সরকার জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অংশ হিসেবেই বিভিন্ন স্থানে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে : জামায়াত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোখলেসুুর রহমানসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও জামায়াত কর্মীর ওপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলীবর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শপথগ্রহণের জন্য রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে পৌঁছলে শপথগ্রহণের পূর্বেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে যশোর সদর উপজেলার বাউলিয়া গ্রামের জামায়াত কর্মী মুসাহিদকে পুলিশ পায়ে গুলি করে আহত করেছে। পুলিশ পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইসহাককে, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার শ্রমিক নেতা মো. আব্দুর রহিমসহ ২ জন, যশোরের মণিরামপুরে ১৮ জন, রংপুরে ১১ জন, বগুড়ায় ৭ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, নাটোরে ১০ জনসহ সারাদেশ থেকে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি বলেন, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোখলেসুর রহমানকে শপথগ্রহণের পূর্বে গ্রেফতার করে জনরায়ের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে। মোখলেসুর রহমান আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে ৫৪ হাজার ভোট বেশি পেয়ে উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার। জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর নিকট আওয়ামী প্রার্থীর পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে সরকার অধ্যাপক মোখলেসুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে।

ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সরকার জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার ও শপথগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, জনরায়ের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। আমরা সরকারের এই অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গ্রেফতার, শপথগ্রহণে বাধা ও তাদের দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। ইতঃপূর্বে সরকার রংপুরে শপথগ্রহণ করতে আসা নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল হাইকে গ্রেফতার করেছে। তিনি বলেন, সরকার জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালন করতে না দিয়ে তাদের অধিকারের ওপর অবৈধ হস্তপে করেছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হয়রানি ও দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান এক নজিরবিহীন ঘটনা। সরকার বিরোধী দল বিশেষ করে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অংশ হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে। বেছে বেছে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। গণতন্ত্র হত্যাকারী ও জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী এ সরকার একদলীয় শাসন কায়েমের যে ষড়যন্ত্র করছে দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবেলা করবে।

তিনি জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করে এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান, বাউফল উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইসহাকসহ গ্রেফতারকৃত সকল জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান এবং যশোর সদর উপজেলার জামায়াত কর্মী মুসাহিদের ওপর গুলিবর্ষণকারী পুলিশকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার এবং সরকারের সকল অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।