সংবাদ শিরোনামঃ

তীব্রতর হচ্ছে আন্দোলন ** পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে ** শক্তি নয় সমাধান সংলাপে ** টানা অবরোধ হরতালে অচল দেশ ** সংলাপে বসতে বহির্বিশ্বের প্রচণ্ড চাপে বেকায়দায় সরকার ** অনুমতি ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিযান ** আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকার টিকে আছে ** রাজনৈতিক দমন নিপীড়ন বন্ধ করুন ** আবারও দৃশ্যপটে বিদেশী কূটনীতিকরা ** অভিযান নামের নির্যাতন ** গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের অবরোধে অচল দেশ ** আল মাহমুদের কবিতা কার প্রেমে, কার সান্নিধ্যে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪২১, ১ রবিউস সানি ১৪৩৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

ড. রফিক রইচ
সাহিত্য এমন একটি জরায়ু, যে জরায়ুতে ধারণ করে জীবনের ভ্রুণ। এ ভ্রুণের পর্যায়ক্রমিক বিভাজনের মাধ্যমে পরিপূর্ণ জীবনের পরিস্ফূটন ঘটে। জীবনের পরিস্ফূটনের জন্য কত কিছুরই তো দরকার পড়ে। সহজাতভাবেই কবি সাহিত্যিকগণ প্রকৃতিপ্রেমী হয়। প্রকৃতির নানা উপাদান সরাসরি অথবা রূপক হিসেবে তারা তাদের সৃষ্টিকর্মে উপস্থাপন করে পাঠকের হৃদয়ে দোলা লাগায়। গাছ-গাছালি ফুল-ফল, পশু-পাখি, পোকা-মাকড়, নদী-সাগর, ঢেউ, মেঘ, বৃষ্টি-ঝর্না, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়-আশয়ও সাহিত্যকে বর্ণাঢ্য রূপদান করে, সাহিত্যকে সুখপাঠ্য ও কালোত্তীর্ণ করে তোলে এবং মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে মানুষকে শিল্পীত বাঁচার প্রকট ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। এসব কবি সাহিত্যিকগণের মধ্যে কেউ কেউ এমনিতেই শুধু বাহ্যজগত দেখেই লিখছে আর কেউ কেউ বিজ্ঞানের ছাত্র অথবা বিজ্ঞানের ছাত্র না হলেও প্রচণ্ড বিজ্ঞান মনস্কতায় ও বিজ্ঞানের সাহচর্যে এসে বিশ্বাস ও বিজ্ঞান সমৃদ্ধ কবিতার নক্ষত্র নির্মাণ করছে। এরকম প্রকৃতি প্রেমিক অনেক কবি সাহিত্যিকদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ দাস, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকুমার রায়, আল মাহমুদ, শামসুর রাহমান, টিএস ইলিয়ট, ওয়াডর্সওয়ার্থ এর নাম উল্লেখ করার মতো। আশি ও নব্বই দশকের কবি সাহিত্যিকদের মধ্যে এর ব্যাপকতা আরো চোখে পড়ার মতো। এদের মধ্যেই একজন কবি মাহফুজুর রহমান আখন্দ।

ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ বিজ্ঞানের ছাত্র নন। ইতিহাসের ছাত্র। কিন্তু তিনি অধিক বিজ্ঞান মনস্কতা অর্জনের অভিপ্রায়ে বিজ্ঞানের সার্থক সাহচর্য লাভে সদা অগ্রগামী। তাছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে অনেকখানেই উদার নিরহঙ্কার ও মিষ্টি মানুষ। যে কারণে সব শ্রেণীর জ্ঞানী মানুষদের সাথেই তার নিবিড় পথ চলা, এগিয়ে চলা। তাছাড়া পেশাগত জীবনে মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় এ সুযোগের ব্যাপক ব্যপ্তি ঘটেছে। যে কারণে তিনি আল মাহমুদের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বোঝার মতোই বিজ্ঞান বোঝেন। পদার্থের লোক হওয়ার পরও জীববিজ্ঞানের খুটিনাটি জানা সুকুমার রায় এর মতোই প্রকৃতি ও পরিবেশ বোঝেন। বোঝেন বৃক্ষরাজী, পাখ-পাখালি, পোকামাকড়দের ঘরবসতি, বোঝেন নদ-নদী, মেঘ-বৃষ্টি, সমুদ্র, ঝর্ণাধারা, বোঝেন পরিবেশ, জলবায়ুর পরিবর্তন ও তার প্রভাব এবং ক্ষতির ধরন। ইঙ্গিত দিতে পারেন অভিযোজনের সর্বোপরি টিকে থাকার। অস্থিতিশীল পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার। যে কারণে তার কবিতা, ছড়া ও গানে প্রকৃতির এসব উপাদানের প্রকট উপস্থিতি লক্ষ্য করি। বিষয়গুলোর কিছু উদ্ধৃতি দেয়ার আগে পবিত্র কুরআনের দুটি আয়াত নিয়ে একটু কথা বলে নেয়া ভালো হবে হয়তো। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনের সূরা কামারের ৪৯নং আয়াতে বলেছেন- Varilly all things. We have created in proportion and measere  à¦…র্থাৎ নিশ্চয় আমরা প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিত পরিমাপে সৃষ্টি করেছি। কিন্তু যখনি প্রকৃতির মানুষ কর্তৃক এই পরিমিতি পরিমাপের হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটছে, তখনই হয়েছে প্রকৃতির অসঙ্গতি। স্থিতিশীল পৃথিবী হয়েছে অস্থিতিশীল। এ প্রসঙ্গে সূরা রুমের ৪১নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- জলে ও স্থলে মানুষের কৃতকর্মের দরুনই বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। এই আয়াতটি কতখানি সত্য সেটা প্রকৃতি তথা পৃথিবীর দিকে তাকালেই বোধগম্য হবে। বিভিন্ন দেশীয় সীমানার সীমারেখা থাকলেও পরিবেশ দূষণ বা জলবায়ুর পরিবর্তনের কোনো সীমারেখা নেই। যে কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রমাগত দূষণের ফলে মরুকরণ থেকে অধিক প্লাবন, জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, পানির স্তর নিম্নমুখী, নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মাটির উর্বরতা হ্রাস, ফসলে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ইত্যাদি ঘটনা ঘটছে। ফলশ্র“তিতে মানুষের নানা অসুখ বিসুখ, জীবনের টানাপোড়েন এবং কখনো কখনো কালেক্টিভ সুইসাইটের মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে। বিজ্ঞান মনস্ক ও পরিবেশ সচেতন কবি মাহফুজুর রহমান আখন্দ এসব বিষয়গুলো আলোড়িত করে। এর গুণগত উত্তরণ চান তিনি। আর তাই নমুনা দেখতে পাই তার বেশ কিছু কবিতা ও ছড়ায়। তার দুই একটি উদ্ধৃতি-

১.

জেলে চাষী মুটে মাঝি/ কইরে তোরা কইরে

ফারাক্কা বাঁধ ভাঙ্গতে হবে/ এক সাথে দে হৈ রে।

[পদ্মাপাড়ের ছড়া]

২.

পদ্মার বুকে আজ হাহাকার মরু/ গোলাপী বিকেল ঝরে ফিকে কান্নায়

টিপাই টিপাই ওড়ে চিলের ডানায়/ রক্ত পরশ মাখে তসবী দানায়

[বোইশাখের হালখাতা]

৩.

সরলা বধুয়া হাটে পদ্মার পাড়ে

কাঁখে থাকে জলহীন সীসার কলস

বালুচরে মরিচিকা রোদেলা দুপুর

কাশবনে শুশুকের ভগ্ন ফসিল।

ইলিশের ছবি ভাসে মার্কেটে যাদুঘরে ঘরে

ইতিহাস খুঁজে ফেরে নতুন পুরুষ

ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয় মরুর আকাশ

জলে ভরা টলোমলো গোল গোল চাঁদ

নেমে আসে মাছদের চোখের তারায়।

[চিত্রকল্প]

৪.

দীলখোলা আকাশের মায়াময় বুক জুড়ে

কালো ধোঁয়া ধুলি আর বারুদের ঝাঁঝ

ঝরো ঝরো বৃষ্টিতে পরিবেশ কেঁদে ফেরে

সূর্যের আলোতেও নেমে আসে সাঁঝ।

[সুখ হাসি]

৫.

হনুমান লেজ নাড়ে পাকুরের গাছে ঘুঘুদের বাসা আজ ধুধু মরুভূমিতে

কিংবা ছ’মিলের বিধ্বস্ত কাঠে।

[সাহসের সবুজ সকাল]

৬.

