সংবাদ শিরোনামঃ

সরকারের শেষ রক্ষা হবে না ** চাণক্যদের নোংরা খেলা ** ১০০ বছরের জ্বালানি সম্পদ হারিয়েছে বাংলাদেশ ** আফগানিস্তানে মতৈক্যের সরকার এবং শান্তির প্রত্যাশা ** সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কারণে মানুষ ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে ** কুরবানির পশুর চামড়া ক্রয় বিক্রয়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন ** লতিফ সিদ্দিকী বনাম কাদের সিদ্দিকী ** জিতেছে চাঁদ দেখে পক্ষ ** ঝিনাইদহে সরকারি বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে আওয়ামী লীগ নেতার মার্কেট ** কবি ফররুখ আহমদের শিশু কবিতায় বিচিত্র পাখি **

ঢাকা, শুক্রবার, ২ কার্তিক ১৪২১, ২১ জিলহজ ১৪৩৫, ১৭ অক্টোবর ২০১৪

স্টাফ রিপোর্টার : রফতানিতে রড় ধরনের ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ শতাংশেরও কম।  ২০০৯-১০ অর্থবছরের পর কোনো প্রান্তিকেই রফতানি আয়ে এত কম প্রবৃদ্ধি হয়নি। যদিও মাসভিত্তিক হিসাবে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে কোনো কোনো সময়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ও যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি স্থগিতের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের রফতানি খাতে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গত ১৩ অক্টোবর সোমবার রফতানি আয়ের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ০.৮৮ শতাংশ। অথচ গত অর্থবছরেও একই প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির এ হার ছিল ২১.২৪ শতাংশ।

ইপিবির হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি  খাত থেকে আয় হয়েছে ৭৬৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৭৬২ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বিশ্লেষকদের মতে, মূলত তিনটি কারণে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি খাত কিছুটা হলেও হোঁচট খেয়েছে। এর মধ্যে প্রথম কারণটিই হলো তৈরি পোশাকের মূল গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে রফতানি আয় কমে যাওয়া। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে দেশটি থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয় কমেছে ১.৫১ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের গন্তব্য জার্মানির অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও খুব একটা মজবুত নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ায় আমদানিকারকদের আমদানি খরচ বেড়েছে; যার প্রভাবে রফতানি আয়ে ভাটা পড়েছে। এছাড়া রয়েছে পোশাক শিল্প মূল্যায়ন পরিস্থিতি। মূল্যায়ন শুরুর পর এ শিল্পের কারখানা সংশোধন শুরু হলেও তা এখনো প্রক্রিয়াধীন। ফলে ক্রেতারা এখনো পূর্ণ গতিতে ক্রয়াদেশ দিতে শুরু করেননি। তবে পোশাক খাতসংশ্লিষ্টরা এ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

রফতানি খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. জায়েদ বখ্ত বলেন, ‘শিল্প দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতির কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব রফতানি আয়ে পড়েছে বলে মনে করছি। এছাড়া টাকার বিপরীতে ডলারের অবমূল্যায়নের প্রভাব পড়লেও তা খুব বেশি নয়। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, রফতানি খাতের বিদ্যমান পরিস্থিতি কিছুটা মৌসুমজনিত।

দ্রুতই এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।’

সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের শুধু সেপ্টেম্বরে রফতানি প্রবৃদ্ধি কমে ঋণাত্মক হয়েছে; যার হার ১.৪৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে আয় হয়েছে ২৫৫ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে আয় হয়েছিল ২৫৯ কোটি ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু খাতে রফতানি কমে যাওয়ায় প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। এসব খাতের মধ্যে আছে পোশাক শিল্পের নিট ও ওভেন পণ্য, পাট এবং পাটজাত পণ্য, ফার্নিচার, চামড়া ও হিমায়িত খাদ্য। এর মধ্যে পোশাক শিল্পের আয় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। কারণ রফতানি আয়ের সিংহভাগ আসে এ খাত থেকে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পোশাক শিল্পের ওভেন খাতের রফতানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ২.৬৬ শতাংশ। আয় হয়েছে ২৯৬ কোটি ২৭ লাখ ১০ হাজার ডলার।

গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৩০৪ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার।  এদিকে নিট খাত থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় হয়েছে ৩২৭ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ৩.৪৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩১৬ কোটি ২ লাখ ডলার। আর সে সময় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২৪.৪৩ শতাংশ।

তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ও শ্রম পরিবেশ নিয়ে ক্রেতাদের নেতিবাচক মনোভাবই পোশাক শিল্পের ওভেন খাতে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ‘ক্রেতাদের মধ্যে এত দিন ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ মনোভাব ছিল। তবে শিল্প মূল্যায়ন শুরু হওয়ার পাশাপাশি সংশোধনও শুরু হয়েছে। আশা করছি, সামনের দিনগুলোয় এ পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হবে।’ এদিকে আলোচ্য সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য, ফার্নিচার, চামড়া এবং হিমায়িত খাদ্যপণ্য রফতানি আয়ে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এরমধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য প্রবৃদ্ধির হার ঋণাত্মক ৩.৯৪, ফার্নিচারে ৪.২২, চামড়ায়  ৮.৭৯ ও হিমায়িত খাদ্যপণ্যে ০.২৫ শতাংশ।

পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে রফতানি আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৭৪ লাখ ২০ হাজার, ফার্নিচার থেকে ৬৫ লাখ ৮০ হাজার, চামড়া থেকে ১০ কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার ও হিমায়িত খাদ্যপণ্যে ১৯ কোটি ৮ লাখ ডলার।

পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সচিব এ বারিক খান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে।

পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ায় পাটের অন্যতম মূল গন্তব্য ভারতের আমদানিকারকদের আমদানি খরচ বেড়েছে। ফলে ভারতে কাঁচা পাট রফতানি কমেছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ বাজারে সরকারি নীতি কার্যকর হয়নি। সবকিছুর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রফতানি আয়ে।

রফতানি খাতের প্রবৃদ্ধির হার গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় কমলেও প্রবৃদ্ধির ধারা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ যেসব পণ্য অবদান রাখছে, তার মধ্যে অন্যতম খাতগুলো হলো কৃষিপণ্য, চামড়াজাত ফুটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল, অন্যান্য ফুটওয়্যার ও বাইসাইকেল। এ পণ্যগুলোর প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ২৭.১০, ২৯.৯১, ৩.১৪, ১৪.৪৯ ও ৩৬.৭৯ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এ পণ্যগুলো রফতানি করে আয় হয়েছে যথাক্রমে ১৮ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার, ১৪ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার, ১৮ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার, ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার ও ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।