শান্তি কোন পথে

এম আর জাহাঙ্গীর
আজকের পৃথিবীতে মুসলমানদের সংখ্যা একেবারে কম নয়, তারপরও মুসলিম দেশগুলোতে শান্তি নেই। নানা রকম ঝগড়া ফ্যাসাদের কারণে প্রতিদিন শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। তবে সেই সংখ্যাটি অমুসলিম দেশের চেয়েও মুসলিম দেশে বেশি। নামধারী মুসলিম শাসকগোষ্ঠীর কারণে প্রকৃত ইসলামের শিা হতে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে, আজকের মুসলমানরা নিজেরা যখন মতায় থাকেন মানবাধিকার বলতে কিছু আছে সেটা বুঝতেও চান না। শুধু মতা ও অর্থের লোভে অন্ধ হয়ে নিজের মতাকে আজীবনের জন্য করে নিতে চান সেই জন্যে যা করা প্রয়োজন সব করতে বদ্ধ পরিকর।

আজকের বাংলাদেশের প্রোপট চিন্তা করলে মনে হয় এই দেশের ক্ষমতাসীনরা প্রতিদিন যে ভাষায় কথা বলেন, মনে হয় তাদেরই একমাত্র এই দুনিয়ায় বাঁচার বৈধ অধিকার আছে। আমরা যদি আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থা দেখি মনে হবে এই দেশটা শুধু তাদের। পুলিশ র‌্যাব যে কাউকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে টাকা আদায় করছে, যা কোনো সভ্যদেশে চিন্তাও করা যাবে না, আজকে পুলিশ র‌্যাব মানে জনগণের জন্যে নির্যাতনকারী বিশেষ বাহিনী । আমরা যারা প্রবাসে বিশেষ করে আরব দেশগুলোতে থাকি এই সব দেশে গণতন্ত্র নেই ; তারপরও রাত যতই হউক কেউ কাউকে খুব একটা ডিস্টার্ব করেনা। বেশি রাত হলে পুলিশ হয়তো রাস্তায় জিজ্ঞেস করবে কোথায় যাচ্ছি এর চেয়ে বেশি কিছু নয়, আমাদের দেশের এভাবে রাতে ফেলে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে বলবে এই মুহূর্তে তোমার পরিবারকে বলো এতটাকা দিয়ে তোমাকে ছাড়িয়ে নিতে না হলে অমুক মামলায় চালান করে দিবো অথবা টাকা না দিলে ক্রস ফায়ার দিবো, বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষকে টাকা দিয়ে অসহায়ের মতো স্বাধীন দেশের মানুষ পরাধীনতায় ভুগছি, স্বাধীন দেশের পুলিশের অবস্থা এমন হয়। কোথায় স্বাধীন দেশের নাগরিকের মান সম্মান ইজ্জত পুলিশ যেভাবে রাস্তায় মানুষকে পেটায় সেটা কোনো সভ্যদেশে পশুকে এভাবে পিটায়না, আমাদের শাসক শ্রেণীর নিজেদের যেমন সম্মান নেই, অন্যকে সম্মান দিতে পারেনা তাই তারা বিরোধী দলে গেলে একই আচরণের স্বীকার হতে হয়। এই হলো আমাদের সভ্যতা। আমরা অসভ্যতা দেখতে দেখতে সবার গা সওয়া হয়ে গেছে যেই দল করেন সেই দলের ভুলত্র“টি দেখতে পান না। সব সময় অন্যের সমালোচনা করে বেড়ান নিজে বা দলের পে যেই অন্যায় করে চলেছে তার পে বাহবা দিয়ে যাচ্ছে, এই হলো আমাদের অবস্থা, জোর করে অন্যের অধিকার কেড়ে নিয়ে গর্ব করে, এই হলো আমাদের সভ্যতা।

মানুষ হত্যা করা মহাপাপ এটা সব চেয়ে বেশি জানে মুসলমানরা। অথচ সেই মুসমানরাই সব চেয়ে বেশি খুন হচ্ছে মুসলমানদের হাতে, অথচ ওহুদের যুদ্ধের ময়দানে হজরত আলী (রা.) শত্র“কে মাঠিতে ফেলে দেয়ার পর পরাজিত কাফের যুদ্ধরতআলী (রা.) চেহারায় থুথু দিলেন তৎণাৎ আলী তাকে আঘাত করলেন না। অথচ আরো জোরে আঘাত করার কথা ছিল কিন্ত আঘাত করেননি, তিনি চিন্তা করলেন রাগের বশবর্তী হয়ে প্রতিশোধ নিলে সেটা হবে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ।

একটি জাতির জন্যে সুন্দর একটি পরিছন্ন সমাজ গঠনের প্রয়োজন একদল শিতি যুব সমাজ। যারা সমাজকে এগিয়ে নিবে, বর্তমান রাষ্ট্রের শাসকরা অনৈতিক কাজে নিজেকে জড়িয়েছে তেমনি পুরো সমাজটাকে সেভাবে তৈরি করে চলেছে, তা না হলে রাষ্ট্রে একজন পুলিশ অফিসার যাকে রাষ্ট্রে সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করে বানানো হয় রাষ্ট্রের অপরাধ দমনের জন্যে, আজকে তারাই সব চেয়ে বড় অপরাধী, একজন পুলিশ অফিসার ডিবি ডিসি মোল্লা নজরুল একজন ব্যবসায়ীর কাছ ১কোটি চাঁদা আদায় করেছেন এমন অভিযোগ পাওয়ার পরও ঐ পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সরকারের নিরাপত্তাবাহিনীকে বিরোধী মত দমনের জন্যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্ছ শক্তি ব্যবহার করছে। যার ফলে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার বলতে কিছুই থাকছেনা। এ থেকে পরিত্রাণের একটি ব্যবস্থা নিতে হবে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে রাজতন্ত্রীয় গণতন্ত্র কায়েম হবে। সেটি কোনো বিবেকবান মানুষে হতে দিতে পারে না। বর্তমান সরকার নিজেরা ঘোষণা দিয়েছে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসতে দিবেনা। তাদের অধীনে নির্বাচন হলেতো আজীবন মতায় থাকতে পারবেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অধিকাংশ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। কারণ সেখানে প্রত্যেক দল গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু বাংলাদেশে যা হচ্ছে তাকে কি গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় ফেলা যায়?

লেখক : জেদ্দা, সৌদি আরব প্রবাসী