বিলগুলো আজ মরা ছবি যেন মাছেরাও ভয়ে কাপে

মাটির বুক হলো চৌচির চালাকি রোদেলা তাপে।  [সকাল এসেছে]

৭.

বিল হাওড়ে পানির আকাল

পুকুর পাগার হচ্ছে ভরাট রোজ/ রাখছে কি কেউ পরিবেশের খোঁজ !

টাটকা-খাঁটি সবজি বাটি/ খাবার ঘরে ফাঁকা

বিষ মাখানো খাবার খেয়েই/ চলছে জীবন চাকা। [পরিবেশের ছড়া]

পূর্বেই বলেছি- কবি সাহিত্যিকরা প্রকৃতির প্রতি দারুণভাবে সংবেদনশীল। বিশেষকরে এই সংবেদনটি আরো বেশি প্রকৃতির উদ্ভিদকূল ও প্রাণীকূলের প্রতি। সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গন যেমন-কবিতা, ছড়া, গান, নাটক, গল্প, উপন্যাস এর সবগুলোতেই উদ্ভিদকূল  ও প্রাণীকূলের উপস্থাপন প্রাসঙ্গিক হলেই অনিবার্য হয়। এগুলো উপমার জন্য, রূপকের জন্য, বিদ্রুপের জন্য, ভালো লাগা-মন্দ লাগার জন্য, স্বভাব ও আচরণের জন্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জন্য, দেশ তথা জাতিকে জানার জন্য, রোমান্টিক সিকোয়েন্সের জন্য, সর্বোপরি মানুষের সাথে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা, ভালোবাসা প্রদর্শন ও পরিবেশের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাবের জন্য সাহিত্যের নানা শাখা প্রশাখায় উপস্থাপিত হয়ে টানটান ও স্থাপত্যশিল্পের মতো সাহিত্য সৃষ্টি করে যা হৃদয় ও মনে দোলা লাগানো, ভালো লাগানো ও জাগ্রত করার পাশাপাশি বোঝার ও জানার পরিধি বৃদ্ধি করে।

ভিকটর কাউসিন বলেছিলেন- “হ্যাঁ মহাশয় দিন আমাকে দেশটির মানচিত্র। এর অবস্থান আবহাওয়া এবং প্রকৃতি। দেশটির জল, হাওয়া এবং অবস্থানগত ভূগোল। দিন আমাকে এর প্রাকৃতিক উপাদান। জীবকূল এবং জীবতত্ত্ব। আমি অঙ্গিকার করছি- নির্ভূলভাবে আপনাদেরকে জানাবো দেশটির মানুষ কি প্রকৃতির হবে এবং দৈবাৎ হিসেবে নয় ; কোনো একটা ক্ষণিকে নয়, সর্বকালে যে কোনো কালে ইতিহাসে এ দেশের মানুষের ভূমিকা কি এবং তার শিল্প সাহিত্য মানসিক অবস্থা, জীবন প্রণালী ইত্যাদি কি তা বলে দিতে পারবো।” ভিক্টর কাউসিন এর এ উক্তি থেকে বোঝা যায়, প্রকৃতির সাথে সাহিত্যের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য অত্যন্ত ঘনিষ্ট। যে কারণে কবি সাহিত্যিকরা কখনো প্রকৃতি বিরোধী হয় না।

কবি মাহফুজুর রহমান আখন্দও এর ব্যতিক্রম নন। তবে উপস্থাপনে বিষয় বস্তুতে আছে খানিক ভিন্নতা। তার অধিকাংশ লেখাতেই উদ্ভিদকূল, প্রাণীকূল বা প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান ঝধঃরৎব হিসেবেই বেশি উপস্থাপিত হয়েছে। দু-একটি উদ্ধৃতি দিলে ভালো হবে-

আইনের ঘরে ঘরে ঘুনপোকা করে উলাস

ময়নার বেশ ধরে হায়নার সাথে যেন শুকুনের বাস

পতাকায় ঢাকা পড়ে লাখো লাখো শয়তান দাঁতাল শুয়ার

নবীজির নাম নিয়ে লুকোচুরি খেলা তবু বন্ধ দুয়ার।

[বোইশাখের হালখাতা]

