কোটচাঁদপুরে ইউপি মেম্বার জামায়াত নেতা পুলিশের হাতে আটকের পর গুলিতে নিহত

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের জামায়াত নেতা শহীদ আবুল কালামের জানাজায় জনতার ঢল। [ইনসেটে শহীদ আবুল কালাম] এবং আবুল কালামের গুলিবিদ্ধ লাশ

কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা : গত ২১ এপ্রিল ভোরে জামায়াত নেতা আবুল কালামের গুলিবিদ্ধ লাশ ঝিনাইদহ সদর থানার চোরকোল-মামুনশিয়া তিন রাস্তার মোড় হতে উদ্ধার করা হয়। গোপালপুর ফাঁড়ির পুলিশ তার লাশ ঝিনাইদহ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ নিজ বাড়ি বলাবাড়িয়ায় নিয়ে আসা হয়। এসময় বলাবাড়িয়া, পাশপাতিলা ও নারানবাড়িয়াসহ থানার বিভিন্ন গ্রাম থেকে দল মত নির্বিশেষে শহীদের মুখ দেখার জন্য বলাবাড়িয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে জনতা ভিড় জমায়। তিনি এলাঙ্গী ইউনিয়নের জামায়াত নেতা ও ইউপি  মেম্বার  ছিলেন। তার ওয়ার্ডের হিন্দু -মুসলমান দল মত নির্বিশেষে সবাই তাকে ভালো মানুষ হিসেবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। অথচ জামায়াত করার কারণে আওয়ামী এবং পুলিশের কোপানলে কোটচাঁদপুর থানায় একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। তার এ হত্যাকাণ্ড কোটচাঁদপুরবাসী মেনে নিতে পারছে না। গত শুক্রবার এ থানার এসআই মিজানের নেতৃত্বে ৫-৬ জন সাদা পোশাকের পুলিশ তাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ তথ্য তার পরিবার ও স্থানীয় প্রত্যদর্শীরা জানায়। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা এসআই মিজান ও ওসির কাছে জানতে চাইলে তার গ্রেফতারের বিষয়টি তারা অস্বীকার করেন। অথচ গত ২১ এপ্রিল সোমবার ভোরে ঝিনাইদহ সদর থানার গোপালপুর ফাঁড়ির পুলিশ গলায় ও বুকে গুলিবিদ্ধ আবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। তার বড় ভাই মাওলানা শওকত আলী এবং ২য় ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোয়াবিয়া  হোসাইন। শহীদের লাশ তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে । তিনি স্ত্রী দুই কন্যা এক পুত্রসহ অসংখ্য দ্বীনী ভাইবোন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

হরতাল পালিত

গত সোমবার ইউপি সদস্য ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আবুল কালাম আজাদকে পুলিশের গুলিতে হত্যার প্রতিবাদে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার কোটচাঁদপুর-মহেশপুরে জামায়াতের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে দেখা যায়। কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করেনি। শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হওয়ায় কোটচাঁদপুর থানা আমীর ও উপজেলা চেয়ারম্যান সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

অপরদিকে শহীদ আবুল কালাম আজাদের লাশ দাফন করার সময় তার স্ত্রী ও নিকট আত্মীয়রা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং বলতে থাকেন দু’ লাখ টাকা কোটচাঁদপুর থানার এসআই মিজানুর রহমানকে দিলাম। অথচ জানও দিলাম। তার পরিবারের প থেকে এ অভিযোগ করা হয়েছে। এসআই মিজানের নেতৃত্বে ৫-৬ জন পুলিশ তার স্বামীকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।

এসআই মিজানের কার্যকলাপ অনেক আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা মেনে নিতে পারছে না। তার এ ধরনের কার্যকলাপ চলতে থাকলে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন হারিয়ে যাবে বলে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ মানুষ আশঙ্কা করছেন। এদিকে মহেশপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল হাই পুলিশের মিথ্যা মামলায় গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ কোর্টে জামিন নিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত উভয় পরে আইনজীবীর শুনানির পর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।