস্থিতি ও ভোট প্রদান করেছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছে যা আমজনতা (আওয়ামী লীগ ছাড়া) সন্দেহের চোখে দেখেছে এবং প্রত্যাখ্যানও করেছেন। ইসিতে ৩৯টি নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১২টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ ১৮ বা ১৯ দল নির্বাচনের বাইরে ছিল। মোট ২৭টি নিবন্ধনকৃত দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হয়েছে মূলত আওয়ামী লীগের নিজস্ব বলয়ে, নিজেদের মধ্যে কোথাও জোটের প্রার্থীর সাথে, কোথাও নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে। জয়-পরাজয় তাদেরই। এ ছাড়াও প্রার্থী প্রত্যাহার করে ও রোগী খেলায় খেলে অদৃশ্য শক্তির দাপটে জয়ী হয়েছেন সাবেক সেনা প্রধান ও ৯ বছরের রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার সহধর্মিনী বেগম রওশন এরশাদ বিরোধী দলের নেতার আসন অলংকৃত করেছেন। এ সরকারে জাতীয় পার্টি, অন্যান্য দলের এমপিরা মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করায় তাদেরকে আওয়ামী লীগ সরকার বলা যায় না, এটা গোজামিলের জাওয়ামী সরকার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন  ও ভোরের ডাকে ‘হাসিতে আছেন জাওয়ামী লীগ! সরকার।’ এবং ‘বিভিন্ন দল মন্ত্রিত্ব অংশগ্রহণে সরকার এখন জাওয়ামী!’ শিরোনামের লেখা পাঠিয়েছিলাম। কোন কারণে পত্রিকা তা প্রকাশ করেনি। অবশ্য শুধু এ লেখা নয়, ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামের ৭/৮টি লেখা পাঠানো হলেও কর্তৃপক্ষ তা প্রকাশ করেননি অজ্ঞাত কারণে।

শেষ হয়েছে পঞ্চম ধাপের উপজেলা নির্বাচন। ১ম ও ২য় দফা নির্বাচনের পর সরকার সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। সরকার, মন্ত্রী, এমপি, উপদেষ্টা, ইসির কথাবার্তা ও কাজকর্মে অনেক কিছুই প্রকাশ ঘটতে থাকে। শেষে সরকার বা লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজনের ভাবনাতীত অবিশ্বাস্য নির্লজ্জ তাণ্ডবচিত্র দেশ-বিদেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের জনগণ ও বিশ্ব মানব সম্প্রদায় দেখেছেন। তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের পর লীগ নেতা ও ক্রাইসিস ম্যানেজার খ্যাত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ যখন বললেন, ‘পরবর্তী ধাপে আওয়ামী লীগ ইনশাআল্লাহ ভালো করবে, সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ ভালো করবে, বেশি পাবে, এগিয়ে যাবে’। লীগ সরকারের অপর নেতা যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বললেন, ‘আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াতে জানে।’ মন্ত্রীদ্বয়ের এ নিঃসৃত বাণীতেই বোঝা গেছে ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং মিশন বা অপারেশন সাকসেসফুল। ইহার ফলে এক অজানা আশঙ্কায় ও শঙ্কায় সাধারণ জনগণের মনে ও গণতন্ত্রমনা মানুষের আত্মা কেঁপে উঠেছিল। তা বাস্তব রূপ লাভ করে ৪র্থ ও ৫ম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে। ৪র্থ ধাপের নির্বাচন ছিল ভাবনাতীত, কারচুপি, অবিশ্বাস্য জাল ভোটের উৎসব, বিরোধী পক্ষের এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ নানান অনিয়ম, গুলি সংঘর্ষময়। একটি জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম ছিল ‘রক্তাক্ত ভোট।’ অপর জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম ‘কেন্দ্র দখলের নির্বিঘœ উৎসব।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের শিরোনাম ছিল, ‘দখল, গুলি, সংঘর্ষে নিহত ৪।’ পত্রিকাটি বর্ণনা দিয়েছে, ‘ ভাবনাতীত অনিয়ম, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, গুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভোট বর্জন ও গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচন। সারাদেশে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন তিন শতাধিক।’ এরপরেও আওয়ামী লীগের পোস্যপুত্র নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘আগের তিনটির চেয়ে চতুর্থ পর্বের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে।’ যা নির্ভেজাল মিথ্যাচার ও ফরমালিনযুক্ত বাণী বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত। তার কথাবার্তায় মনে হয়েছে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন।

