অধ্যাপক গোলাম আযমের আপিলের পরিসমাপ্তি

স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর ও বর্ষীয়ান জননেতা অধ্যাপক গোলাম আযম ইন্তিকাল করায় তার মামলার পক্ষে বিপক্ষের দুটি আপিল অকার্যকর ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর মাধ্যমে মামলাটির পরিসমাপ্তি ঘটলো।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এই বেঞ্চের অপর চার বিচারপতি হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় দু’নম্বর ক্রমিকে আদেশের জন্য অধ্যাপক গোলাম আযমের আপিলটি আসে। কার্যতালিকায় প্রফেসর গোলাম আযম বনাম চিফ প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

২০১৪ সালের ২৪ অক্টোবর কারাবন্দী অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অধ্যাপক গোলাম আযম ইন্তিকাল করেন। ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো মামলা চলাকালীন সময়ে যদি এ মামলার অভিযুক্ত মারা যান তাহলে মামলাটি আর চলে না। তখন এ মামলার কার্যক্রম বাতিল করেন আদালত। অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার ক্ষেত্রেও তাই করা হলো।

এর আগে ২০১৪ সালের ৫ আগস্ট অধ্যাপক গোলাম আযম ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল করেছিলেন। আপিলে অধ্যাপক গোলম আযমক নিজেকে নির্দোষ উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল এবং খালাস চান। আপিল নম্বর ১০২/২০১৩। আপিলে বলা হয়েছিল প্রসিকিউশন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেখাতে পারেনি এবং সাজার আইনগত যুক্তি নেই। অ্যধাপক গোলাম আযম নির্দোষ। মূল আপিল ৯৫ পৃষ্ঠার, মোট ১০৯টি যুক্তি ছিল।

গত ১৫ জুলাই অধ্যাপক গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায় ঘোষণার পরে ডিফেন্স টিমের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ঘোষনা দেন আপিল করার।

এ ব্যাপারে সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, গোলাম আযমের মৃত্যুর কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলাটি আজ থেকে অকার্যকর হয়ে গেল। এর আগে তিনি এ ব্যাপারে বলেছিলেন, ‘মুত্যুর পর কারো মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার বিধান নেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই এ মামলার আপিল  অকার্যকর, মামলাটি বাতিল হয়ে গেল।’

অধ্যাপক গোলাম আযমের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী কোনো মামলা চলাকালীন সময়ে যদি এ মামলার আসামি মারা যান তাহলে সে মামলাটি আর চলতে পারে না। তখন আনুষ্ঠানিকভাবে আদালত এ মামলার কার্যক্রম বিলুপ্ত বা বাতিল ঘোষণা করে দেন। তিনি বলেন, যেহেতু অধ্যাপক গোলাম আযম ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন। সে আপিলটি এখনো চলমান কিন্তু তিনি মারা যাওয়ায় তার সাজার বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের কার্যক্রম চলবে না, শুনানিও হবে না। কারণ তিনি আর নেই। তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা চলে না। তাই আদালত তার মামলার কার্যক্রম অনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাবেটেট বা বিলুপ্তি ঘোষণা করলেন।

এর আগে একই অভিযোগে আমৃত্যু কারা দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীম ইন্তিকাল করায় তার আপিল মামলাটিও ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর অকার্যকর ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ।