সংবাদ শিরোনামঃ

তীব্রতর হচ্ছে আন্দোলন ** পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে ** শক্তি নয় সমাধান সংলাপে ** টানা অবরোধ হরতালে অচল দেশ ** সংলাপে বসতে বহির্বিশ্বের প্রচণ্ড চাপে বেকায়দায় সরকার ** অনুমতি ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিযান ** আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে সরকার টিকে আছে ** রাজনৈতিক দমন নিপীড়ন বন্ধ করুন ** আবারও দৃশ্যপটে বিদেশী কূটনীতিকরা ** অভিযান নামের নির্যাতন ** গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের অবরোধে অচল দেশ ** আল মাহমুদের কবিতা কার প্রেমে, কার সান্নিধ্যে **

ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪২১, ১ রবিউস সানি ১৪৩৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

॥ খন্দকার মহিউদ্দীন আহমদ॥
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বিতর্কিত ব্যঙ্গ পত্রিকা শার্লি এবদোর কার্যালয়ে রক্তক্ষয়ী হামলা নিঃসন্দেহে একটি নিন্দনীয় ঘটনা। পত্রিকাটি ইউরোপীয় মুসলমানদের বড় অংশকে নানাভাবে অবমাননা ও হেয়পতিপন্ন করতে সফল হয়েছে। ব্যঙ্গাত্মক এই পত্রিকাটি ফ্রান্সের সব ধর্ম, রাজনীতিবিদ এবং বিশেষভাবে মুসলমানদের জীবনধারার বিভিন্ন দিক নিয়ে উপহাস করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। পত্রিকাটি তার কার্টুনে মুসলমানদের নিয়ে অহরহ ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করতে থাকে। ফ্রান্সের জনসংখ্যার ৭.৫ শতাংশ হলো মুসলমান। তারা দেশটির মূল স্রোতের সাথে মিশতে ব্যর্থ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ফরাসী সমাজের তারা  নিম্ন আয়ের শ্রেণীভুক্ত জনগোষ্ঠী। তাদের সাথে নেতিবাচক ও বৈষম্যমূলক এমনকি সহিংস আচরণ করা হয়ে থাকে। হিজাবসহ মুসলমানদের সব ধরনের ধর্মীয় প্রতীককে দেশটির সরকারি স্কুল ও কলেজে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কঠোর সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও তথাকথিত সেক্যুলার ব্যবস্থার আওতায় মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা সঙ্কুচিত করা হচ্ছে  দীর্ঘদিন থেকেই। মুসলমানদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের নেতিবাচক প্রচার ও প্রপাগাণ্ডার ফসল আজকের এই সন্ত্রাসী হামলা। পশ্চিমারা তাদের অর্থ ও বিত্তে পরিচালিত এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারে না। মুসলমানরা ইউরোপীয় সমাজে তাদের অবস্থান ও আত্মপরিচিতি সংরক্ষণে প্রক্রিয়াধীন à¦°à§Ÿà§‡à¦›à§‡Ñ à¦à¦‡ সহজ ও সরল বিষয়টিকে বাস্তবতার আলোকেই উপলব্ধি করা প্রয়োজন। কিন্তু শার্লি এবদোর মতো পত্রিকাগুলো ব্যঙ্গাত্মক চিত্র ও কার্টুনের মাধ্যমে ইসলামের ভিত্তিকেই নির্মূলের ষড়যন্ত্র এঁটেছে। ইসলাম ও মুসলিম সমাজের ভিত্তিই হলো মহানবী (সা.) অথচ তারা বরাবরই এটাকে টার্গেট করেছে। এটা অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় বহন করে। কাল্পনিক ও বিদ্বেষ ছড়ানোর মতো ঘৃণ্য ক্রিয়াকর্মে লিপ্ত এই সমস্ত ব্যঙ্গ ও রম্য পত্রিকাগুলোর এহেন দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নেয়া যায় না। আর তা মেনে নিলে সমাজের ভিত্তিমূলে আঘাত আসে। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের প্রফেসর ড. হাতেম বাজিয়ান বলেন, ‘সমস্যা হলো ... সঠিক ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন তেমন নিন্দনীয় নয়। তিনি বলেন, বরং এগুলো যে বর্ণবাদী ও সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিকোণ থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছে এবং একে তাদের সমাজের সদস্যপদ লাভের ভিত্তি বিবেচনা করা হয়েছে, এ ক্ষেত্রে সে বিষয়টি উপলব্ধি করা দরকার। দীর্ঘদিন থেকে উস্কানি সৃষ্টির জন্য শার্লি এবদোর কুখ্যাতি রয়েছে।’

ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ ও বিদ্রƒà¦ª করার বিষয়ে বহুলভাবে পরিচিত ফ্রান্সের শার্লি এবদো পত্রিকা। প্রশ্ন হলো ধর্ম ও বিশ্বাস নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রƒà¦ª কি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আওতায় পড়ে? মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সাথে দায়িত্ববোধের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। স্বাধীনতা ও অধিকার এর মতো বিষয়ে সব সমাজে এবং রাষ্ট্রে রেখাপাত করা হয় এবং বিষয়টি নিশ্চিতভাবে সীমারেখা অতিক্রম করতে পারে না। অন্যের মূল্যবোধে হামলা ও বিদ্বেষ পোষণ কোনো সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় ইউরোপ গর্ববোধ করলেও সেখানে ইহুদি ধর্মের প্রতি ব্যঙ্গ বিদ্রƒà¦ª কখনও সহ্য করা হয় না। অবমাননা বোধের তো প্রশ্নই উঠে না। প্রশ্ন হলো, ইউরোপ তথা ফ্রান্সের জাতীয় মূল্যবোধে ইহুদি ধর্মের প্রতি অবমাননা ব্যঙ্গ ও বিদ্রƒà¦ª সমালোচনা যদি সহ্য করা না হয় বা গ্রহণযোগ্য বিবেচিত না হয়, তাহলে মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসে নবী (সা.) এবং তার অবমাননা কিভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে?

ইসলাম ও মহানবী (সা.)কে নিয়ে উস্কানি ও কাল্পনিক ভীতি ছড়ানোর ক্ষেত্রে ফ্রান্সের ভূমিকা বরাবরই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। মত প্রকাশের তথাকথিত স্বাধীনতার নামে তারা ইহুদি অর্থে মুসলমানদেরকে টার্গেটে পরিণত করেছে। ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে ভীতি ছড়ানোর মাধ্যমে ফ্রান্সের অভিবাসন বিরোধী ও চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলোর বিদ্বেষ ও প্রচারণার সুযোগ করে দিয়েছে এই সমস্ত পত্রিকাগুলো। নিরীহ মানুষের প্রাণহানির কারণ ঘটাতে পারে এমন সংবাদ বা নিবন্ধ প্রকাশ করা দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার আওতায় পড়ে না। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার উস্কানি বা ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকতার নীতিমালার বিরুদ্ধে বলে বিবেচিত হলেও দুঃখজনক সত্য হলো যে, এবদো শার্লি কখনও এই নীতিমালা মেনে চলেনি। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে তারা দীর্ঘদিন থেকেই হিংসা বিদ্বেষ ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব উস্কে দিচ্ছে। পশ্চিমাদের উচিত তাদের এই দ্বিমুখী নীতি পরিত্যাগ করা। এ ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রম ঘটেছে বিবিসির সম্পাদকীয় নীতিমালায়। বিবিসির সম্পাদকীয় নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় প্রতীক ও ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত সতর্কতা ও বিবেচনা প্রয়োগ করতে হবে, বিশেষ করে যেগুলো অবমাননার কারণ ঘটাতে পারে। কোনো আকার বা আঙ্গিকে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতিনিধিত্ব ঘটানো যাবে না।’ যুক্তরাজ্যের মূলধারার পত্রিকাগুলোর সম্প্রচার নীতিমালায় এ বিষয়টি যুগপৎভাবে গ্রহণযোগ্য। পাশ্চাত্যের অন্যান্য দেশ ও মিডিয়াগুলোর উচিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিবিসির স¤à¦ªà¦¾à¦¦à¦•à§€à§Ÿ নীতিমালা গ্রহণ করে নেয়া। তবে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রূপার্ট মারডকের মন্তব্য জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণাকে উস্কে দেবে। তিনি এই টুইটারে মন্তব্য করেছেন, ‘ফ্রান্সের এই হামলার দায় অবশ্যই মুসলমানদের বহন করতে হবে।’ তার এই বক্তব্য মোটেও দায়িত্বশীল আচরণের আওতায় পড়ে না এবং মেনে নেয়া যায় না। তিনিও সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি। মুসলমান সম্প্রদায় তার এই বক্তব্যকে চরম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। তার বক্তব্য বিপজ্জনক। জার্মানিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ঘটনার জের ধরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ হচ্ছে তাও গ্রহণযোগ্য নয়। ব্রিটেনের ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ইউপিক নেতাও মুসলমান ও ইসলামী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন যদিও তিনি বহুজাতিক সংস্কৃতির রূপান্তরের বিরুদ্ধে লড়ছেন, তবুও শেষ বেলায় তা আঘাত হানতে পারে মুসলমানদের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। পাশ্চাত্যকে এই সমস্ত অপতৎপরতা রোধে সক্রিয় হতে হবে বৃহত্তর জাতিগত ঐক্যের স্বার্থেই। এই ধরনের বিপজ্জনক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মেরুকরণ বিশ্বজুড়ে জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণাকে উস্কে দেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে তাতে সন্দেহ নেই। পাশ্চাত্যের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়রা পেগিডা নামে আন্দোলনের ব্যানারে গত বছর অক্টোবর মাস থেকে জার্মানির ড্রেসডোন শহরে প্রতি সোমবার মিছিল মিটিং করছে। বিভিন্ন জঙ্গির হামলা ও সর্বশেষ ফ্রান্সের সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে এ আন্দোলনের জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। বিষয়টি মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের। জার্মানির কেন্দ্রীয় ইসলামিক ফোরামের পক্ষ থেকে বার্লিনের বিশাল সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে শান্তির বার্তা দিয়েছে মুসলমানরা। জার্মান প্রেসিডেন্ট ইয়োমিখ গাউক সমাবেশে যোগদানের মধ্যদিয়ে শান্তির যে বার্তা দিয়েছেন তা সত্যিকার অর্থে দৃষ্টান্তমূলক। সমাবেশে যোগদান করে তিনি বলেন, এই কর্মসূচি প্রমাণ করে যে, ইসলাম ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সাথে সন্ত্রাসের কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে না। জার্মান প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশপ্রেমিক শব্দের অর্থ হলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে মেনে নিয়ে সব ধর্মের ও বর্ণের মানুষের একসঙ্গে বসবাস। জার্মানিতে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ই জার্মান।  জার্মানির ইসলামী ফোরামের সভাপতি আমান মাজায়েক প্যারিসের সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্যারিসের ঘটনায় একজন মুসলিম পুলিশের নিহত হওয়া ও সুপার মার্কেটে এক মুসলমান যুবকের ইহুদি ক্রেতাদের প্রাণ রক্ষাই প্রমাণ করে সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।