৫ম ও শেষ দফার উপজেলা নির্বাচনে ইসির পক্ষপাতিত্ব সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সিইসির দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার মো. আবদুল মোবারক বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ১৯ দলের নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘মানলাম নির্বাচন কমিশনার কিছুই না, জিরো। কিন্তু উনি (খালেদা জিয়া) এ জিরোর আন্ডারে করছেন তো নির্বাচন। নাকে খত দিচ্ছেন তো? আর কী কতা!’ একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী বা চাকর হয়ে সাংবিধানিক পদে থেকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে হেয় ও অপমানজনক কথা বলার পর তার জন্য অনুশোচনা করা দূরে থাকুক কিংবা তার কোনো সুরাহা না হতেই উক্তিটি করার পরের দিন ভারপ্রাপ্ত সিইসি মো. আবদুল মোবারক বলেছেন, ‘সারা বছর নির্বাচন কমিশনকে গালি দেয়ার অধিকার নেই রাজনৈতিক দল বা অন্য কারো। যারা গালি দেবেন তারা ঢিল মারলে পাটকেল খাবেন’ বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

তিনি ভারপ্রাপ্ত সিইসি, রাজনৈতিক বা রাজনীতিবিদদের গুরু কী না তা আমাদের জানা নেই। সাংবিধানিকভাবে ওই পদে বা পদটি নানা প্রতিকূল অবস্থা ও সমালোচনা, পরামর্শ সহ্য করেই দায়িত্ব পলন করতে হয়। তার এহেন দু’টি মন্তব্য সাধারণ কোনো মন্তব্য নয়। পুরো রাজনৈতিক সংগঠন বা সেক্টরকে অপমানিত করার সামিল। এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত জাতীয় পার্টি নয়, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, এরশাদ নয়। যারা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং অতীত বর্তমানে রাজনীতিবিদ বা সাধারণ জন, সুশীল সমাজ কিংবা বুদ্ধিজীবী, টকোশার আলোচক হিসেবে ইসির সমালোচনা করেছেন, করছেন বা ভোটের জন্য  ইসির তত্ত্বাবধানে প্রার্থী ছিলেন, হবেন এবং ভবিষ্যতেও তাদের সমালোচনা করবেন, পরামর্শ দেবেন তাদের সকলের জন্য এটা দ্ব্যর্থহীনভাবে অপমানের লজ্জার। রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি বাঙালি বা বাংলাদেশী যে প্রেক্ষাপটেই হিসেবে-নিকেশ করুন না কেন এ উক্তিটি সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের জন্য অশনি সঙ্কেত এবং সংবিধান লঙ্ঘনকারী হিসেবেও ধরা যায় বলে বিজ্ঞ বিশিষ্ট জনের অভিমত।

জনশ্রুতি আছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অপর চার নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে কিছুটা দ্বন্দ্ব রয়েছে। চার কমিশনার একদিকে, সিইসি আরেকদিকে। জানা যায়, উপজেলা নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সিইসি অপর কমিশনারদের সঙ্গে একমত হতে পারছিলেন না। তারা অনেকটাই সরকারের পক্ষেই কথা বলেছেন। এ জন্য সিইসি নির্বাচন কমিশনারদের ওপর নির্বাচনের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে অতি গোপনে সস্ত্রীক যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যান।  সুপ্রিয় পাঠক, লক্ষণীয় বিষয় যে, সিইসি দেশে থাকাকালে প্রথম দুই দফা নির্বাচন হয়। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দফা নির্বাচনে ব্যালট বাক্স ছিনতাই, জালভোট ও সহিংসতা বেড়েছে। ভারপ্রাপ্ত সিইসি যে ভাষা ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলেছেন, এটা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তার ভাষা হতে পারে না। তিনি জেনে শুনে বুঝেই দেশে অশান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যেই সরকারের ভাষায় কথা বলেছেন। কিন্তু কেন এবং কী কারণে বা উদ্দেশ্য সে রহস্য উদঘাটন করা প্রয়োজন ও উচিত রাজনীতিবিদদের তাদের সম্মান রক্ষার জন্য।

পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে একটি জাতীয় ও শীর্ষ দৈনিকের শিরোনাম ছিল দখল উৎসবে ভোট বর্জন। ব্যাপক সংঘর্ষ নিহত দুই, ১০ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত।’ পত্রিকাটি লিখেছে, ‘একদিকে কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল, জাল ভোট প্রদান, গুলি সংঘর্ষ, অন্যদিকে বিএনপিসহ অন্য প্রার্থীদের ভোট বর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো পঞ্চম ধাপে ৭৩ উপজেলা নির্বাচন।’ এরপরেও নিন্দিত রূপকে নন্দিত রূপ রস ঢেলে দিলেন লীগ নেতা ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, ‘অতীতের চেয়ে এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।’ এটাও মিথ্যাচারের চেয়েও আরও মিথ্যা বয়ান।

ভাবনাতীত ও নজিরবিহীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে, একতরফা কালো অধ্যায়ের নির্বাচন করে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে ও উপজেলা নির্বাচনে দুই ধাপ এগিয়ে থাকলেও মূলত বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার একযুগ পিছিয়ে পড়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ পিছিয়ে যে পড়ল সে সম্পর্কে বঙ্গবীর টাইগার কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম-এর লেখা নিবন্ধের প্রতি দৃষ্টিপাত করছি। নিবন্ধের অংশ বিশেষ এরূপ : ‘বর্তমান সরকারের নির্বাচন নিয়ে যত কম কথা বলা যায় ততই মঙ্গল। সরকার কবে যে এ দুর্বলতা থেকে বেরিয়ে আসবে, সেটা সরকারই জানে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে উন্মাদের মতো কথা বলে তাকে তো কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্থা বলা যায় না। নাকে খত দিয়ে বিএনপি আমাদের অধীনে নির্বাচন করছে। একথা বলার সঙ্গে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দেয়া উচিত ছিল। রাজনৈতিক দল নাকে খত দিয়ে তাদের অধীনে নির্বাচন করে এ ভাবনাই তো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী মনোভাব। রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের অধীন হতে যাবে কেন? তাদের নির্বাচন পরিচালনা করার দায়িত্ব, তা-ই তারা করে। তারা দেশের কর্মচারী That means public Servant রাজনৈতিক দল জনগণের  Servant না। রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক দল দেশ ও জনগণের সেবক। সেবক আর চাকরের পার্থক্য যখন চাকর বুঝে না তখন দ্বন্দ্বের সৃষ্টি না হয়ে পারে না। যেটা বর্তমান হয়েছে। ন্যায়নীতিহীন বিবেক বর্জিত মানুষ পশুরও অধম। কত কেন্দ্রে জালিয়াতির জ্বলজ্বলে ছবি দেখা যাচ্ছে তারপরও বলছে সব কিছু সুষ্ঠু হয়েছে। চোরের কাছে যদি চুরি অন্যায় মনে হতো তাহলে কি সে চুরি করার প্রেরণা পেতো?’

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক কাজী সিরাজ ‘রক্তাক্ত ভোট : সিইসির আলহামদুলিল্লাহ!’ শিরোনামের নিবন্ধের শেষোক্তে লিখেছেন ‘(এক) জনপ্রিয়তা প্রমাণের পরীক্ষায় সরকার ফেল করেছে। জোর জবরদস্তি করে অন্যের বিজয় ছিনতাইয়ের মাধ্যমে বেশি উপজেলায় জিতলেও প্রকৃত বিজয়ের গৌরব তাদের কপালে জুটবে না। সর্বসাধারণের ধারণা, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ৪৮৭ উপজেলার মধ্যে ১০০টিতেও শাসক লীগ সমর্থিত প্রার্থী জিততো কি না সন্দেহ। (দুই) এই সত্য প্রমাণিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অসম্ভব। এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রেখে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বেগম জিয়া সঠিক কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক মহলও তা আরও ভালোভাবে বুঝলো। দশম সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন নিয়েও শেখ হাসিনা লীগ সরকার আরেকটি আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে পড়লো।’ সত্যিই কি তাই?

শীর্ষ ও জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে সম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘মৎস্যন্যায় নির্বাচন।’ তাতে লেখা হয়েছে, ‘উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ নব্বই-পরবর্তী মৎস্যন্যায় নির্বাচনী ব্যবস্থায় ফিরে গেল কিনা সে সংশয় জোরদার হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলের বর্জনের মুখে গত ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বেশিরভাগ রাজনৈতিক  দলের বর্জন ও নানামুখী সন্ত্রাসে কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রে একজন ভোটারও উপস্থিত হননি। আইনগত দিক থেকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বৈধতা পেলেও নৈতিক দিক থেকে এটি ছিল অগ্রহণযোগ্য এক নির্বাচন। আশা করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার তাদের সে দুর্নাম ধুয়ে ফেলবে। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বিরোধী দল সমর্থকদের কাছে সরকার সমর্থক প্রার্থীরা  ব্যাপক হারে পরাজিত হওয়ায় নির্বাচনের বদলে পুতুল নাচের ইতিকথা রচনায় সরকার আগ্রহী হয়ে উঠেছ। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে চলে ভোট কেন্দ্র দখল ও ব্যালট কেটে সিল মারার মহোৎসব। পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে আগের চার ধাপের রাখঢাকের অবসান ঘটে। এ নির্বাচনে জোর যার মুল্লুক তার নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হয়। এ অপকৌশল সরকার পন্থীদের জয় নিশ্চিত করলেও নির্বাচন কমিশন নামের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা ুণœ করেছে। এটি যে একটি ঠুঁটো জগন্নাথ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে সে সত্যটি স্পষ্ট করেছে। সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করার মাধ্যমে তারা শুধু সুনীতিকেই বিসর্জন দেননি, নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনীতির জন্যও হুমকি সৃষ্টি করেছেন। এ মৎস্যন্যায় নির্বাচন কাম্য ছিল না। তাই বলা যায়,

মৎস্যন্যায় নির্বাচনে জাওয়ামী লীগের জয়

গণতন্ত্র ধারণ বুকে মিথ্যার কাছে সত্যের পরাজয়!

তবুও জাওয়ামী লীগ মাথা নোয়াবার নয়,

এক যুগ পিছিয়ে গেল দেশ।

সাবাশ, বাংলাদেশ সাবাশ!!

গণতন্ত্র আজ লাশ!!

লেখক : সাবেক সেনা সদস্য, কর্পোরাল কার্ক, (অব.) এমবিও

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।