রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৩য় সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ২২ চৈত্র ১৪৩০ ॥ ২৫ রমজান ১৪৪৫ হিজরী ॥ ৫ এপ্রিল ২০২৪

॥ মাহমুদা সিদ্দিকা॥
কইগো, মা মনিরা খাতা কলম লও, কার কি লাগবে লিখে ফেল। হাটে যাব তোমাদের জন্য জামাকাপড় আনতে। ঈদের তো আর দেরি নেই। চলে এল বলে। আব্বা স্কুল থেকে ফিরেই ডাকাডাকি শুরু করলেন!
আমরা সবাই খুশি। ঈদ মানেই নতুন জামা পাব এই আনন্দে।
আব্বা মাধ্যমিক স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক। চাহিদার তুলনায় বেতন খুবই সামান্য। মাসের পনেরো দিন যাওয়ার পর পকেট খালি হয়ে যেত।
সারা বছর টেনেটুনে সংসার চালিয়ে হিমসিম খেতেন। একদিক পূরণ হলে অন্যদিকে টানাটানি লেগেই থাকত।
তবুও আমাদের সংসারে হাসি-আনন্দের অভাব ছিল না।

২.
আমরা নয় ভাই-বোন। আব্বা-আম্মা মিলে এগারো জন।
উঠানে খেজুরপাতার পাটি পেতে সবাই গোল হয়ে বসলাম।
বড় ভাই খাতা-কলম নিয়ে তৈরি। আব্বা এসে বসলেই লেখা শুরু হবে।
ওই তো আব্বা আসছেন, পান মুখে দিয়ে হাতে পানের বোটায় চুন লাগান। আব্বা প্রচুর পান খেতে পারেন। পান খাওয়া মুখে আব্বার হাসিটা খুব স্ন্দুর লাগে দেখতে।
আব্বা বসেই বললেন লেখা শুরু কর-
১ নম্বরে লেখ তোমার আম্মার জন্য একটা ভালো শাড়ি।
২ নম্বরে সবসময় পড়ার জন্য দুটো সাধারণ শাড়ি।
৩ নম্বরে দুটো করে পেটিকোট ব্লাউজ।
তারপর একে একে আমাদের সবার জন্যই লেখা হত জামাকাপড়।
তিন ভাইয়ের জন্য পাজামা-পাঞ্জাবি।
আব্বা নিজের কি লাগবে তা কখনও বলতেন না।
আমরা লিখতে চাইলে আব্বা বলতেন, আমার তো সবই নতুন আছে।
ধুয়ে নীল দিয়ে দিও। শুকালে হাতে ডলে ভাজ করে রেখে দিও, একদম নতুনের মতোই লাগবে।
তবুও আমরা জোড়াজুড়ি করলে বলতেন, ঠিক আছে লেখ একটা রুমাল।
আম্মাও বসতেন আমাদের পাশে। আমাদের আলোচনা ফর্দ লেখার বহর দেখে মিটিমিটি হাসতেন।
তিনি জানতেন, এই ফর্দ লেখার মাধ্যমে আব্বা আমাদের খুশি  করতে চান। আবেগ-অনুভূতির মুল্যায়ন করেন।

৩.
বিশাল বড় ফর্দ লেখা শেষ হলো।
আব্বা বললেন, অনেক টাকার বাজেট হয়ে গেল। কাপড়চোপড় ছাড়াওতো আরো বাজার আছে ওগুলো কিনতে হবে। যেমনÑ সেমাই, দুধ-চিনি, নারিকেল, গরুর গোশত, গরম মসলা, পোলাউয়ের চাল, পিঠা ভাজার জন্য তেল, গুড় আরো কত কি লাগে!
সবদিক সামাল দেওয়ার জন্য ফর্দ থেকে কিছু কেটে বাদ দিতে হবে।
এবার যার দুটো লেখা তার একটি রেখে বাকিগুলো কেটে দেওয়া হলো।
এভাবেই বড় আকারের ফর্দটা ধীরে ধীরে ছোট হয়ে এলো। একদম সীমিত পর্যায়ে।
ঈদের আগের দিন আব্বা হাটে গেলেন। আমরা দলবেঁধে বাড়ির পশ্চিমদিকের মাঠে হাজির হলাম ঈদের বাকা চাঁদ দেখার জন্য।
ওই দেখা যায় প্রিয় চাঁদখানা।

৪.
আব্বা চলে এসেছেন হাট থেকে। আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়লাম ব্যাগের ওপর। আব্বা মিষ্টি হেসে ধৈর্যসহকারে নাম ধরে ডেকে এনে হাতে দিলেন। এই নাও তোমার ঈদের নতুন পোশাক। খুশিতে তখনই নতুন জামা পড়ে একছুটে চলে যেতাম প্রতিবেশীদের বাড়ি। উফ! কী আনন্দ! আনন্দ!



অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।