ফুল ছুঁয়ো না

ফুলের ভেতর বিষ মাখানো পোকা

দেখতে গোলাপ জুঁই, চামেলী

রাজনীতিতে এমনতরো ধোকা।

[রাজনীতির চেহারা, ছড়ামাইট]

পথের বাঁকে বাঁকে দাঁতাল শুয়োর’ শ্বেত ভলুক

হিংস্র হায়েনার চকচকে বৈদ্যুতিক চোখ

জোঁকের উলাস ঘাসের ডগা কাদাপানি এবং কচুরিপানায়

পানির কনায় কনায় ছোঁয়াচে বিষ।  

[এই তো সময়]

আকাশের সিঁড়ি ভেঙ্গে মঙ্গল গ্রহে আরোহণ করে

চামচিকে, বুনো বাদুর, কিংবা উটপাখি,

তখন আর কিসের ঈদ আছে বলো,

                                    [কিসের ঈদ]

মাহফুজুর রহমান আখন্দ যতখানি না কবি, তার চেয়ে অনেক বেশি গীতিকার ও ছড়াকার। গানে ও ছড়ার উপস্থাপনে তার যে বৈচিত্র্যের প্রাচুর্যতা তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। মূলত তাকে টিকে রাখতে পারে তার গান ও ছড়া। তার গান ও ছড়ায় প্রকৃতির উদ্ভিদকূল ও প্রাণীকূলের দুটি শোভাময় সর্বাঙ্গীন সুন্দর উপাদান ফুল ও পাখির সরব উপস্থিতি লক্ষণীয় যা তার গান ও ছড়াগুলোকে করেছে সুখপাঠ্য ও প্রাণবন্ত। পাঠযোগ্য হয়েছে ছড়াপিপাষু শিশুসহ সবার। তার ছড়ার দুই একটি লাইন-

শ্যামপুর গাঁ পাশে তেলিয়ান বিল/ শাপলা পদ্ম বুকে হাসে খিল খিল

মাছরাঙা ঝুপ ঝুপ ডুব দেয় জলে/ ছেলে মেয়ে সাঁতরায় শাপলার ছলে।

[সোনার বিল]

বিষটি পড়ে নাচের তালে/ রিম ঝিমা ঝিম শব্দ

কই পালালো শালিক পাখি/ হলো ভীষণ জব্দ।

ভিজলে জলে সর্দি হবে/ মরবে কাশি জ্বরে

আয় না তবে দুষ্ট পাখি/ছোট্ট টিনের ঘরে।

[বিষটি ও শালিক]

বকুল গোলাপ হাসনা হেনা/ নতুন ধানে মৌ,

পদ্মকুড়ি ঘোমটা টেনে/ বউ সেজেছে বউ।

[বউ সেজেছে বউ]

শাপলা ফোটা তেলেন গা/ এক শিয়ালের তিন ছা

শেয়াল ডাকে হুক্কা হুয়া/ তাইতো হাসে কাকাতুয়া

কাকাতুয়ার মাথায় ঝুটি/ খাচ্ছে বগি খলসে পুটি

ট্যাংরা মাছ ধরেছে/ কাঁটার বিষে মরেছে।

[শিয়ালের ছা]

নজরুল বিজ্ঞান মনস্ক না হলেও সহজাতভাবেই প্রকৃতিপ্রেমী ছিলেন। প্রকৃতির নানা উপাদানে উপচে পড়া তার লেখা। এসব উপাদানের মধ্যে ফুল ও পাখির উপস্থিতিও উপস্থাপন বিজ্ঞান সহায়ক। কারণ সে লেখেনি নাম না জানা পাখি ও ফুলের সমারোহে আমার মন হলো উদাস বাউল। বরং সে ফুল ও পাখিদের নাম ধরে ধরে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর কিছু কিছু গানে ১০-১২টি করে ফুলের নাম এসেছে। পাখির নাম এসেছে যা প্রকৃতিকে বিজ্ঞানভিত্তিক জানতে সহায়তা করেছে। যেমন কবি লেখেন-‘বেলফুল এনে দাও চাই না বকুল/ চাই না হেনা আনো আমের মুকুল/ গোলাপ রং গরবী, এনে দাও করবী/ চাইতে যুঁথি আনো টগর কি ভুল/ কি হবে কেয়া দেয়া নেই গগনে/ আনো সন্ধা মালতি গোধূলী লগনে/ গিরি মলিকা কই ? চামেলি পেয়েছ সই?/ চাঁপা এনে দাও, নয় বাঁধব না চুল।/ কবি মাহফুজুর রহমান আখন্দের গানে তার সাদৃশ্য দেখা যায়-

