সংবাদ শিরোনামঃ

তীব্রতর হচ্ছে আন্দোলন ** পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে ** শক্তি নয় সমাধান সংলাপে ** টানা অবরোধ হরতালে অচল দেশ ** সংলাপে বসতে বহির্বিশ্বের প্রচণ্ড চাপে বেকায়দায় সরকার ** অনুমতি ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিযান ** আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকার টিকে আছে ** রাজনৈতিক দমন নিপীড়ন বন্ধ করুন ** আবারও দৃশ্যপটে বিদেশী কূটনীতিকরা ** অভিযান নামের নির্যাতন ** গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের অবরোধে অচল দেশ ** আল মাহমুদের কবিতা কার প্রেমে, কার সান্নিধ্যে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪২১, ১ রবিউস সানি ১৪৩৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

॥ এম. গজনবী॥
বিদ্যমান সঙ্কট নিরসনে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসতে এবার আন্তর্জাতিকভাবে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। অভ্যন্তরীণ অব্যাহত চাপের মধ্যে এখন বহির্বিশ্বের চাপে অস্থির সরকার। বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীদের গুলি চালিয়ে দমন করবে à¦¨à¦¾Ñ à¦¸à¦‚à¦²à¦¾à¦ªà§‡ বসে কঠিন পরিস্থিতির সমাধানে আসবে সে ব্যাপারে স্থির কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সরকার, সরকারের মিত্র শক্তি জাতীয় পার্টি, বামপন্থীদের নিয়ে গঠিত ১৪ দলের সর্বোচ্চ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বৈঠক করেও এখনও কোনো সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রসমূহ জানিয়েছে, সংলাপে বসার পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে শুধু আওয়ামী লীগের মধ্যে নয়, মিত্রদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধের ফলে দেশ দ্রুত অচল হয়ে পড়ছে। জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। জোর করে পরিস্থিতি দমন করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়ে যাচ্ছে। দমন-পীড়ন যত বাড়ছে বিরোধী দলের আন্দোলন আরো জোরালো হচ্ছে। প্রাণহানির ঘটনায় বিদেশী কূটনীতিকরা শুধু উদ্বেগই নয়, নিন্দাও জানাচ্ছে। সরকারকে বলেছেন, দ্রুত সংলাপে বসার জন্য। আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা এবং ১৪ দলের কোণঠাসা একাধিক নেতা এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম জোর করে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যাবে না। বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হোক। কিন্তু সরকার ও দলের সুবিধাবাদী নেতারা আমাদের পাত্তা দেননি। এখন তো লাগাতার অবরোধ। লাগাতার অবরোধের পর বেগম জিয়া একদফার অর্থাৎ সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দিতে পারেন। পরিস্থিতি সেদিকেই চলে যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তারা আরো বলেন, দেখামাত্র গুলি করার হুমকি দিয়েও ফলাফল আমাদের অনুকূলে আসছে না। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসা ছাড়া সামনে কোনো সোজা পথ নেই। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ নেতা সরকারের নীতিনির্ধারকদের কড়া সমালোচনা করে বলেন, সরকার বর্তমানে তিনদিকের চাপের মধ্যে পড়েছে। প্রথম চাপ নিজ দল আওয়ামী লীগ ও মহাজোট থেকে। দ্বিতীয় চাপ বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট থেকে এবং তৃতীয় চাপ বহির্বিশ্বের। অবরোধ ভয়ানক পর্যায়ে চলে গেলে বিদেশীরাও সরকারের পাশে এসে দাঁড়াবে না। দমন-পীড়নের কঠোর অবস্থান থেকে এখনই সরে আসা উচিত। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেতে পারে। তা না হলে জনরোষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী দলের কপালে কলঙ্কের তিলক পরতে হতে পারে।

কূটনীতিকরা এককাতারে

দেশে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় বিদেশী কূটনীতিকরা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিক তৎপর হয়ে উঠেছেন বলে অনেকের কাছে মনে হচ্ছে। ঢাকাস্থ অধিকাংশ দেশ ও সংস্থার কূটনীতিকরা ইতোমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে সংলাপের কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেও তারা সরকারকে বলেছিলেন, একতরফা নির্বাচন না করার জন্য। কিন্তু সরকার তখন বিদেশীদের কথায় কর্ণপাত করেনি প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্রের সহায়তা পেয়ে। এখন সেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটিও সরকারের পক্ষে থাকছে না বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। তারা অনেকটা নীরবতা পালন করছে।

সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া এমনকি জাতিসংঘও বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। তারা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে সংলাপের তাগিদ দিয়েছেন। গত এক বছর নানা কারণে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছে প্রায় সকল দেশই। কিন্তু দেশে সরকার বিরোধী আন্দোলন জোরালো পর্যায়ে চলে যাওয়ায় তারা এখন এককাতারে চলে আসছে।

নাম প্রকাশ করতে চাননি আওয়ামী লীগের এক নেতা এ প্রতিনিধিকে জানান, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র আমেরিকার সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মজীনাকে এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ যে ভাষায় তিরস্কার করেছেন তা আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। সে দেশের এ অঞ্চলের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশাকেও একইভাবে তিরস্কার করা হয়। এ নিয়ে তখন দলের মধ্যে সমালোচনার সম্মুখীন হন। সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা বিদেশী কূটনীতিকদের এককাতারে শামিল করে দিচ্ছে। একদিকে অভ্যন্তরীণ চাপ অন্যদিকে আমেরিকার মতো রাষ্ট্র চাপ দিলে ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। কেন্দ্রের অদূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছে।

মাঠে নামতে অনিহা

বিরোধী দলের অবরোধ-হরতাল প্রতিহত করতে রাজি হচ্ছে না আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দলটির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, রাজধানীর বাইরের পরিস্থিতি ভায়নক পর্যায়ে চলে গেছে। ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীর সঙ্গে মহড়া দিতে নেতাকর্মী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ায় সকল সংসদ সদস্য এখন ঢাকাতে। তারা এমপি হোস্টেলে বসে আরাম আয়েশ করছেন আর সংসদ অধিবেশনে এসি রুমে বসে বক্তৃতা করছেন। ঢাকায় বসে মোবাইল ফোনে কর্মীদের বলছেন অবরোধ ঠেকাতে মাঠে নামতে। থানার ওসিকে ফোনে বলছেন, কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে।

খুলনা, বাগেরহাট এবং দিনাজপুরের কয়েকজন তৃণমূল নেতা এ প্রতিনিধিকে জানান, কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সব  জায়গাতে সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি করার জন্য। কিন্তু কেন্দ্রের সাড়া মিলছে না। কমিটি করবেন জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতারা। বিশেষ করে সংসদ সদস্যরা। কিন্তু তারা তো সংসদ অধিবেশন চলার অজুহাত দেখাতে এখন ঢাকাতে। কমিটি করবেন কারা কমিটি করলে তারা কি করবে তারও সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।

নাম প্রকাশ করতে চাননি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানালেন, আমাদের কাছে যে খবর আছে তাতে ঢাকা ছাড়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। জেলার অনেক সুবিধাবাদী নেতা নিজের পিঠ বাঁচাতে এখন ঢাকাতে চলে এসেছেন। বলছেন, অবরোধের কারণে এলাকাতে যেতে পারছি না। মোবাইল ফোনে কর্মীদের বলছি অবরোধ ঠেকানোর জন্য মাঠে থাকতে। তিনি আরো জানালেন, রাজধানীর সকল ওয়ার্ডে এখনও সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি গঠিত হয়নি। মিছিল মিটিং যেটা হচ্ছে তা মূলত দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় দলবদ্ধ হয়ে। যারা এতোকাল সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন তাদের রাজপথে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তাদের ধারণা ক্ষমতায় থাকতে না পারলে জনরোষে পড়তে হতে পারে।

জানা গেছে, জনরোষে পড়ার ভয়ে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার তাগিদ দিচ্ছেন। অথচ এরাই পরামর্শ দিয়েছিলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন একতরফাভাবে করতে। পরিস্থিতি বেসামাল পর্যায়ে চলে আসায় এই সুবিধাবাদী মহলের বড় অংশটিও এখন সংলাপ চাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।