সংবাদ শিরোনামঃ

গণতন্ত্র না উন্নয়ন? ** দেশ থেকে মানবতা কি বিদায় নিচ্ছে? ** গণতন্ত্রহীনতায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে ** মালয়েশিয়াগামী নিখোঁজদের জন্য আহাজারি ** প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণ ** ৩ মাসে ধর্ষণ ১২৩, গতিহীন তদন্ত ** গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধীদল থাকা বাধ্যতামূলক ** জীবন দিতে হচ্ছে বাংলাদেশীদের ** কবি নজরুলের ভুল! ** কমলগঞ্জে ধলাই নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস ** ধানের দরপতনে ঋণের টাকা পরিশোধে দিশেহারা কৃষক ** নায়ক শেখ আবুল কাসেম মিঠুনের প্রস্থান **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, ১০ শাবান ১৪৩৬, ২৯ মে ২০১৫

বেড়েই চলেছে ধর্ষণ-নির্যাতন। বয়স্ক নারী থেকে শিশু, বাদ যাচ্ছেন না কেউ। ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাও ঘটছে হরহামেশাই। তরুণীরা পদে পদে শিকার হচ্ছেন যৌন নির্যাতনের। সামাজিক সম্মানের ভয়ে অনেকেই থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হতে চান না। আবার যারা থানায় গিয়ে অভিযোগ করছেন, তারাও ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়। থানায় করা বেশির ভাগ মামলার তদন্তও গতিহীন হয়ে পড়ে আছে। ফলে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বেশির ভাগই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অপরাধবিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এ কারণে ধর্ষণ-নির্যাতন বেড়েই চলছে। তাদের মতে, দেশে শতকরা ১০ ভাগ ধর্ষণের ঘটনার বিচার হয়ে থাকে।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত তিন মাসে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ১২৩ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২১ জনের বয়স ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৫ জনকে। এ ১৫ জনের মধ্যে আবার ৭ জনের বয়স ৬ বছরের নিচে। গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৪ জন। চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসেও প্রায় সমানুপাতিক হারেই চলছে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার বলছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে মোট ১৫৮টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৩৩, ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৪, মার্চ মাসে ৪০ ও এপ্রিল মাসে ৪১ জন ধর্ষণের শিকার হন। এ ছাড়া এ চার মাসে ৫৩টি যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইমিস সেন্টারে (ওসিসি) রাজধানী  ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে প্রায় প্রতিদিনই ২-৩ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। সে হিসেবে প্রতি মাসে ৬০ জনের বেশি নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সালে সারাদেশে ৬২০, ২০১২ সালে ৮৩৬, ২০১৩ সালে ৭১৯ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গত বছর ও চলতি বছরে ধর্ষণের ঘটনা আরও বেশি বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানা-পুলিশের কাছে গেলেও যৌন নির্যাতনের শিকার বেশির ভাগই থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হন না। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি যৌন নির্যাতনের ঘটনা আলোচিত হলেও এসব ঘটনার অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যক্কারজনক যৌন হয়রানির ঘটনার মাস পেরিয়ে গেলেও কাউকে শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ঘটনায় আট নিপীড়কের মুখচ্ছবি শনাক্ত করে পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রত্যেককে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসি হাসান আরাফাত বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করছে পুলিশ। টিএসসির ঘটনার যৌন নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রায় একই সময়ে ঘটা জগন্নাথ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় আসামিরা চিহ্নিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধর্ষণ-নির্যাতনের বেশিরভাগ ঘটনার সঙ্গেই প্রভাবশালীদের যোগসাজশ থাকে বলে এসব মামলা প্রভাবিত হয় বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব এবং অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর পরিবারের সদস্যরা সামাজিক সম্মানের ভয়ে বিষয়টি নিয়ে জোরালো প্রতিবাদ করতে ভয় পান। শিশু বা তরুণীর ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তাকে বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এ ঘটনা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন তারা। এ সুযোগ নিয়ে ধর্ষক ও যৌন নির্যাতনকারীরা অনেক সময় পার পেয়ে যায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে পুলিশ। এসব ঘটনা অনুসন্ধানে উইমেন সাপোর্ট সেন্টার নামে ডিএমপির পৃথক একটি শাখাও রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকা ও এর চারপাশের জেলাগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে। বেশির ভাগ ঘটনাতেই হত্যার আগে ধর্ষণের আলামত মিলছে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আসামিদের চিহ্নিত করতে পারছে না পুলিশ। রাজধানী ঢাকায় পথ-চলতি একা নারীকে মাইক্রোবাসে তুলে ধর্ষণ করার একাধিক চক্রও রয়েছে। গত বছরের মাঝামাঝিতে উত্তরায় নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যার পর এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে এমন একটি চক্র। পরে মেয়েটিকে মাইক্রোবাসেই ধর্ষণের পর সকালে ছেড়ে দেয়া হয়। সেই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দলনেতা আপনসহ অন্যরা গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন সময়ে একাধিক এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকারও করে। পরে সহযোগীদের ধরতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দলনেতা আপন মারা যায়। গত ২১মে বৃহস্পতিবার রাতেও একই কায়দায় বসুন্ধরার যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় গারো এক নারীকে মাইক্রোবাসে তুলে ধর্ষণের পর ছেড়ে দেয়া হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ধর্ষক চক্রটিকে শনাক্ত করার জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর ধর্ষিত নারীকে শ্বাসরোধে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা করা হয়। পরে লাশ নিয়ে ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে ফেলে আসা হয়। যাতে নিহতের সহজেই পরিচয় উদ্ধার করা না যায়। আর নিহতের পরিচয় উদ্ধার করা না গেলে আসামিদের ধরা পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। গত ৪ মে ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে ঈগল পরিবহনের একটি বাসের লাগেজ থেকে অজ্ঞাত এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বাসটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিল। পুলিশের ধারণা, অজ্ঞাত ওই তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরে লাশ গুম করতেই লাগেজবন্দী করে বাসে তুলে দেয়া হয়। ঘটনার প্রায় ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার এসআই শাহ আলম জানান, অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় বা আসামি কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান চলছে। মানবজমিনের সৌজন্যে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।