ইউরোপ জুড়ে ইসলাম বিদ্বেষী বর্ণবাদী চরমপন্থার উত্থানের বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগজনক। পশ্চিমারা ইসলামী চরমপন্থার কথা বললেও ইসলাম বিদ্বেষী বর্ণবাদী সহিংসতার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ এই দুই শক্তির উত্থান ঘটেছে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক কৌশলের মধ্য দিয়েই। তারাই তাদের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে ও তৎপরতার অংশ হিসেবে জন্ম দিয়েছে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া (আইএসআইএস) ও আল কায়েদার মতো দুর্ধর্ষ সংগঠনগুলোর। যা নাকি এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ও আফগানিস্তানে সৃষ্ট বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের পিছনে এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ আফ্রিকারসন্ত্রাসী সংগঠনের পিছনের শক্তি তারাই। ২০১১ সালে ব্রেইভিক নামে নরওয়ের এক উগ্রপন্থী খ্রিস্টান যুবক নৃশংসভাবে ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল  যাদের অধিকাংশই ছিল তরুণ, কিশোর ও কিশোরী। ব্রেইভিক চরমপন্থী ও মুসলিম Ÿà¦¿à¦¦à§à¦¬à§‡à¦·à§‡ ভরপুর একটি ঘোষণাপত্রের কথা জানিয়েছিল যা ছিল চরম বর্ণবাদী ও ইসলাম বিদ্বেষী। ইউরোপ জুড়ে বর্তমানে ইসলাম বিরোধী যে অপতৎপরতা চলমান তাতে যুগপৎভাবে ইন্ধন যোগাচ্ছে বিভিন্ন পশ্চিমা গোষ্ঠী। তারা সব ধরনের চরমপন্থার জন্য মুসলমান ও ইসলামকে দায়ী করার যে কৌশল গ্রহণ করেছে তা সন্ত্রাস দমনে কোনো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে না। তাদেরকে ইসলাম বিদ্বেষী ও বর্ণবাদী শক্তিগুলোর সমস্ত অপতৎরতা রুখে দাঁড়াতে হবে।

এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সাহসী বক্তব্য রেখেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান ও প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগলু। এরদোগান বলেছেন পাশ্চাত্য প্যারিসের ঘটনা নিয়ে ধোঁকাবাজি করছে। তিনি বলেন, তারা প্যারিসের ঘটনার নিন্দা জানালেও ইউরোপ জুড়ে মুসলিম বিদ্বেষী হামলা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নীরব রয়েছে। প্যারিসে হামলার পর সেখানকার সংহতি সমাবেশে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে গাজায় আড়াই হাজার ফিলিস্তিনীকে হত্যা করেছে, সে কিভাবে প্যারিস যায়? তার পছন্দের নেতারা কী অনুরূপ হত্যাকাণ্ড চালাতে তাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন? সে কিভাবে সেখানে যাওয়ার সাহস পেলো’? আহমেদ দাভুতোগলু বলেন, প্যারিসের সাপ্তাহিক পত্রিকা অফিসে হামলার পর বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে সমবেদনা তৈরি হয়েছে জার্মানি ও সুইডেনসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর মসজিদ হামলার ব্যাপারেও একই ধরনের সহানুভূতি প্রকাশ করা উচিত।

ইরাক ফেরত যে দুই মুসলিম যুবক প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা ঘটিয়েছে তা নিন্দনীয় অপরাধ। সে জন্য কোনোভাবেই সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে দায়ী করা যায় না। এ বিষয়ে পাশ্চাত্যের ভণ্ডামী সুস্পষ্ট। মুসলমানরা কখনই সন্ত্রাসী জাতি নয়। একজন মুসলমান সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। পাশ্চাত্যের বর্ণবাদ ঘৃণ্য-বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য মসজিদে মসজিদে হামলা ও ইসলাম ভীতি ছড়ানোর মাধ্যমেই তারা সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দিয়েছে। ইসলামী বিশ্ব নিয়ে জঘন্য খেলায় মত্ত হয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। প্যারিসের হামলার জন্য ফরাসী নিরাপত্তা বাহিনী দায়ী। সন্দেহভাজন হামলাকারীরা দেশটিতে দণ্ডও ভোগ করছিল। হামলাকারী দুইভাই সাইদ ও শেরিক কোশি যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের গোয়েন্দারা আগেই সন্ত্রাসী তালিকায় চিহ্নিত করে রেখেছিল। তাদের কর্মকাণ্ডের উপর সার্বক্ষণিক নজরদারী রাখার ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। প্রশ্ন হলো ফরাসী গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি করছিল। জেল থেকে মুক্তির পর তাদেরকে কেন নজরদারিতে রাখেনি। ইসলামভীতি ছড়ানোর লক্ষ্যে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর নানানমুখীর অপতৎপরতার অংশ হিসেবে প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছিল কি না তাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। ইসলাম ভীতি ছড়ানোর কথা বলেই ইউরোপীয় দেশগুলোর মসজিদে মসজিদে হামলা চালানো হচ্ছে। স্পেন থেকে অটোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত ইউরোপ  মহাদেশে ইসলাম ও ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতা অতীতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে যারা ইসলাম ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করছে এবং উত্তেজনা সৃষ্টির অপপ্রয়াসে লিপ্ত তারা মূলত ইসলামী সভ্যতার বিকাশে ভীত, তারা ইউরোপের মিশ্র সংস্কৃতির উত্থান ঠেকাতে চায়। ইউরোপে মুসলমানরা অন্যতম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সে কারণেই কাল্পনিক বর্ণবাদ ও বিদ্বেষ ছড়ানো হয় তাদের বিরুদ্ধে। মুসলমানরা ইউরোপীয় সমাজে তাদের অবস্থান ও আত্মপরিচিতি সংরক্ষণে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় ফ্রান্সের পত্রিকা শার্লি এবদো মুসলমানদের জীবনধারার বড় অংশকে নানাভাবে অপমান ও হেয়প্রতিপন্ন করতে হয়তো সফল হয়েছে। মুসলমানদেরকেও পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। তাদের ওপর নানামুখী হামলা হবে। সন্ত্রাসী রূপে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত এই সমস্ত ষড়যন্ত্র নিয়েও মুসলমানদের সজাগ থাকতে হবে। কোনোভাবেই ইসলামের নামে সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সমর্থনযোগ্য নয়। এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে এখনই। প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে এই বাস্তবতা এখন উপলব্ধি করার সময়।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক।

Email : mohi_ahmad15@yahoo.com

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।