হাসনা হেনা গোলাপ বেলী/ শিমুল পলাশ জুঁই চামেলি

ফুলের সেরা ফুল সে তুমি/ তুমি বিনে মনের বাগান

হয় যে মরুভূমি। (মন মদিনা কান্দে আমার)

তার বেশ কিছু গানে পাখিদের সরব উপস্থিতি-

১) আমের শাখে লিচুর ডালে/ মন নেচে যায় বাউলা তালে

 à¦¬à¦¾à¦à¦¶ বাগানে রসিক কোকিল/ গানের সুরে ডাকে।

২) শ্যামলা গায়ের আইলা ঘাটা/ সবুজ ধানের ঘাসে

বকের সারি আকাশ দোলায়/ মেঘলা বিকেল মাঝে।

৩) বটের ছায়া বাড়ায় মায়া/ কালা পানি নদীর বাঁক

পাখিদের রানী কালা কইতর/ নয়া কোকিলার ডাক।

পৃথিবীর পরিবেশ এখন শুধু বিপন্ন নয় বরং সঙ্কটাপন্নভাবে বিপন্ন। পৃথিবীর এমন প্রকট বিপন্নতার কারণ এই পৃথিবীরই কিছু অকৃতজ্ঞ মানুষ যারা আবার এই পৃথিবীতেই বসবাস করে। আলো বাতাস ও উৎপাদিত খাদ্যে বেঁচে থাকে। ভাবতে অবাক লাগে তারাই আবার এই বিপন্নতার পিছনের খলনায়ক। কেউ কেউ জেনে ও বুঝে এই খলনায়ক, আবার কেউ কেউ না বুঝেও খলনায়ক। তবে বুঝে হোক আর না বুঝে হোক যেভাবেই হোক না কেন এসব মানুষের জন্য প্রকৃতি বিপন্ন হতে হতে গোমা সাপের মতো ফুশে উঠছে। যে কারণে প্রকৃতিও এর বদলা নিতে শুরু করেছে। যার ফলশ্র“তিতে আইলা, সিডর, মোহাসেনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে পড়ে জানমালসহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এরা এবং বেঁচে থাকার উপাদান উপকরণের ঘাটতিও দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় তা শেষ হয়ে যাবে এবং পৃথিবীর মানুষের কালেক্টিভ সুইসাইড ঘটবে যা মোটেই কাম্য নয়।

কবি মাহফুজুর রহমান আখন্দও এটি চান না, আর তাই কবিতায় তাঁর প্রতিফলন দেখতে পাই। দেখতে পাই বিশ্বাস ভরা বিজ্ঞান সমৃদ্ধ উপস্থাপন। দেখতে পাই ছড়া ও গানে প্রকৃতির নিয়ামত ভরা দুটি তাৎপর্যপূর্ণ উপাদান পাখি ও ফুলকে যা তাঁর লেখাগুলোকে সুখপাঠ্য করেছে। অন্যদিকে বিজ্ঞান ও বিশ্বাসের সিমেন্টের জমাট বন্ধনে কবিতা, ছড়া ও গানগুলো হয়ে উঠেছে আধুনিক ও টেকসই।  তবে পরিবেশ একটি ব্যাপক বিষয়। বর্তমান সময়ে এবিষয়ের অসঙ্গতিও ব্যাপক। তাই লেখালেখির যারপরনাই ক্ষেত্র রয়েছে এখানে। এবিষয়ে লেখালেখির জন্য সংশ্লিষ্ট শব্দগুলোর উপর প্রচুর দখল ও জ্ঞান রাখতে হবে এবং উপস্থাপনে আনতে হবে চমক ও নতুনত্ব। আশাকরি কবি মাহফুজুর রহমান আখন্দ সেদিকে ঈগল চক্ষু দিয়ে কাজ করে এ বিষয়ের উপর প্রত্যাশিত সোনার ফসল ঘরে তুলবেন। 

লেখক : কবি, গীতিকার ও গবেষক, সম্পাদক চরকা, সিরাজগঞ্জ

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।