বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার অংশ হিসেবেই হত্যাকাণ্ড : ডা. শফিকুর রহমান

ঝিনাইদহ জেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য হাফেজ মো. আবুল কালাম আযাদকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ও জামায়াত ঘোষিত বিােভ কর্মসূচিতে সরকারের হামলা এবং গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গত ২১ এপ্রিল সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল সকাল ১১টায় ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, জামায়াতের কর্মী হাফেজ আবুল কালাম আযাদকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয় বাজার থেকে ধরে নিয়ে যায়। গত ২১ এপ্রিল সোমবার ভোরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মামুনশিয়া গ্রামের মাঠে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাকে অত্যন্ত নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এ নৃশংস ও মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সরকার বেছে বেছে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হত্যা করার যে নীল নকশা প্রণয়ন করেছে আবুল কালাম আযাদকে নৃশংসভাবে হত্যা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। এ সরকারের নিকট নাগরিকদের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকার বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার অংশ হিসেবেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। সরকারের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি দেশের আপামর জনতার প্রতি আহ্বান জানান।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর প থেকে জামায়াতের আমীর ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং নায়েবে আমীর ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে গত ২১ এপ্রিল দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিােভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। জামায়াতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে ঢাকা, রংপুর, নাটোর, দিনাজপুর, নওগাঁ, নরসিংদী, পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, নোয়াখালী ও লীপুরসহ সারাদেশে শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করে এবং দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে সরকার প্রমাণ করেছে এ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না ও সংবিধান মানে না। বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি মানতে রাজী নয় সরকার। মিছিলে হামলা ও গ্রেফতার চালিয়ে সরকার তার ফ্যাসিবাদী চরিত্রের প্রকাশ ঘটিয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে ও গণগ্রেফতার চালিয়ে এবং মানুষ হত্যা করে জনগণের আন্দোলন দমন করা যাবে না। সরকার মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে শাস্তি দেয়ার যে ষড়যন্ত্র করছে জনগণ তা মেনে নেবে না।

হত্যা, জুলুম, নির্যাতন, হামলা, মামলা ও গ্রেফতার অভিযান বন্ধ করে তিনি অবিলম্বে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আল্লামা সাঈদীসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে সরকারের জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।